অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি
Saturday, April 14, 2018
Preface- Thirteen Issue-Swarup Chakraborty
EDITORIAL- SECOND YEAR FIRST ISSUE
(THE THIRTEENTH NUMBER)
প্রকাশিত হ'ল অলীক পাতার দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সংখ্যা , বৈশাখ সংখ্যা।
বাংলার হালখাতা, পাঞ্জাবের বৈশাখী আনে নতুন বছরের অঙ্গীকার, নববর্ষ শুরুর বার্তা।
ঝরাপাতার আবর্জনা সরিয়ে নব মুকুলের উন্মেষ জাগায় নতুনের সম্ভাবনা, জাগায় আশা, এই ভাবনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে ও অলীক পাতার দ্বিতীয় বছরের প্রথম সংখ্যা কে স্বাগত জানাতে এবারের বিষয় ছিল " নব বর্ষের নূতন অধ্যায় "।
ধন্যবাদ জানাই আমাদের একান্ত প্রিয় লেখক লেখিকা দের,যাঁরা তাঁদের মননে ঋদ্ধ একটুকরো মানিক সম সৃষ্টি পাঠিয়েছেন অলীক পাতার এই মিলন প্রাঙ্গণে , আমাদের বিষয়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে।
বর্তমান সমাজের গায়ে লেগে থাকা নাছোড় শুকনো পাতাসম ক্ষতিকর জিনিষ হল আমাদের পচা মনোভাব, যা বার বার মাথাচাড়া দিচ্ছে, জাতপাতের লড়াই, শিশু ও মহিলাদের নিরাপত্তা হীনতার রূপ ধরে, আসুক কালবৈশাখী, উড়িয়ে নিয়ে যাক এদের, তখন যদি বলি শুভ নববর্ষ, সেটা সত্যি হবে তার আগে নয়।
"অলীক পাতার বাঙময় জগৎ " ধারক ও বাহক হোক সকলের মননের ও সুস্থ সৃষ্টির , আসুক সত্যি কারের নববর্ষ, এই আশা নিয়ে বিদায় নিচ্ছি, আবার দেখা হবে, ভালো থাকুন সৃষ্টিতে মাতুন.....
স্বরূপ চক্রবর্তী
১৪ই এপ্রিল,২০১৮
প্রবন্ধ-শম্পা সান্যাল
নববর্ষের নবীন অধ্যায়
সময়-সরণী ধরে নব বছর দুয়ারে আগত। সমাদরে স্বাগত
জানাতে প্রস্তুত মনও। আজ নতুন, কালের হাত ধরে বিদায় জানাবো তাকেও। নিঃশব্দে খসে পড়ে
সময়ের পাতা,
থাকে কিছু চাওয়া-পাওয়া আনন্দ-বেদনার রেখা।প্রকৃতিতেও অনুভূত
তারই ছোঁয়া-শুকনো পাতা ঝরে গিয়ে নবপল্লবে সুসজ্জিত সে ও। এটাই তো নিয়ম। প্রকৃতি
কোন্ আদিকাল থেকে নবরূপে নতুনের প্রতীক্ষায় রত। আমাদের পালাবদলের ইতিহাসের পাতায়
নতুন বছর আর কতদিনেরই বা। অঘ্রাণে নবান্নের পর পৌষের হাতছানি,বাসন্তির আগমনে, গাজনের গানে
গানে কেটে গেছে বছর, এসেছে নববর্ষ।
নববর্ষ। শুভকামনা বিনিময়ে হাসি আনন্দ প্রথম দিনকে
রাঙিয়ে দিয়ে যায় আর রম্যবীণায় ধ্বণিত হয় "ঐ মহামানব আসে "-সত্যি দিকে দিকে
রোমাঞ্চ লাগে। নকশি কাঁথার উল্টো দিকও যে আছে,ভীষণ ভাবে আছে, আছে মস্তবড়ো ক্ষুধার গহ্বর। সেখানে যে ঢোকে না নতুনের
ছন্দবীণা, প্রচন্ড জোরালো আওয়াজে বাজে- "আমি বাঁচতে চাই"-পুরোনো মেঠো সুরের আলিঙ্গন মুক্তি দেয়না, দেয়না দোলা, হৃদয়ে।
নববর্ষের নবীন অধ্যায় কি পারবে, সোনার কাঠির ছোঁয়ায় পারবে কি মুছে
দিতে সব হারানোর বেদনা, রিক্ততা, যত আছে গ্লানি !
কবিকে তো চাই-ই চাই। তাঁরই সাথে কন্ঠ মিলিয়ে বলে যাই,
প্রতিদিন তব গাথা গাব আমি সুমধুর-
তুমি দেহো মোরে কথা, তুমি দেহো মোরে সুর-
তুমি যদি থাক মনে বিকচ
কমলাসনে,
তুমি যদি কর প্রাণ তব প্রেমে পরিপূর,
প্রতিদিন তব গাথা গাব আমি সুমধুর।
তুমি শোন যদি গান আমার সমুখে থাকি,
সুধা যদি করে দান তোমার উদার আঁখি,
তুমি যদি দুখ'পরে
রাখ কর স্নেহভরে ,
তুমি যদি সুখ হতে দম্ভ করহ দূর,
প্রতিদিন তব গাথা গাব আমি সুমধুর।
আমার প্রার্থনা সবার জন্য, সবসময়।
সুস্থ সুন্দর সতেজ পরিবেশ সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে আসুক নব বর্ষ। আন্তরিক আবেদন সহ
বলি " শুভ নববর্ষ"।
গল্প-সান্ত্বনা দাস
নতুন ধারা গল্প
অলক ফিরে এসেছে দেশে তার বাড়িতে,বাড়ি না
ফ্ল্যাট। তার তো বাড়ি ছিল না, ভাড়া বাড়িতে থাকত। একটা দোতলা বাড়ির একতলার একটা ঘুপচি
ঘর। বাবা সাধারন একটা কাজ করতেন। অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া শিখিয়েছেন অলককে। তাই স্কলারশিপ পেয়ে অলক যখন বিদেশে পড়তে যাবার সুযোগ পেল,ধার দেনা
করে বাবাই পাঠালেন বিদেশে পড়তে।
দামী ফ্ল্যাটটা সাজাতে সাজাতে অলক ভাবতে থাকে।
এখানে বাবাকে কেউ দেখার নেই। তাই
তাঁকে রেখে এল এক বৃদ্ধাশ্রমে।ছোট বেলার কথা মনে পড়ে
অলকের। মা নেই বাবাই টিফিন গুছিয়ে দিতেন। জামা কাপড় পরিয়ে দিতেন, পড়তেও
বসাতেন।একদিন অলকের খুব জ্বর এল। সারা দিন সারা রাত অলকের মাথার কাছে বসে সেবা
করলেন বাবা। দুষ্টুমি করে বাবার জুতো লুকিয়ে রাখত অলক। মনে পড়ে মুচকি হাসল অলক রায়।
আজ সে প্রতিষ্ঠিত। বাবাকে নিয়ে আসবে নিজের কাছে ।উচ্চ মাইনের চাকরি নিয়ে দেশে
ফিরেছে অলক। ক'দিন পরেই তো নতুন বছর পড়বে। নতুন বছরের গোড়াতেই বাবাকে আনবে সে।
![]() | |
|
(ক'দিন পর)
নতুন বছরের প্রথম দিনেই বাবার কাছে গেল অলক।
"বাবা তোমার ছেলে তোমাকে নিতে এসেছে বাবা, বাড়ি চল"।বাবার দুহাত চেপে ধরল ছেলে। বাবা
সুমন্ত রায়ের দুচোখে জল। ছেলেকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞাসা করলেন "আমায় নিয়ে
যাবি খোকা?
"
অলক উত্তর দিল "হ্যাঁ বাবা ,তুমি ছাড়া
আমার বাড়ি অসম্পূর্ণ। চল বাবা, নতুন বছরে নতুন করে শুরু করি আমাদের জীবন ধারা।"
কবিতা-রবীন সাহানা
চৈতি
![]() |
Image Courtesy: Google |
বাজুক বীনা সুরের ধ্যানে
কন্ঠে ভরুক
আলোড়নে
কোমল পাতা ঝাঁকুক মাথা
কন্ঠ গাহুক
আপন মনে।
ঝলকে ওঠা
সকালবেলা
বজ্রনিনাদ সরল হাওয়ায়
ঢেউয়ের দোলা কঠিন হয়ে
আনুক তোমার আবেগ চিঠি।
স্নিগ্ধবতা শিখন সুরভ
সৃষ্টি
সুখের মাতোয়ারা।
সাঁঝের রসিক চা-ওয়ালার
কাঁপবে না
আর কাপের থালা।
গন্ধ ছড়াক
শিরিষ ফুলে ,
গন্ধ শুকি কাঁচা আমে।
চৈত্র মাসে
তালের রসে,
বক্ষ জুড়াক
নিমেষ পানে।
কচি ছেলে গাছের ডালে
লাফ মারে সে
খাদের জলে।
থাকবে কী তার লজ্জা শরম !
করবে দুফাল
ঠান্ডা জলে।
কুলকুরানী কোকিল মণি
গাইছে
প্রেমের অভূত বাণী গাইছে কী সে আগমনী ?
দুপুর রোদে ঝোপের আড়ে।
এলো যে ডাক
চড়ক পূজার
এলো গো ডাক শিব গাজনের ,
বাঁধব মরাই
গম আর বোরোয়
সোনালী এই চৈতের দিনে।
কবিতা- সৌমেন্দ্র দত্ত ভৌমিক
নতুন পোষাকে
![]() |
Image Courtesy: Google |
পোষাকের বদলে নতুন পোষাক!
জীর্ণ পুরাতন যাক্ ধুয়ে যাক্
চেতনার নবীন রামধনুতে।
অতীতের দুস্মৃতি দুর্মতি এখনো
যেন ভয়াল হানাদার।
চুরি-রাহাজানি-ডাকাতি-ধর্ষণ
ইত্যাদি ইত্যাদির এবার
হোক্ না বন্ধ তুমুল বর্ষণ!
হাঁপ ছেড়ে বাঁচি আমরা,
হাঁপ ছেড়ে বাঁচুক সভ্যতা-
দখিন-দুয়ার হাট রাখি খুলে
মান আর হুঁশের উত্তরণে।
নবীন বছরটি যাক্ না ভরে
আলোকে-আলোকে আলোর বন্যায় !
আরো আরো মুক্ত নিঃশ্বাসে-প্রশ্বাসে
পরিধান হোক্ আরো ঝলমল !
পোষাকের বদলে সত্যি যেন নতুন পোষাক!
Subscribe to:
Posts (Atom)