দুঃস্বপ্ন
রাত বারোটার পর শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা সে নিয়েই ফেলল-
না আর নয়, অনেক হয়েছে , অণু তার মেয়ের মত, তবু তাকে ছাড়া বাঁচবে না সে
বিচার বুদ্ধি হারিয়ে এত ভালবেসে ফেলেছে।
রাত এখন গভীর। কুকুরগুলো ডাকতে ডাকতে ঝিমিয়ে পড়েছে - হয়তো ঘুমিয়েও পড়ছে,জেগে নেই কেউ।
ফ্যান থেকে ফাঁসটা ঝুলিয়ে গলায় পরানোই আছে, শুধু টুলটা একটু পা দিয়ে ঠেলে দিলেই হল।
এত ভালবেসেছে অণুকে এখন তার মরণ ছাড়া আর কোন গতি নেই।
কৃষ্ণও তো রাধাকে ভালবেসে ছিল।
রাধা সম্পর্কে কৃষ্ণের মামী হত, আর বয়সের ব্যবধানও তাদের মধ্যে খুব একটা কম
ছিল না; তাদের প্রেম
নিয়ে কত অমর কাব্য লেখা হয়েছে যুগে যুগে, তাদেরটা ছিল লীলা ! আর আমি মেয়ের বয়সী কারও সাথে প্রেম করলে সেটা
হয়ে যায় বিলা!
মনে মনে ভাবল
সে-কি বিচার এই
পঙ্গু সমাজের।
টুলটা পায়ের ধাক্কায় ঠেলে দেবে এমন সময় আচমকা ঘরে ঢুকল কে যেন। চমকে উঠল সে,
_ কে ?
_ আমি তোমার বিবেক
_ কি চাই তোমার ? কেন এসেছো ?
_ তোমাকে সাহায্য করতে
_ কি ভাবে ?
_ টুলটা আমি সরিয়ে নিচ্ছি
_ না না না
সে চেঁচিয়ে উঠল -" অণু আমাকে এবারের মত বাঁচাও... বাঁচাও প্লীজ ..."
কেউ তোমাকে বাঁচাতে পারবে না,অণু গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, কাল সকালে উঠে খবরটা শুনবে কিম্বা খবরের কাগজের হেড লাইনে দেখবে।
"একটি আত্মহত্যা আর অনেক জল্পনা ".........
আঁতকে উঠল সে | হঠাত্ তার
ঘুমটা ভেঙে গেল ,গলা শুকিয়ে কাঠ।
সারা শরীর
ঘামে ভিজে গেছে |
জীবনে বাঁচার যে এত স্বাদ,সে আর আগে কখনো টের পায়নি,
সারারাত সে আর ঘুমতে পারল না -আবার যদি দুঃস্বপ্নটা ফিরে এসে তাকে সত্যি
করে তোলে.........।
No comments:
Post a Comment
Please put your comment here about this post