কল্পলোক
অবন্তিকা নগরীর রাস্তায় প্রভাতশীতের
ঘন কুয়াশার চাদর। প্রভাতী সূর্যের হালকা রঙচ্ছটা প্রকৃতির বুকে প্রবেশাধিকার
পাওয়ার জন্য কুয়াশার আচ্ছাদনের ফাঁক দিয়ে অল্প উঁকি দিচ্ছে। পথে এক সুতনুকার
নূপুরের নিক্কণ ছন্দে ছন্দে ধ্বনিত হচ্ছে। সুতনুকা আর কেউ নয়, কমলিকা, অবন্তিকা
নগরীর রাজকন্যা। ফুল সংগ্রহে বেরিয়েছে কন্যা। শীত কুসুমের মালা গেঁথে পরিয়ে দেবে
তার প্রিয়র কণ্ঠে। হাত ধরে ঘুরে বেড়াবে দু'জনে বনবিথীকায়। গান শুনবে দূর দেশ থেকে উড়ে
আসা পক্ষীকুলের। শিশির বিন্দুরা রাজকুমারীর আঙুলের ডগা ছুঁয়ে ঝরে পড়ছে মাটিতে।
কুহেলীর হালকা আচ্ছাদনের মাঝে খুঁজে নিচ্ছে ফুটন্ত গাঁদা, ডালিয়া আর হরেকরকম ফুল। রাজকন্যার সখী
লবঙ্গলতা, চপলা
এবং বাকপটু। রাজকন্যার কেশদামের উপর বিন্দু বিন্দু শিশির সযত্নে হাত দিয়ে ঝেড়ে
ফেলে দিয়ে সহাস্যে বললে "সখী, প্রভাত
সূর্যের আলো তোমার চিবুক স্পর্শ করেছে, মোহময়ী হয়ে উঠেছ তুমি। হলুদ ডালিয়ারা তোমার স্পর্শ পাওয়ার
জন্য শিশিরে সিক্ত হয়ে তোমার দিকে তাকিয়ে আছে। এই মূহুর্তে কোন রাজপুত্রের ধ্যানে
তুমি মগ্না? শোনা
গেছে সৌন্ধব রাজপুত্র নাকি শিকারের আশায় এই বনেই নাকি প্রবেশ করেছেন। "
কমলিকা
স্মিত হেসে পুষ্প চয়ন করতে লাগলেন। কানে এল কোন রাজপুত্রের ঘোড়ার পায়ের শব্দ।
সূর্যদেব আড়মোড়া ভেঙ্গে ধীরে ধীরে প্রকাশিত বলেন। দূরে পাহাড়ের চূড়ায় শুভ্র
বরফ রৌদ্রের স্পর্শে রূপালী হয়ে উঠল। ঠিক সেই সময় শীতল ঝর্নার জল লাফিয়ে উঠে
কমলিকার কপোল ও ভালে ছড়িয়ে পড়ল। চমকে উঠল কমলিকা। সখী
লবঙ্গ জলের ছিটে দিয়েছে কপালে,বলে
"কিরে ফুল তুলতে এসে ঘুমিয়ে পড়লি নাকি? তাড়াতাড়ি চল, আজকে হাটবার দোপাটি গুলো শুকিয়ে
যাবে।"অলস পায়ে কমলিকা উঠল। ফুলের ঝুড়ি মাখায় নিয়ে হাঁটল হাটের পথে। মনে মনে
বলল" আমাদের স্বপ্নও দেখতে নেই। "
No comments:
Post a Comment
Please put your comment here about this post