অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Monday, December 24, 2018

গল্প-মলয়েন্দু মজুমদার


ইচ্ছে জ্বর



ছবিঃ লেখক


পিসি ও পিসেমশাই ভ্রাতৃ দ্বিতীয়ার দু-দিন পরেই বাড়ি চলে গেলেন। এবারের পূজার ছুটি বেশ ভালো কাটল অনিকদেরপিসিরা চলে যাওয়ার আগের দিন রাতে ইমনের জ্বর হ’ল, বেশ ভালই জ্বর। যাইহোক, সব শেষে এবার পড়ার পালা কারন দুদিন পরেই বিদ্যালয়ে যেতে হবে, পূজার ছুটি শেষ বর্তমানে বিদ্যালয়ে পূজার ছুটি চলছে, ছুটি বাড়ির পড়া থেকেও। দুর্গা পূজা, লক্ষ্মী পূজা শেষ, এখনও বইতে হাত দেওয়া হয়ে ওঠেনি। শ্যামা পূজা, ভ্রাতৃ দ্বিতীয়াও শেষ।

শ্যামাপূজার দিন রমানাথ সপরিবারে দক্ষিনেশ্বর যাওয়া স্থির করে। সকাল সাড়ে  তিনটের সময় ঘুম থেকে উঠেই স্নান করে দক্ষিনেশ্বর উদ্দেশ্যে যাত্রা করে রমানাথরা। এতো সকালে বেশ শীত অনুভূত হচ্ছিলপ্রায় সূর্যোদয়ের আগেই দক্ষিনেশ্বর পৌঁছে যায় সকলেএকদিন আগেই দক্ষিনেশ্বরের স্কাই ওয়াকের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনও স্কাই ওয়াকের প্রবেশ দ্বার খুলে দেওয়া হয়নি। রমানাথরা যখন দক্ষিনেশ্বরের সিংহদ্বারের নিকট পৌঁছায় তখনই স্কাই ওয়াকের প্রবেশ দ্বার খোলা শুরু হয়। পূজার উপকরণ সহ রমানাথ ও তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র ইমন গঙ্গার ঘাটের দিকে যায়। রমানাথের স্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ পুত্র, বসুধা ও অনিক, মন্দিরের প্রধান প্রবেশ দ্বারের দিকে চলে যায়। রমানাথ ও তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র গঙ্গার জল মাথায় স্পর্শ করে মন্দিরে প্রবেশ করে। মন্দির প্রাঙ্গণে দীর্ঘ সারিতে বসুধা ও অনিক তখনও দাঁড়িয়েপ্রভাতী পূজার আরতি হচ্ছে। আরতি শেষে মা ভবানীর দর্শন করা যাবে।


রমানাথ ও ইমন প্রভাতী পূজার আরতি দেখতে যায়। আরতি দেখে ফেরার পথে তাঁরা নতুন একটি সারিতে দাঁড়িয়ে পড়ে। রমানাথ, বসুধা ও অনিককে ডেকে নিয়ে আসে। অতঃপর বসুধা ও অনিক প্রভাতী পূজার আরতি দেখতে যায়। স্নিগ্ধ শান্ত পরিবেশে প্রভাতী পূজার আরতি, কাঁসর, ঘণ্টা ও অন্যন্য বাদ্যযন্ত্রের ধ্বনি মুখরিত হতে থাকে আকাশ-বাতাস  'এবিপি আনন্দ' যথারীতি হাজির তাদের দলবল নিয়ে। আরতি শেষে দর্শনার্থীদের পূজার সারি এগিয়ে যেতে লাগল মা ভবানীর পূজা ও দর্শনের নিমিত্তে।  খুব তাড়াতাড়ি পূজা সমাপন করে রমানাথরা স্কাইওয়াকে উঠল বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে। যথারীতি সকাল আট-টার মধ্যে বাড়ি পৌছে গেল। অনিকের ভাবগতিক বলছিল, স্কাইওয়াক তাঁর বিশেষ পছন্দ হয়নি। খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরাও একটা কারন হতে পারে। বাড়ি ফিরেইতো একই কথা। বিশ্রাম নিয়ে তাড়াতাড়ি পড়তে বসতে হবে।


বাড়িতে এসেই অনিক জ্বর অনুভব করতে লাগল। যথারীতি প্যারাসিটামল খেয়ে দুদিনেই অনেক সুস্থ হয়ে ওঠে অনিক। একটু কালী প্রতিমা দর্শন না করলে মনটা অপূর্ণই থেকে যায় তাই কাছাকাছি কিছু কালী প্রতিমা দর্শনও হয়েছে। পড়ার কথায় কেমন যেন জ্বর জ্বর লাগছে। ভ্রাতৃ দ্বিতীয়ায় আগেরদিন বড় পিসি ও পিসেমশাই এলেন।  সবাই মিলে অনেক রাত পর্যন্ত কালী প্রতিমা দর্শন হ’ল। ভ্রাতৃ দ্বিতীয়ার দিন অনেক খাওয়া দাওয়া, মজা হ’ল।

যাইহোক, উৎসবের আনন্দের শেষ, এবার পড়ার পালা কারন আগামীকাল থেকে বিদ্যালয় যেতে হবে, পূজার ছুটি শেষবিদ্যালয়ে পূজার ছুটি, ছুটি বাড়ির পড়া থেকেও। আজ পড়তে বসতেই হবে।  পিসি ও পিসেমশাই চলে যাওয়ার আগের দিন থেকে ছোট ভাই ইমনের জ্বর। তাই তাঁকে জোর করা যায় না। অনিকের ভীষন মন খারাপ কারন তার জ্বর কেন আগে আগেই চলে গেল। ভাই -এর বেশ মজা, মোক্ষম সময়ে জ্বর হ’ল। “ইস্‌ কয়েকটা দিন পরে জ্বর হলে আমিও ভাই-এর মতো কিছুদিনের জন্য পড়াশুনা থেকে মুক্তি পেতাম। ভাল লাগেনা, আমার ক্ষেত্রে কেন যে এমন হয়?” বলতে থাকে অনিক। বসুধা জানিয়ে দিল “ কাল ইমন বিদ্যালয়ে যেতে পারবে না কিন্তু অনিককে যেতে হবে। তাই সে যেন সব পড়া শেষ করে নেয়।“ যত দোষ ঐ জ্বরের। রাগে ও দুঃক্ষে চোখ ফেটে জল বেড়িয়ে আসতে চাইছে। কয়েকটা দিন বিলম্বে এলে অনিকও ভাই, ইমনের মতোই শুয়ে থাকতে পারত ক-টা দিন।  অনিকের এখন খুব জ্বরের ইচ্ছে হচ্ছে, যেমন অন্যদের খাবার খাওয়ার ইচ্ছে হয়, ঘুরতে যেতে ইচ্ছে হয় কিংবা ঘুমানোর ইচ্ছা হয়





ছবিঃলেখক  
পত্রসজ্জাঃস্বরূপ চক্রবর্তী

















No comments:

Post a Comment

Please put your comment here about this post

Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান