মা
মলয়েন্দু মজুমদার
ছবিঃ লেখক |
মাগো, আজ তুমি নেই ঘরে
তোমায় ভীষণ মনে পড়ে।
ছোটবেলায় স্কুল থেকে ফিরে
কিংবা দুপুর বেলায় ঘুম থেকে উঠে
সব ঘর খুঁজে যখন দেখি রান্না ঘরের দরজাটিকে খোলা,
ছুট্টে গিয়ে পুকুর পাড় দিয়ে
মাগো, তোমায় খুঁজতে যাওয়া।
অবশেষে, আম-কাঁঠাল-তেঁতুল-চালতে-কুল-নারকেলের
বাগান পেরিয়ে কুণ্ডদের বাড়িতে
তোমায় খুঁজে পাওয়া।
মাগো, আজ তুমি নেই ঘরে
তোমায় ভীষণ মনে পড়ে।।
মাগো, ভীষণ মনে পড়ে
সেই যে, বাড়ি ভর্তি নানান পশু-পাখি,
তোমার হাতেই ওদের প্রতিপালন ।
পোরল, কাঁকরোল, শিম,
বাতাবি, নারকেল, তাল –
সব্জি কিংবা ফল
সংসারেতে তোমার হাতেই সকল আদান-প্রদান।
শীতের সকাল খেজুর রসের হাঁড়ি
শিউলি আনে উঠোনেতে ভারি,
দশ নম্বর কড়াই ও খেজুর গুড়ের স্থিতি
সর্বত্রই ছিল তোমার উপস্থিতি।
কতরকম পিঠে – পুলি মাগো,
নিজের হাতে তৈরী করতে তুমি।
নিজের হাতেই মাটির ছাঁচ গড়ে
সেই ছাঁচেতেই সাজের পিঠে করা।
মাগো, আজ তুমি নেই যে কাছে
তোমায় ভীষণ মনে পড়ে।
চৈত্র মাসের শেষে মহেন্দ্র সাহার বাড়ি,
ঢেকিতে খই-এর ছাতু ধামা – টিন করি।
চৈত্র সংক্রান্তির সকালে স্নান করে তাই,
তবেই ছাতু, মুড়ি, চিঁড়ে, দই - মাখা খাওয়া চাই।
বলতো সবাই, তোমার হাতের রান্না ছিল খাসা,
ঝাল পোলাও-এর স্মৃতি আজও ভীষণ তাজা।
মনে পড়ে মাগো, তোমার কাছেই বায়না ধরা,
তোমার সাথেই প্রথম মনিমালায় যাওয়া।
যখন আমি বাড়ি থেকে দূরে, চাকরি সূত্রে ভিন প্রদেশে
থাকি,
তখন তোমার স্নেহ মাখা নাড়ু, তোমার কথাই মনে পড়ায়
নাকি !
মাগো, আজ তুমি নেই যে ঘরে
তোমায় ভীষণ
মনে পড়ে।
No comments:
Post a Comment
Please put your comment here about this post