রজনীগন্ধা
শুভদীপ ঘোষ
রজনীগন্ধা
শুভদীপ ঘোষ
শুভদীপ ঘোষ
আজ দুপুরটা ভীষণ ক্লান্ত,আমি খুব নীরব
ওই নীল আকাশের তীরে আমি এক স্বচ্ছ আলো দেখেছি-
কবিতার মত তার স্রোত,সরলতা।
কেমন ব্যাকুল কণ্ঠে আহ্বান দিচ্ছে আমায়;
আমি কি ছুটে যাব তার কাছে? বিম্বের ন্যায় হারিয়ে যাব
অতল গভীরে!
ওইযে ঐদিক থেকে কারা যেন সাদা বর্ণের কিসব নিয়ে আসছে,
কি মধুর তার সুবাস কিন্তু সেই সুবাসে এত নীরবতা কেন-
সেই সুবাস কেন আমার মনের মুকুরে উপচে পড়ছে না?
আচ্ছা চারিদিক এত স্থির হয়ে গেল কেন,পৃথিবী কি
তাহলে -
ওকি ওরা কাঁদছে কেন? সাদা বস্তু মানে তো আমি
শান্তি জানতাম।
আচ্ছা শান্তি মানেই কি গভীর কোনো মনস্তাপ!
এইভাবে সব কিছু গুলিয়ে যাচ্ছে কেন আজ,
কই বাইরে তো ঝলমলে রৌদ্র,পাশের বাড়ির নিমগাছে এখনো
কাকটা গান গেয়ে চলেছে-
তবে?
না এখন তো দুপুর আর সূর্য এখন পশ্চিমদিকেই।
প্রকৃতি তো তার অটল আবহে চলমান।
তবে কি মানুষ গুলোর মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটল!
ওদের নয়ন অশ্রুসজ্জিত কেন? এই অশ্রু দিয়ে কিসের বাণী
শোনাতে চায় ওরা।
ওকি ওটা কে নিদ্রারত! কি নিশ্চল, অটুট
বিশ্বাস আর ভালবাসায় ভরা সেই নিদ্রা;
যেন পরম আদরে, পরম সুখে কেউ তাকিয়ে নিদ্রায়
ঠেলে দিয়েছে,
হাজার আঘাতে, হাজার গর্জনে, হাজার গোলাপের কাঁটা ফুটিয়েও সেই নিদ্রাভঙ্গ করা যাবে না।
একি ওরা কি করছে!অমন সুন্দর নিদ্রারত বদনটির ওপর সাদা রঙের
বস্তু গুলি চাপিয়ে দিচ্ছে;
কি আনন্দ পাবে ওরা এই পরম নিদ্রা ভঙ্গ করে?
আচ্ছা ওরা কি নিদ্রা ভঙ্গ করতেই এসেছে নাকি আরো অসীম, শ্লথ এক
নিদ্রার দিকে পাঠাতে চাইছে।
এবার ওরা সেই অম্লান দেহটিকে কাঁধে নিয়েছে-কোথায় নিয়ে
যাচ্ছে ওকে?
চারিদিকের এমন মিষ্টি সুবাসের মধ্যে কি এমন নীরবতা, এমন বক্ষ
ফাটা ক্রন্দন শোভা পায়?
এইবার আস্তে আস্তে আমার চরণ দুটি ওপরের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
ঐতো দেখা যাচ্ছে কবিতাদের-হ্যাঁ ঠিক দেখছি আমি,
কেমন আকুল কণ্ঠে ডাকছে আমাকে,কেমন শীতল স্রোতে হিম করে
দিচ্ছে আমার ললাট, বদন।
আমিও এগিয়ে চলেছি কিন্তু আমি তো যেতে চাই না!
আমি কবিতাদের চাই, অসীমে ধাবিত হতে চাই না।
একি আমি যে কিছুতেই আর ফিরতে পারছি না,আমার হাত
পা হাল্কা হয়ে এসেছে।
কবিতারা আরো কাছে এসে পড়েছে, হ্যাঁ এইবার ধরে ফেলব ওদের,কিন্তু-
সেই নিদ্রারত অমোঘ দেহখানি নিয়ে ওরা যে এগিয়েই চলেছে, না সেই
নিদ্রাতে কিঞ্চিত পরিমান ব্যাঘাত ঘটে নি;
ওইযে ঐযে আবার সেই মিষ্টি সুবাস, হ্যাঁ
কবিতাদের হাতেও সেই সাদা বস্তু দেখা যাচ্ছে!
না আমি অমন মিষ্টি শান্তি চাই না,আমি তো
চঞ্চল, সচল, যৌবন এর এক অংশান;
কিছুতেই পালাতে পারছি না আমি,আমার চরণ দুটি আর বশে নেই-
ওইযে নীচে ওই সাদা বস্তু গুলির ফাঁক দিয়ে এখন সেই অমোঘ
বদনটা ফুটে উঠছে।
কিছু মুহূর্তের অবকাশেই সেই ক্রন্দনরত,শান্ত
মানুষগুলির ওষ্ঠ থেকে একটা বুলি বেরিয়ে আসছে।
একি!এ যে আমার নিজের শরীর,সেই কৈশোর
থেকে বহু যত্নে গড়ে তোলা নিথর দেহ।
তাহলে কি আমি-
খুব কাছে এসে পড়েছি কবিতাদের-ঐতো ওদের হাতেও সেই সাদা বস্তু
দেখা যাচ্ছে;
No comments:
Post a Comment
Please put your comment here about this post