অর্হৎ
সিলভিয়া ঘোষ
সঙ্ঘের
আর পাঁচটা কক্ষের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় যে অনুভূতি হয় সে অনুভূতি সম্পূর্ণ বদলে যায় এই বিশেষ কক্ষটির পাশ দিয়ে যেতে যেতে। একথা গত পাঁচ বছর ধরে লক্ষ্য করেছেন আনন্দ। তিনি আরও লক্ষ্য করেছেন শুধু মাত্র তাঁর এমনটা হয় তা নয় পুরো সঙ্ঘের সকল সদস্যদের মধ্যেই এধরণের অনুভব সৃষ্টি হয় একথা হাবে ভাবে সকল স্তরের সদস্যদের কাছ থেকেই তিনি শুনেছেন।
কক্ষটি
মূল সভা গৃহের ঠিক বাম পাশে অবস্থিত। তার ঠিক উল্টো দিকের কক্ষটি অমিতাভর। এই কক্ষ থেকে নির্গত ধূপ ধূনার ধুম্র ও অসংখ্য বেল, জুঁই , চাপা ইত্যাদি ফুলের সুগন্ধি মিষ্ট বাতাস ধাক্কা খায় অমিতাভর কক্ষে। তাঁকেও যেন এই সুগন্ধি স্পর্শ করে থাকে বা বলা যায় ঘিরে থাকে এক অদৃশ্য রক্ষা কবচ হিসেবে একথা বুদ্ধ নিজে মুখে না বললেও আনন্দ আড়াল থেকে এর সবটা অনুধাবন করেছেন। মনে মনে তিনিও সঙ্ঘের বয়ঃজ্যেষ্ঠা সদস্যা কে একবার অকপট প্রণাম জানিয়ে দেন। আনন্দ বুঝতে পারতেন সঙ্ঘ আর কিছু দিনের মধ্যেই একটি অতি আশ্চর্য জিনিষের অবগুণ্ঠন মুক্ত হতে দেখবে।
ভরা
সভাগৃহে গৌতম এসে বসেছেন। একে একে জমায়েত হয়েছেন সঙ্ঘের বাকী সদস্যরা। আজ গৌতম একটা অন্য ধারার গল্প বলে শিক্ষা দেবেন ঠিক করেছেন। সেই মতো সভা তৈরি হয়েছে। কিন্তু সভা শুরুর সাথে সাথে প্রত্যেকের নাকে আসতে থাকে ঠিক সেই কক্ষের ভিতর থেকে আসা সুগন্ধি।
অমিতাভ
তার নিমীলিত আঁখি খুলে চেয়ে দেখেন সামনে এসে দাঁড়িয়ে প্রধানা ভিক্ষুণী বদ্দকাচনা।
প্রধানা
ভিক্ষুণী জীবনের থেকে অবসর নিতে চান। নির্বাণ পেতে চান । অমিতাভ জানেন আটাত্তর বছরের বর্ষীয়ান প্রধানা ভিক্ষুণী বদ্দকাচন্না যে জ্ঞান এই ক বছরে পেয়েছেন তা
তাঁর সঙ্ঘের আর মাত্র তিনজন জানেন। তাঁকে তো কোনদিন সকলের সামনে এমন ভাবে আসতে দেখেন নি। আজ যখন ভরা সভায় তাঁকে পেয়েছেন তখন তাঁর লব্ধ জ্ঞানের একটা পরীক্ষা নিলে কেমন হয়। সঙ্ঘ জানুক ভিক্ষুণী বদ্দকাচন্না কেমন তপস্বী। ভরা সভায় অমিতাভ তাঁকে আদেশ দিলেন তাঁর কঠিন তপস্বায় লব্ধ জ্ঞানের কিছু তুলে ধরতে।
ভিক্ষুণী
বদ্দকাচন্না তার আটাত্তর বছরের শরীরের মাটির ভাগ কে বদলে দিলেন জলে আর শরীরের বায়বীয় ভাগ কে বদলে দিলেন তেজে। এই সমগ্র ক্রিয়া কলাপ টি করতে যে পরিমাণ শক্তি ও একাগ্রতার প্রয়োজন তা ঐ বৃদ্ধার
শরীরে তখনও বর্তমান। এর পর বুদ্ধের একটি অনুরোধে বদ্দকাচনা অতীতের সাত জন্মের জাতিষ্মরের গল্প শোনালেন সঙ্ঘের সকল সদস্য কে। আবার সঙ্ঘের কারোর কারোর জীবনে সুদূর ভবিষ্যতের কথা তিনি বলে দিলেন এক নিমেষে। সঙ্ঘ এটিও জানলো ভিক্ষুণী বদ্দকাচন্না পূর্ব জন্মে ছিলেন সুমিধা ব্রাহ্মণী যিনি পরবর্তী জন্মে বুদ্ধের তথা সিদ্ধার্থের স্ত্রী যশোধরা। সাত জন্ম ধরে তিনিই বুদ্ধের সঙ্গনী নির্লিপ্ত, নীরব, নিভৃতে থাকা তপস্বী অর্হৎ যশোধরা ।
কাল্পনিক
পরিবেশে তৈরি একটি ঐতিহাসিক কাহিনী
তথ্য
সূত্রঃ মহুয়া ব্যানার্জী
ভালো লাগলো গো কাকিমা।
ReplyDelete-সৌরভ।