অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Wednesday, October 2, 2019

অল্প-স্বল্প-গল্প- দুটি গল্প-পিনাকী মুখোপাধ্যায়



অল্প কথার দুটি গল্প

 প্রথম গল্প- ব্লাইন্ড লেনের ওপারে
পিনাকী মুখোপাধ্যায়

Image Courtesy: Google Image Gallery


              এক একটা দিন থাকে না যেদিন রোদ্দুরের রং টা একদম অন্যরকম হয়,  আকাশে এক টুকরোও মেঘ থাকে না আর সকাল থেকেই হিম হিম একটা হওয়া বয়, আজকের দিনটা তেমনি । খুব ভালো লাগছিল হাঁটতে ।
               যে রাস্তাটা ধরে হাঁটছি সেটা একটা ব্লাইন্ড লেন । লেনটার মাঝামাঝি এসে ব্যাক করতে গিয়েও থমকে গেলাম ।
                রাস্তাটার  শেষ মাথায় দুমানুষ উঁচু প্রাচীর আগেও দেখেছি । ওধারে এলাকার সবচেয়ে বড় ময়দান । ফুটবল, ক্রিকেট ম্যাচ থেকে শুরু করে সার্কাস, জলসা, মেলা সবকিছুই হয় সেখানে ।
                যেটা আগে কোনোদিন নজরে পড়েনি সেটা হল উঁচু প্রাচীরটার নিচে বুক  সমান উঁচু ভাঙা  পাঁচিলটা । শেষ মাথার  দুদিকের দুটো বাড়ির বাউন্ডারি ওয়ালের সঙ্গে যুক্ত পাঁচিলটা । ফাঁকা অংশটা দিয়ে অনায়াসে ওদিকে যাওয়া যায় ।
                কী মনে হতে পায়ে পায়ে এসে ফাঁকা জায়গাটা দিয়ে মুখ বাড়ালাম । অবাক তারপরেই । দুটো পাঁচিলের মাঝখানে দিব্যি একটা পায়ে চলা পথ । একদিকে উঁচু প্রাচীরটা, অন্যদিকে একটা সংকীর্ণ খাল । খালের পাড় ঘেঁষে বড় বড় গাছের সারি । কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, আর জারুলেরই আধিক্য । থোকা থোকা লাল, হলুদ আর বেগুনি ফুলে ঝলমলে হয়ে আছে রাস্তাটা ।
               আন্দাজ করলাম পথটা নিশ্চই গিয়ে বাইপাসে পড়েছে । সন্দেহ নিরসন করতে হাঁটা লাগলাম সদ্য আবিষ্কৃত পথটা ধরে ।
                অনেক্ষন বাদে মনে হল রাস্তাটা বেশ লম্বা । হাঁপ ধরে গেছে হাঁটতে হাঁটতে । রোদের সেই নরম উত্তাপ এখন আর তত কোমল নয় । কপাল জুড়ে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে উঠেছে । আবিষ্কারের আনন্দে ভাঁটা পড়েছে ততক্ষনে।
                  উল্টোদিকে ফেরার পথ ধরলাম ।
                 
                   রোদের রং গাঢ় থেকে গাঢ়তর হয়ে ক্রমে ফিকে হতে হতে মুছে গেল কখন ... তারপর কতবার সূর্য উঠল ... ডুবল ... কিন্তু সেই ভাঙা পাঁচিলটা কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছি না ...



দ্বিতীয় গল্প-  আরো একটি ঘটনা

Image Courtesy: Google Image Gallery

               অফিস থেকে বেরতে অনেক রাত হয়ে গেল । সৌভাগ্যক্রমে রাস্তায় এসে দাঁড়াতেই পেয়ে গেলাম ট্যাক্সিটা ।
                পিছনের সিটে ক্লান্ত শরীরটা এলিয়ে দিলাম । ড্রাইভারের সিটের পিছনে লেখা ট্যাক্সির নম্বরটা চোখে পড়তেই একটা হিম স্রোত নেমে গেল মেরুদন্ড বেয়ে ।
                 আজ অফ ডে থাকায় বেলা করে উঠেছিলাম । চা নিয়ে সোফায় আরাম করে বসে কাগজ টা খুলতেই চোখ টেনেছিল ছবি সহ খবরটা । ছবিতে ট্যাক্সির পিছনের নেম প্লেটটা স্পষ্ট । তার পাশে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে বদখত চেহারার একটা লোক । খবরটা এইরকম-
                 ' রাতের কলকাতায় আবার আক্রান্ত তরুণী । অপরাধী ট্যাক্সিচালকের ... '
                  ঠিক তখনই বসের ফোনটা এসেছিল । গুরুত্বপূর্ন কাজে তাকে হেড কোয়ার্টার লিভ করতে হচ্ছে । আমাকে অনুরোধ করেছিলেন আমি যদি আজকের অফটা অন্য দিন নিই । অনুরোধ আসলে আদেশরই  নামান্তর ।
                  কাগজ পড়া মাথায় উঠেছিল । ছবিতে  ট্যাক্সির নম্বরটায় চোখ বুলিয়ে উঠে পড়েছিলাম ।
                  সারাদিন ফাইল, মিটিং, প্রজেক্টের ভিড়ে মাথা থেকে সম্পূর্ণ বেরিয়ে গিয়েছিল ব্যাপারটা । ভেবে পেলাম না লোকটা আজই ছাড়া পেল কি করে ! আমার হাত, পা ঠান্ডা হয়ে এল ।
                   আমি চিৎকার করে গাড়ি থামাতে বললাম । কিন্তু শুধু একটা গোঙানি বেরিয়ে এল মুখ দিয়ে ।
                  লোকটা মুখ ফেরাল । লোভ ঝিকিয়ে উঠল ওর লালচে চোখে । আলো আঁধারিতে ভয়ঙ্কর দেখাল ওর বদখত মুখটা ।
                 গাড়িটা অবধারিত ভাবে থেমে গেছে । এগিয়ে আসছে লোকটা ... এগিয়ে আসছে ওর নোংরা হাতদুটো । থর থর করে কাঁপছে আমার গোটা শরীর ... কাঠ হয়ে আসা গলা থেকে একটা শব্দও বের করতে পারলাম না ...

                 কোথায় পড়ে আছি আমি ? খোলা আকাশের নিচে কি ? বৃষ্টির ফোঁটায় চোখ মেলে দেখলাম যোসেফ ঝুঁকে আছে আমার মুখের ওপর ।নার্সের পোশাক পড়া একটি মেয়ে জল ছিটোচ্ছিল আমার মুখে ।
                 দুহাতে যোসেফের গলা আঁকড়ে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললাম ।
                 পরে শুনলাম  প্রচন্ড ভয়ে আমি নাকি অজ্ঞান হয়ে যাই ট্যাক্সিতে । ড্রাইভার ছেলেটি আমাকে নার্সিংহোমে নিয়ে আসে । আমার ফোন থেকে নম্বর নিয়ে তারপর ফোন করে আমার স্বামী  যোসেফকে ।

                 ওই ছেলেটার ট্যাক্সিতেই ফিরেছি । যোসেফ ওকে ড্রইংয়ে বসিয়েছে। আমি ভেতরের ঘরে এসে রুদ্ধশ্বাসে পড়ছি সকালের সেই খবরটা ।
                 ' রাতের কলকাতায় আবার আক্রান্ত তরুণী । অপরাধী ট্যাক্সিচালকের তৎপরতায় ধৃত ... শেয়ারের ট্যাক্সিতে ডালহৌসি থেকে নাকতলা যাবার পথে সহযাত্রীর দ্বারা আক্রান্ত হন এক তরুণী । যুবক ট্যাক্সিচালক সুকৌশলে ট্যাক্সি ঢুকিয়ে দেন ভবানীপুর থানায় ... সৎ ও সাহসী যুবকটিকে পুরস্কৃত করার কথা ভাবছে পুলিশ ... '
                  অক্ষরগুলো লেপে পুছে যাচ্ছে আমার চোখে । সেখানে স্পষ্ট হচ্ছে একটা বদখত মুখ ... আমার যীশুর সঙ্গে আশ্চর্য মিল মুখটার ... ।


।। সমাপ্ত ।।



| Aleekpatamagazine.blogspot.in |
  | Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
|ALEEK PATA-The Expressive World |Online Magazine |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |
|Special Puja Issue,2019 | September-October, 2019 |
| Third Year Third Issue |20Th Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |



















No comments:

Post a Comment

Please put your comment here about this post

Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান