অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Wednesday, October 2, 2019

অণুগল্প-আগমনী -বনবীথি পাত্র


আগমনী

বনবীথি পাত্র
Image Courtesy: Google


জগার দেখা মেলেনি রাজপুর গ্রামে । সারাবছর যেখানেই থাকুক,এই সময়টা এ গাঁয়ে আসতে তো সে ভোলে না । জগার বাবা মানিক পাল ছিল এ গাঁয়ের নামকরা প্রতিমা শিল্পী । আশপাশের দশ গাঁয়ে তার নাম ছিল ,এমনকি কলকাতা থেকে ডাক আসতো মূর্তি গড়ার কাজে । নিষ্প্রাণ মাটি যেন জীবন্ত হয়ে উঠতো মানিকের হাতের ছোঁয়ায় । বেচারা কদিনের জ্বরে অকালে প্রাণটা হারালো । জগা তখন মাতৃগর্ভে,বাপকে সে চোখেও দেখেনি । কিন্তু বাপ বোধহয় তার শিল্পীসত্তাটা রেখে গেছিল সন্তানের মধ্যে । শিশুকাল থেকেই মাটির সাথে তার সখ্যতা । হয়ত সেও তার বাপের মতই শিল্পী হতো যদি একটা সুস্থ স্বাভাবিক জীবন পেতো । সে যখন বছর পাঁচেকের,তার মা তাকে ফেলে ঘর ছেড়েছিল কালু শেখের সাথে । সেই থেকে তার অবহেলার জীবন শুরু,পরের দয়ায় বেড়ে ওঠে কুকুরের মতো । একবার গাছ থেকে পড়ে তো যমে মানুষে টানাটানি । তবু বেঁচে গিয়েছিল জগা,শুধু হারিয়ে ফেলেছিল মুখের ভাষা ।

কিশোর জগা খেলাচ্ছলেই একদিন মাটি দিয়ে গড়ে ফেলেছিল ছোট এক দুর্গামূর্তি । গাঁয়ের মোড়লদের নজরে পড়েছিল সেটা । তখনো  রাজপুরে কোন দুর্গাপুজো হতো না । জগার তৈরি মূর্তি দিয়েই শুরু হয়েছিল গাজীতলাতে এই পুজো । আজ প্রায় কুড়িবছর হচ্ছে এ পুজো । আগে ছোট করে হতো,এখন বেশ বড় করেই হয় ।  আর নিয়ম করে প্রতিবছর ঠাকুর গড়ে জগা ।যেন জগার হাত ধরেই এ গাঁয়ে মায়ের আগমন ।

সবার মন খারাপ,জগা এলো না এবছর তবে আর বোধহয় পুজো হবে না । এ গাঁয়ে তো সে ছাড়া কেউ ঠাকুর গড়তেই জানেনা । মূর্তি ছাড়া পুজো হবে কি করে ? রথের দিন ঠাকুরের কাঠামোতে প্রথম মাটি দিতে হবে,এটাই নিয়ম । কাল রথযাত্রা, অন্যবার ঠাকুরে প্রথম মাটি ধরানো দেখবে বলে ছেলেপিলের কত উৎসাহ থাকে,এ বছর সবার মুখভার ।

রথের সকালে গাজীতলার ঠাকুর দালানে দেখা গেল জগাকে ।সবাই দারুণ খুশি । কিন্তু সাথে ও কে ?ওর সেই গৃহত্যাগী কুলটা মা টা না ?হৈচৈ গ্রাম জুড়ে-এ অনাচার চলবে না ।পুজো না হয় না হবে,ঐ নষ্ট মেয়েমানুষকে দূর করে দাও গাঁ থেকে । মুরুব্বিদের সভা বসেছে । ছেলে বুড়ো সবাই অপেক্ষায়,পূজো কি হবে ?বৃদ্ধা শঙ্করীবালাও লাঠিতে ভর দিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে ।হঠাত সে বলে ওঠে,ওরে মায়ের কোন জাত হয় না । মা দুগ্গার মুত্তি গড়তেও তো বেশ্যা বাড়ির মাটি লাগে,তাতে কি মা দুগ্গা অপবিত্র হয় ?তবে মানুষ মায়ের জাত নিয়ে এত কতা কেন ?এতবছর পর বোবা ছেলেটা মাকে পেয়েছে,ওদের তাড়াস নি ।ভুলিস নি জগার হাত ধরেই মা এয়েচেন মুদের গাঁয়ে ।বড় বড় মুরুব্বি রাও চুপ,কৌন যুক্তি নেই তাদের কাছে ।



হৈ হৈ করে ওঠে ছেলেপিলের দল,পুজো হচ্ছে………

।। সমাপ্ত ।।

| Aleekpatamagazine.blogspot.in |
  | Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
|ALEEK PATA-The Expressive World |Online Magazine |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |
|Special Puja Issue,2019 | September-October, 2019 |
| Third Year Third Issue |20Th Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |




















No comments:

Post a Comment

Please put your comment here about this post

Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান