সম্পাদকীয়-লকডাউন ও আমরা
নববর্ষ সংখ্যা ১৪২৭
(হাসিরাশি- বিশেষ লকডাউন সংখ্যা ২০২০-এপ্রিল,মে,২০২০)
নমস্কার
বন্ধুরা, সবাই ভালো আছেন নিশ্চয়ই, অবশ্যই ভালো থাকবেন।
আজ যখন সবাই
নিজের নিজের বাড়িতে বন্দী, তখন কেমন যেন এক আত্মীয়তার, সহমর্মীতার অনুভূতি হচ্ছে,
আজ জাতি, ধর্ম, ধনী, দরিদ্র, শিক্ষিত, অশিক্ষিত, দেশী, বিদেশী ‘ অলীকপাতা’ পড়েন বা
না পড়েন, সবাই কে এক লাগছে, মিথ্যে বলব না খুব ভালই লাগছে।
আজ বহুজাতিক
সাবান কোম্পানি বলছে ‘শুধু আমাদের তৈরি অমুক সাবান নয়- হাতের কাছে যে সাবানই পাবেন
তাই দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন’, এই সবই হচ্ছে- কারণ আজ বেঁচে থাকাটাই মুখ্য বাকি সব
গৌণ।
এই কয় মাসে
আমরা নিজেকে ও জগতকে চিনেছি নতুন করে, আমরা অনেক নতুন শব্দ শিখেছি, ধীরে ধীরে সেগুলি আজ আমাদের জীবনের অপরিহার্য
অভ্যেসে পরিনত হয়েছে, এর মধ্যে একটি বহুল প্রচলিত শব্দ হচ্ছে ‘লকডাউন’, দেশব্যাপী,
বিশ্বব্যাপী লকডাউন, আজ কেন জানি না পৃথিবীটাকে আমাদের বাড়ী বলে মনে হচ্ছে, নয়ত,
অমুক নম্বর তমুক গলির বাসিন্দা হিসেবেই নিজেকে জানতাম এতদিন, আজ বোধহয় বিশ্ব থেকে
দূরে থেকে আরও অনেক বেশী বিশ্বনাগরিক হয়ে আছি।
কিন্তু
স্বভাবে সামাজিক(?) ও আদতে ঝগড়ুটে স্বভাবের আমরা একে অপরের সাক্ষাৎ না পেয়ে বড্ড একা
বোধ করছি, তাও ভাগ্য ভালো ইন্টারনেটের যুগে আছি আমরা, তাই, সত্যি, মিথ্যে, বাস্তব,
গুজবের স্রোতে বেশ রসেবসেই আছি।
‘আমার
সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে’, সকল পিতামাতার মতোই আমাদের পৃথিবীও চায় আমরা যেন থাকি
বেঁচেবর্তে, কিন্তু এই হতচ্ছাড়া ‘লকডাউন’টা দিয়েছে ব্যাগড়া, আরে বাবা! চা এর দোকান
খোলা না থাকলে এই মহামারী কে মারি কি করে বলুন তো ? “হুঁ হুঁ বাওয়া, ওসুদ টা তো
দিলীপদার চায়ের দোকানে বসে ক্লাস ফাইভ ফেল ঝন্টুদাই আবিস্কার করবে!” কিন্তু ভাই,
ঝন্টুদা বাঁচলে তবে না! তাই, মেনে চলো এই লকডাউন, থাকো লক্ষ্মণ রেখার মধ্যেই, না
হলে কি হতে পারে সে তো ‘রামায়ণের’ রিপিট টেলিকাস্টেই দেখেছ, আর এখন সে ‘রামও নেই,
নেই সে দারা সিং’ ‘করোনার’ ‘করুণা’ লাভ করলে কেউ বাঁচাবে না, তাই, অহেতুক বাইরে না
বেরিয়ে চুপটি করে ঘাপটি মেরে ঘরে বসে থাকাটাই শ্রেয়, একটু না হয় বা বাসনই মাজলেন,
বা বউয়ের সাথে বসে মটর শুঁটি ছাড়াতে ছাড়াতে প্রথম দেখার গল্পের খেই ধরে হনিমুন নৈনিতালের
বদলে নেতার হাটে সারার জন্য না হয় একটু খোঁটা শুনলেনই, তাতে কিই বা এসে গেল? বেঁচে
তো থাকবেন, না হলে বউকে ইন্সুরেন্সের টাকার জন্য ঘুরে মরতে হবে।
এত গেল
শারীরিক সুরক্ষার উপায় কিন্তু, মানসিক স্বাস্থ্য? তার কি হবে? বলা হয় যে মানসিক দৃঢ়তা
বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, আর, মানসিক জোর বজায় রাখার জন্য হাসি খুশি থাকা খুবই
প্রয়োজোজন। এটা মনে রেখেই আজ থেকে প্রায় একমাস আগে বাধ্যতামূলক এই স্বনির্বাসনের শুরুর দিন গুলোতেই অলীকপাতার সকলের জন্য রাখা হয়
আপাতঃ অদ্ভুত একটি অনুরোধ, এই দুঃখের দিনে প্রস্তাবিত হয় ‘হাসিরাশি’ সংখ্যা, এই
প্রোজেক্টের মূল উদ্দেশ্যই ছিল আপনাদের সদর্থক ভাবনার গোড়ায় উস্কানি দেওয়া, কারণ
আপনারা হয়ত দেখবেন যে, একই সাথে কোনও মানুষ কাঁদতে ও হাসতে পারে না, অসম্ভব!
সুতরাং যাতে আপনাদের মনের জোর বজায় থাকে হাসির লেখা পড়ে
ও লিখে, তাই হাসিরাশির প্রস্তাবনা, প্রথম দিকের জড়তা কাটিয়ে আসতে থাকে প্রচুর
লেখা, কিন্তু, পত্রিকা বের করার তাড়া থাকায় নির্ধারিত সময়ের পরে আসা অনেক গুলি
লেখাকেই স্থান দিতে পারলাম না বলে দুঃখিত।
এই সংখ্যার
মুচমুচে লেখাগুলির সাথে এক্কেবারে এক্সক্লুসিভ ছবি এবং দুর্দান্ত প্রচ্ছদ এঁকে পত্রিকার মান
বাড়িয়েছেন শ্রী মিঠুন দাস, হ্যাঁ, তাঁর ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ এর ব্যস্ততার মধ্যেই।
এছাড়া
রয়েছেন শ্রী ফিরোজ আখতার, তাঁর আঁকা অলঙ্করন নিয়ে, যা পত্রিকার শ্রীবৃদ্ধি করেছে। প্রকাশিকা শ্রীমতি দেবশ্রী চক্রবর্তী, ছোট ভাই
প্রতীক, সমস্ত লেখক লেখিকা ও শুভানুধ্যায়ী জনের পরিশ্রম ও শুভেচ্ছা নিয়ে আসছি আমরা
শুভ অক্ষয় তৃতীয়ার এইদিনে, সর্বশক্তিমানের কাছে প্রার্থনা করি সব শুভ হোক।
এখন,
আপনাদের এই সংখ্যাটি ভালো লাগলেই সকলের প্রচেষ্টা সার্থক হবে।
ওহঃ হ্যাঁ, আগামী কাল থেকে আমাদের অফিসও খুলছে...
ধন্যবাদ
স্বরূপ
চক্রবর্তী
সম্পাদক-
অলীকপাতা
হরিদ্বার
২৬শে
এপ্রিল,২০২০
| Aleekpatamagazine.blogspot.in |
|ALEEK PATA-The Expressive World |Online Magazine |
| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
| Special Lock-down Issue,2020 | April 2020 |হাসিরাশি সংখ্যা।
।নববর্ষ ১৪২৭| Third Year Fifth Issue |22nd Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |
No comments:
Post a Comment
Please put your comment here about this post