শৈশবের শীতকাল
বদরুদ্দোজা শেখু
খুব শৈশব কেমন ছিল, তেমন মনে নাই
ন'-দশ বছর হয়েছি যখন বলছি কিছু তাই...
মনে আছে লাট্টুখেলা ঘুড়ি-লাটাই, মনে পড়ছে আর
পুব উঠোনে চাদর গায়ে রোদ-পোহানো জাড়,
গাঁয়ের জাড়ে জড়োসড়ো...গাঁয়ের জাড় বেশী
আলকাপ আর পঞ্চরসে মাদুরে ঘেঁষাঘেঁষি
ঝাঁকসু-পাঁচু যাত্রাপালা পাল্টি কবিগান
রাত্রি জেগে দেখছি সবাই হুল্লোড় তুফান,
আর দেখেছি কালীতলার শিবরাত্রির মেলা
গাজন চড়ক দূর্গা-ভাসান দশরা ছোটার খেলা ।
তখন হতো শীতের সময় রোজা রাখার মাস
বাপের সাথে শেহরি খাওয়ার ভীষণ ছিল আশ
গরম ভাতে বেগুন-বড়ি, ঝোলা গুড় আর ধুকি
সেই বাসনা আজো মনে দিচ্ছে উঁকিঝুঁকি।
ঈদের দিনে ঈদগাহ্ যাওয়া বাপের পিছু পিছু
ক্ষীর-সেমাইয়ের খুশীর খুশবু, তৌফা
কিছুমিছু ,
লেখাপড়ার চাপ ছিল না, ধান কাটবার কাজ
গরুর গাড়ির মাথায় চেপে ফিরতে হতো সাঁঝ
কাঠ-কুঠোতে আগুন জ্বেলে গোলটি হ'য়ে ব'সে
আগুন পোহাই আমরা সবাই তীব্র মাঘ- পৌষে,
সেই আনন্দ আজো অম্লান; দুঃখ শুধু পাই...
ছিলনা তেমন শীতের পোষাক, ধড়া-চাদর গা-য়
কেটেছে কাল ; আর অক্লান্ত মায়ের স্নেহের হাত
ভাগিয়ে দিতো কাঁথায় মুড়ে' পৌষ-মাঘের রাত ;
দাদির মুখের রূপকথারা কাঁথার ভিতর শুয়ে'
শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যেতাম তেপান্তর ছুঁয়ে।।
No comments:
Post a Comment
Please put your comment here about this post