ছায়াসঙ্গী
মানসী
গাঙ্গুলী
অলংকরণঃ বর্ণালী গাঙ্গুলী |
মূক-বধির ছেলেটা অশিক্ষার অন্ধকারে পিছিয়ে
থাকা ঘরে পাগল বলেই অভিহিত হয়। একটু বড় হলে ঘরের বাইরে একটা গাছের সঙ্গে শেকল
দিয়ে বেঁধে রাখা হয় তাকে। রোদ,বৃষ্টি,ঝড়ে
সারাদিন ওটাই তার ঠিকানা। রাতে একখানা ঘরের সংসারে একটু শোবার জায়গা হয় তার।
গরীবের ঘরে জ্বালা অনেক,মায়েরও সারাদিন পরের বাড়িতে কাজ,সংসার
সামলে মায়া-মমতাও বুঝি তলানিতে ঠেকেছে। বাড়ি ফিরেই অন্য ছেলেমেয়েদের কাছে
মুন্নার নামে অভিযোগ শুনতে শুনতে এই ব্যবস্থাই যথোপযুক্ত বলে মনে করেন তিনি।
মুন্না কথা বলতে পারে না,আউ আউ করে ভাই-বোনেদের কিছু বলার চেষ্টা করলে
তারা হাসতে থাকে,ওকে ভ্যাঙায়,চিমটি
কাটে। খেপে গিয়ে মুন্না একআধটা চড় থাপ্পড় মেরে দেয় ওদের কখনো-সখনো। প্রথম প্রথম
শেকল দিয়ে বাঁধার সময় মুন্না কান্নাকাটি করে,হাত-পা ছোঁড়ে। মাও চোখের
জল ফেলতে ফেলতে কাজকর্ম করেন। পরে সেটাই স্বাভাবিক হয়ে যায়,মুন্নাও
বোঝে এই তার ভবিতব্য।
ঘরের দাওয়ায় একটা রাস্তার কুকুর আশ্রয়
নিয়েছে অনেকদিন আগেই,মুন্না বড় ভালোবাসে যে ওকে। নিজের খাবারের
ভাগ থেকে তাকে খেতে দেয় সবসময়। ও শেকলে বাঁধা পড়ার পর কুকুরটা ওর পাশেই বসে থাকে।
ওর নাম টমি। রাস্তার কুকুরের আবার নাম! মুন্নার বাড়ির সবাই তাই বলেই ডাকে ওকে।
কয়েকবছর কেটে গেল এভাবে,মুন্না স্বাভাবিক নিয়মেই বড় হল একটু।
সারাদিন এক জায়গায় বসে থাকতে থাকতে তার সারা শরীর আড়ষ্ট হয়ে যায়,ব্যথা
করে,একা একা কাঁদে। টমির চোখ দিয়েও জল গড়ায় মুন্না কাঁদলে।
একদিন মা থালায় দুটো শুকনো মুড়ি আর একটু
গুড় ফেলে দিয়ে কাজে গেলে মুন্না খাবার সময় কুকুরটাকেও খানিক মুড়ি খাওয়ায়
হাতে করে। হঠাৎ খেয়াল করে মা বোধহয় তাড়াহুড়োতে শেকলটা গাছের গায়ে কোনোরকমে
জড়িয়ে দিয়ে চলে গেছেন। মুন্না সুযোগের অপব্যবহার করেনি। শেকল সরিয়ে বেরিয়ে
পড়েছে একছুটে। টমিও ছোটে ওর সঙ্গে। অতদিন একভাবে বসে থাকার পর একনাগাড়ে অতটা ছুটে
মুন্না তখন হাঁপাচ্ছে। একটু বসে চারিদিক তাকায়,সামনে
রাস্তায় একটা কল দেখতে পেয়ে খানিক জল খায়,চোখে মুখে দেয়,টমিকে
জড়িয়ে ধরে একটু আদর করে,তারপর চলতে শুরু করে। তখন আর ও ছোটে না,বাড়ি
থেকে বেশ খানিকটা দূরে চলে গেছে তখন ও। হাঁটতে থাকে,আরও
দূরে যাবার জন্য। পাশে পাশে চলে টমিও।
বাড়ি থেকে বেরবার সময় প্রখর রোদ থাকলেও হঠাৎই
সূয্যিদেবের অন্তর্ধানে আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়, একফোঁটা
একফোঁটা করতে করতে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি এল। রাস্তার ধারে একটা দোকানের শেডে দাঁড়াতে
তারা 'যা যা' করে তাড়িয়ে দিল। ভিজতে
ভিজতে দেখল সামনেই একটা ওভারব্রিজ। দৌড়ে তার নিচে গিয়ে আশ্রয় নিল। একটা পিলারের
গায়ে হেলান দিয়ে বসল। বাইরে অঝোরে বৃষ্টি। না,মুন্না এখন আর ভিজছে না।
টমি ওর গায়ে গা লাগিয়ে বসে আছে। আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বেশ কিছু মানুষ সংসার
পেতেছে ওই ব্রিজের নিচে। মুন্না তাহলে ভালোই একটা জায়গা পেয়ে গেছে,নাহলে
কোথায় যেত ও। চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগল ওর ঈশ্বরের এটুকু কৃপার জন্য। টমি ওর মুখের
দিকে তাকায়,হাতটা একটু চেটে দেয় আদরের নমুনাস্বরূপ।
মুন্নাও ওকে জড়িয়ে ধরে আদর করে দেয়। মানুষ ও পশুর ভালবাসার বন্ধন। দুজনেই যেন বলতে
চায়,"আমি তো আছি তোমার জন্য,তোমার
পাশে"। ঠাঁই তো হল,খাবে কি?
কিছু পরে ক্লান্ত হয়ে
ঘুমিয়ে পরে ওখানেই,পাশে পাহারায় জেগে থাকে ওর সাগরেদ,ওর
ছায়াসঙ্গী। কিছু পরে ঘুম ভাঙল খুব খিদে পেয়ে,কিন্তু খাবে কি? বৃষ্টি
থেমে গেছে,রাস্তায় কিছু লোকজন চলাচল করছে। উঠে যে খাবারের খোঁজ করবে,জায়গাটা
যদি বেহাত হয়ে যায়? টমিকে হাত নেড়ে বোঝালো
মুন্না, অনেকদিনের সঙ্গী,সে ঠিক বুঝে নিল। মুন্না
কুকুরকে দখল করা জায়গায় বসিয়ে খাবারের খোঁজে বেরোল। পথচারীদের কাছে ভিক্ষে করে
একটা পাউরুটি কিনতে পারল ও। ফিরে এসে দেখে তার সাগরেদ ঠিক জায়গা দখল করে
বসে আছে। ওকে দূর থেকে আসতে দেখেই তার ল্যাজ নড়তে লাগলো খুশিতে। হাতে পাউরুটিটা
দেখে সে মুন্নার গা বেয়ে উঠে আদর করে তাকে চাটতে লাগল। মুন্না টমির সঙ্গে পাউরুটি
ভাগ করে খেলো,রাস্তার কল থেকে জল খেয়ে এলো,আর
রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পাওয়া একটা বোতল ভরে জল নিয়ে এলো। টমিকে হাঁ করিয়ে জল
খাইয়ে দিল। শুরু হলো মুন্না ও টমির সংসার। ক্রমে আশপাশের মানুষজনেরাও ওর আত্মীয়
হয়ে উঠল। তাদের সহযোগিতায় জুটলো ওর কিছু পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের ঢাকা দেওয়া কৌটো,রেস্টুরেন্ট
থেকে খাবার প্যাক করে দেয় যেগুলোতে পার্সেলের জন্য,আরো
কয়েকটা কুড়িয়ে পাওয়া বোতল। আস্তে আস্তে তার লক্ষ্মীছাড়ার সংসার সেজে উঠতে
লাগলো কিছু মানুষের পরিত্যক্ত জিনিসপত্রে।
কয়েকবছর পার,মুন্নার
এখন একটা ছেঁড়া কম্বলের বিছানা,একটা তেলচিটে বালিশও জুটে
গেছে। নিজের সংসারে বেশ ভালই আছে মুন্না টমিকে নিয়ে। সে হারিয়ে যাবার পর বাড়ির
লোকেরা একটু খোঁজখবর করেছে,মা দু'দিন কান্নাকাটি করেছেন
তারপর বোধহয় একটু স্বস্তির নিঃশ্বাসই ফেলেছেন তিনি। সেসব খবর মুন্নার জানা নেই।
এখানে সে ভালোই আছে। এখন আর টমিকে জায়গা দখল করে পাহারা দিতে হয় না। মুন্না
ভিক্ষা করতে বা খাবার আনতে গেলে টমিও বেরিয়ে পড়ে। কোনোদিন কোনো পরিত্যক্ত কৌটো
কিংবা জলের বোতল মুখে করে নিয়ে এসে মুন্নার সংসারের শ্রীবৃদ্ধি করে। তবু পেটভরা
খাবার জোটে না কোনেদিনই। ভিক্ষে করে দুটো বেশি পয়সা পেলে পাশের সংসারের মাসির
হাতে দিলে মাসি তার দুটো ইঁট দিয়ে পাতা উনুনে ভাত ফুটিয়ে দুটো খেতে দেয় সেদিন।
ওর যে বাসন নেই,তাই মাসিই ভরসা। টমির সঙ্গে ভাগ করে ও সেই
ভাত খায়। তার আগে অনেকক্ষণ ধরে ভাতের গন্ধ শোঁকে মুন্না চোখ বুজে,কতদিন
পর ভাতের গন্ধ। মুখের অভিব্যক্তিতে ফুটে ওঠে ওর অনাবিল আনন্দ। এটুকুই যে অমৃত ওর
কাছে,আহা,ভাতের গন্ধটা কি সুন্দর। পৃথিবীর সেরা গন্ধ
মনে হয় তখন ওর।
মুন্নার বয়স কুড়ি পেরিয়েছে,নাওয়া-খাওয়ার
ঠিক নেই বলে চেহারাও হাড় জিরজিরে। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো শরীরে বাসা বাঁধে
করোনা সংক্রমণ,বোঝে না ও কি হয়েছে,তবে
বড় কষ্ট ওর। নিজের কষ্টের কথা বোঝাতেও পারে না কাউকে,ও
যে কথা বলতে পারে না। বসে বসে হাঁপায়,ভিক্ষে করতে পারে না। টমি
ঘুরে বেড়ায় রেস্টুরেন্টের বাইরে বাইরে,যদি কিছু উচ্ছিষ্ট খাবার
নিয়ে আসতে পারে। এদিকে করোনা সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা
হয়। আস্তে আস্তে দোকানপাট,রেস্টুরেন্ট সব বন্ধ হতে থাকে,চারিদিক
শুনশান,ঘোরাই সার টমির। পাশের মাসি পাশে থাকতে থাকতে মুন্নার ওপর
মায়া পড়ে গেছে। সেই মাসিই জনে জনে মুন্নাকে হাসপাতালে ভর্তি করার কথা বলতে থাকে।
কিন্তু সহায়-সম্বলহীন ফুটপাতবাসীর কথা আর কে-ই বা শোনে। মাসি শেষে এক বুদ্ধি
খাটায়। ট্রাফিক পুলিশের কাছে গিয়ে বলে মুন্নার অসুস্থতার কথা,"ওই যে তোমাদের কি করোনা না কি রোগ সবার হচ্ছে ও আমার মুন্নারও হয়েছে"।
মাসি কিছু না বুঝে রোগের গুরুত্ব বোঝাতেই একথা বলেছে যাতে মুন্নার হাসপাতালে
চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়,কারণ মাসি কিছুদিন ধরেই করোনা রোগের কথা
শুনছে আর এটাই বুঝেছে যে রোগটা মারাত্মক। কথাটা চাউর হয়ে যায় চারিদিকে। খবর
পৌঁছায় থানায়ও। মুন্নার তখন ধুম জ্বর,প্রবল কাশি,থামে
না কিছুতে। অ্যাম্বুলেন্স আসে। রাস্তা থেকে তুলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
টমি অ্যাম্বুলেন্সের পিছন পিছন ছুটে হাসপাতাল অবধি পৌঁছে যায়,কিন্তু
গেটের ভেতর ঢুকতে গেলে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। টমি বোঝে ওকে বাইরেই থাকতে হবে।
তাই হাসপাতালের বাইরে একটা বাসস্ট্যান্ডের শেডের নীচে আশ্রয় নেয় সে। অতটা জোরে
দৌড়ে টমি তখন হাঁপাচ্ছে। ওর দেহটাও তো হাড় জিরজিরে। বাসস্ট্যান্ডের একটা চেয়ারের
নিচে আশ্রয় নেয় সে। বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষারত মানুষজন আসা-যাওয়ায় মাঝেমাঝেই
তাড়ায় ওকে। ও একটু সরে যায় কিন্তু নিরাপদ আশ্রয়টুকু ছাড়ে না। ওখান থেকেই ও নজর
রাখতে পারে হাসপাতালে কে যাচ্ছে আসছে। আশপাশে ঘুরে বেড়ায় সারাদিন খাবারের জন্য।
হসপিটালের বাইরের ডাস্টবিনে প্রচুর উচ্ছিষ্ট খাবার ফেলা হয় রোজ। কয়েকটা কুকুর আর
বিড়াল সেই খাবারের হকদার। বেশ মোটাসোটা কুঁদো চেহারা তাদের,পর্যাপ্ত
পরিমাণ ভালো-মন্দ খাবার পেয়ে। কিন্তু টমিকে তারা সেখানে ভিড়তে দেয় না। এগোতে
গেলেই ঘেউ ঘেউ করে চেঁচায়,তাড়া করে। টমি চুপ করে একটু দূরে গিয়ে বসে
থাকে। ওদেরও বোধহয় মায়া হয়,তাই পরে টমিকে আর খেদায়
না ওরা,একটু আধটু খাবার খেলে আর চেঁচায় না। পরে পেটভরা খাবার পেতে
লাগলো টমি সেখানে। কতদিন পর পেট ভরে খাবার খাচ্ছে ও। ওখানকার কুকুর-বিড়ালের
সঙ্গেও বেশ ভাব হয়ে গেছে। সাতদিনেই টমির চেহারায় সর পড়েছে। খায়-দায়,সারাক্ষণ
হসপিটালের দরজার আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়।
ওদিকে মুন্নার জ্বর,সর্দিকাশির
উপসর্গ থাকায় তার সোয়াবের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ডাক্তাররা
তার চিকিৎসা করবে কি,দীর্ঘদিন ভাল করে স্নান না করা মুন্নার গায়ে
প্রবল দুর্গন্ধ,আর মূক ও বধির হওয়ায় নিজের শরীরের কষ্টের
কথা বলে বোঝাতে পারে না বা ডাক্তারদের সব নিদের্শও বুঝতে পারে না। ওকে সুস্থ করে
তোলা ডাক্তারদের কাছেও তখন এক চ্যালেঞ্জ। উঠে পড়ে লাগলেন চিকিৎসকেরা ও
চিকিৎসাকর্মীরা। নিয়মিত ওষুধের সঙ্গে ভিটামিন ট্যাবলেটও যুক্ত হয় তার খাবারের
তালিকায়,সঙ্গে পুষ্টিকর রোগীপথ্যও। মুন্না খানিকটা সুস্থ হলে খোঁজ
নেয় তার টমির। আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেয় তাকে হসপিটালে আনার সময় গাড়ির পিছন
পিছন ভেউ ভেউ করতে করতে সে দৌড়ে এসেছে,নিশ্চয়ই সে আশেপাশে আছে।
মুন্নাকে সবাই আশ্বস্ত করে,তাকে খুঁজে দেওয়া হবে বলে যদিও সেটা কেবল
স্তোকবাক্যই। হাসপাতাল কর্মীরা জানে তাকে খোঁজা সম্ভব নয়।
হসপিটালে কিছুটা সুস্থ হবার পর ডাক্তারদের
নির্দেশে মুন্না পরিষ্কার করে চান করে। নিয়মিত উপযুক্ত আহার ও পথ্য পেয়ে তারও চেহারায় একটু সর পড়ে। বারে বারে তার পরীক্ষা
করে অবশেষে কুড়ি দিনের মাথায় তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। হাসপাতাল থেকে ছুটি হয়
মুন্নার কিন্তু ফুটপাতে তো আইসোলেশনে থাকা সম্ভব নয় তাই চোদ্দদিনের জন্য এক
কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে তাকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। মুন্না এখন সুস্থ। শরীরে তার
একটু বল ফিরে এসেছে। হাসপাতালের সিঁড়ি দিয়ে পায়ে হেঁটেই নামে সে। তাকে
অ্যাম্বুলেন্সে করে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠাবার ব্যবস্থা করা হয়,সঙ্গে
আরও কয়েকজন। হেঁটে অ্যাম্বুলেন্সের দিকে পা বাড়াতেই টমির তীক্ষ্ণ দৃষ্টি চিনতে পারে তার মনিবকে। হাসপাতালের
গেটের কাছে ছুটে এসে তারস্বরে ঘেউ ঘেউ করতে থাকে। মুন্নাও তার টমিকে চিনতে পারে।
দু'চোখ বেয়ে তার জলের ধারা,টমিরও
চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে ফোঁটা ফোঁটা জল। মুন্না এগিয়ে যায় গেটের কাছে,টমি
তার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে,পায়ে লুটোপুটি খায়,মুন্না
নিচু হয়ে আদর করতে গেলেই তার মুখ চেটে আদর জানায়। মুন্না টমিকে জড়িয়ে ধরে।
যারা সামনে ছিল সে দৃশ্যে সকলের চোখে জল কিন্তু রাস্তার কুকুর বলে হাসপাতালের
কর্মীরা হৈহৈ করে ওঠে। মুন্না বেঁকে বসে,টমিকে না নিয়ে কোথাও যাবে
না সে। কিন্তু সবেমাত্র সুস্থ হওয়া রোগীদের সঙ্গে তাকে গাড়িতে তোলা যাবে না তাই
ড্রাইভারকে নির্দেশ দেওয়া হয় আস্তে আস্তে গাড়ি চালাতে,যাতে
টমি গাড়ির পিছন পিছন দৌড়ে ওদের সঙ্গে যেতে পারে। গাড়ি চলল কোয়ারেন্টাইন
সেন্টারে,টমিও ঘেউ ঘেউ করতে করতে পৌঁছে গেল সেখানে। মুন্নাকে ভেতরে
নিয়ে যাওয়া হল। অ্যাম্বুলেন্স থেকে নেমে ভিতরে যাবার আগে মুন্না গেটের কাছে গিয়ে
টমিকে আদর করে এল। টমিও লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে,ল্যাজ নেড়ে তার মনিবকে
যৎপরোনাস্তি আদর করল। রাস্তার কুকুরের গায়ে হাত দেওয়ায় সবার আপত্তি। মুন্নাকে
ভিতরে নিয়ে যাওয়া হল আর গেটের বাইরে টমি আবার খুঁজতে লাগল তার নতুন ঠিকানা।
No comments:
Post a Comment
Please put your comment here about this post