অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Tuesday, January 11, 2022

সত্যজিৎ শতবর্ষ ক্রোড় পত্র-মনের মানিক-রাতদুপুরে নিশ্চিন্দিপুরে - বনবীথি পাত্র


 

রাতদুপুরে নিশ্চিন্দিপুরে

বনবীথি পাত্র

Collage: Swarup Chakraborty




-অপু, এই অপু, উঠে পড়। এখন না গেলে ভোরে মায়ের ঘুম ভাঙার আগে ফিরতে পারব না। তোর তো কিছুই না, দুমাদুম কিলগুলো তো আমার পিঠেই পড়বে! বেশ তুই ঘুমো, আমি একাই চললাম।

আধো ঘুমে দিদির কথাগুলো সব শুনতে পাচ্ছিল অপু। কিন্তু ঘুম থেকে একটুও উঠতে ইচ্ছা করছিল না ওর। কিন্তু দিদি একা চলে যাচ্ছে শুনেই ধড়ফড় করে উঠে বসে। পাশেই মা ঘুমচ্ছে। ঘুমের মধ্যেও তালপাতার হাতপাখাটা নড়ছে নির্দিষ্ট গতিতে। অপু এতটুকু আওয়াজ না করে আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। দুর্গা প্রায় নিঃশব্দে ঘরের নড়বড়ে দরজাটা ভেজিয়ে দেয়। দাওয়ায় বাঁশের ওপর রাখা গামছাখানা টেনে নিয়ে কোমরে বেঁধে নেয়। অপু ফিসফিস করে শুধায়,

-গামছা কী হবে?

দুর্গা ভাইয়ের মাথায় আলতো একটা টোকা মেরে বলে,

-আমগুলো কুড়িয়ে রাখবি কিসে?

চারধার একেবারে ঘুটঘুটে অন্ধকার।  অন্ধকারে চোখ বশ হতে খানিক সময় লাগে। কোথাও কোন আলোর রেখাটুকুও নেই। যদিও এ তাদের চেনা পথ, আলোর দরকার নেই। অপুর হাতটা শক্ত করে ধরে মুখুজ্জে বাড়ির পিছন দিকের পথটা দিয়ে হাঁটতে থাকে দুর্গা। এই পথ দিয়ে গেলে মিত্তিরদের আমবাগানটা কাছে হয়। চলতে চলতে অপু হঠাৎ থমকে দাঁড়ায়। দুর্গা একরাশ বিরক্তি নিয়ে জিজ্ঞাসা করে,

-কী হল, থামলি কেন? যদি ভয় করে তো বল্ তোকে বাড়িতে রেখে আসি।

অপু কোন কথা না বলে সামনে আঙুল তুলতেই দুর্গাও থেমে যায়। দোতলার ঘরের জানলা থেকে হালকা আলোর রেখা পড়েছে মিত্তিরদের বাগানের পুবদিকটাতে। আলোতে যে কেউ ওদের দেখে ফেলতে পারে। দুর্গা ফিসফিস করে বলে,

-এত রাত অবধি কোনও মানুষ জেগে থাকে? রাত জেগে বুড়োটা কী করছে বল তো?

অপু বিজ্ঞের স্বরে বলে, -উনি বিজ্ঞানী মানুষ, নিশ্চয় পড়াশুনো করছেন। জানিস দিদি মাস্টারমশাই বলছিলেন, উনি নাকি এমন একটা রোবট বানিয়েছেন...

অপুকে কথাটা শেষ করতে না দিয়ে দুর্গা বিরক্তির সুরে শুধায়, -রোবট আবার কী?

-রোবট হল যন্ত্রচালিত পুতুল। কিন্তু সেই পুতুলটা মানুষের মত সব কাজ করতে পারে।

-গাছ থেকে আম পাড়তে পারে? কাঁদরে মাছ ধরতে পারে? সরকার খুড়ির রোদে দেওয়া তেঁতুলের আচার চুরি করতে পারবে? রোবট এইসব কাজ করতে পারে কি না সেটা জানা নেই অপুর। তাই একটুক্ষণ বোকার মত মুখ করে চুপ করে থেকে বলে,

-দিদি তুই ইস্কুলে যাস না কেন?

অপুর নীরবতার অর্থ রোবট ওসব কাজ পারে না ধরে নেয় দুর্গা এবং রোবটের থেকে নিজেকে অনেক বেশি গুনবতী ভেবে নিয়ে একমুখ হেসে বলে,

-ধুর ও সব পড়াশুনো আমার ভালো লাগে না। এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সময় নষ্ট করবি না যাবি? বাগানের দক্ষিণদিকের পাঁচিলে একটা জায়গা ভাঙা আছে, ওখান দিয়ে ঢুকতে পারবি তো?

অপু ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানায়। কিন্তু মনে একটা সন্দেহ থেকেই যায়। একটু ভয়ে ভয়েই দিদিকে বলে,

-বিজ্ঞানীর বাড়ির পাশ দিয়েই তো আমাদের যেতে হবে, যদি আমাদের দেখে ফেলে?

আশঙ্কাটা যে দুর্গার মনেও হচ্ছে না তা নয়। তবু ভাইকে অভয় দিয়ে বলে,

-দেখে ফেলে কী করবে, আমাদের ধরতে নীচে আসবে? আসুক না বুড়ো! বুড়োর দাড়ি টেনে ছিঁড়ে দেব।

বুড়ো বিজ্ঞানী প্রফেসর শঙ্কুর দিদির হাতে নাকাল হওয়ার দৃশ্য কল্পনা করে আপন মনেই হাসতে থাকে অপু। হাসতে হাসতে দুই ভাইবোন সবে বিজ্ঞানীর বাড়ির পাশটাতে এসেছে, ঠিক তখনই একতলার জানলার কার্নিশের ওপর থেকে ঝুপ করে কী যেন একটা লাফিয়ে পড়ল ওদের সামনে। অপু তো ভয়ে দিদিকে জড়িয়ে ধরে দিদির কোলে মুখ লুকোয়। দুর্গাও বেশ ভয় পেতে গিয়েছে। ভূত প্রেত নয় তো! ভয়ে ভয়ে চোখ পিটপিট করে তাকাতেই জ্বলজ্বলে চোখ দুটো দেখে সবে কী জন্তু ভাবছে; তখনই তার ম্যাঁও ডাকে দুজনেই যেন বুকে বল পায়। বিজ্ঞানীর পোষা হুলো বিড়ালটাও ওদের মত নৈশ অভিযানে বেরিয়েছে। বিড়ালটাকে পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে অপু বলে,

-ওই বিড়ালটার নাম কী জানিস?

-কী নাম?

অপু বলে, -নিউটন।

-এর থেকে ফুলিদের বিড়ালটার গুগলি নাম অনেক সুন্দর! জানিস গুগলির তিনখানা ছানা হয়েছে। মা বিড়াল পছন্দ করে না তাই, না হলে একটা ছানা আমি বাড়িতে এনে পুষতাম। মিত্তিরদের বাগান এসে যাওয়ায়, বিড়াল পোষার কথাটা আর এগোয় না। মিত্তিরদের বাড়ি লাগোয়া বাগানটা। বাড়িতে পুরো দারোয়ান ছাড়া কেউ থাকে না। সে কি আর এত রাতে না ঘুমিয়ে বাগান পাহাড়া দেবে! তা নিশ্চয় দেবে না। তবু সাবধানে চুপিসাড়ে পাঁচিলের ফাঁক দিয়ে টুক করে ঢুকে পড়ে বাগানে। গতকাল রাতে বৃষ্টি হয়েছিল, এখনও কাদা প্যাচপ্যাচ করছে। পা গেঁথে যাচ্ছে মাটিতে। দিনের বেলাতেই পাঁচিলের বাইরে থেকে হিমসাগর আমের গাছটাকে মোটামুটি নিশানা করে গিয়েছিল দুর্গা। তাই বোধহয় অন্ধকারে গাছটাকে খুঁজে পেতে অসুবিধা হয় না। কোমরে জড়ানো গামছাটা খুলে গাছের তলায় পেতে দেয়।

-আমি গাছ থেকে আম ফেলব আর তুই এই গামছায় জড়ো করবি।

গাছে উঠতে গিয়েও থেমে যায় দুর্গা। অপুর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বলে,

-কাউকে আসতে দেখলে আমায় বলবি।

অপু বোকার মত প্রশ্ন করে,

-কী করে বলব। তুই তো গাছের ওপরে থাকবি!

দুর্গা এবার রেগে গিয়ে বলে, -মাথামোটা ছেলে একটা! দুপুরে কতবার শিখিয়ে দিলাম যে তোকে মনে নেই! কুকুরের মত ডাকবি। তাহলেই আমি বুঝে যাব যে কেউ আসছে।

সবে এক মানুষ সমান উঠেছে হঠাৎ কাপড়ে টান পড়তেই রেগে যায় দুর্গা।

-কী রে কাপড় ধরে টানছিস কেন?

কোন উত্তর না পেয়ে পিছন ফিরে তাকিয়েই তো চক্ষু চড়কগাছ দুর্গার।

-এ কে!

অন্ধকারে লম্বা লোকটাকে চিনতেই পারে না দুর্গা। তবে এ যে বুড়ো দারোয়ান নয় তা নিশ্চিত। গাছ থেকে নেমে লোকটাকে ফাঁকি দিয়ে এক দৌড়ে পালাতেই পারে দুর্গা। কিন্তু লোকটার হাতে অপুকে ছেড়ে দিয়ে পালানোর মত ডরপোক্কা দুর্গা নয়। লোকটার হাতের ইশারায় গাছ থেকে নেমে আসে দুর্গা। গাছ থেকে নামতেই দুর্গার হাতটা খপ করে চেপে ধরে লোকটা। দুর্গা বিরক্তি সহকারে বলে,

-লাগছে।

-লাগুক।

গম্ভীর গলায় উত্তর দেয় লোকটা।

অপু অন্ধকারেই দিদির চোখের ভাষা পড়ার চেষ্টা করছিল। তার বড় আশা ছিল এই লোকটার খপ্পর থেকে পালানোর কিছু একটা বুদ্ধি দিদি নিশ্চয় বের করবে। কিন্তু দিদি এমন মুখ নীচু করে আছে, কিছুই দেখতে পেল না অপু। লোকটা ততক্ষণে দুজনকে দুহাতে ধরে প্রায় টানতে টানতে বাগান পেরিয়ে বাড়িতে নিয়ে চলে এসেছে। অপুর ভয় করছে লোকটা ওদের খুব মারবে। আর দুর্গার ভয় হচ্ছে লোকটা যেন মাকে খবর না দেয়। বাড়ির ভেতরে ঢুকে বারান্দার আলোটা জ্বালাতেই লোকটাকে চিনতে পারে দুর্গা। প্রতিবার পুজোর সময় গাঁয়ে আসে, এই বাড়িরই ছেলে ফেলু মিত্তির। গাঁয়ের লোকে বলে, এই লোকটা নাকি পুলিশে চাকরি করে। বড় বড় খুনি, চোর, ডাকাত সবাইকে শায়েস্তা করে।

তবে কি এখন ওদের পুলিশে দেবে? পুলিশের কথা মনে পড়তেই ভয়ে বুকটা কেঁপে ওঠে। গতবছর চড়কের মেলায় একটা চোরকে ধরেছিল পুলিশ। রোগা প্যাংলা লোকটাকে লাঠি দিয়ে মারার দৃশ্যটা দুর্গার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। এই লোকটা বাড়িতে এসেছে খবরটা জানলে আজ দুর্গা মোটেও মিত্তিরদের বাগানে আসত না।

ফেলু মিত্তির জোর গলায় হাঁকে,

-তোপসে...

এক ডাকেই ঘরের ভেতর থেকে অল্পবয়সী একটা ছেলে বেরিয়ে আসে।

-আমায় ডাকছিলে ফেলুদা?

তারপরেই অবাক গলায় বলে,

-এরা কারা? এই রাত দুপুরে এদের কোথায় পেলে?

-আম চুরি করতে এসেছিল।

গম্ভীর গলায় উত্তর দেয় ফেলু মিত্তির।

-যা তো ঘর থেকে আমার বন্দুকটা নিয়ে আয় তো...

ফেলুদার হাতের মুঠোটা একটু বোধহয় আলগা হয়ে এসেছিল। অপু বন্দুকের কথা শুনেই ফেলুদার হাত ছাড়িয়ে দিদির পিছনে গিয়ে লুকোয়। দুর্গা এতক্ষণ মাথা নীচু করে দাঁড়িয়েছিল। বন্দুকের কথা শুনে ভয়ে ভয়ে শুধায়,

-তোমার বন্দুক আছে?

উত্তরের অপেক্ষা না করেই কিছুটা আত্ম সমর্পনের ভঙ্গিতেই বলে,

-আমরা তো আম চুরি করিনি, আমাদের গুলি করবে কেন?

ফেলুদা ধমকে ওঠে,

-চুরি করার জন্যই তো গাছে উঠেছিলে।

দুর্গার গলাটা এবার করুণ শোনায়।

-তার জন্য গুলি করে মেরে ফেলবে আমাদের? আমাদের অন্য শাস্তি দাও। বেত মারো, নাক খত দিতে বলো। আর গুলি যদি করতেই হয় আমাকে করো, ভাইকে ছেড়ে দাও।

অপু তো বন্দুকের কথা শুনে থেকে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেই চলেছে। দিদিকে বন্দুকের গুলির মুখে ছেড়ে দিয়ে সে কিছুতেই যাবে না। দিদিকে জড়িয়ে ধরে এবার সে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। এবার ফেলু মিত্তিরও যেন একটু ঘাবড়ে যায়। অপুর কান্নার আওয়াজ শুনে ভেতর থেকে টাক মাথা একটা লোক বেরিয়ে আসে বারান্দায়।

-সবেমাত্র সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যে প্রবেশ করেছি, তখনই কান্নাকাটির আওয়াজ। এই রাতদুপুরে কী এমন ঘটল মশাই!

তোপসে মিচকি হেসে বলে, -ফেলুদা চোর ধরেছে।

টাক মাথা লোকটা অপু দুর্গাকে আপাদ মস্তক নিরীক্ষণ করে হেসে ওঠে,-এ তো নেহাতই ক্ষুদে চোর মশাই। তা এই চোরের জন্য আপনি বন্দুক চাইছিলেন?

ফেলুদা ততক্ষণে একটা চারমিনার সিগারেট ধরিয়ে ইজি চেয়ারে শরীর এলিয়ে দিয়েছে। সিগারেটে একটা লম্বা টান দিয়ে বলে, -লালমোহনবাবু তাহলে আপনিই বলুন কী শাস্তি দেব ওদের?

লালমোহন নামটা শুনে এমন বিচ্ছিরি সময়েও হাসি পেয়ে যায় অপুর। ফিক করে হেসে ফেলতেই টাক মাথা লোকটা গম্ভীর গলায় বলে, -এই খোকা হাসলে কেন?

খোকা ডাকটা শুনলে অপুর বড্ড রাগ হয়। অপু রাগী রাগী গলায় বলে,-আমি খোকা নই। আমার নাম অপু, অপূর্ব রায়। আমার বাবা হরিহর রায়। লালমোহনবাবু ভ্রু কুঁচকে তোপসের দিকে তাকিয়ে বলে, -ধানি লঙ্কার ঝাঁঝ আছে।

ফেলুদা চেয়ারের হেলান ছেড়ে সোজা হয়ে বসে বলে,

-আচ্ছা হরিহর পুরোহিত তোমাদের বাবা!

দুর্গার যেন মনে হল লোকটা বাবার কাছে নালিশ করবে। তেমন হলে এক কেলেঙ্কারি কাণ্ড হবে। তাই ভয়কে যতটা সম্ভব গোপন রেখার চেষ্টা করে বলে,-আমরা দোষ করেছি, আমাদের শাস্তি দাও। বাবার নাম জেনে কী হবে!

টাক মাথা লোকটা হেসে ফেলে এবার।

-যুক্তি কিন্তু একদম ঠিকঠাক আছে মশাই। দোষী শাস্তি পাবে, সেখানে বাবার নাম নিয়ে কী হবে!

-তা খুকি তুমি কোন্ ক্লাসে পড়ো?

অপু জবাব দেয়,

-দিদি পাঠশালা যায় না। আমি যাই?

ফেলুদা চোখ পাকিয়ে দুর্গাকে জিজ্ঞাসা করে,

-পড়াশুনো করো না কেন?

-ভাল্লাগেনা।

-কী ভালো লাগে রাতদুপুরে আম চুরি করতে?

জবাব দেয় না, মাথা নামিয়ে চুপ করে থাকে দুর্গা।

-আমরা একমাস এখন গাঁয়ে থাকব। পাঠশালায় তো এখন গরমের ছুটি চলছে। রোজ দুপুরে এই লালমোহনবাবুর কাছে পড়তে আসবে। এটাই তোমাদের শাস্তি। মনে থাকবে? একদিনও যদি কামাই করো সোজা তোমার বাবার কাছে নালিশ জানাব।

বাধ্য মেয়ের মত ঘাড় নাড়ে দুর্গা। পড়াশুনোর কথাতে দিদিকে এমন রাজি হতে দেখে বেশ অবাক হয় অপু। দুর্গা বলে,

-এবার তাহলে আমরা যাই?

ফেলুদা ঘাড় নাড়িয়ে সম্মতি দেওয়া মাত্র অপুর হাত ধরে বাগানের দিকে ছুটে যাচ্ছিল দুর্গা। কিন্তু ফেলুদার ডাকে থামতেই হয়।

-ওই বনবাদাড় দিয়ে নয়, সদর দরজা দিয়ে যাও। যা তো তোপসে সদর দরজাটা খুলে দে। আর কালকে রাতে যে আমগুলো পড়েছিল, ওই সিঁড়িতে আছে। ওগুলো ওদের দিয়ে দে।

আমের ঝাঁকাটা হাতে পেয়ে একবার ফেলুদাকে ঘুরে দেখে দুর্গা। তারপরেই ভাইয়ের হাত ধরে এক ছুট। লোকটাকে যতটা খারাপ মনে করেছিল ততটা নয়। আমের ঝাঁকাটা রান্নাঘরের পিছনে লুকিয়ে দুজনে চুপচাপ গিয়ে শুয়ে পড়ে মায়ের পাশটাতে। অপু ফিসফিস করে বলে,-কাল থেকে ওই টেকো বুড়োটার কাছে পড়তে যাবি? দুর্গা এক মুখ হেসে নির্বিকার গলায় বলে, -ধুস কে যাবে পড়াশুনো করতে! সারা দুপুর ওই স্লেট পেন্সিল নিয়ে বসে থাকার থেকে জোড়া অশ্বত্থ তলার ছায়ায় বসে কাঁচা আম মাখা খাওয়া ঢের ভালো।

অপু ভয়ে ভয়ে বলে, -কিন্তু বাবাকে যদি নালিশ করে?

-সমু, ও সমু, কখন থেকে ডাকছি তোকে। ক্লাবের ছেলেরা দু দুবার এসে ডেকে গেছে।

দুর্গার উত্তরটা শোনার আগেই মায়ের ডাকে ঘুম ভেঙে যায় সুমনের। এবার পুজোয় সত্যজিৎ রায়ের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষ্যে নতুন কিছু করার কথা ভাবা হচ্ছে। আজ সন্ধেতে ক্লাবে তারই মিটিং আছে। ছেলেগুলো তাই এত ডাকাডাকি করছে। দুপুরে খেয়ে উঠে শুয়ে শুয়ে সেই ভাবনাই ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল বুঝতেই পারেনি। আর সেই সুযোগে অপু, দুর্গা, হরিহর, ফেলুদা, তপসে, লালমোহনবাবু, প্রফেসর শঙ্কু সবাই এসে হাজির হয়েছিল স্বপ্নে। স্বপ্নটার কথা ভেবে নিজেই হাসতে থাকে সুমন, প্রফেসর শঙ্কুর পোষা বিড়াল নিউটনও বাদ যায়নি...

ফিরুন সূচিপত্রে



| হিম সংখ্যা-১৪২৮| aleekpata.com|
  |ALEEK PATA- Your Expressive World |Online Magazine |
| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty|
 Winter , 2021 | August -December 2021 | Fifth Year  Second  Issue |28 th Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |




No comments:

Post a Comment

Please put your comment here about this post

Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান