অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Saturday, January 8, 2022

গল্প-লাথি -আব্দুস সাত্তার বিশ্বাস

 

লাথি

আব্দুস সাত্তার বিশ্বাস

Image Courtesy: Google Image Gallery

এক

কী গো দাদি, কী করছ?”

বিড়ি বাঁধছি। আয়, বোস।”

জরিনার এটা নিজের দাদি নয়, তার নিজের দাদি নেই। অনেক দিন আগে স্তন ক‍্যানসারে মারা গেছে। জরিনার এটা পাড়া দাদি। নাম নূর বিবি।

জ‍রিনা বসল গিয়ে,” কেমন আছো?”

ভালো আছি। তুই ভালো আছিস?”

হ‍্যাঁ দাদি, ভালো আছি।”

ভালো তো থাকবিই। তোদের যে এখন ভালো থাকবারই বয়স। তা হ‍্যাঁ রে জরিনা, শুনলাম, তোর বলে বিয়ে লাগছে, কাল বলে তোকে দেখতে লোক আসবে। তা সত্যি নাকি?”

হ‍্যাঁ দাদি, সত্যি।”

তা এখনই বিয়ে করে ফেলবি? কলেজে পড়বি না?”

কলেজে পড়ার শখ তো ছিল। কিন্তু মা আর না পড়ালে কী করে পড়ব?”

তোর মার কথা তুই শুনবি কেন? তোর মা পড়াশোনার মূল্য কী বোঝে?”

তাই বললে হয়? মার অবস্থার কথাও তো দেখতে হবে। মার উপর জুলুম করে শুধু পড়লে তো হবে না। বাপ বেঁচে থাকলে সে কথা আলাদা ছিল। তাছাড়া মার এখন  হঠাৎ কিছু হয়ে গেলে আমি থাকব কোথায়? কে দেখবে আমায়? সব দিক ভেবে দেখে তাই বিয়ে করতে রাজি হলাম। না হলে এখন বিয়ে করব কেন?”

কেন, আমরা ছিলাম না? আমরা তোকে দেখতাম, আমরা তোর বিয়ে দিতাম। আমরা বুঝি তোর কেউ না!”

কেউ হবে না কেন? আমি কি একবারও বলেছি যে, তোমরা আমার কেউ না?”

মুখে না বললে কী হবে? সেটা দেখে তো বোঝা যায়। যাইহোক, কোন দেশে বিয়ে লাগছে?”

গ্রামের নাম রূপখালি।”

সেটা আবার কোন দিকে?”

অনেক দূর, বর্ডারের ধারে।”

অত দূরে বিয়ে করবি? বিয়ের পরে তোকে যদি মেরে দেয় বা বাংলাদেশে পাচার করে দেয় তখন কী করবি? অত দূরে কেউ বিয়ে করে?”

লাগলো তো কী করব?”

কে লাগালো?”

সম্পর্কে আমার খালুজি হয়।”

হুঁ, বুঝেছি। নিশ্চয়ই তোর ওই খালুজির মনে কোন বদ মতলব আছে, নিশ্চয়ই তোর ওই খালুজি বড় একটা ধান্দাবাজ লোক আছে।”

না না, আমার খালুজি খুব ভালো মানুষ। পাঁচ অক্ত নামাজ পড়ে, ধার্মিক মানুষ। কোন বদ মতলব তার মনে আছে বলে আমার মনে হয় না, আর ধান্দাবাজ তো মোটেই না।”

ভালো মানুষের মধ্যেই যে খারাপ মানুষ বাস করে রে!”

সে করতে পারে। কিন্তু আমার খালুজির মধ্যে করে না। ছোট থেকে দেখছি তো।”

না করলেই ভালো। তা ছেলে কী করে?”

কী করবে? চাষির ছেলে। মাঠে চাষ কাজ করে।”

তার মানে ছেলে মাঠে খাটা?”

হ‍্যাঁ, তাছাড়া আমরা আবার চাকরি করা ছেলে পাবো নাকি? কোন দিনই পাবো না।”

না পাওয়ার কী আছে! ধৈর্য ধরলে পেতেও পারিস।”

পাবো না, মরা পর্যন্ত ধৈর্য ধরলেও না। তার কারণ, যুগটা এখন অন্য যুগ চলছে। টাকা যার দাম তার।”

ছেলে দেখতে কেমন? ফর্সা হবে তো?”

খুব একটা ফর্সা হবে না। সে না হোক, ওতে কোন অসুবিধা নেই। আমি তো ফর্সা আছি।”

কী বললি! ছেলে ফর্সা হবে না? তোর মতো মেয়ে শেষে একটা মাঠে খাটা কালো কুচ্ছিত রাখাল ছেলেকে বিয়ে করবি? ছি:! ছি:! ছি!”

তুমি যতটা কালো বলছ, অতটা কালো হবে না।”

তুই দেখেছিস?”

না, শুনেছি।”

দেখিস নি তো বলছিস যে তাহলে?”

আমার সেই ঘটক খালুজির মুখে শুনেছি, খালুজি বলেছে।”

তার মানে আমি যা বলেছি তার থেকে আরও কালো হবে ধর। কারণ, ঘটকরা কোন দিন সত্যি কথা বলে না। তোকে ওরকম বলেছে তাই। আমি বলছি, ও ছেলেকে তুই বিয়ে করিস না, জরিনা। কালো ছেলেকে তুই বিয়ে করে জীবনে সুখী হতে পারবি না। কারণ, কালো ছেলেদের ব‍্যবহার খুব একটা ভালো হয় না। তারা খুব মারকুটে হয়। আর খুব কিপটে হয়। তোকে কোন দিন কিছু কিনে দিবে না, খুব কষ্টে রাখবে, আর ধরে ধরে মারবে। মার খেতে পারবি তো? যাইহোক, টাকা পয়সা লাগছে না নাকি?”

তো লাগছে না? টাকা ছাড়া আজকাল বিয়ে আছে নাকি? পঞ্চাশ হাজার টাকা নগদ লাগছে। বাপের তো কিছু ছিল না, ভিটামাটি টুকু ছাড়া। মা তার বাপের বাড়ি পাঁচ কাঠা জমি পেয়েছিল ওটা বেচে এনে টাকা দেবে।”

টাকা লাগার কথা শুনে নূর বিবি চমকে উঠল,” কী বললি, পঞ্চাশ হাজার টাকা লাগছে! তা হ‍্যাঁ রে, টাকা দিয়ে কালো ছেলেকে বিয়ে করবি কেন? টাকা যদি দিতেই হয় তো একটা ভালো ছেলেকে দিবি।”

কী করব বলো, সবই হল কপাল! কপালে যদি কালো ছেলে লেখা থাকে ভালো ছেলে পাবো কোথায়?”

ছাড় তোর কপাল!” নূর বিবি জরিনার কথা উড়িয়ে দিল,” আমার কথা শুনে ও ছেলেকে তুই বিয়ে করিস না। ফর্সা ছেলে বিয়ে কর।”

করব তো পাবো কোথায়? তোমার হাতে আছে নাকি?”

নেই তো এমনি বলছি? আমার হাতে খুব সুন্দর একটা ফর্সা ছেলে আছে। দেখলে তোর মাথা ঘুরে যাবে, অমনি পছন্দ হয়ে যাবে, তোর সাথে দারুণ মানাবে, রোজগারও করে ভালো। তোর কোন জিনিসের অভাব রাখবে না। পাকা বাড়ি। বাড়িতেই পায়খানা, বাথরুম। তোকে মাঠে পায়খানা ফিরতে যেতে হবে না। নিজস্ব মোটরসাইকেলও আছে। মোটরসাইকেলে চেপে দুজনে হলে সিনেমা দেখতে চলে যাবি। আ-হা, কী সুখ! বয়স থাকলে আমিই বিয়ে করতাম।”

জরিনা বলল,” ছবি আছে?”

থাকবে না আবার? ঘরে বাক্সের ভিতর ভরা আছে। বের করে এনে তোকে দেখাচ্ছি, বোস।” নূর বিবি ছবিটা এনে দেখাল,” নে, দ‍্যাখ!”

জরিনা ছবিটা দেখল। পরনে নীল জিন্স প‍্যান্ট, গায়ে রঙিন টি-শার্ট আর চোখে রোদ চশমা। দেখতে দেখতে নূর বিবির দিকে একবার তাকাল।

নূর বিবি বলল,” কী রে, সুন্দর না?”

মুচকি হাসল জরিনা,” হ‍্যাঁ, খুব সুন্দর।”

নূর বিবি তখন ছবিটা জরিনার হাত থেকে নিয়ে বলল,” এই ছেলের সাথে আমি তোর বিয়ে লাগাব, করবি তো?”

লাগাও, করব। কিন্তু টাকা চাইলে দিতে পারব না। আগেই বলা ভালো।”

তোর কোন টাকা লাগবে না। টাকা ছাড়াই তোকে বিয়ে করবে।”

তোমাকে বলেছে?”

না বললে জানব কী করে? কালকেই তো আমার বাড়ি এসেছিল। এসে একটা ভালো মেয়ে দেখতে বলল। কোন টাকা পয়সা লাগবে না বলল। শুধু মেয়েটা তার ভালো হলেই হল। গরিবের মেয়ে হলেও কোন অসুবিধা নেই। তাই বলছি, তুই ওই কালো ছেলেকে বাদ দিয়ে রাকিবকে বিয়ে কর। আরে, সুন্দর স্বামীর কাছে থাকা আর বেহেশতে থাকা দুটোই এক জিনিস, বুঝলি? এক বেলা খেতে না পেলেও শান্তি। রাকিব কে চিনতে পারলি তো?”

কে?”

যার ছবি দেখলি সে। আমার বাপের দেশে বাড়ি। থাম, রাকিবকে এক কল ফোন করি, কথা বল।”

না, ফোন করোনা, আমি কথা বলব না।”

নূর বিবি শুনল না,” কথা বলবি তো কী হবে?” ফোন লাগিয়ে দিল।

হ‍্যালো!” ফোন রিসিভ হল।

কে, রাকিব?”

হ‍্যাঁ, বলো।”

বলছি, তুই একটা ভালো মেয়ে দেখতে বলেছিলি না! আমি একটা ভালো মেয়ে দেখেছি। মেয়ে দেখতে খুব সুন্দর। কোন খুঁত নেই। আমাদের নিজেদের মধ‍্যে। ব‍্যবহারও খুব ভালো। যাকে বলে অমায়িক মেয়ে। তুই বিয়ে করলে জীবনে খুব সুখী হবি, শান্তি পাবি। সে এখন আমার কাছেই বসে আছে, কথা বল।” নূর বিবি জরিনার দিকে ফোনটা বাড়িয়ে দিল,” নে জরিনা, ধর, কথা বল।”

জরিনা ফোনটা ধরল,” হ‍্যালো!”

কে, জরিনা?”

হ‍্যাঁ, কিন্তু আপনি আমার নাম জানলেন কী করে? আমি তো আপনাকে আমার নাম বলিনি।”

এক্ষুনি নূর বিবি বলল না!”

, আচ্ছা।”

রাকিব তখন বলল,” তোমার নামটা খুব সুন্দর, জরিনা! আমি তোমাকেই বিয়ে করব, শুধু তোমাকেই, আর কাউকে না।”

জরিনা বলল,” মিথ্যা কথা বলছেন! আপনারা হলেন বড়লোক মানুষ, আমি হলাম গরিবের মেয়ে। আমাকে বিয়ে করেন?”

কেন, আমার কথা তোমার বিশ্বাস হচ্ছে না?”

না।”

ঠিক আছে, তুমি ওখানেই দাঁড়াও; আমি এক্ষুনি চলে আসছি। আর হ‍্যাঁ, ফোনটা তুমি নূর বিবিকে একটু দাও। তার সাথে জরুরি দুটো কথা আছে, সেরে নিই।”

জরিনা ফোনটা নূর বিবিকে দিল,” নাও গো দাদি, তোমার সাথে কথা বলবে।”

নূর বিবি ফোনটা নিল,” কী, বল।”

তুমি জরিনাকে এক্ষুনি এক কাপ চায়ের সাথে ট‍্যাবলেটটা গুলে খাইয়ে দাও। দিয়ে তোমার কাছে বসিয়ে রাখো, আমি এক্ষুনি চলে আসছি।”

ঠিক আছে, আয়।”

ফোনটা রেখে দিয়ে নূর বিবি জরিনাকে বলল,” রাকিব আসছে, তুই ততক্ষণ একটু বোস। আমি ঘর থেকে তোর জন্য এক কাপ চা বানিয়ে আনি।”

আচ্ছা, যাও।”

নূর বিবি চা বানিয়ে আনল। জরিনা সেই চা  খেতে খেতে বলল,” চা খেতে খুব একটা ভালো লাগছে না দাদি, চায়ে কী দিয়েছ? মন বলছে, চা ফেলে দিই।”

চায়ে আবার কী দিব? কিছু দিইনি তো।”

তাহলে চা খেতে ভালো লাগছে না কেন?”

কী জানি! আমি তো ভালো করেই বানালাম। যাইহোক, ভালো মন্দ যা লাগছে খেয়ে নে! খেলেই কাজ দিবে।”

নূর বিবির কথায় জরিনা চা আর ফেলতে পারল না, খেয়েই নিল। নূর বিবি তাকে বুঝতেই দিল না যে, চায়ের সঙ্গে সে এক রকম একটা ট‍্যাবলেট গুঁড়ো করে মিশিয়ে দিয়েছে। যা খেলে মেয়েদের শরীরে ও মনে অকস্মাৎ কামক্ষুধা জেগে ওঠে। যে কোন পুরুষই তার সঙ্গে তখন অনায়াসে মিলিত হতে পারে। তাই, চায়ের স্বাদ তাকে বিস্বাদ লেগেছে।

 

দুই

সাদা রংয়ের একটা আর টি আর মোটরবাইকে চেপে রাকিব চলে এল। ছবিতে আগে দেখা ছিল বলে জরিনা তাকে দেখেই চিনতে পারল। সত্যিই তো সে দারুণ ফর্সা ছেলে একটা। যাকে বলে ভেরি স্মার্ট বয়!

অতএব রাকিবের দিকে তাকিয়ে জরিনা ফিক করে হাসল। তার ওই হাসি দেখেই রাকিব বুঝতে পারল যে, এই মেয়েটাই হল জরিনা। সে তখন জরিনাকে বলল,” আমি বলেছিলাম না, আমি আসব? এলাম? আসলে আমি মুখে যা বলি কাজেও তাই করি। কোন বাচাল প্রেমিকের মতো আমি নই।”

জরিনা এবার মিষ্টি করে হাসল।

রাকিব তার ওই হাসি দেখে বলল,” খুব মিষ্টি তোমার হাসি, জরিনা  !” তারপর নূর বিবির উদ্দেশ্যে বলল,” কই গো, ঘরে বসতে টসতে জায়গা দেবে না নাকি? বাইরে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকব?”

নূর বিবি তাদের বসার জন্য একটা ঘরের দরজা খুলে দিল। ভিতরে একটা চৌকি আর দুটো বালিশ ছাড়া আর কিছু নেই। নিচে পা ঝুলিয়ে চৌকির উপর তারা বসল।

রাকিব বলল,” আমি যে তোমাকে সত্যি সত্যি ভালোবাসি এবার সেটা বিশ্বাস হল তো?”

লজ্জাবনত মস্তকে জরিনা বলল,” হল।”

রাকিব তখন জরিনার চিবুক ধরে বলল,” তুমি খুবই সুন্দরী জরিনা, তুমি খুবই সুন্দরী। তাই, আমি তোমাকেই বিয়ে করব। হ‍্যাঁ,

জরিনা।” বলতে বলতে রাকিব জরিনার মাথার চুল নাড়তে শুরু করল,” তোমার মাথার চুলও খুব সুন্দর!” তারপর নাকে শুঁকে ঘ্রাণ নিয়ে বলল,” আ:, কী সুন্দর সেন্ট! চুলে কী মেখেছ?”

মৃদু হেসে বলল জরিনা,” কী মাখব? কিছু মাখি নি।”

রাকিব এবার হাতটি ধরে হাতের আঙুল গুলো নাড়লো,” তোমার হাতের আঙুল গুলোও খুব সুন্দর!” ও জরিনার ঠোঁটে হাত দিল,” তোমার ঠোঁটও দারুণ সুন্দর!”

জরিনা কিছু বলল না। সে চুপ করে থাকল ও চৌকির উপর শুয়ে গেল। তার চুপ করে থাকা আর চৌকির উপর শুয়ে যাওয়া দেখে রাকিব বুঝল যে, ওষুধের কাজ শুরু হয়েছে। ফলে রাকিব আর দেরি করল না। তক্ষুনি তার মনের নেশা মেটাতে উদ্ধত হল।....

 

এরপর সন্ধ্যার আঁধার যখন ঘনিয়ে এল রাকিব বলল,” তোমার সঙ্গে আমার যখন শারীরিক সম্পর্ক ঘটেই গেল জরিনা, তখন আমি তোমাকে আর রেখে যাবো না, আমি তোমাকে নিয়েই যাবো এবং বিয়ে করব। তুমি কী বলছ, বলো।”

আমি কী বলব?”

তাহলে আমার সঙ্গে এক্ষুনি তুমি চলো!”

চলো।” মনের মানুষের সঙ্গে তুমিকরে কথা বলতে হয়। জরিনা তাই, এখন থেকে তুমিকরে কথা বলতে শুরু করল।

জানলা দিয়ে মুখ বের করে রাকিব তখন নূর বিবির উদ্দেশ্যে বলল,” কই গো, আছো নাকি?”

নূর বিবি অমনি জানলায় চলে এল,” আছি।”

তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দাও।”

নূর বিবি দরজা খুলে দিল।

রাকিব বাইরে বেরিয়ে এল।

নূর বিবি জিজ্ঞেস করল,” কী হল, বল।”

রাকিব বলল,” আমরা এক্ষুনি বেরিয়ে যাচ্ছি, জরিনার মা যদি খুব খোঁজাখুঁজি করে তুমি তাকে বুঝিয়ে দিও।”

অ নিয়ে তোরা কোন চিন্তা করিস না, আমি ঠিক বুঝিয়ে দিব।”

ঠিক আছে, আমরা যাচ্ছি তাহলে! আর হ‍্যাঁ, এই টাকাটা তুমি রাখো, মিষ্টি কিনে খেও।”

 

রাকিবের টাকা পেয়ে নূর বিবি খুব খুশি হল। রাকিবের সঙ্গে তার যে এটাই চুক্তি হয়েছিল। একটা মেয়ে ঠিক করে দিতে পারলে রাকিব তাকে পাঁচ হাজার টাকা দিবে। যত মেয়ে ঠিক করে দিবে তত পাঁচ হাজার টাকা দিবে। জরিনাকে দিয়ে নূর বিবি সেটা আজ প্রথম বউনি করল।

 

তিন

রাকিবের গাড়ি ঝড়ের বেগে ছুটে চলল। ফলে জরিনার মাথার চুল, বুকের ওড়না বাতাসে সব এলোমেলো হয়ে গেল আর তার চোখ দিয়ে জল ঝরল। এর জন্য জরিনা রাকিবকে বলল,” গাড়ি আস্তে চালাও।”

মাথায় হেলমেট পরা রাকিব জরিনার কথা ঠিকঠাক শুনতে পেল কি পেল না সে কোন উত্তর করল না।

খানিক বাদে জরিনা ফের বলল,” গাড়ি আস্তে চালাও।” এবার সে জোরে এবং রাকিবের কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে  বলল।

রাকিব বলল,” এখন কি গাড়ি আস্তে চালানোর জো আছে? ধ‍রা পড়ে গেলে তুমি ও আমি দুজনেই ভীষণ বিপদে পড়ে যাবো। তোমার কি কোন অসুবিধা হচ্ছে?”

হ‍্যাঁ, অসুবিধা হচ্ছে।”

কী অসুবিধা হচ্ছে?”

ছিটকে পড়ে যাবো বলে ভয় করছে, আর বাতাসের ঝাপটায় চোখ দিয়ে জল ঝরছে।”

, এই অসুবিধা হচ্ছে?”

হ‍্যাঁ।”

ঠিক আছে, তুমি এক কাজ করো তাহলে, আমাকে ভালো করে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে বসো। তাহলে আর কোন অসুবিধা হবে না।”

রাকিবের কথা মতো জরিনা তাই করল, রাকিবকে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে বসল।

রাকিব তখন জরিনাকে নিয়ে গাড়ি ছুটিয়ে দুঘণ্টার মধ্যে শহরে পৌঁছে গেল এবং শহরের একটা পাঁচতলা হোটেলে গিয়ে উঠল। উঠে হোটেলের একটা রুমে বসে রাকিব তাকে বলল,” তুমি এখানে একটু বসো জরিনা, আমি একটু আসছি।”

জরিনা জিজ্ঞেস করল,” কোথায় যাবে?”

একটু বাইরে যাবো।”

জরিনা তখন বলল,” আমি একা বসতে পারব না। একা বসতে আমার খুব ভয় করবে। আমিও তোমার সঙ্গে যাবো।”

সাহস দেওয়ার জন্য রাকিব তখন বলল,” ভয় কী! কোন ভয় নেই। আমি তো আবার ফিরে আসছি।”

না, তাও আমার খুব ভয় করবে। কেউ এসে যদি আমাকে চেপে ধরে আমি তখন কী করব? এখানে আমি কাকে চিনি?”

রাকিব ফের সাহস দিল,” বললাম তো, কোন ভয় নেই। এখানকার মানুষ সবাই খুব ভালো। কেউ তোমাকে কিচ্ছুটি শুধিয়ে দেখবে না বা  তোমাকে কেউ বিরক্ত করবে না।”

জরিনা বলল,” তুমি বাইরে কোথায় যাবে?”

সিগারেট শেষ হয়ে গেছে, সিগারেট আনতে যাবো।”

আজ অমনি থাকো না, সিগারেট আজ খেতে হবে না। একটা রাত সিগারেট না খেলে কী হবে?”

রাকিব বলল,” তোমার কি মাথা টাথা কিছু খারাপ হয়েছে, সিগারেট না খেলে থাকা যায়? খাবার না খেয়ে থাকতে পারব, কিন্তু সিগারেট না খেয়ে থাকতে পারব না।”

এরপর জরিনা যখন কোন ভাবেই তাকে আটকাতে পারল না তখন অত্যন্ত ভীতা হয়ে বলল,”যাচ্ছ যাও, খুব তাড়াতাড়ি এসো কিন্তু!”

যাবো আর আসব।” রাকিব বেরিয়ে চলে গেল।

 

চার

ঘণ্টা খানেক হতে চলল তবু রাকিব ফিরে এল না। একলা ঘরে রাকিবের জন্য জরিনার তখন খুব ভয় করতে লাগল। তার কাছে কোন ফোন টোনও নেই যে, এক কল ফোন করে দেখবে। যদি রাকিব না আসে? কোন পরপুরুষ এসে যদি তাকে এখন... নানাবিধ কথা ভাবতে ভাবতে জরিনার কণ্ঠতালু ভয়ে শুকিয়ে গেল। আর সে বারবার ঢোঁক গিলল।

ঠিক এই সময় একজন লোক এসে ঘরে ঢুকল,” কী করছ, সুন্দরী?”

ভয়ে জরিনা চমকে উঠল,” কে আপনি!”

বলব বলব, অত ব‍্যস্ত হচ্ছ কেন? আগে দরজাটা তো বন্ধ করতে দাও।”

জরিনা চিৎকার করে উঠল,” না, দরজা বন্ধ করবেন না, দরজা বন্ধ করবেন না বলছি।”

জরিনার কথা সে শুনল না। দরজা বন্ধ করেই দিল,” কী বলছ, এবার বলো।”

আপনি দরজা বন্ধ করলেন কেন? দরজা খুলে দিন, দরজা খুলে দিন বলছি! না হলে আমার রাকিব এসে আমাকে পাবে না।”

তোমার রাকিব আর আসবে না, সুন্দরী।”

জরিনা অত্যন্ত ভীতা বনে গিয়ে এবার পিছনের দেওয়ালের দিকে সরে গেল,” আপনি কে? এখানে কেন এসেছেন? বেরিয়ে যান বলছি, বেরিয়ে যান।”

হাসতে হাসতে সেই লোক তখন বলল,” আমি হলাম এই হোটেলের মালিক। সুতরাং, তুমি বেরিয়ে যেতে বললেই তো আমি বেরিয়ে যাবো না।”

দৃপ্ত কণ্ঠে জরিনা সেই লোককে তখন বলল,” আপনি হোটেলের মালিক হতেই পারেন, তাই বলে একলা একটা মেয়ের ঘরে আপনি ঢুকতে পারেন না। এটা অন‍্যায়। আপনি এক্ষুনি বেরিয়ে যান। রাকিব আসুক তখন যা বলার ওকে বলবেন। আমার সঙ্গে আপনার কোন প্রয়োজন নেই। আপনি এখন আসতে পারেন।”

সেই লোক বলল,”রাকিবের সঙ্গে আমার সব প্রয়োজন মিটে গেছে। প্রয়োজন এখন আমার তোমার সঙ্গে।”

আমার সঙ্গে!”

হ‍্যাঁ, তোমার সঙ্গে।”

আমার সঙ্গে আপনার কী প্রয়োজন?”

অত দূরে থাকলে বলব কী করে? কাছে এসো তবে তো বলব।”

না, আপনি বেরিয়ে যান বলছি, না হলে রাকিব এলে তাকে বলে দিয়ে আপনাকে...”

সেই লোক হাসল শুনে,” তুমি এখনও রাকিবের কথা ভাবছ? রাকিব আর আসবে না বললাম না?”

কে বলল, আসবে না?”

আমি বলছি, আসবে না।”

আপনি বললেই হল নাকি? কেন আসবে না?”

রাকিব চলে গেছে।”

চলে গেছে!”

হ‍্যাঁ, চলে গেছে।”

কোথায় চলে গেছে?”

রাকিব বাড়ি চলে গেছে।”

“না, এ হতে পারে না, আমি এটা বিশ্বাস করি না। কারণ, রাকিব আমাকে ভালোবাসে, আমিও তাকে ভালোবাসি। আর আপনি বললেই হল না? রাকিব বাইরে সিগারেট আনতে গিয়েছে। হয়তো দোকানে ভিড় আছে বলে তার আসতে দেরি হচ্ছে। পেয়ে গেলেই ঠিক চলে আসবে। রাকিব কথা দিয়েছে, সে আমাকে বিয়ে করবে।”

জরিনার কথার উত্তরে সেই লোক তখন বলল,” তুমি হলে পাড়া গাঁয়ের অতি সাধারণ একটা মেয়ে। তাই, তুমি বুঝতে পারো নি। রাকিব তোমাকে আমার কাছে বেচে দিয়ে টাকা নিয়ে চলে গেছে। সে আর ফিরে আসবে না।”

কী!”

হ‍্যাঁ।”

না, আপনার কথা আমি বিশ্বাস করি না। আপনি আমাকে মিথ্যা কথা বলছেন, আপনি আমার মন ভাঙানোর চেষ্টা করছেন। রাকিব আমাকে বেচতে পারে না।”

আমি তোমাকে মিথ্যা কথা বলছি না, জরিনা। আমি তোমাকে সত্যি কথাই বলছি। হ‍্যাঁ, জরিনা।”

সেই লোকের মুখে নিজের নাম শুনে জরিনা অবাক হল,” এ কী! আপনি আমার নাম জানলেন কী করে?”

সেই লোক বলল,” টাকা নিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ার সময় রাকিব আমাকে বলে গেছে। জানো তো, মেয়েছেলে কেনাবেচার আমি ব‍্যবসা করি। তোমাকে রাকিব বিয়ে করবে বলে টোপ দিয়ে এখানে নিয়ে এসে আমার কাছে বেচে দিয়েছে। তোমরা মেয়েরা হলে সব বোকা। তাই, তোমরা ছেলেদের প্রেমের প্রলোভনে খুব সহজেই পড়ে যাও। আর তার সঙ্গে বেরিয়ে চলে আসতে দ্বিধা করোনা, তার সম্পর্কে একবার ভেবেও দেখো না, সে কেমন ছেলে, কী করে।”

আমি ঠিক বুঝতে পারি নি তাকে, আমি ঠিক চিনতে পারি নি।”

আমি রাকিবের মুখে সব শুনেছি, তুমি তো তাকে চেনা বা বোঝার কোন চেষ্টাই করো নি। রাকিবের সুন্দর চেহারা দেখেই তুমি ভুলে গিয়েছিলে। ভেবেছিলে, রাকিবের মতো সুন্দর ছেলে তুমি আর জীবনে পাবে না। জানো তো, রাকিব তার ওই সুন্দর চেহারা দিয়েই তোমাদের মতো মেয়েদের খুব সহজে শিকার করতে পারে। তোমাকে ধরলে রাকিবের পঞ্চাশের উপর মেয়ে বিক্রি করা হবে আমার কাছে। তারা সব তোমার মতো গরিব ঘরের সাধারণ মেয়ে। সব গ্রামে তার একটা করে মেয়ে ঠিক করা আছে। তারাই রাকিবকে মেয়ে ধরে দেয়। রাকিবের কাছ থেকে তারা কমিশন পায়। মেয়ে প্রতি পাঁচ হাজার টাকা করে।”

জরিনার অমনি নূর বিবির কথা মনে পড়ল। তার এই দাদিই তাকে সেরেছে। সুতরাং সে ভাবল, এখান থেকে যদি সে কোন দিন বেরোতে পারে তাহলে সে ওই নূর বিবির বিরুদ্ধে সালিশ ডাকবে, তাকে শাস্তি দিবে। দিতেই হবে। না হলে সে যে আরও অনেক মেয়ের সর্বনাশ করবে। তার সর্বনাশের হাত থেকে গ্রামের সাধারণ মেয়েদের বাঁচাতে হবে। বিষয়টা সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করতে হবে। ও সে নিজে একটা সংগঠন গড়ে তুলবে। হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মেয়েদের নিয়ে। সেই সংগঠনের কাজ হবে মেয়েদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো, মেয়েদের সতর্ক করা। ভুল পথে ভুল করেও যাতে কোনও মেয়ের পা না পড়ে, ভালোবাসার শিকার মেয়েরা যাতে না হয়।...

এরপর জরিনা সেই লোকের কাছে মুক্তি চাইল,”....আপনি আমায় মুক্তি দিন!”

জরিনার আবেদন মঞ্জুর হল না।

                         

পাঁচ

রাত্রে জরিনার মা সাইমা বিবি জরিনার খোঁজে বের হল। পাশের বাড়ি গুলো সব দেখল। ও আরও অনেক লোককে ধরে ধরে জিজ্ঞেস করল। কিন্তু জরিনার খোঁজ কেউ দিতে পারল না। জরিনাকে কেউ দেখেনি বলল। জরিনার জন্য তার মনটা তখন খুব হা-হুতাশ করল এবং এক সময় তার নূর বিবির কথা মনে পড়ল। জরিনা তার কাছে মাঝে মাঝে যায় এবং বসে। সব বাড়ি গেলেও তার নূর বিবির বাড়ি যাওয়া হয়নি। তার কাছে গেলে জরিনার খোঁজ খবর পাওয়া যেতে পারে। সে তখন নূর বিবির বাড়ি গেল,” চাচি, তোমার কাছে আমার জরিনা আসেনি?”

কই, না তো।” নূর বিবি বলল,” তুমি এসেছ ভালো করেছ, না হলে তোমার কাছে আমাকেই যেতে হতো। তোমার জরিনা আমাকে ফোন করেছিল। খবরটা জানানোর জন্য।”

সাইমা বিবি চমকে উঠল,” ফোন করেছিল!”

হ‍্যাঁ, ফোন করেছিল।”

কখন?”

তা ঘণ্টা খানেক হল।”

কিন্তু জরিনার তো ফোন নেই। তাহলে সে ফোন করল কীভাবে?”

কার ফোন থেকে করেছিল তা তো বলতে পারব না। আমার নম্বর ও জানে। তাই, আমার ফোনে ফোন করেছিল।”

করে কী বলল?”

তোমাকে খোঁজাখুঁজি আর চিন্তা করতে নিষেধ করল।”

কেন, কোথায় আছে বলল?”

সে সব কথা কিছু বলল না। জিজ্ঞেস করলাম তাও না। তবে একটা কথা বলল, কাল বলে ওকে দেখতে লোক আসবে, ছেলে বলে দেখতে কালো।‌ কালো ছেলেকে ও বিয়ে করবে না। তাই, কোথাকার একটা ছেলের সাথে পালিয়ে গেছে।”

কী বললে, তুমি!”

হ‍্যাঁ, ফোনে আমাকে তো সে রকমই বলল।”

সাইমা বিবি নিজেকে তখন আর ধরে রাখতে পারল না। তারস্বরে চিৎকার করে কান্না জুড়ে দিল,” জরিনা, ও জরিনা, এ তুই কী করলি মা...এ তুই কী করলি...জরিনা....”

নূর বিবি তাকে কাঁদতে বারণ করল,” কেঁদো না, বরং আল্লার কাছে হাত তুলে দোয়া করো। যাতে তোমার জরিনা ভালো থাকে এবং সুখে থাকে।”

নূর বিবির কথা মতো সাইমা বিবি তাই করল। কান্না বন্ধ করে জরিনার জন্য আল্লার কাছে হাত তুলে দোয়া করল,” আল্লা, ও আল্লা, আমার জরিনাকে তুমি সুখে রেখো, আমার জরিনাকে তুমি ভালো রেখো, আমার জরিনাকে তুমি শান্তিতে রেখো, আমার জরিনাকে তুমি....আল্লা....”

 

ছয়

তিন বছর বাদে জরিনা ফিরে এল। হোটেলের এক সিকিউরিটির সঙ্গে হাত করে পালিয়ে এল। এসে সব কথা তার মাকে খুলে বলল। দুই মা মেয়ে মিলে গলা ধরে তখন খুব কাঁদল। তারপর নূর বিবির বিরুদ্ধে সালিশ ডাকল। সালিশে প্রচুর লোকের সামনে জরিনা তার বক্তব্য পেশ করল। সবাই তার বক্তব্য শুনল। ও পরে নূর বিবিকে উঠে দাঁড়াতে বলল।

নূর বিবি উঠে দাঁড়ালো।

জরিনা যা বলল সব কি সত্যি?”

না, বিলকুল মিথ্যা।”

না, ও মিথ্যা কথা বলছে। ওর কথা আপনারা কেউ শুনবেন না, কেউ বিশ্বাস করবেন না।” জরিনা উঠে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করল।

কিন্তু সালিশের মধ্যেকার একজন লোক  বলল,” তুই-ই যে সত্যি, তার কি কোন প্রমাণ আছে?”

জরিনা বলল,” আছে।”

কী প্রমাণ আছে?”

রাকিব যে হোটেলে আমাকে বিক্রি করেছিল ওই হোটেলই হল তার প্রমাণ।”

নূর বিবি তখন বলতে লাগল,” আপনারা ওর কথা কী শুনছেন? ও হল একটা চরিত্রহীনা মেয়ে। তিন বছর ও হোটেলে ছিল। ওর জাত ধর্ম বলে কিছু নেই। সব চলে গেছে। আপনারা ওকে ধরে মারুন! মারুন ওকে। না হলে আমাদের গ্রামের বদনাম হবে, দুর্নাম হবে, আমাদের উপর খোদার গজব নাযিল হবে।”

তারপরই সালিশের কিছু লোক উত্তেজিত হয়ে জরিনাকে মারতে শুরু করল। আর অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিতে লাগল,” শালি, নিজে একটা খানকি মেয়ে হয়ে...শালি...” আর কিছু লোক চুপ করে থাকল। তারা জরিনাকে মারতেও বলল না আবার মারতে বারণও করল না।

ভদ্র সালিশের এ রূপ ব‍্যবহারে জরিনার মা স্তম্ভিতা হয়ে গেল। এ কী! এর প্রতিবাদের সে কোন ভাষা খুঁজে পেল না। ফলে দম দম করে সে খালি লাথি মারল মাটিতে, দম দম করে সে খালি...

নূর বিবির মতো মানুষেরা এভাবেই বেঁচে যায় চিরকাল আর মার খায় জরিনারা। এটা আমাদের লজ্জা। হ‍্যাঁ, লজ্জাই।

ফিরুন সূচিপত্রে



| হিম সংখ্যা-১৪২৮| aleekpata.com|
  |ALEEK PATA- Your Expressive World |Online Magazine |
| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty|
 Winter , 2021 | August -December 2021 | Fifth Year  Second  Issue |28 th Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |

No comments:

Post a Comment

Please put your comment here about this post

Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান