অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



"অলীক পাতা নববর্ষ সংখ্যা ১৪৩১ প্রকাশিত, সমস্ত লেখক -লেখিকা এবং পাঠক -পাঠিকাদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা..."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Thursday, June 1, 2023

চিঠি কবিতা - সুন্দরের ঠিকানায় - বাসুদেব সরকার

চিঠি কবিতা 

সুন্দরের ঠিকানায়

বাসুদেব সরকার


 

০১. শুভেচ্ছা, সম্ভাষণ

 

ওহে আমার প্রিয় বিয়াইন এবং সকল বিয়াই,

নমস্কার ও শুভেচ্ছা যে আপনাদের জানাই।

এছাড়াও সবার প্রতি রইলো ভালোবাসা,

অনুভূতি করতে প্রকাশ কলম নিয়ে বসা।

আপনারা রতন দাদার শালা-শালি-শালাবউ,

আমার ভালোবাসা হতে বাদ পড়লেন না কেউ।

সেই সূত্রেই মোর আপনারা বিয়াই-বিয়াইন হন,

বিয়াই-বিয়াইন সম্পর্কটা অতি যে আপন।

রতন দাদা হলো আমার পিসতুতো ভাই,

very happy এত্তো এত্তো বিয়াই-বিয়াইন পাই।

 

০২. চিঠিতে ভ্রমণ বৃত্তান্ত

 

চাটগাঁ থেকে লিখলো দাদা, বৌদি সিলেট থেকে,

যেতে হবে বৌদির বাড়ি জানালো তা লিখে।

স্বরূপকাঠি যাচ্ছি তো তাই পুজো উপলক্ষে,

নতুনকে তো জয়ের আশা আমার-ই এই বক্ষে।

রতন দাদার সাথে যাত্রা করি বাড়ি হতে,

চাঁদপুর এসে তিন তলা লঞ্চ উঠি 'মানসী'-তে।

সিলেট হতে আসবে বৌদি ঢাকা হয়ে 'পারাবত'-,

মানুষ বেশির কারণে আর থাকি না তার অপেক্ষাতে।

বেশ দুষ্টুমি করি লঞ্চে ক'টি মেয়ের সাথে,

একটুও তো ঘুমাইনি যে লঞ্চে সারা রাতে।

আমার এ দুষ্টুমির কথা কেউ তো আর না জানে,

আমার সাথে ছিলেন যারা ঘুমোচ্ছেন একমনে।

শিকারপুরে নেমে গেলো পাশের মেয়ে দু'টি,

বাকিগুলো একসাথেতে নামলাম স্বরূপকাঠি।

ঐ সে মেয়ে দু'টির একটি সারা রাত্রি ধরে,

মাথা রেখে শুইয়ে ছিলো আমার পায়ের 'পরে।

কতো কতো চিমটি কাটি শরীরেতে তার,

বন্ধ করি 'তাহার' কথা বলবো না তো আর!

স্বরূপকাঠি নামলো যারা বাড়ি যে কোনখানে?

বললো তারা কী নাম যেনো এখন তো নেই মনে।

এগারো-দশ-দুই হাজার দুই রোজ যে শুক্রবারে,

রওনা করে স্বরূপকাঠি পৌঁছি পরদিন ভোরে।

স্বরূপকাঠি টার্মিনালে পৌঁছলে লঞ্চ ভোররাতে,

বইতে খুশির শিহরণ তো আমার হৃদয়েতে।

লঞ্চটি হতে নেমে যখন প্রথম তো পা রাখি,

নতুন জায়গা জয় করাতে ভাবছি আমি lucky.

সেখান হতে ট্রলারযোগে গ্রাম হতে গ্রাম ছাড়ি,

জোয়ার ভাটার খালে দিয়ে দিচ্ছি আমরা পাড়ি।

মাদ্রা গ্রামে পৌঁছি আমরা প্রায় দেড় ঘন্টা পরে,

দাদার শ্বশুর বাড়ির লোকজন কাউকে চিনি না রে।

দেশের পশ্চিম-দক্ষিণাঞ্চল এই তো প্রথম আসি,

নতুন জায়গা, নতুন মানুষ ভীষণ ভালোবাসি।

পরিচিত হতে পেরে আপনাদের সনে,

লাগলো ভালো, খুশির জোয়ার বইছে আমার মনে।

অচেনাকে চেনা এবং অজানাকে জানা,

ভীষণ ভালো লাগে আমার বন্ধু হতে নেই মানা।

হাত বাড়িয়ে সকলে মোর বন্ধু হয়ে গেলেন,

নির্দ্বিধায় তো আপনারা আপন করে নিলেন।

আপনারা মিশুক এবং ভালো মানুষ খুব,

বন্ধুত্ব তাই রাখতে অটুট আমার মনে লোভ।

ধন্য হলাম আপনাদের পেয়ে ভালোবাসা,

ভুল বুঝবেন না কোনো বন্ধু এটাই আমার আশা।

যারে একবার ভালোবাসি আমি বন্ধুর মতো,

সারাজীবন বন্ধু-ই ভাবি ভুল বুঝুক সে শত।

অজানা ও অচেনাকে করতে পারলে জয়,

এর চেয়ে তো খুশির কথা আর কিছু কী হয়!

ইলিশ বাড়ি চাঁদপুর জেলার উপজেলা হাইমচর,

সেখানকার-ই চরভৈরবী গ্রামে আমার ঘর।

আপনাদের বাড়ি হলো স্বরূপকাঠি, পিরোজপুর,

আমাদের-ই বাড়ি হতে অনেক অনেক দূর।

ছোট্টবেলায় পড়েছিলাম ধান, নদী আর খাল,

একসঙ্গে এ' তিনটি মিলে হলো বরিশাল।

বৃহত্তর বরিশালের পিরোজপুর এক জেলা,

স্বরূপকাঠির বুকে বইছে সন্ধ্যা নদীর খেলা।

আপনাদের এলাকাটা প্রাকৃতিক সব দৃশ্যে,

অন্য এলাকার-ই চেয়ে ভরপুর সবার শীর্ষে।

প্রকৃতির-ই হাতে গড়া অজপাড়া গাঁ,

এখনো লাগেনি সেথায় উন্নয়নের ছোঁয়া।

যেদিন তাকাই, সেদিক দেখি চলছে নৌকা-ট্রলার,

এছাড়া তো অন্য কোনো বাহন নেই আর চলার।

নৌকা ছাড়া গতি যে নেই রাস্তা বলতেই খাল,

অভিজ্ঞতাগুলো মনে রইবে চিরকাল।

এখান হতে ওখান যেতে সাঁকো হতে হয় পার,

সাঁকোকে আঞ্চলিক ভাষায় আপনারা বলেন 'চার'!

এতো সাঁকো হইনি যে পার আমি এই জীবনে,

কখন যে যাই নিচে পড়ে সদা ছিলো ভয় মনে!

একটুখানি বৃষ্টি হলেই পথ-ঘাট ভরে কাদায়,

কাদা মাটির মহব্বত বেশ ধরলে ছাড়তে না চায়!

একবার আমি কাদার মধ্যে পড়ি হুমড়ি খেয়ে,

কাদা লেগে একাকার হয় আমার সারা গায়ে!

হয়নি বেশি ঘোরাফেরা বৃষ্টির-ই কারণে,

বৃষ্টি, কাদা ঠেলেও যে যাই বেশ কিছু স্থানে।

মাদ্রা হতে যাই রাজবাড়ি, গাববাড়ি, জুলুহার,

'বিলে' যাওয়ার ইচ্ছে ছিলো তা না কী খুব চমৎকার!

ইদুলকাঠি, স্বরূপকাঠি, ইন্দুর হাটে যাই,

মিয়ার হাটে, নদীর মাঝে ঘুরে যে বেড়াই।

স্বরূপকাঠির বুকে আছে কতো কতো 'কাঠি',

আরও আছে 'বাড়ি' 'হার' পলিময় তার মাটি।

সুপারি ও নারকেল বাগান আমার গ্রামের মত,

দেখলাম এলাকাতে সবাই বেশ উচ্চ শিক্ষিত।

কোনো কিছুর নেই তো অভাব কলা, আমড়া, পেয়ারা,

সুন্দরী কাঠ, বৃহৎ বৃক্ষ, গাছের ছোট্ট চারা।

পেয়ারার-ই বাগান দেখি কী অপরূপ, হায়!

সারি সারি কৃত্রিম সেই খাল দেখে যে মন জুড়ায়।

সকল কিছুই লাগলো ভালো যোগাযোগটা ছাড়া,

প্রাকৃতিক সব দৃশ্যগুলো কী যে নজর কাড়া!

কবি লেখক বলে আমি দিচ্ছি না তো পরিচয়,

পত্রিকাতে তবে আমার লেখা ছাপা হয়।

জাতীয় তো দৈনিকসহ লিটল ম্যাগাজিনে,

নিয়মিত ছাপছে লেখা টিকে গেলেই মানে।

আপনাদের একই থানার ভিন্ন ভিন্ন এলাকায়,

আছেন আমার কলম বন্ধু লেখেন যারা পত্রিকায়।

বন্ধুদের-ই দু'জন হলেন পত্রিকার তো editor,

গাফফার মাহমুদের 'নোঙর', হাবীবুরের 'কালান্তর'

স্বরূপকাঠির রাজাবাড়ি হতে বেরোয় 'কালান্তর',

দু' বাংলার লেখকদের লেখায় সমৃদ্ধ যে 'নোঙর'

সেই সব পত্রিকাতেও মোর লেখা ছাপা হচ্ছে,

পাইনি খুঁজে সেই বন্ধুদের দেখার ছিলো ইচ্ছে।

হাবীবুর রহমান হলেন কবি ও head teacher,

রুমঝুম, নাদিম, মিন্টু, মৃধা বলবো কতো আর!

পাঠক ফোরাম, কাগজ পাঠক, বন্ধুসভা'র বন্ধুগণ,

স্বজনসমাবেশেও আছেন স্বরূপকাঠির স্বজন।

দাদা, বৌদি ও অরুণ দা' চারজনে একসাথে,

স্বরূপকাঠি, ইন্দুর হাট ও যাই মিয়ার হাটে।

পাশাপাশি স্বরূপকাঠি, ইন্দুর হাট ও মিয়ার হাট,

এপা-ওপার, ডানে-বামে পেরুলেই তো নৌ-ঘাট।

মিয়ার হাটে রহমানিয়া লাইব্রেরি না পেয়ে,

গাফফারকে তো খুঁজি অন্য লাইব্রেরিতে গিয়ে।

এদিকেই তো পাবো তাকে লাইব্রেরিম্যান জানায়,

মনটি খারাপ হলো তাকে খুঁজে যে না পাওয়ায়।

'স্বরূপ' মানে নিজের-ই রূপ সুন্দর কিম্বা স্বভাব,

প্রকৃতির-ই সাথে ভীষণ স্বরূপকাঠির ভাব।

স্বরূপকাঠি নামটি যেমন নেইকো রূপের শেষ,

সেই বন্ধুদের পেলে আমার মজা হতো বেশ!

 

০৩. প্রতি, অরুণ'দা

(বৌদি'র বড় ভাই অরুণ মিত্র)

 

অরুণ দা'কে হয়নি মনে আপনি College teacher,

দেখে আপনার হাসি-খুশি free mind ব্যবহার।

আপনার সাথে পুজোয় ঘুরি কতো বাড়ি যাই,

অতিথি তো আপ্যায়নে তুলনা যে নাই।

আপনার সাথে আপনার এক বন্ধু'র বাসায় গেলে,

থাকার জন্য কেমন করেন বুঝাই যে কী বলে।

ইন্দুর হাটে আপনার বন্ধু নেয় যে বাসায় ধরে,

গ্লাস প্লেট সব যায় যে ভেঙে আপ্যায়নের পরে।

দাদা আপনি একা একা থাকবেন যে আর কতো,

খারাপ কী ভাই ঐ সে মেয়ে দেখতে মন্দ নয়তো।

সেই মেয়েটির বাড়িও আমি আপনার সাথেই যাই,

বাড়ি যাওয়ার পথি মধ্যেই 'তাহার' দেখা পাই।

কেমন আছেন আপনি এবং আপনার বন্ধু-বান্ধব,

এতো ভালো কেনো বলুন আপনারা সব!

পাশের-ই সেই বাড়ির ওরা কী অমায়িক সবাই,

যে বাড়িতে গিয়ে আমরা বাতাবিলেবু খাই।

সেই বাড়িতে আসলো আপনার সুন্দরী এক নাতনি,

তাকে আমার ভালোবাসা পৌঁছে দেবেন কি?

আপনার সেই নাতনি'র সাথে হলো পরিচয়,

আলাপ করে, কথা বলে ভীষণ মজা হয়।

দাদা আপনার কলেজ দেখলাম গেলে তো রাজবাড়ি,

সেথায় গেলাম আপনাদের এক আত্মীয়ের বাড়ি।

দেখছি যে রাজবাড়ি ছোট্ট বাজারখানি ঘুরে,

চোখ দু'টি যে আঁটকে গেলো টেলিফোন সেন্টারে!

 

০৪. প্রতি, রীতা'দি ও সুশীল'দা

(বৌদি'র কাকাতো ছোট বোন ও ভগ্নিপতি)

 

রীতা'দি যে মজার-ই লোক সুশীল'দা ও তাই,

রীতা দিদির সাথে ভীষণ মজায় সময় কাটাই।

সব সময়ে ছায়ার মতোই থাকতেন আমার পাশে,

আপনি ভীষণ রোমান্টিক তো বলেন কথা হেসে।

রীতা দিদি আপনি আমার রেখেছেন তো ঠিকানা,

কিন্তু আজো কেনো আমি আপনার চিঠি পাচ্ছি না?

আপনার যদি আগে একবার না হতো তো বিয়ে,

তবে আমি আপনাকেই বানাতাম মোর 'ইয়ে'!

আমার কথা শুনে আবার সুশীল দা' কী ভাবছেন?

বাসি জিনিস আমি নেবো পাগল হয়েছেন!

 

০৫. সোনা'দা ও জ্যোৎস্না বৌদি

(বৌদি'র জ্যেঠতুতো বড় ভাই ও বৌদি)

 

জ্যোৎস্না বৌদি আপনার ঘরে সিঁদ কাটে চোর কেনো?

আমার কথায় আপনি আবার mind করবেন না যেনো!

আজো আপনার ঘরে কি ভাই সিঁদ কাটে রে চোর?

চোরের কষ্ট করতেই লাঘব খুলে রাখুন না দোর!

চোর ব্যাটা তো ভীষণ পাজি আপনার ঘরটাই দেখে,

চোরটা কেমনে জানে বাড়ি সোনা দা' না থাকে!

কেমন আছেন সোনা দা' ও ছোট্ট সোনা মনি,

চিটিং, ফাজিল ভাবতে পারেন আমার কথা শুনি!

 

০৬. প্রতি, সত্য দা' ও বৌদি

(বৌদি'র জেঠতুতো ভাই ও তার পত্নী)

 

বেশি মিশতে পারিনি তো সাথে সত্য দা',

বৌদি ভীষণ young, free mind কী নাম যেনো তার!

হেসে তিনি আমার মুখে 'নকুল' দিলেন পুরে,

প্রথম পরিচয়েই আমায় নিলেন আপন করে।

 

০৭. প্রতি, মিতু

(বৌদি'র কাকাতো ছোট্ট বোন)

 

আজো মনে আছে আমার মিতুর চিমটির কথা,

চিমটি এখন শুধুই স্মৃতি কী মিষ্টি নেই ব্যথা!

জেনে গেছি তোমার খেতাব নামটি হলো 'কডি',

দুষ্টুমি আর 'কেঁড়া'য় ভর্তি তোমার পুরো body.

ভীষণ মজা হয় পেয়ারা বাগানেতে গেলে,

দু'বার নৌকা দেয় ডুবিয়ে মিতু, রিংকু মিলে।

 

০৮. প্রতি, চয়ন

(বৌদি'র কাকাতো ছোট্ট কিশোর ভাই)

 

চয়ন হলে 'ভেজা বেড়াল' দক্ষ ট্রলার ড্রাইভার!

চেয়েছিলাম দু'বার আমরা নদীর-ই জল খাইবার!

জানি তোমার গোগন কথা কোথায় তুমি যাও,

পালিয়ে ভাই গেলে বুঝি বউয়ের দেখা পাও?

জুলুহারে আসতে যেতে দু'দু'বার হায়!

তোমার কেরামতির ট্রলার ডুবে যেতে চায়।

 

০৯. প্রতি, অঞ্জন দা'

(বৌদি'র অন্য এক কাকাতো ভাই)

 

অঞ্জন দা' যে ফূর্তিবাজ খুব চুল কাটতে খুব সুনাম!

আগে জানলে আপনার হাতেই চুল তো কাটাতাম।

দাদা এটার ভীষণ ডিমান্ড নগদ নগদ পয়সা,

হতো না মন্দ আপনার পার্ট টাইমে এ পেশা!

 

১০. প্রতি, খুকুমণি

(বৌদি পিসতুতো ছোট বোন)

 

প্রথম দেখা-ই খুকুমণি নিলে আপন করে,

গান শুনিয়ে করলে মুগ্ধ নিয়ে তোমার ঘরে।

হাত বাড়িয়ে তুমি আমার বন্ধু হয়ে গেলে,

বকুল ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিলে।

তুমি হলে আমার সেরা বন্ধু যে একজন,

আমার মনে তুললে তুমি ভীষণ আলোড়ন।

তোমার দে'য়া মালা এবং লোকনাথের লকেট,

স্মৃতি স্বরূপ সযতনে রাখছি যে বুক পকেট।

হয়তো বন্ধু তুমি আমায় ভালোবাসো ভীষণ,

আমার জন্যই হৃদয় পোড়ে হয়তো সারাক্ষণ।

কে বলেছে তোমার কাছে আমি teacher, কবি

আসলে তো দেখবে তুমি অতি রঞ্জিত সব-ই!

ভালোবাসা বন্ধু'র মধ্যেই থাকুক সীমাবদ্ধ,

চলতে থাকুক ভালোবাসার লিপি, লিপি পদ্য।

 

১১. প্রতি, ডলি দি'

(বৌদি'র আরেক কাকাতো ছোট বোন)

 

আমার সাথে কম মিশেছেন আপনি ডলি দি',

জানি না তো আপনার-ই মনে ছিলো কী!

ফাজিল-টাজিল যা'ই ভাবুন নই তো মোটেই খারাপ,

যে পরিবেশ যেথায় যেমন খাওয়াতে চাই খাপ!

 

১২. প্রতি, নন্দিতা

(বৌদি'র মামাতো ছোট বোন)

 

বৃষ্টির দিনে, ট্রলার যোগে গেলে জুলুহার,

সেখানেতে প্রথম দেখা পাই যে নন্দিতা'র।

নন্দি, তোমার বাড়ি গেলেই হলো রঙিন চোখ,

চোখ ওঠা না রঙিন স্বপ্ন দেখে নতুন লোক!

তোমার মা যে ভীষণ ভালো ভীষণ রকম free,

অমন কথা বলতে পারেন free না হলে কী!

আমায় তিনি স্বীকৃত দেন বলে 'মেয়ে জামাই',

তুমি ছাড়া সেই বেটির আর কোনো মেয়ে নাই।

আমোদ-ফুর্তি'য় ভরা তিনি সার্থক নাম তাঁর 'ছবি',

শাশুড়ি'র নাম মুখে নে'য়ায় ক্ষমাপ্রার্থী এ' কবি!

তিনি আমার শাশুড়ি মা বাস্তবে না হোক,

কিন্তু তিনি মোর শাশুড়ি জানলো অনেক লোক।

সেই সূত্রেই তো তুমি আমার হয়ে গেলে 'ইয়ে',

তুমি আমার 'স্বীকৃত বউ' না হোক কভু বিয়ে!

নন্দিতা যে বলছি শোন, please don't mind you,

আমার কথা শুনে আবার ভেংচি না কাটিও!

মুগ্ধ আমায় করলে তুমি সুমধুর ঐ গানে,

তোমার কন্ঠের গান যে আমার আজো বাজে কানে।

মিষ্টি তোমার গানের গলা শুনলে জুড়ায় প্রাণ,

তোমার কন্ঠের, তোমার লেখা স্বরূপকাঠি'র গান।

সেই গানটিতে উঠলো ফুটে স্বরূপকাঠি'র রূপ,

তোমার হতে পাইনি সে' গান দিলে যদিও hope.

সেই গানটি পেলে ভীষণ উপকার যে হতো,

আমার ভ্রমণ কাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হতো।

আরো জানা দরকার ছিলো স্বরূপকাঠি'র ইতিহাস,

কী কী আছে ঐতিহ্য তার কতো গুণী লোকের বাস!

 

১৩. প্রতি, শিপ্রা'দি ও লিটন'দা

(বৌদি'র মাসতুতো ছোট বোন ও ভাই)

 

অন্ধকারে কাদা মাড়াই বৃষ্টিতে তো ভিজে,

গাববাড়িতে গিয়ে পৌঁছি আাহা, কষ্ট কী যে!

এতো কাদা মাড়িয়ে তো গেলাম যাদের বাড়ি,

সেই লিটন'দা শিপ্রা দিদি হৃদয় নিলেন কাড়ি!

শিপ্রা দিদি আপনি আমায় ঠকিয়েছেন আচ্ছা,

বৌদি'র ছোট তবুও তার আগেই বিয়ে-বাচ্চা!

লিটন দাদার মরা প্রেমের খবর জানতে চাই?

কবি লেখক হতে পারবেন ‘ছ্যাঁকা’ খেলে ভাই!

 

১৪. প্রতি, পুতুল'দি

(বৌদি'র আরেক মাসতুতো ছোট বোন)

 

পুতুল দিদি কেমন আছেন আপনি নাকি মজার লোক,

পরিচয় ও দেখতে আপনায় চাইছে আমার দু'চোখ।

আপনি নাকি খুব রূপসী এবং স্বাস্থ্যবতী,

রূপ-গুণ আমার নেই তো কিছুই হ্যাংলা-পাতলা অতি!

নেই যে তেমন শিক্ষা-দীক্ষা নেই যে বিভব-বিত্ত,

ভালো কোনো কাজও তো নেই আছেই উদার চিত্ত।

' কারণেই সবাইকে তো ভালোবাসতে পারি,

আমার ভালোবাসায় তো নেই ভেদাভেদ নর-নারী।

 

১৫. প্রতি, জয়া'দি ও বাসন্তী বৌদি'

(বৌদি'র ছোট বোন ও বৌদি বাসন্তী মিত্র)

 

জয়া দিদি আপনার কথা বলবো কী আর ভাই,

আপ্যায়নে, কাজে-কর্মে তুলনা যে নাই।

কখন খাবো, কখন শো', কখন যাবো স্নানে,

লিপিবদ্ধ ছিলো যে তা আপনারই রুটিনে।

আপনি হলেন বাপনের বউ(?) তাহলে আমি ভাসুর,

বউ বড় আর বর যে ছোট শুনতে লাগছে মধুর!

হঠাৎ আমার দু'চোখ ওঠে যন্ত্রণা খুব হলো,

জয়া'দি ও বৌদি'র সেবায় দু'দিনেই হই ভালো।

আমার বৌদি' বাসন্তীকে কী বা বলার আছে,

তিনি এখন আমাদের লোক তাকে বলা মিছে।

গান শুনালো ওরা দু'জন খুকুমণি, নন্দিতা,

রবীন্দ্র ও নজরুল সঙ্গীত কী মধুময় কথা!

আপনাদের এলাকার কি গান জানে সব মেয়ে?

জয়া'দি তো শুনালেন না একটা গানও গেয়ে।

পুজোয় দেখলাম মহিলারা করছে নেচে আরতি,

সেখানে কী করলে বিয়ে বউয়ের সাথে নাচ-গান ফ্রি!

 

১৬. প্রতি, অন্যান্য দাদা, দিদি ও বৌদি'গণ

 

সবারই নাম জানা যে নেই আরেক দাদা অনুপ,

আপনারা অনেকেই তো ছিলেন ভীষণ চুপ।

ট্রলারঅলা দাদারই নাম সম্ভবত গেদু,

চারিদিকে বেড়িয়েছি তার ট্রলারেই শুধু।

লঞ্চ পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন কী নাম যেনো তার,

ভুলি নাই সেই দাদার কথা মনে আছে আমার।

অন্যান্য সব দাদা, দিদি এবং সকল বৌদি,

আমার ভালোবাসা তো নিন ওহে প্রিয় সূধী।

এছাড়াও অন্য যে কেউ বন্ধু হতে চান,

বন্ধু করে নেবো আমি যদি হাতটা বাড়ান।

লেখালেখি, ভ্রমণ এবং শখ আমার বন্ধুত্ব,

আমার বন্ধু হতে হলে নেই যে কোনো শর্ত।

 

১৭. প্রতি, তালঐ ও মাঐমাগণ

 

অমায়িক লোক মাঐমা ও তালঐ মশাইগণ,

'জামাই আদুরেতে' ছিলাম আমি সারাক্ষণ।

তাঁদের সবার চরণে যে প্রণাম-সেবা জানাই,

তাঁদের আদর আপ্যায়নের তুলনা যে নাই।

 

১৮. প্রত্যাবর্তন

 

দীর্ঘ আটদিন ভ্রমণের পর ফিরি বাড়ির পথে,

পেছন পেছন আসলেন সবাই বিদায় যে জানাতে।

লঞ্চে তুলে দিতে এলেন কেউ বা স্বরূপকাঠি,

আসতে চায়নি মন যে আমার ভিজলো যে চোখ দু'টি।

খুকুমণি'র সাথে দেখা হয়নি বিদায় কালে,

মান ভাঙিয়ে দেবো তোমার আবার দেখা হলে।

অক্টোবরের ঊনত্রিশ তারিখ পরের শুক্রবার,

রওয়ানা করে শনিবারে পৌঁছি বাড়ি আমার।

বাড়ি এসেই দেখতে পেলুম আমার একটি কবিতা,

সাহিত্য পুরস্কার পেলো কর্তৃক 'বনলতা'

পুরস্কারের বইয়ের মধ্যে একটি 'শেষের কবিতা'

লাবণ্যের নাম যেথায় বন্যা, অমিতের নাম মিতা।

কী আশ্চর্য! রবি বাবুর সেই উপন্যাসখানি,

বৌদি'র বাড়ির অডিওতে বারেবারেই শুনি।

সেই বইটি প্রথম পড়ি যখন আমি নাইনে,

পুরো কাহিনীটা তাইতো ছিলো না মোর মনে।

কাটলো কেমন স্বরূপকাঠি, কেমন হলো ভ্রমণ,

বাড়ি এলেই জানতে চায় মোর বন্ধু-বান্ধব-স্বজন।

আপনারা কে যে কেমন- চঞ্চল, গম্ভীর বা শান্ত,

সেসব কথা বলতে বলতে হচ্ছি আমি ক্লান্ত।

 

১৯. পুনঃ সবাইকে

 

কেমন আছেন আমার সকল বিয়াই-বিয়াইনগণ,

সত্যি আমি পেয়েছি কি আপনাদের মন?

কপটতা পছন্দ নয়, আমি ভীষণ free,

আমার কোনো ব্যবহারে দুঃখ পেলেন কি?

দুঃখ পেলে কী আর করা I am very sorry,

নিজ নিজ গুণে সবাই দেবেন ক্ষমা করি,

কবি কিম্বা সাহিত্যিকদের free mind তো স্বভাব,

সবার জন্য উন্মুক্ত তো থাকে তাদের love.

ভালোবাসা আছে বলেই পৃথিবীটা মধুময়,

ভালোবাসা প্রেম-প্রীতি যে অন্যায় কিছু নয়।

সবার ভালোবাসাকে তাই শ্রদ্ধা আমি জানাই,

ভালোবাসা ফিরিয়ে দে'য়া আমার সাহস নাই।

আপনাদের ভালোবাসা নিলাম গ্রহণ করে,

চিরদিন যে থাকবেন সবে আমার-ই অন্তরে।

চিনতে আমায় পারবেন কি-না আবার দেখা হলে,

এতোদিন কি থাকবে মনে যাবেন না তো ভুলে?

আমি কিন্তু চিনতে পারবো হাজার লোকেরও ভিড়ে,

আপনারা আছেন আমার হৃদয়খানি জুড়ে।

আপনারা থাকবেন মনে সদা, চিরদিন-

আপনাদের স্মৃতির কাছে আমার অনেক ঋণ।

আপনাদের সংস্পর্শে হলাম আমি ধন্য,

আদর-চুমু-ভালোবাসা সোনামনিদের জন্য।

আমার ভীষণ লজ্জা আবার আপনাদের তা জানা,

কোনো কিছু আমি তাইতো করতে পারি না মানা।

আপনাদের বাড়ি আবার আসতে বললে ভাই,

নিমন্ত্রণের দেরি আছে আসতে দেরি নাই।

ভয় পেলেন কি আমার আবার আসার কথা শুনে,

নির্লজ্জ তো ভাবতে পারেন হয়তো মনে মনে!

আমাদের-ই বাড়ি আসার রইলো নিমন্ত্রণ,

মোর এলাকা দেখলে কাড়বেই আপনাদের মন।

লিখতে গিয়ে পত্রখানি হলো লিপি কবিতা,

আপনারা সবাই বন্ধু, 'মিত্র' মানেই মিতা।

ভাবতে পারেন হয়তো আমায় আঁতেল কিম্বা বাচাল,

ভাবলে তেমন বন্ধ করি এবার আমার প্যাচাল!

আমার অভ্যাস এমনি যে নতুন স্থানে গেলে,

শান্তি পাই না, লাগলো কেমন জানাতে না পারলে।

নতুন লোক ও নতুন স্থানের অনুভূতির কথা,

জানাতে যে পারলেই তবে আমার সার্থকতা।

 

২০. ইতি

 

ভালো থাকুন, সুখে থাকুক করি সদা কামনা,

পরিশেষে দিলাম আমার পত্রালাপের ঠিকানা।

আমার নামটি লিখুন আগে 'বাসুদেব সরকার',

'চরভৈরবী, চাঁদপুর' পরে নেই তো আর দরকার।

এই সংক্ষিপ্ত address-এ তো কোনো দ্বিধা নাই,

' ঠিকানায় লিখলেই আমি পেয়ে যাবো তাই।

আমার মতো থাকতে আমি ভীষণ ভালোবাসি,

চল-চাতুরী, জোর-জুলুমে আমি নই বিশ্বাসী।

চিঠি লেখা, নাহি লেখা যার যার ব্যাপার,অভিলাষ-

ব্যক্তি স্বাধীনতায় আমি করি ভীষণ বিশ্বাস।

আজকে আর নয়, এইখানেতে টানলাম এবার ইতি,

'good bye, good bye' গাইতে কষ্ট বিদায়ের-ই গীতি।

খুশি হবো চিঠির যদি প্রাপ্তি স্বীকার পাই,

সত্যি সত্যি আসি এবার বিদায় বন্ধু, বিদায়...।

 

বাসুদেব সরকার, পেশা: শিক্ষক

চরভৈরবী, হাইমচর, চাঁদপুর, বাংলাদেশ। 


| নববর্ষ সংখ্যা-১৪৩০ | aleekpata.com | 31 st Edition |

| ALEEK PATA- Your Expressive World |Online Magazine |

| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |

| Bengali New Year 2023 | April-July 23| Sixth Year First Issue |

| © All Rights Reserved by The Editor and The Publisher |

| a DISHA-The Dreamer Initiative |

No comments:

Post a Comment

Please put your comment here about this post

Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান