অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Showing posts with label অনুগল্প. Show all posts
Showing posts with label অনুগল্প. Show all posts

Saturday, October 1, 2022

অনুগল্প-প্রতিশোধ - মানস হোড়

অনুগল্প

প্রতিশোধ

মানস হোড়

 


আমাদের বাড়ির সামনে ডোম পাড়া, গুটিকয়েক ঘর, নুন আনতে পান্তা ফুরায়, বংশানুক্রমে রাজার দাবার সৈন্য হয়ে নীতির বোঝা টানতে টানতে কাঁধ-পিঠ বেঁকে গেছে।

বেশ কিছুদিন আগে এদেরই বছর চল্লিশের একজন হটাৎ মারা যায়, কারণ অপুষ্টি, অনিয়ন্ত্রিত নেশা আরও অনেক কিছু। লোকটির ঘরে মা, বউ আর একটি ছেলে। সংসারের একমাত্র আয়ের উৎস আজ গত।

বাচ্চাটির বয়স বছর ছয়েক, নাম সূর্য, ভোর থেকে উঠে যারা তথাকথিত বড়লোক (ওদের কাছে), তাদের বাড়ির সামনে পড়ে থাকা আবর্জনা পরিষ্কার করে দেয়, বিনিময়ে কোনোকোনো দিন ২ টাকা, ১ টাকা, এই টুকুই।

আজ ভোরেও এসেছিল আমাদের ঘরের সামনে, তেমন কিছু ছিল না কাল বৃষ্টি হয়েছে, সব ধুয়ে গেছে, শুধু ছিল একজোড়া কালো চটি, বৃষ্টির তোড় সেগুলো নিয়ে যেতে পারেনি,

আমি বললাম 'নিয়ে নে ওগুলো, ভালো, দেখ একদম নতুন, কোনো মাতাল ফেলে চলে গেছে হয়ত।'

ছেলেটি একটু বিরক্ত ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে, হাতে না নিয়ে পা দিয়েই ঠেলে ঠেলে ফেলে দিয়ে এলো।

টাকা আজ ও নেই নি, শুধু ফিরে এসে একটিমাত্র কথা বলে চলে গেছে...

"কাল রাতে মা-এর ঘরের বাইরে এই গালা পরে ছিল, আমি ফেলে দিঞ্চিলোম, মা মেরেছিল, লোকটোও"।


| শারদ সংখ্যা-১৪২৯ | aleekpata.com | 30th Edition |

| ALEEK PATA- Your Expressive World |Online Magazine |

| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |

| Durga Puja , 2022 | July-Oct 2022 | Fifth Year Fourth Issue  |

© All Rights Reserved by The Editor and The Publisher |

| a DISHA-The Dreamer Initiative |

 

Tuesday, January 5, 2021

অনুগল্প-খেজুর রস-সৌমেন চক্রবর্তী

 খেজুর রস
সৌমেন চক্রবর্তী

অলংকরণঃ বর্ণালী গাঙ্গুলী


শীতকাল মানেই হাবলকাকার কাছে খেজুর রস সংগ্রহের মাস। মাটির হাঁড়িগুলো সব পরিস্কার করে রোদে শুকোতে দেওয়া আছে। উঁচু উঁচু খেজুর গাছে এক নিমেষে উঠে পড়ে হাবলকাকা। প্রতি বছরের মতো এই বছর শীতের আগমনের শুরুতেই হাবলকাকা তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে।

আজ এই বছরের মতো প্রথম হাবলকাকা খেজুর গাছে উঠবে। সকাল থেকে শরীরটা হাবলকাকার ভালো নেই। অত উঁচু গাছে উঠে হাঁড়ি বাধা, সে তো চাট্টিখানি কথা নয়। তবে আজ তো হাঁড়ি তাকে বাঁধতেই হবে। তাই সকাল সকাল গাছে উঠে পাকাপোক্ত ভাবে গোটা তিনেক হাঁড়ি বেঁধে হাবলকাকা খেজুর গাছ থেকে ধীরে ধীরে নেমে আসে। এবার অপেক্ষার পালা। পরের দিন সকালে হাঁড়ির রস সংগ্রহ করতে হবে। এদিকে প্রতি বছরের মতো গ্রামের ছেলে কালু আর ভুলু খেজুর গাছগুলোর নীচে হাঁ করে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকেপ্রতিবারের মতো হাবলকাকার হাঁড়ি বসানোর ভুলে রসের ধারা সবটুকু হাঁড়িতে না পড়ে, কিছুটা গড়িয়ে নীচে পড়ে। সেই রসাস্বাদনের উদ্দেশ্যেই কালু ভুলুর দীর্ঘ অপেক্ষা। এবারেও তাই হলো। কালু ভুলুর দীর্ঘ অপেক্ষা সাফল্যমন্ডিত হলো।

এদিকে আজকে হাবলকাকার শরীরের অবস্থা একটু বেশিই খারাপ। তা সত্ত্বেও তিনি কষ্ট করে গাছে উঠলেন। রস সংগ্রহ করে নীচে নামার সময় শরীর সাথ দিল না। হঠাৎ মাথা ঘুরে গিয়ে হাবলকাকা নীচে পড়ে যান। খেজুর গাছের পাশে ছিল ছোট একটি তালগাছ। সেই তালপাতার ধারালো অংশে হাবলকাকার শরীরটা প্রায় দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মৃত্যু হয়।

এদিকে হাবলকাকার মৃত্যুর পর ওই গাছের কাছে ভয়ে আর কেউ যায় না। কালু ভুলু দুর থেকে লক্ষ্য করে। কয়েকদিন পরে তারা লক্ষ্য করে যে, খেজুর গাছ থেকে রসের ধারা আগে যেমন পড়তো, সেই একই ভাবে গড়িয়ে পড়ছে। হাবলকাকা তো সেই কবেই মারা গেছেন। তাহলে এই রসের উৎস কী? এই রহস্য উন্মোচনের জন্য কালু ভুলু একদিন গাছের নীচে গিয়ে সেই আগের মতো হাঁ করে রসাস্বাদন করতে লাগলো। হাবলকাকার মৃত্যুর একমাস পরে আজও এটি গ্রামবাসীদের কাছে গবেষণার বিষয়। সদ্য সন্তানের জন্ম দেওয়া মায়ের স্তন দিয়ে দুগ্ধের ধারার মতো যৌবনবতী খেজুর গাছও হয়তো অকৃপণ রসের ধারা প্রবাহিত করছে। কেউ কেউ আবার বলছে যে, এর পিছনে মৃত হাবলকাকার অতৃপ্ত আত্মার হাত রয়েছে। রহস্যের উন্মোচন আজও হয়নি।।

Download ALEEK PATA Mobile APP
DOWNLOAD ALEEK PATA ANDROID APP
শিশির সংখ্যা -১৪২৭।
| Aleekpatamagazine.blogspot.com |
  |ALEEK PATA- Your Expressive World |Online Magazine |
| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
| Special Winter Issue, 2020 | December-February 2020-21 | 
| Fourth Year  Fourth Issue |25 th Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |



















Tuesday, October 20, 2020

শিশির পর্ব- অণুগল্প মালায় শারদ অর্ঘ্য- জ্যোতিকা পোদ্দার

 

অণুগল্প মালায় শারদ অর্ঘ্য

জ্যোতিকা পোদ্দার

 

অণুগল্প ১

পুজোর উপহার

 

স্বামী স্ত্রীর ছোট্ট সংসার বেশ চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কারখানাটা লক আউট হয়ে গিয়েই গন্ডগোল শুরু হয়ে গেল।        কিভাবে সংসার চলবে!

     শেষ পর্যন্ত লোকাল ট্রেনে হরেক রকম মাল ফেরি করা শুরু করল স্বামী, আর বউটিও শুরু করল শাড়িতে ফলস বসানোর কাজ। টুকটুক করে চলতে লাগলো সংসার।

     পুজো আসন্ন। বহুকষ্টে স্বামী বউয়ের জন্য কিনলো একটা লাল ছাপা শাড়ি, এক কৌটো সিঁদুর আর আলতা।

 রাতে বাড়ি ফিরে বউয়ের হাতে ঐ ক্ষুদ্র উপহার তুলে দিয়ে বলল- "আলতাটা পরিস বউ, তোর রাঙা চরণ দেখতে আমার বড় ভালো লাগে"। "তোমার যত ঢং"... এই বলে বউ ও কাপড়ের ফলস বসিয়ে যেটুকু টাকা রোজগার করেছিল, সেই টাকায় কেনা একটা সাদামাটা পাঞ্জাবী এগিয়ে দেয় স্বামীর দিকে।।

 

অণুগল্প ২

চক্ষুদয়

 

নিলোফার বানু কে ভালোবেসে বিয়ে করে অনুপম চট্টোপাধ্যায়। শ্বশুরবাড়ি নিলোফার কে সাদরে বধু রূপে বরণ করলেও, নিলোফারের বাবা মেয়েকে ত্যাজ্য করেন।

চট্টোপাধ্যায় বাড়ির ঠাকুরদালানে তৈরি হচ্ছে মায়ের মূর্তি। শান্তিনিকেতন থেকে চিত্রকলা বিদ্যায় পারদর্শী নিলোফার প্রতিদিন বসে মূর্তি নির্মাণ দেখে । মূর্তি নির্মাণ শেষ । এবার রংতুলির পালা। "চক্ষুদান" করে মৃন্ময়ীকে এবার চিন্ময়ী তে রূপান্তরিতা করার পালা। হাত নিশপিশ করে নিলোফারের । পটুয়ার সাথে কথা বলে শ্বশুর মশাই স্বয়ং রং-তুলি তুলে দেন পুত্রবধূর হাতে‌। আপ্লুত নিলোফার।

 শুভলগ্নে দেবী মায়ের "চক্ষুদান" করে নিলোফার সামনে তাকিয়ে দেখে  আম্মি আর আব্বু দাঁড়িয়ে‌। আব্বুর চোখে জল। মেয়েকে বুকে টেনে নিয়ে আব্বু বলেন- "ছোটবেলায় আমিই তোকে শিখিয়ে ছিলাম যে, যিনি ঈশ্বর তিনি আল্লাহ। আর আমি নিজেই কথাটা ভুলে গিয়েছিলাম। আমাকে ক্ষমা করিস মা। দেবী মায়ের "চক্ষু দানের"  সাথে সাথে তুই আমারও চক্ষুদয় ঘটালি।

 

অণু গল্প ৩

চক্ষুদান

মায়ের মূর্তি ক্লাবেরই ঠাকুরদালানে তৈরি হবে,মূর্তি গড়বেন পাড়ার বিখ্যাত মৃৎশিল্পী এবং পটুয়া গণেশ বাবু। এটাই নিয়ম ৩৪ নং কলোনির।

গনেশ বাবু বৃদ্ধ হয়েছেন কিন্তু তিনি চক্ষুদান না করলে সেই মূর্তি যেন ম্রিয়মাণ লাগে। মূর্তি গড়ার সমাপ্ত এবার চক্ষুদানের পালা।

একি..! গণেশবাবুর হাত কাঁপছে... পারছেন না তিনি। মনে মনে বললেন, "মা কেন চোখ মেলতে চাইছো না?”...

আজ তিনদিন হল উমার জ্ঞান ফেরেনি। গণধর্ষিতা হয়ে হাসপাতালে বাঁচার লড়াই করছে সে। বিল্টু কিশোরের দল এই দুষ্কর্মে জড়িত। পুলিশ সব জেনেও তাদের ধরছেনা।  রাজনৈতিক মদতপুষ্ট তারা।

বহু চাপান-উতোরের পর ধরা পরল দুষ্কৃতীরা। জ্ঞান ফিরল উমার। পাড়ায় ফিরল শান্তি।

পটুয়ার তুলির ছোঁয়ায় চোখ মেললেন মা ,সে চোখে বরাভয়ের ভাষা।।

 

অণু গল্প ৪

নতুন জামা

কাজের বাড়ি থেকে  পুজোর বোনাস পেয়ে পারুল হিসেব করে দেখলো স্বামী হারানের অসুখ এর সময় আর নেওয়া টাকা পরিশোধ করে মাত্র ৩০০ টাকা অবশিষ্ট থাকবে।

ওই টাকায় মেয়ে পুতুলের জন্য নতুন জামা কিনতে দোকানে গেল সে। মনে পড়ে গেল পাশের বাড়ির অনাথা কমলার কথা। পুতুলের বয়সী বৃদ্ধা দিদিমার সাথে থাকে। ওর তো কেউ নেই,পুজোতে একটাও নতুন জামা হবে না ওর, ‘আচ্ছা ওকে একটা নতুন জামা দিলে হয় না...!’

কিন্তু টাকা কম। একই রঙের দুটো জামা নিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে পারুল।

অভিজ্ঞ দোকানদার বুঝতে পেরে বলে-"নিয়ে যান দিদি, পরে টাকা দেবেন। বাচ্চারা পুজোয় নতুন জামা পরবে না তা কি হয়!"

পরম মমতায় জামার প্যাকেট বুকে নিয়ে বেরিয়ে আসে পারুল। চারিদিক তখন মায়ের আগমনীর 

আবাহনে মুখরিত।


Download ALEEK PATA Mobile APP
DOWNLOAD ALEEK PATA ANDROID APP


| Aleekpatamagazine.blogspot.com |
  |ALEEK PATA- Your Expressive World |Online Magazine |
| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
| Special Puja Issue, 2020 | October-November 2020 | শারদ সংখ্যা -১৪২৭।
| Fourth Year Third Issue |24 th Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |
পড়া শেষ? পত্রিকা বন্ধ করুন


শিশির পর্ব- অনুগল্প- ভুল ঠিকানা- পারমিতা রাহা হালদার (বিজয়া)

 

ভুল ঠিকানা 
পারমিতা রাহা হালদার (বিজয়া)

 

অনাথ আশ্রম থেকে নিয়ে আসা ছোট্ট শিশুটির আজ নামকরণ ।         

 দেবিকা আর রাজের বিয়ে হয়েছে বারো বছর। চাকরি সূত্রে দুজনকেই বিদেশে যেতে হয়। বিয়ের পর একজন দেশে ফিরলে অন্যজন চলে যায় । আফটার অল চাকরি তো নতুন বিয়ে হয়েছে বলে তো আর অফিস ছাড় দেবে না। এই দিকে দুজনেই অ্যাম্বিশাস নিজেদের কেরিয়ার নিয়ে ।

 কেরিয়ারে মগ্ন দম্পতির সন্তান নিয়ে ভাবার সময় নেই। এদিকে দুবছর যেতেই পরিবারের সদস্য, পাড়া প্রতিবেশীদের টিপ্পনী ,কানাঘুষো কানে আসতে শুরু হলো দেবিকার। সবাই তকমা দিল দেবিকা বন্ধ্যা তাই মা হতে পাচ্ছে না । প্রথমে পাত্তা না দিলেও পরে  ভাবতে বাধ্য করলো সবাই । 

 "রাজ আমাদের এবার সন্তান নেওয়ার কথা সিরিয়াসলি ভাবা দরকার । আমিও আরো পাঁচজন মেয়ের মতো মা হতে চাই "। 

"শোনো দেবিকা মাত্র দুবছর বিয়ে হয়েছে। কাজের চাপে নিজেদের মতো করে সময় কাটাতে পারি নি । এখনি বাচ্চা নিলে বাচ্চার পিছনে সময় চলে যাবে। তাই আরো বছর খানেক যাক, ওসব কথায় কষ্ট পেওনা।" 

 "আমি জানি রাজ, তবু পরিবারের সবাই, পাড়া প্রতিবেশীরা আমাকেই ভুল বুঝছে। তাছাড়া এতো দেরি করলে যদি কোন বিপদ হয় কে সামলাবে?"

 "এতো ভেবো না তো দেবিকা, লোকেদের খেয়ে কাজ নেই তাই পরের সংসারে নাক গলায়। এতো ভাবলে বাঁচতে পারবে না”। দেবিকা নিরুপায় হয়ে চুপ করে যায় ।

চাকরি, ঘোরাঘুরি, ব্যস্ততার মধ্যে  কেটে গেল আরো দুই বছর । সুখী দম্পতি এবার সিরিয়াসলি বাচ্চা নেওয়ার কথা ভাবলো।  কিন্তু বিধাতার অদ্ভুত পরিহাস, কোনোভাবেই দেবিকা মা হতে পারলো না! ডাক্তারের রিপোর্টে স্পষ্ট হলো  দেবিকা  মা হতে পারবে না । অবশেষে বাঁজার তকমা জুটেই গেল কপালে!

 অনেক রকম চেষ্টার মধ্যেই কেটে গেল বারো বছর। কোন উপায়েই আশার আলো জ্বললো না। 

দেবিকা ঠিক করলো অনাথ আশ্রমের থেকেই দত্তক নেবে সন্তান । কিন্তু বাড়িতে সবার আপত্তি

শাশুড়ি বললেন,'নিজের পেটের সন্তানই আপন হয় না এতো কার না কার রক্ত সে কি করে আপন 

হবে?"

রক্তের সম্পর্ক ছাড়া কেউ আপন হতে পারে না এই কথা অস্বীকার করে সমস্ত আইন মেনে দেবিকা অনাথ আশ্রমের থেকে নিয়ে এলো সদ্য ফুটফুটে মেয়ে । 

নামকরণের দিন সবাই মুখ ঘুরিয়ে নিল এমন কি রাজও। শ্বশুরমশাই স্পষ্ট জানালেন, "যেখান থেকে এই মেয়ে এনেছো সেখানেই রেখে এসো না হলে তোমারও এই বাড়িতে জায়গা হবে না "। 

সবার আপত্তি দেখে দেবিকা রাজের কাছে জানতে চাইলো সেকি চায়। রাজও চুপ। দেবিকা সেদিন সবাই কে জানালো দোষ তার মধ্যে নেই দোষ রাজের মধ্যে তাই সে মা হতে পারে নি। এতোদিন চুপ করে সব অপবাদ সহ্য করেছে যাতে রাজের পুরুষত্বে কোন আঘাত না লাগে। এখন চুপ করে অন্যায় কে প্রশয় দেবে না। অনাথ আশ্রম ভুল ঠিকানা নয় ভুল ঠিকানা এই বাড়ি । 

দেবিকা মেয়ে কে বুকে জড়িয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল শান্তির ঠিকানার খোঁজে ।


Download ALEEK PATA Mobile APP
DOWNLOAD ALEEK PATA ANDROID APP


| Aleekpatamagazine.blogspot.com |
  |ALEEK PATA- Your Expressive World |Online Magazine |
| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
| Special Puja Issue, 2020 | October-November 2020 | শারদ সংখ্যা -১৪২৭।
| Fourth Year Third Issue |24 th Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |
পড়া শেষ? পত্রিকা বন্ধ করুন




শিশির পর্ব- অনুগল্প-গল্প হলেও সত্যি- কথিকা বসু

 

গল্প হলেও সত্যি
কথিকা বসু


একটা চাপা কান্নার শব্দে, আজ একটু সকাল সকালই ঘুমটা ভেঙে গেল শোভা দেবীর। চোখ খুলে 
দেওয়ালঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলেন, ঘড়ির কাঁটা, সবে পাঁচটার ঘর ছাড়িয়েছে। ঘরে কেউ নেই, এমনকী যে মেয়েটি ওনার চব্বিশ ঘন্টা দেখাশোনা করে, সেও না। প্রথমে একবার ভাবলেন, ডাকেন মেয়েটার নাম ধরে, কিন্তু তারপর মনে হলো, থাক, হয়তো এতো সকালে তার গলার আওয়াজে সকলে বিরক্ত হবে! আর হয়তো কেন, হবেই, কারণ তিনি ভালোভাবে বোঝেন, এ সংসারে এখন তিনি ব্রাত্য, সংসারের বোঝা। কেউ ভুলেও এ ঘরের পথ মাড়ায় না, এমনকী নিজের পেটের ছেলেগুলো পর্যন্ত না। অথচ, যতদিন শরীরে গতি ছিল, কেউ তার সামনে রা অব্দি কাড়তো না। কিন্তু যেদিন থেকে বিছানায় পড়লেন, সব হিসেব  ওলোটপালট হয়ে গেল। এখন যেহেতু আর তিনি কোন কাজেই আসেন না, উপরন্তু তার চিকিৎসা, দেখাশোনার জন্য জলের মতো টাকা খরচা হয়ে যায়, তাই এখন সকলের চক্ষুশূল তিনি, অথচ এই গোটা সংসারটা তারই নিজের হাতে তৈরি। যাদের আপন ভেবেছেন, জন্ম দিয়েছেন, কোলেপিঠে বড় করেছেন, মানুষের মতো মানুষ, না না মানুষ করতে পারেননি। অথচ চেষ্টার তো কোন ত্রুটি রাখেননি, তাহলে কোথায় ফাঁক থেকে গেল, ভাবতে ভাবতে দু ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে শোভাদেবীর চোখ দিয়ে।

ও ঠাকুমা, তুমি কাঁদছে, হঠাৎ কাজের মেয়েটার গলার শব্দে সম্বিত ফেরে শোভাদেবীর। না তো রে

চোখে কি যেন একটা পড়েছিল তাই, তাড়াতাড়ি চোখের জল মুছে বলে ওঠেন শোভাদেবী। "ছাড়ো 

ছাড়ো, আমি কি আর বুঝি না। দেখছি তো সবই, সারাদিনে কেউ তোমার ঘরে আসে না, মরলে কি 

বাঁচলে, সেই খবরটুকু অব্দি নেয় না, আসলে বাতিল তো তাই"। ধক করে কথাগুলো বুকে এসে 

লাগে 

শোভা দেবীর, তবু মুখে হাসি রেখে বলেন, "ছাড় বাদ দে ওসব। পাশের বাড়িতে কে কাঁদছিল রে 

সকালে"? "আরে ও বাড়ির বৌটার শ্বশুর মারা গেছে গো, আজ সকালে। আচ্ছা ঠাকুমা একটা কথা 

বলো তো, এই যে এত মৃত্যু ছোট-বড়-সমবয়েসীদের, সহ্য কর কেমন করে? ফোকলা দাঁতে স্ম্লান 

হাসি হেসে শোভাদেবী বলে ওঠেন, "তুই শুধু মৃত্যুটাই দেখলি, আমি যে কত লোককে জন্মাতেও 

দেখলাম মেয়ে"।

Download ALEEK PATA Mobile APP
DOWNLOAD ALEEK PATA ANDROID APP


| Aleekpatamagazine.blogspot.com |
  |ALEEK PATA- Your Expressive World |Online Magazine |
| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
| Special Puja Issue, 2020 | October-November 2020 | শারদ সংখ্যা -১৪২৭।
| Fourth Year Third Issue |24 th Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |
পড়া শেষ? পত্রিকা বন্ধ করুন




শিশির পর্ব- অনুগল্প-সুন্দরী অ্যাডেনিয়ামের খোঁজে- সম্পা দত্ত দে

 

সুন্দরী অ্যাডেনিয়ামের খোঁজে

সম্পা দত্ত দে






"তুমি একদিন শিউলি গন্ধ হয়ে, আমার মনে শরৎ ঢেলে দিও" আমি তোমার শিউলি শরৎ হয়ে ফুটব।

অপূর্ব সুন্দর কথায় দুটো লাইন। এবার শরৎ এসেও আসছে না। আকাশের মুখ ভার। ভাদ্রের কড়া রোদ শিউলির গন্ধ, কাশফুলের ঢল , মায়ের মর্ত্যে আসা সবকিছুই মন কেমন করা। করোনা ভাইরাসের কারণে কিছু ভালো লাগেনা সুমি'র। প্রতিদিনের মতো আজও সুমি অভ্যাস মত সুপ্রভাত জানাতে-

সকালে মোবাইল খুলে সবাই কে সুপ্রভাত জানাল।  "গাছের কথা" গ্ৰুপের সাথে যুক্ত হবার পর থেকে মনটাই ভালো হয়ে যায় সুন্দর সুন্দর ফুলের গাছ দেখে। প্রতিদিন নতুন নতুন ফুল গাছ গুলো দেখে ভীষন ভালো লাগে সুমি'র। গ্ৰুপে একটা ডাবল পাপড়ি'র অ্যাডেনিয়াম গাছ ফুল ফুটে ভরে আছে দেখে ওর ও মনে মনে ইচ্ছে হল বাড়িতে একটা অ্যাডেনিয়াম আনবে। লকডাউনের সময় কলকাতায় ছিল সুমির মেজ'জা ছেলের কাছে । মেজ'জা কে হোয়্যাট'সঅ্যাপে  অ্যাডেনিয়াম ফুলের ছবি দেখিয়ে বলেছিলো,

-দেখো দিদি এই ফুল গুলো কি সুন্দর তাইনা?

-হ্যাঁ গো ভীষণ সুন্দর।

অপর প্রান্ত থেকে মেসেজ এল।

রান্না করতে করতে বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠলো মনে মনে ভাবতে লাগল অনেক কিছু। গতকাল সারা রাত ধরে বৃষ্টি পড়ছিল। অ্যডেনিয়াম মানে মরুগোলাপের ডালটা ঠিকঠাক আছে তো। মেজ'জা শুভ্রা আর মেজদি সাথি (ননাস) দুজনে কলকাতা থেকে অ্যাডেনিয়ামের একটা ছোট্ট ডাল এনেছিল। বৃষ্টির জন্য দশ পনেরো দিন দোতলায় ছাদের কার্নিশে ছিল। গতকাল টব নিয়ে উপর  ছাদে রেখে এসেছে সুমি একটু রোদ হাওয়া গাছে লাগানোর জন্য। গাছের স্বাস্থ্যের উপকারের জন্য।

রান্নাঘরে কাজে দিদি কে সাহায্য করে জামা কাপড় নিয়ে ছাদে শুকোতে দিয়ে রোজ ফুল গাছগুলো একবার দেখা অভ্যাস সুমি'র। শরৎ এসে গেল তবু শিউলি গাছের কুঁড়ির দেখা নেই। একগুচ্ছ কাশ টবে লাগানো সেখানে ও ফুল ফোটে নি। রেইন লিলি গুলো বৃষ্টির জলে হেলে পড়েছে। ঝাউগাছ দুটো কি সুন্দর হয়েছে।সব ডালের মাথায় ফুল এসেছে। সব দেখে সুমি'র চোখ অ্যাডেনিয়ামের টবে পড়তেই বুকের ভেতরটা খালি হয়ে গেল। অ্যাডেনিয়ামের ডালটি নেই খালি টব পড়ে আছে। সুমি'র মন খারাপে কেঁদে ফেলল। এক অপরাধ বোধ চেপে ধরল। সুমির নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছিল। ও নিজেই উপরের ছাদে রেখে এসেছে।না নিলেই ভালো হতো। কি সুন্দর কচি কচি পাতা গজিয়েছিল। নিজেকে সংযত রাখতে পারলনা সুমি। ছাদ থেকে ঊর্ধ্বশ্বাসে  দৌড়ে নীচে নেমে দিদি'কে বলল,

-দিদি তোমার আনা অ্যাডেনিয়ামের ডালটা নেই।

-ওমা সেকি কথা, এতোদূর থেকে নিয়ে এলাম কি হল? কে বা নিয়ে গেল?

-ছাদে বড় বানরটা মনে তুলে নিয়ে গেছে।

-বানর কেন নেবে? ছাদে বানর আসে তাই মা কিছু হারিয়ে যায় দোষটা তার ঘাড়েই চাপে। মনটাই খারাপ হয়ে গেল সুমির।

সুমি সহ বাড়ির সবাই খুঁজে চলছে রোজ। বাড়ির কোণ,ছাদের কার্ণিশ, চারপাশে। ছাদে পাখি, কাক, বানরের উৎপাত লেগেই আছে। ফুলের কুঁড়ি আসতেই পাখি ঠুকরে ছিঁড়ে দেয়। এসব দেখে ভীষন মন খারাপ হয়ে যায় সুমি'র।



 কাকতালীয় ভাবে পরদিন সকালে সুপ্রভাত জানাল সমাপ্তি দিদিয়া। কলকাতায় যোধপুর পার্কে থাকে। খুব সুন্দর আবৃত্তি করেন তিনি। দিদিয়া অ্যাডেনিয়াম ফুলের সাথে দিদিয়ার নাতনির ছবি দিয়ে সেদিন সুপ্রভাত জানাল। সুমি'র মনটা খুশিতে ভরে উঠল। এত সুন্দর একটা ছবি দেখে। খুব মিষ্টি দেখতে নাতনী। নাম সানভী, যেমন মিষ্টি দেখতে তেমনি মিষ্টি মিষ্টি কথা। সবাইকে মাতিয়ে রাখে সানভী ওর ঠাম্মিকে তো নাম ধরেই তারা বলে ডাকে, কত শাসন বারণ আদর আব্দার সব নিয়ে মাতামাতি রোজদিন ।  দিদিভাই ও সুমিকে খুব আদর করে ভালবাসে সুপ্রভাত, শুভরাত্রি জানায় রোজ নিয়ম ক'রে। দিনে একবার ফোন করা চাই ওদের দুজনের। ছবিটি পেয়ে  আনন্দিত হয় সুমি। একটু হলেও হারিয়ে যাওয়া অ্যাডেনিয়াম ডালের শোক ভুলে যায়।

মন খারাপ নিয়ে পাওয়ার আশায় ছাদে উঠে  রোজদিন খুঁজে চলে চারদিকে। সুমির মন খারাপ তবুও পিছু ছাড়ে না। 

তৃতীয় দিনের দিন সব গাছ দেখে খুঁজে নেমে আসে নীচে। হঠাৎ মেজদা মানে ভাসুর বলেন, ‘পাওয়া গেছে পাওয়া গেছে’। সুমি আনন্দে ছাদে ওঠে,

-কোথায় পেলেন মেজদা

-ঐ পশ্চিম দিকের ছাদের কার্নিশের নীচে পড়ে আছে।

-এখনো বেঁচে আছে দেখছি।

-টবে পুঁতে দি, হবে কচি পাতা দেখা যাচ্ছে।

সুমি পশ্চিম দিকে ছাদের কার্ণিশে তাকিয়ে দেখল কতগুলো কাক কা কা করছে। উঁচু আমগাছের মগডালে বাসা বাঁধছে আর খড়কূটো জোগাড় করছে। অ্যাডেনিয়ামের ডালটার পাতা ঝরে পড়ছিল। দেখতে শুকনো ডালের মত লাগছিল বলেই হয়ত বাসা বাঁধার জন্য তুলে নিয়ে গেছিল। বাসা পর্যন্ত নিতে হয়তো আর পারেনি তার আগেই পড়ে গেছিল। 

শেষ পর্যন্ত ডালটি আর বাঁচেনি। মরে পচে গেছে। 

কোলকাতা থেকে মেজদি আবার পাঠিয়ে দিয়েছে আমাদের ভাসুরপোর কাছে। ডালটি এখন বহাল তবিয়তে আছে। কাক আর নিতে পারেনি। সুমির কাঙ্খিত মন এখন ও রোজ খুঁজে চলে ফুলে ভরা সাজানো একটা সুন্দর অ্যাডেনিয়াম গাছ।

 

সম্পা দত্ত-দে'র গল্পের সঙ্গের ছবিঋণ সমাপ্তি রায়

Download ALEEK PATA Mobile APP

DOWNLOAD ALEEK PATA ANDROID APP


| Aleekpatamagazine.blogspot.com |
  |ALEEK PATA- Your Expressive World |Online Magazine |
| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
| Special Puja Issue, 2020 | October-November 2020 | শারদ সংখ্যা -১৪২৭।
| Fourth Year Third Issue |24 th Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |
পড়া শেষ? পত্রিকা বন্ধ করুন


শালুক পর্ব- অনুগল্প-টুকলি বিভ্রাট - ফিরোজ আখতার

 

টুকলি বিভ্রাট

ফিরোজ আখতার



প্রতিবারের মত এবারেও শালিখপুর হাইস্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষার ইনভিজিলেশন ডিউটি পড়েছে মলয়ের । শালিখপুরে এই নিয়ে পরপর তিনবার ডিউটি পড়লো । স্কুলে শিক্ষক সংখ্যা কম থাকায় আশেপাশের স্কুল থেকে পরীক্ষার সময় শিক্ষক-শিক্ষিকা ধার করতে হয় স্কুলটিকে । এমনিতে রাস্তার ধারে স্কুল । আসতে কোন সমস্যাই নেই । নির্দিষ্ট সময় স্কুলে পৌঁছে গেছে সে । নিজের ডিউটির ঘরটা বুঝে নিয়েছে সেন্টার ইন-চার্জের কাছ থেকে । সেন্টার-ইন-চার্জ পরিচিত মাস্টারমশাই । মৃদু হেসে বললেন, “মলয়বাবু, ছয় নম্বর ঘরের বাঁদিকের জানলাদুটোর নীচের পাল্লাগুলো খুলবেন না” ।

জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে একবার তাকাল মলয় ।

-“বাঁদিকে যে আমবাগানটা আছে বুঝলেন না… ওখান থেকে টুকলি সাপ্লাই হবে । ওখানে অবশ্য একজন কনস্টেবল থাকার কথা…”

-“তা বেশ, তবে একা একজন কনস্টেবল কতদিকে দেখবে । আপনি কোন চিন্তা করবেন না মাস্টারমশাই । আমি সামলে নেব” ।

পরীক্ষা শুরুর আধঘন্টা আগেই মলয় পৌঁছে গেলো ঘরে । পরীক্ষার্থীরা সবাই মোটামুটি এসে গেছে । নিজের নিজের জায়গায় বসেও গেছে । সবার দিকে একঝলক দেখে নিল সে । সবাই তাকেই জরীপ করছে বলে মনে হল । এবার বাঁদিকের জানলাদুটোর দিকে চোখ গেল তার । দুটো জানলারই নীচের পাল্লাদুটো খোলা । বামদিকে একটা ছোটমত আমবাগান আছে । কিছু অংশজুড়ে আমগছের শুখনো পাতা পড়ে আছে । একটু দূরেই রাস্তা । বোঝাই যাচ্ছে, টুকলি সাপ্লাইয়ের আদর্শ পরিবেশ । জানলাদুটোর নীচের পাল্লাদুটো নিজেই বন্ধ করে দিল মলয় । জানলার পাশে বসা ছেলেদুটো যে মোটেই সন্তুষ্ট হয় নি, সেটা সে তাদের চোখমুখ দেখেই বুঝতে পারলো ।

-“তোমরা সবাই নিজের নিজের জায়গায় বসেছ তো” ?

সকলেই মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল । এর মধ্যে প্রশ্নপত্র আর খাতাও চলে এসেছে । পরীক্ষা শুরুর পনেরো মিনিট বাকি । প্রশ্নপত্র দেবার বেলও বেজে গেলো । প্রশ্নপত্রগুলি ধীরে ধীরে সকলকে দিতে শুরু করল মলয় । পাঁচমিনিট পর খাতাও দিয়ে দিলো ।

-“কেউ কথা বল না, প্রশ্নপত্র ভালো করে পড় । তারপর উত্তর দেবে” । অভ্যাসবশতঃ যান্ত্রিক গলায় বলে উঠল সে ।

এবার পালা অ্যাডমিট দেখে রোল ও নং মেলানো আর খাতায় সই করা । একে একে পরীক্ষার্থীদের খাতাগুলোতে সই করতে লাগলো সে । বেশ কয়েকজন ছেলে উশখুশ করতে শুরু করেছিল বটে মাঝে, কিন্তু কড়া ধমকে তাদের চুপ করিয়ে দিয়েছে সে ।
খাতায় সই হয়ে গেছে । পাঁচ মিনিটের জন্য চেয়ারে বসল মলয় । হঠাৎ তার কানে এলো শুকনো পাতার শব্দ । শুকনো পাতার উপর দিয়ে কেউ হাঁটছে মনে হচ্ছে । শব্দটা প্রথম জানলার দিকে এগিয়ে আসছে । তাড়াতাড়ি সিট থেকে উঠে প্রথম জানলার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো সে । এমনভাবে দাঁড়ালো যেন বাইরে থেকে তাঁকে কেউ দেখতে না পায় । হঠাৎ বাইরে থেকে একটা হাত এগিয়ে এলো জানলার ভিতরে । সঙ্গে সঙ্গে একটা গলা হিসহিসিয়ে উঠল ।

-“হাতটা বাড়া, হাতটা বাড়া…”

বিনা বাক্যব্যয়ে হাতটা বাড়িয়ে দিল মলয় । হাতে এসে পড়ল দলা পাকানো এক টুকরো কাগজ । একবার কাগজটার দিকে আর একবার জানলার পাশে বসা ছেলেটার দিকে চাইল সে । ছেলেটার মুখ সাদা হয়ে গেছে ।

-“কাগজটা তোকে দিল” ? ছেলেটার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করলো মলয় ।

-“না স্যার, আমার না… আমি কিছু জানি না” ।

মনে মনে হাসল সে । মুখে কিছু বলল না । আবার চেয়ারে গিয়ে বসলো । কাগজটা আবার খুলল । গোটা দশেক ছোট প্রশ্নের উত্তর লেখা । ছিঁড়ে কাগজটা পাশে রাখা বিনে ফেলে দিল ।

কিছুক্ষণ পর আবার সেই শুকনো পাতার শব্দ । একই ভাবে জানলা দিয়ে ভেতরে চলে এলো একটা হাত । তবে এবার দ্বিতীয় জানলা দিয়ে । আবার সেই হিসহিসে শব্দ । ‘হাত বাড়া…’ । চোখ দিয়ে ইশারা করল সে দ্বিতীয় জানলাটার পাশে বসা ছেলেটিকে । ছেলেটি এবার নিঃশব্দে হাত বাড়িয়ে দিল । ছেলেটির হাত থেকে টুকলিগুলো নিয়ে আবার ডাস্টবিনে ফেলে দিলো সে । এরকম আরও বারদুয়েক হল । প্রতিবারই টুকলিগুলো হাতে এসে পড়লো মলয়ের । ছেলেগুলোর মুখের দিকে চেয়ে মনে যে একটু মায়া হলনা তা নয় । কিন্তু কি আর করবে সে…!

পরীক্ষা শেষ । খাতাগুলো তুলে নিয়ে দ্রুত মিলিয়ে নিল সে । তারপর, চলে গেল স্টাফরুমে । খাতাগুলো বুঝিয়ে দিল দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষককে । তারপর ধীরে ধীরে স্কুলের বাইরে রাস্তায় এসে দাঁড়াল সে । রানিং অটোগুলো ধরতে হবে । একটু দূরেই বেশ কয়েকটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে । তার মধ্যে প্রথম জানলার পাশে বসা ছেলেটিকেও দেখল সে । নিজেদের মধ্য জটলা করছে তারা । সে এসে দাড়াতেই প্রথম ছেলেটা একটা ইশারা করল ছেলেগুলোর উদ্দেশ্যে । ছেলেগুলোর মুখের চেহারা বদলে গেলো । প্রত্যেকের মুখে একটা হিংস্র ভাব ফুটে উঠল ।

পাত্তা দিল না মলয় । একটা অটো আসছে । উঠে পড়লো সে অটোটায় । পাশ দিয়ে যাবার সময় দুয়ো ধ্বনি শুনতে পেল সে ছেলেগুলোর মুখে । মুখটা ঘুরিয়ে নিল সে ।

Download ALEEK PATA Mobile APP
DOWNLOAD ALEEK PATA ANDROID APP


| Aleekpatamagazine.blogspot.com |
  |ALEEK PATA- Your Expressive World |Online Magazine |
| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
| Special Puja Issue, 2020 | October-November 2020 | শারদ সংখ্যা -১৪২৭।
| Fourth Year Third Issue |24 th Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |
পড়া শেষ? পত্রিকা বন্ধ করুন


Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান