অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Showing posts with label গল্প. Show all posts
Showing posts with label গল্প. Show all posts

Saturday, April 13, 2024

গল্প -একটি দিনের গল্প - আবীর ভট্টাচার্য্য চক্রবর্তী

 গল্প

 

 

একটি দিনের গল্প

আবীর ভট্টাচার্য্য চক্রবর্তী

 

Image Source : Internet

 

প্রত্যহ সেই চঞ্চল প্রাণ শুধিয়েছিল,

 

'শুনাও দেখি, আসে নি কি? আসে নি কি? '

 

 

ক্যালেন্ডারের হিসেবে সময়টা মার্চের প্রথমভাগ অর্থাৎ ফাগুনের শেষ, তুমুল বসন্তবেলা যদিও ইট-কাঠ-কংক্রীটের জঙ্গলে ঋতুবৈভব টের পাওয়া যায় না তেমন, তবে আধুনিক নগরায়নে রাস্তার দুইপাশে গাছ লাগাবার চল হয়েছে ইদানীং বেশ, ফলে কখনো কখনো তাদের ডালপালায় অজস্র নব-পুষ্প-পত্র-পল্লব সমারোহে বসন্ত উঁকি দেয় বইকি সেই সব ফুল পাতার সৌরভে, উতল হাওয়ায় বসন্তের আগমন বার্তা পৌঁছে যায় কর্মক্লান্ত প্রায় কংক্রিটময় সদাব্যস্ত আধুনিক মানুষগুলির মনেও আর কে না জানে, বসন্ত এলে প্রেমোন্মাদনা ছাড়াও অবধারিত ভাবেই আসে প্রাগৈতিহাসিক সেই সব মনখারাপ,স্মৃতিরোমন্হন আর রবিঠাকুরের গান… যা বাঙালীর আজন্ম সঞ্চয়

 

 

এই যেমন আজ হয়েছে সৌমেন্দ্রনাথের সকাল থেকেই বাড়িতে ঝুট ঝামেলা চলছে পারিবারিক ভুল বোঝাবুঝি, দাম্পত্য কলহ… তের বছরের ছোট্টো সন্তানটিকে নিয়ে অকারণ তুচ্ছ সমস্যা নিয়ে অপ্রয়োজনীয় অশান্তি শেষে বেশ একটু রাগ করেই বাড়ি ছেড়ে এসেছেন, কিচ্ছুটি না খেয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে অবশ্য খারাপ লাগছে, জন্ম থেকেই ছেলের সব দায়-দায়িত্ব স্ত্রী অন্বেষাই সামলায়,তার নিজের শত কাজের মধ্যেও মাঝেমধ্যে তার রাগ হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে, তবু সক্কাল সক্কালই!...

 

           খুব বিরক্ত লাগছিলো, সারা দিনটা যেন না এজন্য মাটি হয়ে যায়, গাড়িতে স্টার্ট দিয়েই তাই চালিয়ে দিয়েছিলেন  প্রিয় শিল্পীর প্রিয় গান,

 

 

'প্রাঙ্গণে মোর শিরীষ শাখায়' …

 

 

একমনে গান শুনতে শুনতে, চোখ ভরে রাস্তার পাশের শিরীষ-বটলব্রাশের বর্ণালী আয়োজন দেখতে দেখতে কখন যে কর্মক্ষেত্রে পৌঁছে গেছেন এবং রাগেরও খানিক উপশম হয়েছে, বুঝতে পারেননি কিন্তু পুরুষের ইগো যে বড়ো তীব্র অভিমান এখনও তাই ভাদ্র মাসের গুমোট আবহাওয়ার মতো মনের আকাশ ছেয়ে আছে

 

 

এদিকে, বেশ কয়েকদিন ধরেই অফিসে প্রবল চাপ চলছে কোন এক বিখ্যাত আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক সংস্হার পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান হিসেবে এমনিতেই সারাক্ষণ তুমুল ব্যস্ত থাকেন সৌম্য, কি করে যে দিন গড়িয়ে রাত পার হয়ে আবার দিন আসে; ঋতুর পরে ঋতু গড়িয়ে যায়, বছর-মাস-দিন-ঘন্টা সব একাকার হয়ে যায়, বুঝতেই পারেন না

 

সে অর্থে, কাজের চাপ সবসময়ই থাকে, কিন্তু গত কয়েক দিন যেন কর্তব্য সচেতন মানুষটির দম ফেলারও ফুরসত নেই; বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ওনার অফিস ওনাকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছিলো উনি সাফল্যের সঙ্গে সে দায়িত্ব পালনও করেছেন তাঁর কর্মকাণ্ড এবং কর্মপদ্ধতি কোম্পানির বড় কর্তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে, প্রশংশিত হয়েছে, প্রতিষ্ঠান খুশি, খুশি উনি নিজেও যদিও এই বয়সে এসে নিজেকে প্রমাণ করার কিছু নেই, তবুও বেশ একটু নির্ভার নির্ভার লাগছে, যে যাই বলুক, প্রশংসা এমন এক মহার্ঘ্য উপহার,যা পেলে যে কোন বয়সেই,যে কোন পরিস্থিতিতে মানুষ নিজেকে ছাপিয়ে যেতে চায়

 

তবে আজ এত কিছুর মধ্যেও সকালবেলার দাম্পত্য অশান্তির সময় ছোট্টো রিভুর অসহায় মুখটি বারবার মনের পটে ভেসে উঠছে  মন কেমন যেন একটা উলটো সুরে গাইছে

 

                    ছোটবেলার কতো কতো স্মৃতি যেন সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো মনের অন্দরে উথলে উঠছে কতো কী যে মনে পড়ছে

 

এমন অগোছালো মনে কোন কাজ করা যায় না তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবেন ভেবে হাতের টুকটাক কাজগুলির দিকে চোখ বুলোতে বুলোতে হঠাৎই ডেস্কের পাশের বিশাল কাঁচের জানালায় চোখ চলে গেল

 

 

একী! আকাশ ভরা আলো, কেমন পাগল করা আলো...!

 

 

কোন কোন দিনে এমনই হয় কী যেন এক অদ্ভুত আলোয় আকাশ ভরে যায় বর্ণালীর কোন রঙ নয়, মহাজাগতিক কোন অতীন্দ্রিয় আলো, যেন জন্ম জন্মান্তরের কুয়াশা সরিয়ে আকাশ উদ্ভাষিত করে তোলে অজানা আনন্দ আয়োজনে মনে পড়ায় ফেলে আসা জীবনের অমূল্য সব স্মৃতির ভার

 

 

মুহুর্তেই মনে ভীড় করে আসে ফেলে আসা অতীতবেলা…

 

 

মনে পড়ে, যে অরণ্যশহরে কেটেছিল আজকের কর্পোরেট কর্তা ডঃ সৌমেন্দ্রনাথ মজুমদারের শৈশব এবং কৈশোরের মধুর দিনগুলি, সেখানেও প্রতিদিন এমন আকাশ ভরে সুর্য উঠতো, মায়া বিছানো সন্ধ্যায় শালবনের মাথায় ঝিঁঝিঁর গানে চাঁদ হাসতো, সারাদিনের কাজকর্ম সেরে সদ্য গা ধুয়ে আসা মায়ের শঙ্খধ্বনিতে সন্ধ্যা নামলেই ওনারা দুভাই খেলা ফেলে বাড়ি এসে সদ্যস্নাতা সাবান-পাউডারের গন্ধ মাখা মাকে জড়িয়ে একটু আদর করে উঠোন ধারের কুয়োতলায় তুলে রাখা বালতির জলে হাত-পা ধুয়ে আসতেন মায়ের ফর্সা কপালের লাল টুকটুকে টিপটাও যেন মায়ের সঙ্গে হেসে উঠতো, উঠোনের এককোনের তুলসীতলায় সন্ধ্যায় জ্বেলে দেওয়া প্রদীপশিখাটির মতো ধূপের ধোঁয়ার কি যেন এক সুখ-সুখ গন্ধ বাগানের বারোমেশে চাঁপা ফুলের সঙ্গে মিশে সেই সব সন্ধ্যেগুলোকে স্বর্গীয় করে তুলতো

 

 

অবশ্য তখন তো এসব ভাবার মতো বড়ো তাঁরা হয়ে ওঠেননি, পরে বড়ো হয়ে যখনই সেসব দিনের কথা মনে পড়ে, এক অপরূপ স্মৃতিমেদুরতায় আক্রান্ত হন সবিশেষ মনে পড়ে, তাঁদের তথাকথিত অল্পশিক্ষিত গৃহবধূ মায়ের কথা সারাদিনের সমস্ত গৃহস্থালী কাজকর্ম তিনি সন্ধ্যের আগেই মিটিয়ে রাখতেন শুধুমাত্র পড়ার সময় তাঁদের কাছে বসবেন বলে ওরা চিৎকার করে পড়তো, মা মন ভরে শুনতেন,ওদের একা ছাড়তেন না কখনও একপাশে দম কমানো থাকতো হ্যারিকেনের, ওনাদের ছোটবেলায় অরণ্যশহরে বড়ো কারেন্ট চলে যেত মাঝেমাধ্যেই

 

 

তবে সেকালের ছেলেদের তো এখনকার বাচ্চাদের মতো ক্যরিয়ারের চাপ ছিলোনা তেমন, তাই একটু রাত হলেই পড়া শেষে, সামনের মাঠে পাশাপাশি বাড়ির কাকিমা-জেঠুমা,দাদা-দিদিদের সঙ্গে ওরা মা-ছেলেও দড়ির খাটিয়া পেতে বসতো খেলা,গল্প,গানে ভরে যেত আঙিনা, আকাশের চাঁদ,তারা,শালবনে হাওয়ার মাতন তার সাক্ষী থাকতো প্রতিদিন শারদীয়া পুজো, নববর্ষ,রবীন্দ্রজয়ন্তী বা অন্য অনুষ্ঠানের আগে আবার এ জায়গাই পরিনত হতো রিহার্সালের অস্থায়ী মঞ্চে মা-কাকিমাদের অনন্ত উৎসাহে ওনারা সবাই মিলে অনুষ্ঠান করতেন, তার আগে রিহার্সাল করতেন,নাটক করতে করতে পার্ট ভুল করতেন, তারপরে, অপেক্ষাকৃত বড়ো দাদাদিদিদের কাছে কানমলা খেয়ে ভ্যাঁ করে কেঁদে ফেলতেন…

 

এবং অনুষ্ঠান শেষে মায়েদের সম্মিলিত অনভ্যস্ত  আধা সুরে আধা বেসুরে গাওয়া গানে তুমুল হাততালি দিয়ে অল্প আলোয় তাঁদেরই রান্না করা মাংস ভাতের খাওয়া-দাওয়া,সবাই মিলে; আহা! কি অনবদ্য যে তার স্বাদ!

 

 

 আজ হয়তো অনেক বড়ো রেষ্টুরেন্টে ডিনার বা লাঞ্চ করার অর্থনৈতিক এবং সামাজিক যোগ্যতা তাঁর আছে, কিন্তু সেদিনগুলির সেই যৌথ আনন্দযাপনের সুস্বাদ তিনি আজ আর পান না কোথাও 'জীবন গিয়েছে চলে…'

 

সত্যিই সে এক মজার  দিন ছিলো তখন মফস্বলে এক পরিবার না হয়েও পারিবারিক বন্ধনসুধা তখন পাড়ায় পাড়ায় সবাইকে বেঁধে রাখতো, একা হতে দিতো না কখনও

 

 

মনে পড়ে , শহরে চাকরি করা বাবা তেমন সঙ্গ দিতে পারতেন না তাঁদের সারাদিন,অফিস নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত থাকতেন সবসময়; সকাল সকাল খেয়ে দেয়ে বেরিয়ে যেতেন, ফিরতেন বেশ রাতে তবু বাবার স্নেহ ছড়ানো ছিলো শহর থেকে নতুন এনে দেওয়া  গল্পের বইয়ের খাঁজে, ছুটির দিনের দুপুরবেলা খাওয়ার সময় মায়ের প্রবল আপত্তি উড়িয়ে নিজের বাটি থেকে মাংস তুলে ওদের দুভাইকে দিয়ে দেওয়ায়, বাৎসরিক ভ্রমনকালে  ইচ্ছেমতন লেজ, কুড়কুড়ে, কোল্ডড্রিঙ্ক খাওয়ানোয়,মা যেসব  কখনও খেতে দিতেন না বছরভ'; অথবা, গভীররাতে ওদের দুভাইয়ের কোমর ছুঁয়ে শেষপ্রান্তে শোওয়া মায়ের কাঁধ স্পর্শ করা আজানুলম্বিত পুরুষালী হাতটির দীর্ঘ আশ্রয় ছায়ায়; বাবা সবসময় থাকতেন না, কিন্তু সবসময়েই থাকতেন তাঁদের সঙ্গে

 

 

আর মা? তিনি তো ছিলেন ওদের সবসময়ের সঙ্গী কি খেলা, কি পড়াশোনা, কি গান শেখা…আজও শৈশবের এমন কোন স্মৃতি নেই,যেখানে সেই হাস্যমুখী অনন্যার উপস্থিতি নেই

 

যদিও দাদা বয়সে সৌম্যর চাইতে পাঁচ বছরের বড়ো, মা ওদের মানুষ করতেন যমজ সন্তানের মতোই একসাথে পড়া, খেলা,স্কুল যাওয়ার সময়ে একথালায় দুজনকে ভাত মেখে খাইয়ে দেওয়া,একরকম জামা-কাপড় পরানো…সব

 

যদিও আজ মনে মনে বোঝেন, শান্তশিষ্ট মেধাবী বড়ছেলের ওপরে তাঁর আংশিক পক্ষপাত হয়তো ছিলো ,তবু প্রশ্রয়, ভালোবাসা দিয়ে বাকীটুকু ভরিয়ে দিতেন ছোটজনকে,তাই ক্ষোভ ছিলোনা একটুও

 

 

আসলে পড়াশোনা, বা ছকবাঁধা কোন কিছুই ভালো লাগতোনা সৌম্যর ছোট থেকেই, বরং উপভোগ করতেন অলস আকাশে পাখির মতো ঘুড়িগুলোর ইতস্তত ওড়ে বেড়ানো দেখতে, কালবৈশাখী বেলায় শালফলের চক্রাকারে মাটিতে নেমে আসার বিরল মুহুর্তের সঙ্গী হতে, বাগানের ফুলে প্রজাপতির সঙ্গে সঙ্গে মনে মনে উড়তে, আর ভালোমানুষ দাদার ওপরে সময় অসময়ে খানিক অন্যায় খবরদারিটুকু করতে  মা এসব সবই হয়তো বুঝতেন, তবু প্রশ্রয় দিতেন তিনিও মনে মনে বেশ খানিকটা ছেলেমানুষ ছিলেন কিনা তাঁরই মতো! তা নাহলে, দুপুরবেলা চুপিচুপি রান্নাঘরের কৌটোভরা বাদাম বাগানের কাঠবেড়ালিকে খাইয়ে দেওয়ার পরেও পরেরদিন খালিকৌটো আবার ভর্তি করে রাখবেন কেন ! রাস্তায় খেলে বেড়ানো বেওয়ারিশ কুকুরবাচ্চা,বে ড়ালবাচ্চাদের জন্য ছেলের ওপরে ছদ্মবিরক্তি দেখিয়েও বিস্কুট আর দুধের বাটি বাগানে পেতে রাখতেন কেন!... শিশুমনে অবাক হয়ে ভাবতেন তখন ,এখন বেশ বোঝেন কারনটা!

 

 

আজ বহুদিন হলো বাবা-মা দু'জনেই না-ফেরার দেশে, বৃহৎ একান্নবর্তী পরিবার ও পরিবারস্বরূপ স্বজনেরাও আপন আপন গন্ডীতে কুক্ষিগত... সাফল্য, সম্মান, প্রতিষ্ঠা সব আছে, নেই শুধু সময়! সব বয়সের সবাই শুধু ছুটছে, ছুটছে বড়রা আরও বড়ো প্রতিষ্ঠার দিকে, ছোটরা ক্যারিয়ার ওরা আজ আর সেই সব পেয়েছিল দেশের খবর পায়না, কারণ, তাঁরা, আজকের অভিভাবকেরা নিজেদের সন্তানকে সে হদিস দেননা

 

বড়ো অসহায় বোধ করেন মাঝেমধ্যে, কিন্তু করার তো কিছু নেই, আপন শৃঙ্খলে বন্দী আজকের মনুষ্য যাপন

 

 

একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস পড়লো, নিজের কানেই বড়ো করুন লাগলো তার অন্তর্লীন হাহাকার

 

 

সরে এলেন কাঁচ ঢাকা জানালা থেকে…

 

নাঃ! আজ আর কাজে মন বসবে না,স্মৃতিমেদুরতা আষ্টেপৃষ্ঠে ঘিরে ধরেছে আজ যেন তাঁর মন

 

                       অফিসরুম ছেড়ে বেরিয়ে এলেন, ইচ্ছে হলো,এয়ার কন্ডিশ্যনারের মেকি স্বাচ্ছন্দ্যের বাইরে খোলা হাওয়ায় এসে খানিক দাঁড়ানোর, অনেক দিন পরে একবার ভাবলেন,লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি ধরে নামবেন,পরে অবশ্য বয়সের কথা ভেবে বিরত হলেন নীচে পৌঁছে দেখলেন, গোধূলি নামছে, চারপাশে গাছপালায় কেমন যেন মায়াবী রঙ লেগেছে মনে পড়লো,ক্যারিয়ার শুরুর পরে পরেই এমন কতো সন্ধ্যায় তিনি হেঁটে বেড়িয়েছেন কাজকর্মের সন্ধানে… খানিক পয়সাকড়ি বাঁচাবার ইচ্ছেতেও হাঁটার অভ্যাস চলে গেছে বহুদিন ,তবু আজ হাঁটতে বড়ো ভালো লাগছে, অনেকদিন পরে

 

 

কখন যে,হাঁটতে হাঁটতে সায়েন্স সিটি পেরিয়ে ধাপার মাঠ সংলগ্ন জলাজমির ধারে পৌঁছে গিয়েছেন, খেয়াল নেইচমক ভাঙলো এক মায়ের চিৎকারে,

 

 

'কুনু, কোথা গেলি রে!'

 

 

তাকিয়ে দেখলেন এক আপাত সাধারণ শীর্ণ দুঃস্হ মহিলা,হয়তো আশেপাশের ফ্ল্যাট থেকে কর্মসহায়িকার কাজ সেরে ফিরছেন ঘরে, ডাক দিচ্ছেন সারাদিনের জন্য ছেড়ে যাওয়া সন্তানদের; আকাশভরা আলোর মাঝে ছুটে আসছে ধুলো কাদামাখা ছিন্ন জামাকাপড়ের কেলোঝেলো একটি দুটি শিশু, হা-ক্লান্ত মা পরম আশ্লেষে জড়িয়ে ধরলেন সন্তানদের তাঁর দুহাতে,মাতৃমুখে দিব্যবিভা,ঐ একটু আগে দেখা আকাশের আলোটির  মতো; হাঁটা থামিয়ে দু চোখ ভরে দেখতে লাগলেন তিনি ;নির্নিমেষে,অপলকে চোখ ভরে উঠলো জলে, মনেপ্রাণে উপলব্ধি করলেন, এ আলো ভালোবাসার,নির্ভরতার,শ্রেয় মিলন-প্রত্যাশার, চিরন্তনতারএ আলো মানুষের মনের আলো, খুব ভালো মানুষেরা যখন ভালোবেসে তাদের কাছের জনেদের কাছে আসে, আদর করে,পৃথিবী ভরে যায় এমন আলোয়..

 

 

আর ঠিক তখনই নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় বেজে উঠলেন তাঁর উজাড় করা মালকোষ বন্দিশে ফোনের কলার টিউনে, হোমস্ক্রীনে ভেসে উঠলো সন্তানকে জড়িয়ে প্রিয় পারিবারিক ছবি,

 

 

অন্বেষা কলিং…

 

 

তাঁর দু-চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়লো জল; জীবন- আসঙ্গে, মিলন-বিধুরতায়, না বিরহ-মেদূরতায়, তিনি বুঝতেই পারলেন না....


 | ALEEK PATA- Your Expressive World | Online Magazine |

| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |

| Bengali New Year 2024 | April-24 | Seventh Year First Issue |

| © All Rights Reserved by The Editor and The Publisher |

| Published By : Aleek Publishers- www.aleekpublishers.com | 

| a DISHA-The Dreamer Initiative |

গল্প - অংশ - তনিমা সাহা

 গল্প

  

অংশ

তনিমা সাহা

Image Source- Internet


 

নীলার আজ পরীক্ষার দিন জীবনে যতরকম পরীক্ষা দিয়েছে সেসব পরীক্ষা থেকেও সবচেয়ে বড় পরীক্ষা এটা নাহ্! ভয় করছে না নীলার কিন্তু একদমই কী করছে না? বুকের ভেতরটায় একটু কিন্তু দুরুদুরু করছে ঠিকই কিন্তু এখন দুঃশ্চিন্তা করলে যে পরীক্ষা খারাপ হতে পারে! নাহ কিছুক্ষণ চোখটা বন্ধ করে নাহয় রাখা থাক

 

নীলা রে কী হ্যান্ডসাম একটা ছেলে দেখলাম রে!

 

ওফ্…প্রিয়া! তোর কী আর সারাদিনে কোন কাজ থাকে না?

 

না রে! আমি না তোর মতো অত বোরিং হতে পারলাম না 

 

শোন ওটাকে বোরিং বলে না অনেস্টি লয়েলিটি বলে বুঝলি

 

রাখ তোর অনেস্টি আর লয়েলিটি! কী হবে ও নিয়ে! আজকালের অনেস্টির মূল্যটা আমাদের পিওন দাদাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করে নে ক্যামেস্ট্রিতে মাস্টার্স করেও পিওনের চাকরি করছে কেন? কারণ পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রফেসরের চাকরিটা কিনতে পিওন দাদার অনেস্টি আর লয়েলিটিতে আঘাত পড়েছিল এমন নয় যে আর্থিক ভাবে সে অসঙ্গত বাবার টাকা থাকা সত্ত্বেও নিজের অনেস্টি আর লয়ালিটির দম্ভে অতবড় বাড়ি ছেড়ে এসে শেষে এখানে পিওনের চাকরি করছে

 

কীইই! কিন্তু প্রিয়া তুই এই কথাটা কিভাবে জানলি?

 

হমহহ! নিজের দাদার সম্পর্কে তার মায়ের পেটের বোন জানবে না তো কে জানবে?

 

কিন্তু তোকে তো কখনও পিওন থাদার সাথে কথা বলতে দেখি নি!

 

দাদাই কথা বলে না বলে তার সাথে কথা বললে নাকি আমার সম্মান হানি হবে আজ তো দেখলাম একজন নতুন পিওন দাদা এসেছে হয়তো অস্বস্তি এড়াতে দাদা এখানকার চাকরিটাও ছেড়ে দিয়েছে জানিস যেদিন দাদা পিওনের চাকরিটা নিলো সেদিন থেকে বাবা দাদাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে কোনরকম যোগাযোগটুকুও ছিল না এখানেই দাদাকে প্রায় তিনবছর পর দেখলাম

 

নীলার মনে হয় দুনিয়াটা সত্যি বড় গোলমেলে তার জীবনেও কী সব সুস্থির আছে? হমহহহ! যদি স্কলারশিপটা সে না পেত তাহলে কী এই ইউনিভার্সিটিতে পড়ার স্বপ্নটা সফল হত কখনও? পড়াশুনোয় ভাল নীলা কলেজের পড়ার খরচটা নিজের টিউশনের পয়সা দিয়েই করেছে নিজের বাড়িতে নীলার অবস্থান একটা উদ্বাস্তু ছাড়া আর কিছুই নয় বহুবার ভেবেছিল নীলা বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসার কথা কিন্তু কোন নিশ্চিত আশ্রয়ের জোগাড় না করে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসাটা বোকামি! শেষে এই স্কলারশিপটা হাতে এল; যদি পি.এইচ.ডি.টা করে ফেলা যায় তাহলে একটা চাকরি অন্ততঃ নিশ্চিত ইউনিভার্সিটি এসে তাই নীলার একটাই ধ্যান-জ্ঞান পড়াশুনা পড়াশুনা আর পড়াশুনা প্রিয়ার বাবা তো বড়লোক! ইউভার্সিটি ভর্তি হয়েছে অনেক টাকা ডোনেশন দিয়ে হোস্টেলে প্রিয়া নীলার রুমমেট বড়লোক হলেও প্রিয়ার মধ্যে কোন অহংকার নেই নীলার সাথে প্রিয়ার যতই মন কষাকষি হোক না কেন দিনের শেষে সেই নীলাকেই তার সব কথা বলা চাই তাই নীলা প্রিয়ার বন্ধুত্বটাও একটা আলাদা পর্যায়ের

 

এই, এই দেখ নীলা! সেই হ্যান্ডসাম ছেলেটা! চল গিয়ে আলাপ করি

 

কথাটা বলে নীলার উত্তরের অপেক্ষা না করেই প্রায় তাকে টানতে ছেলেটির সামনে গিয়ে দাঁড়ায় প্রিয়া

 

হাই…আমি প্রিয়া সোসাল স্টাডি ডিপার্টমেন্ট আর তুমি?

 

হাই আমি কমলেশ ইংলিশ ডিপার্টমেন্ট

 

হ্যালো আমি নীলা সংস্কৃত ডিপার্টমেন্ট

 

হাই নীলা বসো না তোমরা দাঁড়িয়ে কেন? কফি চলবে তো তোমাদের?

 

চলবে মানে…দৌড়ুবে(প্রিয়া)

 

আলাপটা ঠিক এভাবেই শুরু হয় পরিচয় পর্ব সমাধা হওয়ার পর তিনজনের মধ্যে সমীকরণটাও গাঢ় আঁচে জ্বাল হতে সময় নেয় না তিনজনের বন্ধুত্বটাও বাড়তে থাকে দিনে দিনে কমলেশদের বৃন্দাবনহাটিতে বিশাল পৈতৃক বাড়ি যদিও এখন ওখানে কেউ থাকেন না সবাই কাজের সূত্রে এদিক ওদিক থিতিয়েছেন শুধু দুর্গাপুজোর সময় সবাই একসাথে পৈতৃক ভিটায় কিছুদিন কাটিয়ে আসেন কমলেশের বাবা মা দুজনেই ডক্টর প্রসার প্রতিপত্তি ভালই তার সাথে বনেদিয়ানা ঠাটবাটও আছে সেবারের দুর্গাপুজোটা দুই বান্ধবী কমলেশের পৈতৃক বাড়িতেই কাটিয়েছিল প্রিয়া যেন দিব্যি সে পরিবেশে মানিয়ে যায় নীলার একটু অস্বস্তি হয় তার নিজেকে সেখানে বড্ড বেমানান লাগে 

পুজোর ছুটির পর কলেজ খুলে গেছে ছাত্রছাত্রীরা যারা বাড়ি গিয়েছিল সব ফিরে এসেছে নীলা জীবন থেকে 'বাড়ি' নামক জায়গা বেপাত্তা হয়ে গেছে ততদিনে বাড়ির লোক নীলার সাথে যোগাযোগ করতো না নীলাও আর আগ বাড়িয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করতো না তাই পুজোর ছুটির যে'কদিন বাকি ছিল সেটা সে হোস্টেলেই কাটিয়েছে যদিও প্রিয়া অনেক জোরাজুরি করেছিল তার সাথে তার বাড়ি যাওয়ার জন্য কিন্তু নীলা আর নিজের অস্বস্তি বাড়াতে চায় নি 

 

মাস্টার্সের আর কয়েকদিন পরেই ফাইনাল সেমিস্টার প্রিয়া বিভিন্ন কলেজে পি.এইচ. ডি. করার জন্য অ্যাপ্লিকেশন করতে থাকে একদিন কলেজ থেকে হোস্টেলে ফেরার সময় ক্যান্টিনের ফাঁকা গলিটায় নীলা প্রিয়া আর কমলেশকে একটু ঘনিষ্ঠ হয়ে কথা বলতে দেখে প্রিয়ার বুকে কোথাও যেন চিনচিন করে ব্যথা হয় হঠাৎ ভীষণ শরীর খারাপ লাগতে শুরু হয় নীলার দরদর করে ঘামতে থাকে নীলা তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে হোস্টেলে ঢুকে সোজা বাথরুমে গিয়ে হরহরিয়ে বমি করে চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিয়ে নিজের রুমে এসে বিছানায় উপুর হয়ে বালিশে মুখ চেপে কাঁদতে থাকে; যাতে বাইরে আওয়াজ না যাক কিছুক্ষণ পর প্রিয়া এসে দরজায় ধাক্কা দিলে নীলা বিছানা ছেড়ে উঠে নিজেকে সামলে দরজাটা খুলে দেয় দরজা খুলে নীলা বলে…

 

আরে কী ব্যাপার বেশ খুশি খুশি লাগছে দেখি মহারাণীকে

 

আমার কথা পরে হবে! আগে তুই বল তোর চোখমুখের এই দশা কেন? শরীর খারাপ লাগছে?

 

আরে না না এমনিতেই একটু টায়ার্ড হয়ে আছি তুই বল! হঠাৎ গালদুটো এত লালটুস লালটুস হয়ে গেছে কেন?

 

(লাজুক হেসে) কমলেশ আমাকে প্রপোজ করেছে

 

ওয়াও…ওয়ান্ডারফুল আর তুই কী বললি?

 

আমি 'হ্যাঁ' বলেছি

 

ওয়াহ..একটা তাহলে ফাটাফাটি বিয়ের নেমন্তন্ন পেতে চলেছি 

 

ধ্যাৎ তুই না…

 

প্রিয়ার খুশি খুশি মুখটা দেখে নীলা ভাবে, 'এটাই তো হওয়ার ছিল এটাই তো স্বাভাবিক আমি তো কোনদিনই সেখানে ছিলাম না সে জায়গাটা তো সবসময় প্রিয়ারই ছিল তাহলে…তাহলে কেন… আমার এত কষ্ট কেন হচ্ছে? কেন আমার সবকিছু ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে!'

 

মনের দোটানার অর্থ প্রিয়ার বোধগম্য হয় না দেখতে দেখতে মাস্টার্সের লাস্ট সেমেস্টারটাও শেষ হয় 

প্রিয়া জানায় যে কমলেশ পি.এইড. ডি. করতে বাইরে যাবে আর সে-ও ওই একই জায়গা থেকে পি.এইচ. ডি. করবে তাই বাড়ির লোক চাইছে তাদের দুজনের বিয়ে দিয়ে দিতে 

খবরটা শুনতে শুনতে নীলা হঠাৎ থরথরিয়ে কাঁপতে শুরু করে কোনরকমে হাসির আড়ালে নিজের চোখের জলটা চেপে প্রিয়ার সামনে থেকে চলে আসে নীলা দুদিন পরেই প্রিয়া হোস্টেল ছেড়ে দিয়েছিল একমাস পরই কমলেশ আর প্রিয়ার বিয়ে নাহ! নীলা যায় নি সে বিয়েতে বলা ভাল সে বিয়ে দেখার মতো মনোবল নীলা জুটিয়ে উঠতে পারে নি পি.এইচ.ডি.র পাশাপাশি চাকরির জন্যও চেষ্টা করছিল নীলা যেটা হাতে লাগে! প্রিয়া হোস্টেল ছাড়ার দিনই একটা চাকরির চিঠি পায় নীলা ব্যস! তারপরেই নীলা কমলেশ আর প্রিয়ার জীবন থেকে চিরতরে হারিয়ে যায় দেখতে দেখতে জীবনেরও ঋতু পরিবর্তন হয়

 

কি গো সায়নী দি এত কী ভাবছো?

 

আমার এক পেশেন্ট আছে জানো তো! খুব ভাল মানুষ সব রিপোর্ট নর্মাল থাকা সত্ত্বেও পেশেন্টটি কনসিভ করতে পারছে না তাই সারোগ্যাসি করতে চায় কিন্তু সঠিক 'বার্থ মাদার' খুঁজে পাওয়াও যে মুসকিল!

 

পেশেন্টের নাম কী গো?

 

 

বত্রিশ বছরের নীলা এখন একজন স্কুল শিক্ষিকা এবং বিভিন্ন এ.জি.ও. র সাথে যুক্ত পি.এইচ.ডি.টা আর করা হয় নি তার বিয়েটাও করা হয় নি আসলে সেই একজনকেই তো পাশে চেয়েছিল সে সে-ই যখন….

এরপরের কাহিনী সোজা বহুদিন পরে প্রিয় বান্ধবীকে দেখে প্রিয়া আর কমলেশের অভিমান আর অনুযোগের বৃষ্টি অবিরত ঝরে পড়ে তবে নীলার প্রস্তাব শুনে প্রিয়া আর কমলেশ প্রথমে কিছুতেই রাজি হতে চায় নি

 

কিন্ত নীলা তাদের দুজনকে বুঝিয়ে বলে, 'আমি তো তোদের বন্ধু এক বন্ধুর ক্রাইসিসে আরেক বন্ধুকে কাছে থাকতে দে প্লিজ আমি তো তোদের বিয়েতে কোন উপহার দিতে পারি নি ভেবে নে না তোদের জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহারটা না হয় এই বন্ধু থেকেই পেলি'

 

কমলেশ আর প্রিয়া এরপর আর আপত্তি করে নি

 

ম্যাডাম চলুন 

 

হ্যাঁ চলুন সিস্টার

 

হাসপাতালের ম্যাটার্নিটি ডিপার্টমেন্টের কোনার কেবিনটায় সোফায় বসে নীলা পুরোনো কথাই মনে করছিল সিস্টারের ডাকে আবার সে বাস্তবে ফিরে আসে ছোট থেকে সব পরীক্ষাতেই নীলা সফলতার সঙ্গেই উত্তীর্ণ হয়েছে তার বিশ্বাস এই পরীক্ষাটাতেও সে উত্তীর্ণ হবে আধঘন্টা পরে ও.টি.র বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা উদ্বিগ্ন প্রিয়ার কোলে যখন ছোট্ট পরীটাকে দেওয়া হল তখন প্রিয়ার চোখের বাঁধ আর মানলো না

 

কমলেশ দেখো..দেখো..আমাদের সন্তান আমরা পেরেছি আমরা আমাদের সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখাতে পেরেছি

 

হ্যাঁ, প্রিয়া

 

দুজনের চোখ বেয়ে বয়ে চলে আনন্দাশ্রু 

 

একটু সামলে কমলেশ সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সিস্টারকে বলে, 'সিস্টার নীলা..নীলা কেমন আছে?'

 

সিস্টার হেসে বলেন, 'উনি একদম ঠিক আছেন স্যার তবে আমাদের মিষ্টি খাওয়ানোর ব্যাপারটা কিন্তু মাথায় রাখবেন'

 

কমলেশ হেসে বলে, 'নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই'

 

দেখতে দেখতে কেটে যায় দুমাস নীলা এখন কয়েকদিন প্রিয়ার কাছেই থাকছে খানিকটা প্রিয়ার জোরের জন্য আর খানিকটা… ছোট্ট পরীটা দেখতে অনেকটা নীলার মতো একদিন সকালে প্রিয়া নীলার রুমে এসে দেখে রুমে কেউ নেই বাইরেও কোথাও নেই নীলাকে ডাকতে ডাকতে প্রিয়া বাড়ির বাইরে পর্যন্ত খুঁজতে আসে নাহ্! কোথাও নেই নীলা হন্তদন্ত হয়ে প্রিয়া কমলেশকে ডাকতে আসে ঘরে ঢুকে দেখে কমলেশ বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছোট্ট পরী তখন সারারাত পাহারা দিয়ে গভীর ঘুমে মগ্ন

 

শুনছো! নীলাকে কোথাও পাচ্ছি না

 

নীলা চলে গেছে প্রিয়া চিরতরে..

 

কমলেশ একটা ভাঁজ করা কাগজ প্রিয়ার হাতে ধরিয়ে দেয় যাতে লেখা ছিল, 

 

'ভাল থাকিস তোরা দুজনে

ভাল থাকিস দুজন আজীবনে'

               ইতি

         অভাগী নীলা

 

তুমি এটা কোথায় পেলে?

 

আমার মাথার বালিশের পাশে

 

কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর প্রিয়া বলে, ' নীলা তোমাকে খুব ভালবাসতো কমলেশ তাই হয়তো ভালবাসার মানুষটির জন্য সে নিজের প্রাণভোমরাকে দিয়ে দিতে এক বারের জন্যও ভাবে নি'

 

কমলেশ হতাশ নিশ্বাস ফেলে বলে, 'সারাজীবন ধরে ভাল থাকার উপায় খুঁজতে খুঁজতে হয়তো ভাল থাকার আস্তানা শেষে খুঁজে পেয়েছে নীলা হয়তো সে তার অংশকে রেখে যেতে চেয়েছিল আমাদের মাঝে হয়তো এভাবেই সে ভাল থাকতে চেয়েছে ভালবাসা যে স্বার্থ দেখে না প্রিয়া! সে তো শুধু ভালবাসতেই জানে'


 | ALEEK PATA- Your Expressive World | Online Magazine |

| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |

| Bengali New Year 2024 | April-24 | Seventh Year First Issue |

| © All Rights Reserved by The Editor and The Publisher |

| Published By : Aleek Publishers- www.aleekpublishers.com | 

| a DISHA-The Dreamer Initiative |

Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান