অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Showing posts with label ছোট গল্প. Show all posts
Showing posts with label ছোট গল্প. Show all posts

Saturday, April 13, 2024

ছোট গল্প - পাত্রী বাছাই - শ্রীমতি সুপ্রিয়া গঙ্গোপাধ্যায়

 ছোট গল্প

 

পাত্রী বাছাই

শ্রীমতি সুপ্রিয়া গঙ্গোপাধ্যায়

 

অলংকরণ ঃ স্বরূপ চক্রবর্তী 

 

হিরণ উজ্জ্বল গৌরবর্ণের সুঠামদেহী, পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চি  উচ্চতার বত্রিশ বছর বয়সী এক তরুণ অধ্যাপক। উত্তর কলকাতায় বাঙালি পরিবারে জন্ম হলেও দক্ষিণে আর্যভট্ট কলেজে ইকনমিকস পড়ায়শিক্ষার্থীরা যথেষ্ট শ্রদ্ধার সঙ্গে ভালোবাসে তাঁকেসহকর্মীরাও একটু সম্ভ্রমের চোখেই দেখেকারণ একটু রাশভারী প্রকৃতির সেতাঁর ব্যক্তিত্বের মোড়কে যে শিশুটি বাস করে সে চায় প্রকৃতির সান্নিধ্য

 

বাড়িতে মা,বাবা আর সর্বক্ষণের বিনুমাসি। এ ছাড়া পাখি,কুকুর,বিড়াল_ কোনও কিছুরই অভাব নেই আরেক স্থায়ী সদস্য বাসুকাকার দৌলতে বাগানের  একটি অংশে নিপুণহাতে একটি জংলী চিড়িয়াখানা বানিয়ে তুলেছে সেবাবা অবসরপ্রাপ্ত মিলিটারী অফিসারতিনি এখনও পর্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন করেনতবে সতীর্থদের সঙ্গে প্রায়শঃই কয়েকদিনের জন্য ছোটখাটো সফরে বেরিয়ে পড়েনসেই অবকাশে মা জননী অনেক ব্যক্তিগত কাজকর্ম সেরে ফেলেন

 

মাস ছয়েক যাবৎ মায়ের অভিযান ছেলের জন্য পাত্রী বাছাইয়ের গোটাচারেক সংবাদপত্রে, এছাড়া অন - লাইন বিবাহ - বন্ধনীগুলিতেও বিজ্ঞাপন দিয়েছেন _ '... ফর্সা,অতীব সুন্দরী,স্লিম,'৪" - ৫'৬" উচ্চতা বিশিষ্ট ২৫ - ২৮ বয়সের যোগ্য পাত্রী চাই ' বিশেষণের ঘনঘটা অনুল্লিখিত রইল

 

যত সম্বন্ধই আসুক সবই নাকচ করে দেয় হিরণমায়ের অনুনয়,' তোর পছন্দের কেউ থাকে তো বলখোঁজখবর করি' ' বলছি তো কেউ নেই' 'তাহলে তোর প্রিয় নায়িকার নাম বল তো দেখি' তা-ও বলে না কাকে কীভাবে বোঝাবে যে ওর একমাত্র কৃষ্ণবর্ণের গোলগাল চেহারার পাত্রীই পছন্দ_ ঠিক যেমনটি দেখেছিল কৌসাম্বীর পাহাড়ে ঝর্ণার ধারে! তার অপরূপ মাধুরী দেশ - কালের সীমা ছাড়িয়ে জুড়ে আছে হিরণের হৃদয়

 

পুজোর ছুটিতে ব্যাগ গুছিয়ে পালাল পাহাড় - ভ্রমণেছুটি পড়লেই হিরণকে টানে পাহাড়বেড়ানোর সঙ্গী একটি ট্যাব_ যার মধ্যে তার প্রিয় প্রচুর বই লোড করা আছেআর ব্যাগে সব সময়ে উপস্থিত বাইনোকুলার, সামান্য প্রসাধনী,এক সেট কালোপযোগী জামাকাপড় আর টুকিটাকি ওষুধপত্র, ব্যস্ অন্ - লাইনে টিকিট কাটাই ছিলট্রেনে চেপে বসল

 

পাশের সহযাত্রীটি সামনে রাজনীতির কচ্ কচে গল্প দ্বারা তার ভ্রমণসুখের বিঘ্ন ঘটাচ্ছিলেন রাত বাড়তে শয়নের উদ্যোগের অছিলায় ভদ্র লোকটির হাত থেকে রেহাই পাওয়া গেল শুয়েই ঘুমট্রেনের দোলানির হাতে নিজেকে সঁপে দিল হিরণ

 

ভোরের দিকে একটি স্টেশনে ট্রেনটি কিছুক্ষণ দাঁড়াবার পর জানা গেল আরও ঘন্টাখানেক সেটি ঐ স্টেশনে দাঁড়াবেইত্যবসরে ইঞ্জিনের বৈকল্য দূর করা হবে

 

ব্যাগটি ট্রেনে রেখেই প্লাটফর্মটি একটু ঘুরে দেখতে গিয়ে এক ভদ্রলোকের সঙ্গে আলাপ হলওখানকার ডিয়ার পার্কে গিয়ে বসল তারা পার্কে আগে থেকেই জনাচারেক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির কথোপকথন চলছিল ' এই সেরেছে , এরা যে পাত্রী দেখে ফিরছে '( স্বগতোক্তি )এদের মধ্যে দু'জন পাত্র _ অরণ্য আর কিঙ্করফর্সা মেয়ে দেখে দেখে অরুচি ধরে গিয়েছেতাই ওরা আলোচনা করে একটি বিজ্ঞাপনের বয়ান প্রস্তুত করছে '... ফর্সা ব্যতীত সুশ্রী, অনূর্ধ্ব পঁচিশ, কমপক্ষে পাঁচ ফুট  উচ্চতা বিশিষ্ট সুযোগ্য পাত্রী চাই' "না রে , এরকম হলে কেমন হয়! '...পচিশ থেকে আঠাশ বছর বয়সী কমপক্ষে পাঁচ ফুট উচ্চতার শ্যামাঙ্গী পাত্রী চাই..'" ' আরে দূর দূর, আমি বলছি, "... কৃষ্ণ বর্ণা,স্বাস্থ্যবতী,পচিশ থেকে আঠাশ বছর বয়সী কমপক্ষে পাঁচ ফুট উচ্চতার লাবণ্যময়ী সুপাত্রী চাই। ফর্সা হলে আলাপ নিষ্প্রয়োজন.."' ওদের চারজনের সঙ্গে হিরণও হাত মেলাতে জোর্ আওয়াজ হলট্রেন চলতে শুরু করেছে 'মানে? স্বপ্ন ছিল!'

 

সাত সকালেই শাদী ডট - কমে এমন একটি বিজ্ঞাপন পাঠাল হিরণ

 

প্রথম সাত দিন কোনও সাড়া নেইএরপর একটি মাত্র জবাব এল _ এক বৌদি তার ননদের জন্য ক্লিক করেছেনপাহাড় থেকে বেড়িয়ে ফেরার পর কলেজে ছুটির সময়কালে একদিন সহসা সেই বৌদির রূপসী ননদিনী,আঁখি ওরফে রাজন্যা সোরেনের আবির্ভাব! বয়স পঁচিশ- এর সামান্য কম বলেই মনে হয়

 

আলাপের পর হিরণ উদ্বেলিত ' এই বিজ্ঞাপনের জবাবে  -এ একমাত্র আপনাদের প্রতিক্রিয়া পেলাম কোন মানসিকতা থেকে এটিকে মঞ্জুর  করলেন আপনি?' ' স্যার, আপনাকে কলেজের প্রথম দিনের ক্লাসে দেখেই আমি .. ম ম মানে পছন্দ করে ফেলেছিশুধু কালো বলে নিজেকে গুটিয়ে রেখেছিলাম...' সান - গ্লাসটা সরাতেই আঁখির ফাঁদে পড়লেন ডা: শ্রীমান হিরণ তরফদার ' এ চোখ তো আমার যৌবনের শুরু থেকেই চেনা_ সেই কৌসাম্বীতে পাহাড়ের ঝর্ণা ধারায় স্নাত (স্বগতোক্তি)!'  'রাজন্যা !!!' ' স্যার !!'


 | ALEEK PATA- Your Expressive World | Online Magazine |

| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |

| Bengali New Year 2024 | April-24 | Seventh Year First Issue |

| © All Rights Reserved by The Editor and The Publisher |

| Published By : Aleek Publishers- www.aleekpublishers.com | 

| a DISHA-The Dreamer Initiative |

ছোট গল্প - খুশি - জয়ীতা গাঙ্গুলী

 ছোট গল্প

 

খুশি 

জয়ীতা গাঙ্গুলী



Image Source: Internet

 

ছোট্ট রিচির আজ সকাল থেকেই খুব মন খারাপ এইবারের জন্মদিনেও ওর বাবা মা থাকতে পারবেননাএরকম অবশ্য প্রতিবছরই হয়এবারে ক্লাস সেভেন ওরযখন ছোট ছিলো এগুলো নিয়ে ওর মন খারাপ হতোতোমরা হয়তো ভাবছো রিচি তো ছোটোইকিন্তু রিচির মনে হয় ও অনেক অনেক বড় হয়ে গেছেআসলে রিচির বাবা মা দুজনেই একটা বিশাল বড় মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি তে কাজ করেনতাই তাদের বেশির ভাগ সময়ই নানা রকম কনফারেন্সের জন্য বাইরে যেতে হয়প্রথম প্রথম তারা রিচিকে সঙ্গে করে নিয়ে গেলেও এখন রিচিকে আর সাথে নিয়ে যান নাযদি না রিচির স্কুলে ছুটি থাকেরিচি তো এমনটাও শুনেছে যে ওর ক্লাস টেন হয়ে গেলে ওকে হোস্টেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবেআসলে মাম্মামের তো ওকে বিদেশেই পড়াশোনা করানোর ইচ্ছে ছিলকিন্তু রিচির বাপি বলেছিলেন রিচি একটু হলেও নিজের দেশের সব কিছু চিনুক জানুকতারপর বিদেশ তো রইলোই পড়েসত্যি এইটুকু বয়সেই রিচির বেশ কিছু জায়গা ঘোরা হয়ে গেছেগত বছরের গরমের ছুটিতে তো ওরা থাইল্যান্ড গিয়েছিলতার আগেরবার লন্ডনআরো যখন ছোট ছিল ও শুনেছে ওকে নিয়ে মাম্মাম আর বাপি লন্ডন,প্যারিস,নেদারল্যান্ডস সব ঘুরে এসেছেরিচির যদিও সেগুলো কিছুই মনে নেইকিন্তু ওখান থেকে কিনে আনা অনেক জিনিস ওর আছেআর বাপি আর মাম্মাম সাথে ওর অনেকগুলো ছবিও আছেতাই ওদের কথা গুলো যে সত্যি সেটা রিচি জানেযদিও ওরা দুজনে কখনো মিথ্যা কথা বলেনাকারণ ওরা বলে ওরা মিথ্যে কথা বললে রিচি তো মিথ্যে কথা বলা শিখবেই সাথে সাথে ওর আরো নানা রকম মিথ্যে আশা তৈরি হবে যেটা ঠিক হবেনাসেই জন্যেই তো যখন রিচি বললো জন্মদিনের  কথা দুজনেই না বলে দিলোদুজনেরই নাকি কনফারেন্স রয়েছে বাইরে সেই সময়অবশ্য রিচির কি উপহার চায় সেটা দুজনেই জানিয়ে দিতে বলেছেকি করে বোঝায় রিচি যে ওর শুধু ওদের দুজনকেই চাইএকসাথেএর বাইরে অন্য কোনো জিনিস ওর কোনো খুশি নেইঅবশ্য শুধু রিচি না মাম্মাম আর বাপি নিজেরাও খুব কম একসাথে থাকেতবে নিয়ম করে দুজনে একসাথে ওকে ভিডিও কল করার চেষ্টা করে হ্যাঁ,ভিডিও কলেই তো রিচির সাথে ওদের কথা বেশি হয়রিচির সাথে এমনিতে থাকে সব সময়ের জন্য এলা আণ্টিএলা আণ্টি ওর খুব প্রিয়কারণ ওর সাথেই তো ও থাকেএর আগে ওর দিদুন অবশ্য থাকতো ওর সাথেতখন রিচির জীবন এতটা একার ছিলোনাকিন্তু দু বছর হলো দিদুন মারা গেছে তাই এখন রিচি একদমই একাএলা আণ্টি ওকে সময় সময়ে সব করায়রিচির জীবনটাই তো ঘড়ির তালে তালে চলেসকালে ওঠেতখন মাম্মাম আর বাপি ওকে ভিডিও কল করেকখনো একসাথে কখনো আলাদা আলাদাপাঁচ মিনিট করেওই একই প্রশ্নআজকে কি করবে রিচিহোমওয়ার্ক কমপ্লিট রেখেছে কিনা হ্যাভ অ্যা নাইস ডেরিচির মুখস্ত হয়ে গেছেরাতে আবার পাঁচ মিনিট করে লাঞ্চ করেছিল কিনা, ডিনার করেছে কিনাএলা আন্টিকে ডিসটার্ব করেনি তোএইসবরিচির এগুলো মুখস্তএর বাইরে রিচির থেকে ওদের কিছু জানার নেইরিচির ওদের জন্য মন খারাপ কিনাকিচ্ছুনা

প্রথম প্রথম রিচির অনেক কষ্ট হতোঅনেক কান্নাকাটি করতোকিন্তু এখন আর কিছু বলেনা ওকারণ জানে ওদের কাছে ওই সময়টা নেইআর বলে রিচির ভবিষ্যতের কথা ভেবেই নাকি ওরা এগুলো সব করেতাই তো রিচি যা চায় তাই ওরা রিচিকে কিনে দিতে পারেযেখানে চায় রিচি যেতে পারেআর কথাটা সত্যিরিচির কোনো জিনিসের অভাব কোনো দিনই নেইঘর ভর্তি অফুরন্ত খেলনা,আলমারি ভর্তি জামাকাপড়ওর স্কুলে যাতায়াতের জন্য গাড়ি ও আছেড্রাইভার আঙ্কেল নিয়ে আসে নিয়ে যায় ওকেআর বাপি বা মাম্মাম থাকলে ওরাও মাঝে মাঝে নিয়ে যায় রিচিকে স্কুলেসেইদিন গুলো রিচির কাছে খুব স্পেশাল ও এত খুশি হয়যদিও সেরকম প্রকাশ করেনাকারণ বাপি বলে বেশি ইমোশনাল হলে এই জগতে হয়না হ্যাঁ লোকে ভাববে এসব বড় বড় কথা বোঝার মত বয়স হয়নি ওরকিন্তু বাপি আর মাম্মাম এর মতে এখনই ওর এগুলো বোঝার সময়এখন থেকে বুঝলে তবে তো ও বড় হয়ে সব পারবেদিন দিন কম্পিটিশন বাড়ছেবাপি,মাম্মাম যেরকম ভাবে বড় হয়েছে রিচিকে আরো বেশি তৈরি হতে হবেকিসের যেনো একটা অদৃশ্য প্রতিযোগিতা চলছে ওর মনে সব সময়কর্ সাথে ও নিজেও জানেনাপড়াশোনায় অবশ্য ও ভালোইপ্রতিবছর প্রথম না হলেও প্রথম তিনজনের মধ্যেই থাকেওদের স্কুলটাও অবশ্য ভারতের সেরা দশটা স্কুলের মধ্যে একটাসব ভালো ভালো ছেলে মেয়েরাই পড়ে ওখানেতবে রিচির মতো এতটা একা কেউ থাকেনারিচির মত এত সেরা সেরা জিনিসও সবার নেইএইজন্য ও জানে স্কুলের অনেকে ওকে হিংসা করেওর সাথে মিশতে চায়নাবাড়িতেও রিচি একাস্কুলেও রিচি একাএছাড়াও অনেক এক্টিভিটিস আছে রিচিরসাঁতার, ক্যারাটে,অ্যাবাকাস,ফ্রেঞ্চ ভাষা শেখা হ্যাঁ,রিচিকে বাইরের ভাষা শিখতে হবে বলেছে বাপিএরপরে বাইরে গিয়ে থাকতে হবেতাই এখন থেকে শিখতে থাকলে ওর অনেক বেশি সুবিধা হবেওর বাপি ও জানেফ্রেঞ্চ,জার্মান,স্প্যানিশমাম্মাম ওওদের স্কুলেও ফ্রেঞ্চ এর ক্লাস হয়তবে রিচি আলাদা করে কোচিং নেয়এতসব কিছু করার বিনিময়ে ওরা রিচিকে অনেক জিনিস কিনে দেয় রিচিও চাহিদা করেনতুন নতুন ফোন,ল্যাপটপ,গেমিং এর জিনিসনতুন ড্রেসমাথার মধ্যে এসব জিনিস ভাবতে থাকে ওঅনেকে স্কুলে বলে ও নাকি ভীষন বেশি স্পয়লডহবে হয়তো বা ও তো জানে ওর বাপি আর মাম্মাম ও যা বলবে তাই করবেইহয়তো এভাবেই ওরা রিচিকে সময় না দেওয়াটা পূর্ণ করতে চায় রিচিই বা তার সুযোগটা নেবেনা কেন? আর তো কিছু পাওয়ার নেই ওর ওদের থেকেমাঝে মাঝে মনে হয় ছেড়ে ছুড়ে পালিয়ে যাবে ও কোথাওকিন্তু সেই যাওয়ার জায়গাটা এখনও নেই ওরতাই এখানেই থাকতে হয়মাঝে মাঝে অবশ্য ওর উল্টোপাল্টা বায়না পূরণ করে দিলে কিছু দিনের জন্য খুশি থাকে ওকিন্তু ঐ অল্প কিছু সময়ইতারপরেই খারাপ লাগাটা চেপে ধরে মাঝে মাঝে ও ভাবে বাপি আর মাম্মামকে বলবে ওর মনের কথাকিন্তু ফোনে ওদের সময় হয়নাআর যখন ওদের পায় রিচি তখন এসব কথা বলতে ওর ভালো লাগেনাআজকেও ও জানতো ওরা আসতে পারবেনাতাও বলে দেখলোআসলে ওরা মনে হয় রিচিকে ভালোই বাসেনা

যাক এসব ভাবনা বাদ দিয়ে রিচি কম্পিউটারে চোখ রাখলোবেশ কিছু প্রজেক্ট আছে স্কুলেরসেগুলোর জন্য নেটের সাহায্য লাগবে ওরপ্রজেক্ট করতে করতেই রিচির মাথায় একটা ভাবনা আসলোভাবনাটা ঠিক করতে করতেই ও পরবর্তী কাজগুলো ভেবে নিলো ওরআর মুখের মধ্যে ফুটে উঠলো একটা মৃদু হাসি

তার পাঁচ দিন পরের কথারিচির জন্মদিন আজবাপি আর মাম্মাম তো আসতে পারবেনা জানতোইঅনেক গিফট পাঠিয়েছে অবশ্য ওরাকিন্তু ওগুলো নিয়ে ওর কোনো মাথা ব্যথা নেইবাপি আর মাম্মাম ওর জন্য বেশ কিছু করে টাকা প্রতি মাসেই পাঠিয়ে দেয়তার থেকেই ও এইবারে কিছু টাকা তুলেছেবাপি পরে নোটিশ পেলে ওর কাছে জানতে চাইবে নিশ্চয়ই যে ও কি করলো টাকা নিয়েকিন্তু এখন ওগুলোর জন্য সময় নেই ওরআজকে স্কুলে যাবেনা ওআজ ও যাচ্ছে বেশ দূরেএই সবটাই অবশ্য এলা আণ্টি আর ওর স্কুলের একজন ম্যামের সাহায্যে ও চেয়েছিল আজকের দিনটা কোনো অনাথ আশ্রমে গিয়ে কাটাতেসেই মত ও পৌঁছে গেছে ওর বাড়ির থেকে একটু দূরের একটা অনাথ আশ্রমেওখানকার বাচ্চাদের জন্য অনেক খেলনা,জমা,বই সব নিয়ে এসেছে ওআর খাবার তো আছেইসব কেনাকাটা অবশ্য এলা আণ্টিই করে দিয়েছেওর স্কুলের ম্যাম ও এসেছেন আজআর ও ভিতরে ঢুকে অবাক হয়ে দেখলো ওর বেশ কিছু সহপাঠীরাও এসেছেযাদের থেকে ও দূরে সরে থাকতো হয়তো কিছুটা ভুল বুঝেই

নাহ্,আর কোনো মন খারাপ নেই ওরএতদিন এটার কথা ভাবেনি কেনো ও সেটাই জানেনা রিচিএরপর থেকে ওর মন খারাপ হলেই ও এখানে চলে আসবেওদের সবার এই নির্মল হাসির মধ্যে ওর মন ভালো করার রসদ ও খুঁজে পেয়ে যাবে যখন ওর প্রয়োজন হবেআসলে এই পৃথিবীতে ভালবাসার আর খুশির অভাব নেইঅপেক্ষা শুধু ঠিক সময় সেটাকে খুঁজে নেওয়ার


 | ALEEK PATA- Your Expressive World | Online Magazine |

| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |

| Bengali New Year 2024 | April-24 | Seventh Year First Issue |

| © All Rights Reserved by The Editor and The Publisher |

| Published By : Aleek Publishers- www.aleekpublishers.com | 

| a DISHA-The Dreamer Initiative |

Thursday, April 15, 2021

ছোট গল্প-জানলা - সমাজ বসু

 জানলা

সমাজ বসু



 

মোবাইল ক্লিক করল মৌলী,সাতটা চল্লিশ। আটটার মধ্যে বিজিতের আসার কথা। আড়াই বছরের মেলামেশা। এখনও সে দোলাচলে। অনেক ভাবে বিজিতকে বোঝার চেষ্টা করেছে। বুঝতে পারেনি বা পারছে না। অথচ বাইরে যাওয়ার আগে এমন ছিল না। একদিন দেখা না হ'লেই হাঁপিয়ে উঠত।

বিজিত বরাবরই মেধাবী। মেধার জোরেই ডেনমার্কের একটা কোম্পানিতে সরাসরি সিইও। বিদেশে প্রায় দু'বছর হতে চলল। বিদেশী আদবকায়দা এখনও রপ্ত করতে পারেনি। মাসখানেকের জন্য এখানে এসে যেন স্বস্তি পায়। কিন্তু এবার মৌলী একটু দিশেহারা। কেমন অচেনা লাগছে। তার স্বভাবে কোন গাছের স্তব্ধ ছায়াতল তো সে আগে দেখেনি। ঝরে পড়া পাতার মত মৃদুস্বরে তাকে মানায় না। তবু মৌলীকে মেনে নিতে হয়। মানুষের জীবন আকাশের মত। কখন কোন্ রঙের প্রলেপ পড়ে কেউ জানে না।

আর্থিক স্বচ্ছলতা কোনদিন ছিল না তাদের। বাবার একান্ত ইচ্ছায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়েছে। ইংলিশে এমএ করার পর কল সেন্টারের চাকরি। চাকরি তো না,গিলেটিন। সারাদিন পিষেই চলেছে। এইরকম নিজের একটা বর্ণহীন অস্তিত্ব নিয়ে বেশ আছে মৌলী। বিজিতকে সে ভালবাসে। কিন্তু তাকে নিজের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রাখবে,এ এক আকাশকুসুম স্বপ্ন। সে দূরেই থাকতে চায়।  বিজিতই বারবার তার স্বপ্নকে জাগিয়ে দিয়ে যায়। কাল সকালের ফ্লাইট। আবার আট থেকে দশ মাসের বিরতি। প্রতিবার এমনটাই করে। যাওয়ার আগের দিন দেখা করা চাই। আজও সেই দিন।

- কী হল কতক্ষণ? চমকে যায় মৌলী। এ কোন্ বিজিত! এতদিনের চেনা রোদ,আজ যেন উপুড় করে দিচ্ছে আলো। একদৃষ্টে চেয়ে থাকে সে।

- এই তো আধঘন্টা হবে। কাল চলে যাচ্ছো,তাই...

- তাই আজ আর অনুযোগের খাতা খুলবে না তাই তো? ঠিক আছে, হাতে সময় কম। চলো,একটু ক্যাফেতে বসি। বিজিত জোর খাটালো। আজ মৌলীকে সবকিছু মেনে নিতে হবে। অন্তত মন থেকে সে তাই চায়। বিজিতের হাত ধরে নেয়।

    

-বিজিত,আজ একটা জরুরী কথা বলতে চাই। মায়ের চলে যাওয়ার পর বাবা এমনিতেই মনেপ্রাণে নিঃস্ব। এখন শরীরও ভাল যাচ্ছে না। আমিও তৈরি হচ্ছি। বাবার অবর্তমানে মাঝনদীতে পড়লেও, যেটুকু সাঁতার জানি ভেসে যাব। কিছু খড়কুটো আঁকড়ে নেব। তোমার সামনে ঝলমলে ভবিষ্যত। আমার অন্ধকারে নিজেকে ঢেক না।

-তোমার কথা শেষ।   এইবার আমি যে মুখ খুলব। তুমি সবসময় মনের জানলা দুটো বন্ধ করে রেখেছ। তাই জানলার বাইরে অনেক আগাছা জন্ম নিয়েছে। অনেকদিনের বন্ধ,তাই বাইরের মানুষ দেখতে পাও না। জানলাটা খুলে দাও,দেখবে কেউ দাঁড়িয়ে আছে।

-আমি তোমাকে কোনদিন কিছু দিতে পারিনি। পারবও না কোনদিন। তাই...

-তোমায় কিছুই দিতে হবে না। আমায় শুধু তোমার অনামিকা দাও। এই বলে বিজিত প্যান্টের পকেট থেকে একটা ছোট বাক্স বের করে আনে। তারপর একটা আংটি মৌলীর অনামিকায় পরিয়ে দেয়। মৌলীর দুচোখে কান্নার সঙ্গে বিষ্ময়ের মুক্তো ঝরে পড়ে।

কিছু বলার আগেই মেট্রোর লাস্ট ট্রেনটা ধরার জন্য এগিয়ে যায় বিজিত। মৌলীর মনে হলো, অনেকদিনের বন্ধ জানলার পাল্লাটা খুলে একটা অবলম্বন রেখে গেল বিজিত। খোলা জানলা দিয়ে মিষ্টি একটা বাতাস এলো। আর সেই বাতাসে মৌলীও ভেসে চললো...

Download ALEEK PATA Mobile APP
DOWNLOAD ALEEK PATA ANDROID APP

। নববর্ষ-১৪২৮| Aleekpata.com |
  |ALEEK PATA- Your Expressive World |Online Magazine |
| Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
|Bengali New Year Issue, 2021 | April -July 2021| 
| Fifth Year  First  Issue |27 th Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |


Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান