অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Showing posts with label যখন তখন. Show all posts
Showing posts with label যখন তখন. Show all posts

Friday, August 17, 2018

যখন তখন-ভ্রমণ-কালাপানির দেশ আন্দামান (পর্ব-৪ )-তৃপ্তি মিত্র

কালাপানির দেশ আন্দামান (পর্ব-৪)

তৃপ্তি মিত্র 

সংখ্যা -২৬, (১৭ ই আগস্ট , ২০১৮)



যথা সময়ে ডিগলিপুর পৌঁছে গেলাম ৷ অতীতের পোর্ট কর্নওয়ালিস হল বর্তমানের " ডিগলিপুর " ৷ অঞ্চলটি বাঙালি অধ্যুষিত ৷ এখানকার নাম করা হীরা হোটেল বাঙালি পর্যটকদের খুব প্রিয় ৷ গাইডের কথা মতো এখানেই প্রাতরাশ সারলাম হিংএর কচুরি ছোলার ডাল সহযোগে ৷ প্রাতরাশেই বাজি মাত ওফ কি অপূর্ব তার স্বাদ ৷ যেন কোলকাতার শ্রীহরির সেই চেনা স্বাদ ৷ এ অভিজ্ঞতা আমাদের বাঙালিদের জীবনে ঘটে নি হলফ করে বোধহয় কেউ বলতে পারবে না  ৷ বিদেশ বিভুয়ে ঘুরতে গিয়ে চেনা পরিচিত স্বাদ খুঁজে পাওয়া মানে হাতে চাঁদ পাওয়ার সমান ৷ যাইহোক দিপ্রাহরিক খাবারের অর্ডারও করে দিলাম ৷ দুপুর একটা দেড়টার মধ্যে চলে আসবো কথা দিয়ে সোজা চলে গেলাম " রস ও স্মিত "  আইল্যান্ড ৷ 
প্রতিবারের মত আধার কার্ড দেখাতে হয় সঙ্গে যে কয়জন আছি সবারই ৷ আমরা মোট আটজন ছিলাম , দুটো স্পিড বোট পেলাম , এক একটি বোটে চারজন ৷ নিয়ম মাফিক লাইফ জ্যাকেটে সবাই সেজে উঠলাম  ৷ আমাদের আগে আরো বেশ কয়েকটি বোট রওনা দিল ৷ সবকটি বোটই নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলছে ৷ এ কয়দিনে সমুদ্র আর বোটকে খানিকটা আপন করে ফেলেছি ৷ বোটে যেতে যেতে লক্ষ্য করলাম দুদিকে দুটো আইল্যান্ড মনে মনে ভাবছি এখানে কি এমন দেখার আছে ৷ সে ভ্রম ভাঙ্গল খানিক পরে ৷ বোট অনেকটা আগে আমাদের নামিয়ে দিল মানে যতটা জল ছিল ৷ এরপর বালির চরা হেঁটেই এগোছি দূরে রোপোলি বালুর পাহাড় ৷ বালুপাহাড়ে এসে যা দেখলাম জানিনা কতটা ভাষায় প্রকাশ করতে পরবো ৷ এখানের জলের সোভা দেখলে মন প্রাণ সব জুড়িয়ে যাবে ৷ কি অপরূপ তার সোভা ৷ খুব কাছে সবুজ , একটু দূরে ফিরোজা ,আরো দূরে তিব্র কালচে নীল ৷ এরপর আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল মিঁলেমিশে একাকার ৷ কোনটা সমুদ্রের নীল কোনটা আকাশের নীল আলাদা করার উপায় নেই ৷ অনেকক্ষন ধরে সমুদ্র স্নান করলাম ৷ চেঞ্জরুম আছে যদিও তেমন উন্নত মানের কিছু নয় ৷ যাইহোক পাওয়া গেল এটাই সান্তনা ৷ 

কথা মতো হিরা হোটেলে ফিরে দূপুরের আহার আলুরচোখা , ডাল , পার্সে মাছের ঝাল সঙ্গে দেশি মুরগি ৷ খুব চেটে পুটে খেয়ে মন ভরে গেল ৷ সঙ্গে উপরি পাওনা যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে যাওয়া আমার এক দিদিকে পেলাম ৷ মাধ্যম একটা ফোন নাম্বার দিদিকে শেষবার দেখেছি আমি তখন ক্লাস ওয়ান হব হয়ত ৷ ফোনে কথা অনুযায়ী জামাইবাবু হিরা হোটেলের সামনে এসে দাঁড়ায় ৷ ওখান থেকে দিদির বাড়ি ৷ এরপর যা হয় দিদি বোন গলা জড়িয়ে অঝোরে কান্না ৷ কত গল্প , হাসাহাসি ৷ রাত্রে বিশেষ কিছু খাব না জাননো সত্বেও দিদি , জামাইবাবু ছাড়ল না ৷ রাত্রে  "বি . ডি " লজে ফিরতেই হল ৷ কারণ পরবর্তী গন্তব্য  " হ্যাভলক " ৷ দিদির কান্না ভেজা মুখটা বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগলো ৷ দিদির তিন মেয়ে কারোর সঙ্গে দেখা হল না ৷ বড় ,ছোট মেয়ে পোর্টব্লেয়ারে থাকে পড়াশুনার জন্য ৷ মেজো কোলকাতায় এমফিল পড়ছে ৷ আন্দামানের প্রতিটি স্কুল কেন্দ্রীয় মধ্য শিক্ষা ( C.B.S.E ) দ্বারা অনূমোদিত ৷ মহাবিদ্যালয় গুলি পন্ডিচেরি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পলিটেকনিক মহাবিদ্যালয় নিউদিল্লী দ্বারা অনুমোদিত ৷ ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়াশুনা এখানে বাধ্যতামুলক  ৷ 

আন্দামান ভ্রমনে ট্যুর এজেন্সির সাহায্য নেওয়াটাই শ্রেয় ৷ আমাদের এজেন্সির তত্বাবধানে ম্যাক্রুস জাহাজে চেপে হ্যাভলকের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম ৷ সমুদ্রের সোভা দেখতে দেখতে দু ঘন্টার মধ্যে হ্যাভলক পৌঁছে গেলাম ৷ এটি মুলত দেশ ভাগের সময় সর্বস্ব হারানো বাংলা দেশি মানুষের উপনিবেশ ৷এই দ্বীপটি সকল পর্যটকের অত্যন্ত প্রিয় ৷ এখানের " রাধানগর "   বিচ ২০০৪ সালে বিশ্বের সেরা বিচে সন্মানিত হয় ৷ দিগন্ত বিস্তৃত নীল জলরাশি , শুভ্র বালুতট এই বিচের সৌন্দর্য্য কে করে তুলেছে আরো মোহময়ী ৷ জলের রং পান্না সবুজ ৷আন্দামানের সব বিচ স্নানের উপযোগী নয় ৷ রাধানগর তেমনই বিচ যা স্নানের উপযোগী ৷ ঢেউ এর আকর্ষনে আর থাকতে পারলাম না নেমে পড়লাম ৷ দীর্ঘক্ষণ সমুদ্র সোহাগ উপভোগ করলাম ৷ স্নান শেষে সমুদ্র লাগোয়া ধাবায় আহার সারলাম ৷ হ্যাভলকের এলিফ্যানটা বিচে সমুদ্র ক্রিড়ার পসরা সাজানো  ৷ আমরাও সেই দলে ভিড়ে গেলাম ৷ এরপর নীল দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম ৷ ধীরে ধীরে হ্যাভলকের সব কিছু মিলিয়ে গেল ৷ একসময় সব মিলিয়ে জল আর জল ৷ প্রায় দেড় ঘন্টার মধ্যে সর্বগ্রাসী নীলের মাঝখান ছেড়ে পৌঁছে গেলাম " নীল আইল্যান্ডে " ৷ 

নীল একটি ছোট্ দ্বীপ ৷ এখানে ও সর্বস্ব হারানো বাংলাদেশি মানুষের আধিপত্য ৷ দ্বীপটি সবুজ বনানীতে ঘেরা ৷ শান্ত , স্নিগ্ধ , নির্জন সাগর তট ৷ আর ফসলে ভরপুর ৷ এখানে ও সমুদ্র ক্রিরায় সাজানো পসরা ৷ ভরতপুর বিচে গ্লাস বোটে চড়ে রং বেরং এর প্রবাল , রঙ্গীন মাছ দেখলাম ৷ সিওয়াক ,স্নরকেলিং , স্কুবা ডাইভিং করার পক্ষে উপযুক্ত ৷ বিচ লাগোয়া দোকানিরা প্রচুর পসরা নিয়ে বসেছে ৷ 
এবার ফেরার পালা ৷ জাহাজ যতো তার গতি বাড়াছে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ যেন গিলে খেতে আসছে ৷ আবহাওয়া খুব খারাপ ৷ মাঝে মাঝে বৃষ্টি ৷ অসম্ভব ঢেউ এর আছাড় আর দুলুনি সহ্য করতে না পেরে অনেকেই বমি করে ফেলছে ৷বার বার ঘড়ি দেখছি আর ঠাকুর কে স্মরন করছি ৷ সময়  কিছুতেই পার হতে চাইছে না ৷ অবশেষে ঘোষনা করল আর মাত্র ৩০মি সময় লাগবে ৷ এবার ধড়ে প্রাণ ফিরে পেলাম ৷ দূর থেকে পোর্টব্লেয়ারের আলো দেখতে পেলাম ৷ জাহাজ থেকে নামতে না নামতে আবার ভিজলাম ৷ পরের দিন সকাল ১০ ফ্লাইটে কোলকাতার রওনা দিলাম  ৷ আর সঙ্গে করে নিয়ে আসলাম আন্দামান দর্শনের তৃপ্তির স্বাদ ৷ যে স্বাদ আস্বাদন করতে দেশ বিদেশ থেকে বহু পর্যটক ছুটে আসে ৷ আমিও সেই দলে সামিল হলাম  ৷ 
                      

সমাপ্ত
ছবিঃ লেখিকা


Wednesday, August 8, 2018

যখন তখন - ছড়া-ভূরিভোজের রকম সকম- স্বান্ত্বনা দাস

ভূরিভোজের রকম সকম

স্বান্ত্বনা দাস

সংখ্যা -২৫, (৮ ই আগস্ট , ২০১৮)

বঙ্গ জুড়ে ভূরিভোজের বিশাল আয়োজন ,

সেই তত্ব শোনাতে আজকরি আলাপন। 

বোশেখ মাসে পড়ল ঝড়ে কচি কাঁচা আম, 

চাটনি খেলাম আচার খেলাম পুরল মনস্কাম। 

জষ্ঠ্যি মাসে জামাইষষ্ঠী ভূরিভোজের মেলা,

 জামাই ভোজে পড়ল দেখ পঞ্চব্যঞ্জন থালা। 

জাম এল আর কাঁঠাল এল মিষ্টি হাঁড়ি হাঁড়ি,

 রসগোল্লা কাঁচাগোল্লা আসল ভূরি ভূরি। 

বর্ষা কালে ইলিশ ভাপা চিংড়ি মালাইকারি, 

ভাদ্র মাসে গাছে গাছে তাল যে সারি সারি।

 তালের বড়া তালের লুচি তালেরই উৎসব, 

ভূরিভোজের আনন্দেতে উঠল কলরব। 

শীতের দিনে চাদর গায়ে বসে মিষ্টি রোদে ,

খেজুর রসে ডুবিয়ে লুচি মন ভরে আল্হাদে। 

পিঠে পুলি পাটিসাপটা দুধের পুলি মালপো

 এসব কথা বঙ্গবাসীর নয়ত শুধু গল্প। 

এস না ভাই সব ভুলে আজ ভূরিভোজে যাই

,দুঃখ ভুলে আনন্দেতে পেটটি পুরে খাই।

Sunday, August 5, 2018

যখন তখন-ভ্রমণ-কালাপানির দেশ আন্দামান (পর্ব-৩ )-তৃপ্তি মিত্র

কালাপানির দেশ আন্দামান (পর্ব- ৩)

তৃপ্তি মিত্র 

সংখ্যা -২৪, (৬ ই আগস্ট , ২০১৮)


আমাদের গাড়ি মাঝে মাঝে গতি কমিয়ে চলার চেষ্টা করছে যদি গাছের আড়ালে বা জঙ্গলের মধ্যে আবার কিছু জারোয়া দেখতে পাই সেই উদ্দেশ্যে ৷ কিন্তু আমাদের উৎসুক চোখের ক্ষমতা নেই দুশো আড়াইশো ফুট উদ্ধত গাছ কে উপেক্ষা করে তাদের খুঁজে বার করা ৷ আর সম্ভব ও না জারোয়াদের গায়ের রং আর জঙ্গলের ঘন অন্ধকার মিলেমিশে একাকার ৷ ওদিকে আইনের কড়াকড়ি যথেষ্ট ৷ গাড়ির গতি ৪০ কিলোমিটারের নিচে রাখা যাবে না ৷
লাইমস্টোন কেভ

 চালক ভাইয়ার কাছে শুনলাম একসময় " হিউমেন সাফারি " নিয়ে দেশ বিদেশে প্রবল আপত্তির ফল স্বরুপ এই আইনের কড়াকড়ি ৷ সকাল ছটা থেকে তিন ঘন্টা পরপর অর্থাৎ ৬ , ৯ , ১২ , ৩ পুলিশি প্রহরায় গাড়ির কনভয় ছাড়া হয় ৷ এরপর আর কোন গাড়ি এখান থেকে যেতে দেওয়া হয় না ৷ এই পথটুকু যেতে যেতে চালক ভাইয়ার কাছে ওদের গল্পই শুনলাম ৷ জারোয়াদের একাংশ সভ্যতার ছোঁয়া পেয়েছে ৷ ওদের জন্য তৈরি হয়েছে স্কুল ৷ মোবাইল ব্যবহার শিখেছে ৷ হিন্দি , বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে ৷ তবে উগ্র জারোয়ারা মনুষ্য সমাজে মেশে না বরং সভ্য মানুষদের ঘৃনা করে ৷ কিছু কিছু আবার জঙ্গল ছেড়ে হাইওয়েতে চলে আসে সভ্য মানুষদের থেকে নেশার বস্তু সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ৷ 

দিনদিন জারোয়াদের জনসংখ্যা তলানীতে ঠেকেছে ৷ এই আদিম মানুষগুলি কে টিকিয়ে রাখা এখন বড় চিন্তার ৷ তাই ওদের কল্যাণের কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সভ্য মানুষের সংস্পর্শ থেকে ওদের দূরে রাখতে হবে  ৷ না হলে এই জনজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে ৷

 নানান গল্প শুনতে শুনতে লোমহর্ষক পথ অতিক্রম করে আমরা পৌঁছে গেলাম নীলাম্বর " জেটি ঘাট ৷এখানে পারমিট করিয়ে নিয়ে গেল " নয়াডেরা " জেটি ঘাট ৷ এখানে প্রাতরাশ সারলাম তারপর রওনা দিলাম প্রকৃতির বিস্ময় " লাইম স্টোন কেভের " উদ্দেশ্যে ৷ আমাদের স্পীড বোট ক্ষিপ্র গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে মনের মধ্যে উৎসাহ ভয় দুটো মিলেমিশে একা কার ৷ একসময় স্পীড বোট  এর গতি কমে গেল প্রায় দেড় কি . মি রাস্তা ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের মধ্যে ক্রমশ ঢুকে যাচ্ছি ৷ এবার মনের মধ্যে অন্য চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে ৷ এতো কুমিরের আঁতুড় ঘর ৷ এই না ঘাড়ে ঝাপিয়ে পড়ে ৷ বা লাফিয়ে বোটে উঠে যায় ৷ 

যেতে যেতে পেয়ে গেলাম বনদপ্তরের কাঠের তৈরি আলপথ ৷ বোট ছেড়ে উঠে পড়লাম কাঠের আলপথে ৷ ওরে বাব্বা এখানেও নিস্তার নেই , দুপাশে ঘন জঙ্গল ৷ এতক্ষণ কুমিরের ভয়ে কুঁকড়ে ছিলাম এবার যদি চিতা বাঘ বাবাজী উদয় হয় পালাবার কোন রাস্তাই নেই ৷
কাঠের আলপথ
আর সবুজ সাপ , কেউটে , ময়াল কি কি আছে জানিনা ৷ অগত্যা প্রাণ হাতে নিয়ে গাইড কে অনুসরণ করলাম ৷ মাঝে মাঝে গাইড কে জিজ্ঞাসা করছি আর কতদূর যেতে হবে ভাই ৷ আলপথ শেষ করে এবার সমতল পথ হাঁটছি আর হাঁটছি ৷ বেশ মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা ছোট্ট একটা গ্রাম ৷ সমতলে যে সব গাছগাছালি হয় সবই আছে ৷ জমিতে নতুন ধান চারা মাথা দোলাচ্ছে মহা আনন্দে ৷ চরে বেড়াছে মুরগি , ডোবায় হাঁসের ঝাঁক , মাঠে গরু , বাছুর ৷ বড় বড় সাইজের নারকেল পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে কোনটা ওখানেই গজ বেরিয়ে পড়ে আছে ৷  গাইডকে অনুসরণ করতে করতে অবশেষে পৌছে গেলাম প্রকৃতির বিস্ময় " লাইম স্টোন কেভ " ৷ এটি মুলত প্রাকৃতিক চুনাপাথরের সঙ্গে বৃষ্টির জলের বিক্রিয়ায় সৃষ্ট যা কিনা বিভিন্ন শেপ তৈরি করেছে , কোনটা দেখে মনে হচ্ছে স্বয়ং শিব ঠাকুর বসে আছে , তো কোন টা হাতি লম্বা শুঁড় তুলে দাঁড়িয়ে আছে যা দেখে এতক্ষণের কষ্ট উৎকন্ঠা সব দূর হয়ে গেল ৷ টপ টপ করে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরছে যা চুনাপাথরের সংস্পর্শে এসে জমাট বেঁধে বিভিন্ন আকৃতি ধারণ করছে যা পুরোটাই প্রকৃতি নির্ভর ৷ 
শেষে লেবু জল পান করে একই রাস্তায় বিদায় নিলাম ৷ অবশ্য স্থানীয়দের থেকে জেনে নিলাম এখানে বাঘ , কুমীর , ইত্যাদি ইত্যাদি কেউ আছে কিনা ৷ তারা আমাদের নির্ভাবনায় ফিরতে বললো এখানে নাকি ওসব কিছু নেই ৷ 

  এবারের গন্তব্য আর এক বিস্ময় " মাড ভলকান " ৷ এখানের যাতায়ত রাস্তাটা বেশ কষ্টকর ৷ ধাপে ধাপে মাটির সিঁড়ি বানানো ৷ কোনটায় কাঠের টুকরো আছে কোনটায় নেই ৷ বেশির ভাগ জায়গা পিছল ৷  রাস্তার দুদিকে ঘন জঙ্গল ৷ কোন গাইড নেই নিজেদেরই যেতে হচ্ছে ৷ তবে সঙ্গী হল একটি হাড় জিরজিরে সারমেয় ৷ ও কিন্তু পুরো সময়টা আমাদের সঙ্গ দিল ৷ জল ছাড়া সঙ্গে কোন খাবার নেই ৷ ওকে তুষ্ট করতে পারলাম না ৷ " মাড ভলকান " দেখলাম যার থেকে ক্রমাগত মাটির নিচ থেকে উঠে আসছে গরম কাদামাটি ৷ সেই কষ্টকর রাস্তাটি ওঠা যতো সহজ মনে হয়েছিলো নামা ততোধিক কষ্টকর ৷ ধীরে ধীরে আমরা সবাই নিরাপদে নামলাম ৷ গাইড সারমেয় আমাদের পিছন পিছন নেমে এল ৷ নিচে এসে গাড়িতে রাখা বিস্কিট দিলাম সারমেয় কে ৷ আমাদের গাড়ি ছেড়ে দিল , তাকিয়ে এক ঝলক দেখে নিলাম সারমেয় প্রাপ্য ঘুষ পেয়ে মহাখুশি  ৷

রঙ্গতে রাত্রিবাসের পর সূর্যোদয় দেখলাম রঙ্গতের আম্রকুঞ্জ সাগর তটে ৷ মাছধরায় ব্যস্ত জেলেকে ক্যামেরা বন্দি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম ৷ জেলে ভাইয়ের ছবি নিচ্ছি বুঝতে পেরে জিজ্ঞেস করল ছবি তোলবা ৷ বললাম হ্যাঁ ৷ সঙ্গে সঙ্গে এতো সুন্দর একটি ভঙ্গি দিল ৷ সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটা শট নিয়ে নিলাম ৷ 

কিছুক্ষণের মধ্যে সূর্যদেব তার সোনার আলোয় জ্বলজ্বল করে উঠল ৷ সেই মোহময়ী আভায় ভেসে গেলাম ৷ প্রাণ ভরে শান্ত স্নিগ্ধ সূর্যের পরশ মেখে বিদায় নিলাম ৷ পথে পড়ল পঞ্চবটী জলপ্রপাত ৷ এরপর এলাম মরিছিদ্রা সাগর তটে ৷ আন্দামানের প্রতিটি সাগর তট ভিন্ন ধরনের ৷ কোনটার সঙ্গে কোনটার মিল নেই ৷ কোনটায় প্রবল ঢেউ , কোনটায় বড় বড় পাথরের চাই , কোনটা শান্ত রূপালী বালুর চাদর বিছানো ৷ গাইডের নির্দেশ ছাড়া নামা অনুচিত ৷ অনেকক্ষণ এই সাগর তটে কাটালাম ৷ পাথরের  গায়ে আছড়ে পড়ছে ফেনিল জলতরঙ্গ ৷ যতদূর চোখ যায় সমুদ্র  আর আকাশ মিলেমিশে একাকার ৷  চোখ , মন সার্থক করে ডিগলিপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম ৷  


Wednesday, July 25, 2018

যখন তখন-ভ্রমণ-কালাপানির দেশ আন্দামান (পর্ব- ২)-তৃপ্তি মিত্র

কালাপানির দেশ আন্দামান (পর্ব- ২)

তৃপ্তি মিত্র 

সংখ্যা -২৩, (২৬ ই জুলাই , ২০১৮)

  গন্তব্যস্থল  " রস আইল্যান্ড " 


পোর্টব্লেয়ারের আগে এখানেই ছিল ব্রিটিশদের রাজধানী ৷ ১৮৫৮ - ১৯৪১ পর্যন্ত " রসআইল্যান্ড ছিল ব্রিটিশদের অধীনে ৷ তারপর জাপানিরা এর দখল নেয় ৷ এখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে প্রচীন কিছু  ধ্বংসাবশেষ ৷ সেই সময়কার কিছু প্রাচীন ঝুরঝুরে ভেঙ্গে পড়া বাংলো , চুরমার চার্চ , আগাছায় ঢেকে যাওয়া সমাধি ৷ চার্চের সামনে দাঁড়িয়ে অতীতকে হাতড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলাম ৷ একসময় এই চার্চেই বাজত পিয়ানো , অর্গানের সুর , চার্চের ঘন্টা ৷ কি অদ্ভুত এখন সেই পরিত্যক্ত দ্বীপে রাস্তা আছে মানুষ নেই ৷ আর ঠায় দাঁড়িয়ে আছে দৈত্যকার কিছু গাছ , আগাছা আর সারিবদ্ধ নারকেল গাছের দীর্ঘশ্বাস ৷  পুরনো ইতিহাসকে খৌঁজার চেষ্টা করলাম ৷ একজায়গায় এসে পেলাও বোধহয়- সেই সময়কার বিমান ধ্বংসকারী কামান  ৷ আর সমুদ্রের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে লাইটহাউস ৷  মাঝে মাঝে আন্দামানের উজ্জল আকাশের রোদে ঝলসে যাবার উপক্রম ৷ তখন দৈত্যের মত বিশাল বিশাল গাছের নিচে শান্তির আশ্রয় ৷ আর শৌখীন নেশা ধরা সমুদ্র বাতাস তো আছেই আর সে সঙ্গে গলা ভেজাতে ডাবের জল ৷  কয়েকটি হরিণ , ময়ূর , খরগোষ চোখে পড়ল ৷ আরো একটু ভিতরে যেতে নজর পড়ল পোড়ো ভাঙ্গাচোরা ঘর বাড়ি আগাছায় ঢেকে আছে  , ভিতরে ঢুকতে সাহস হল না শুনেছি আন্দামানের সবুজ সাপের ছোবল নাকি সাংঘাতিক ৷ এর একটি ছোবল শরীর অবশ করে দিতে পারে নিমেষের মধ্যে ৷ দশ থেকে বারো ইঞ্চি তেঁতুল বিছে , কাঁকড়া বিছে  ৷ যাইহোক, তাদের কারো সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো না বরং প্রচুর হরিণ আর ময়ূরের সঙ্গে দেখা হল ৷ ওরা মানুষের সঙ্গেই হেঁটে চলে বেড়াছে ৷ বেশ কয়েক ঘন্টা এখানে ছিলাম ৷ সুনামির প্রভাবে বেশ কিছু ক্ষয় ক্ষতি চোখে পড়ল ৷  বর্তমানে এই আইল্যান্ডের নামকরন হয়েছে " লক্ষীবাই আইল্যান্ড " ৷  এখান থেকে চলে গেলাম " নর্থ বে আইল্যান্ড " ৷ যেখানে গ্লাসবোট চড়ে দেখলাম সাগরতলের প্রবাল ও রংবেরং এর মাছ ৷ সারাদিন পর ফিরে এলাম পোর্টব্লেয়ারের আস্তানায়, " নাগরিণ টুরিষ্ট লজ " ৷ নাগরিণ বেশ ছিমছাম ঘরোয়া ৷ নাগরিণের মালিক জেমস জয় এর সুযোগ্য পুত্র সুরজই সব দায়িত্ব সামলাচ্ছে ৷ এখানের সমস্ত কর্মী মহিলা ৷ প্রত্যেকের সঙ্গে কম বেশী ভাব জমিয়ে তুলেছি ৷ একজন এসে আলাপ করে গেলেন , বললেন কোলকাতায় থাকেন ৷ কোথায় থাকেন জানতে চাইলে বললেনং বঁনগায় ৷ মনে মনে একটু হাসলাম ৷ একদল টুরিস্টের সঙ্গে আলাপ হল ৷ কোথা থেকে এসেছেন জানতে চাইলে বললেন কোলকাতা থেকে এসেছেন ৷ কোলকাতার কোথায় জানতে চাইলে বললেন " মেদিনীপুর " আবার ও হাসলাম ৷ এরপর থেকে কারো সঙ্গে আলাপ হলে ভয়ে জানতে চাইতাম না কোথায় থাকেন বা কোথা থেকে এসেছেন ৷  আমাদের পরবর্তী গন্তব্য নির্দিষ্ট হল বারাটাং ৷ যথারিতী আমাদের গাইড কাম ড্রাইভার ভাইয়া ( সুভ্রমন্নিয়ম ) হাজির ৷ খুবই ভালো ছেলে মাদ্রাজি ৷ বাংলা খুব একটা বোঝে না ৷ হিন্দীটা ভালো বলে ৷ আমি ওকে ভাইয়া বলে ডাকতাম ও আমাকে ম্যাডাম ৷ ভাইয়ার নির্দেশ মত রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ রওনা দিলাম , যথাসময়ে পৌঁছে গেলাম "ঝিরকাটাং " চেক পোষ্ট " ৷ মিডল ষ্ট্রেট জেটি ঘাট পর্যন্ত ৪৮ কি.মি রাস্তা জারোয়া রিজার্ভ ফরেষ্ট ৷ এইপথ টুকু সরাসরি পুলিশি প্রহরায় গাড়ীর কনভয় ছুটল ৷ মনে খুব উৎসাহ কখন জারোয়াদের দেখতে পাবো ৷ চালক ভাইয়ার কড়া নির্দেশ কেউ গাড়ী থেকে মুখ বার করবেন না ৷ কোন রকম খাবার দেওয়া চলবে না ৷ ছবি তোলা চলবে না ইত্যাদি ইত্যাদি ৷ গাড়ী খুব হালকা গতিতে চলছিলো ৷ আর সতর্ক দৃষ্টি খুঁজে চলেছে জারোয়াদের ৷ কিছুক্ষন পর সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটল ৷ একটি ট্রাক ভর্তি এক  দঙ্গল জারোয়াদের নিয়ে আমাদের সামনে হাজির ৷ অল্প বিস্তর পোষাক পরা সবাই ৷ আমাদের সঙ্গে হাসি বিনিময় হল ৷ একজন তো হিন্দিতে বললো কোথায় যাচ্ছো ৷ আমরা হাত নেড়ে টাটা কারলাম ৷ ওরাও টাটা করে বিদায় নিল ৷ আমরা যাদের কে দেখলাম আন্দামান সরকারই  টুরিষ্টদের দেখানোর জন্য জারোয়াদের এভাবে নিয়ে আসে ৷ তবে কিছু উগ্র জারোয়া আছে তারা সচারাচর মনুষ্য সমাজে মেশে না ৷ ওরা আরো গভীর জঙ্গলে থাকে ৷ তবে ভাগ্য ভালো থাকলে দর্শন হয়ে যেতে ও পারে ৷ যাইহোক আমরা যে জারোয়াদের দেখলাম তাতেই আপাতত সন্তুষ্ট থাকলাম ৷                       
 -----  চলবে







Tuesday, July 17, 2018

যখন তখন-ভ্রমণ-কালাপানির দেশ আন্দামান (পর্ব- ১)-তৃপ্তি মিত্র


কালাপানির দেশ আন্দামান (পর্ব- ১)

তৃপ্তি মিত্র 

সংখ্যা -২২, (১৮ ই জুলাই ,২০১৮)





ভ্রমণতৃষ্ণাতুর মন আবাল্য আমার আছে । ভ্রমণ বলতে পথ চলতে চলতে এক অমুল্য অনুভূতি । যে অনুভূতি এনে দেয় মনের প্রশান্তি  ৷ প্রতিদিনের ছকে বাঁধা জীবন থেকে বেরিয়ে এসে  মুক্তির পথে যাত্রা ৷
যে যাত্রার শুরু আছে শেষ নেই । আন্দামান সম্পর্কে যেটুকু অনুভূতি আমার মনে ধরা দিয়েছে তারই খানিকটা আমার পাঠক বন্ধুদের উপহার দিলাম । ........ 




Indigo বিমানে যেতে যেতে মেঘ কে খুব কাছ থেকে দেখলাম ৷ কত রকমের মেঘ কালো মেঘ , সাদা মেঘ , ধূসর , নীল , আশমানী আর কত অদ্ভুত সুন্দর রঙের মেঘের সমারহ ৷ সেই মেঘ সমুদ্র পেরিয়ে কখন যে চলে এলাম কালাপানির দেশ আন্দামান বুঝতেই পারলাম না ৷ বিমান সেবিকা যখন ঘোষনা করল আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে গেছি , দৃষ্টিটা একটু বাইরে নিতেই দেখতে পেলাম দিগন্ত বিস্তৃত নীল জলরাশি , অজস্র সবুজ দ্বীপের সমাহার ৷ অফুরান উত্তাল সমুদ্র , গভীর বনাঞ্চল , রূপোলি বালুকাবেলা  যা আন্দামান কে করে তুলেছে আরো মোহময়ী ৷
বঙ্গোপসাগরের উত্তর থেকে দক্ষিণে ৫৭২টি দ্বীপ নিয়ে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ অবস্থিত ৷ আন্দামান শব্দের অর্থ হল হিন্দুদের দেবতা হনুমান ৷ আর নিকোবর শব্দের অর্থ হল উলঙ্গদের বাসভুমি ৷ আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ হল টুইন আইল্যান্ড ৷ এই আইল্যান্ডে ছড়িয়ে আছে বহু ইতিহাস , বিস্ময় ,এবং নানা অভিঙ্গতা ৷ ভু - বিজ্ঞানী থেকে জীব বিজ্ঞানী , ঐতিহাসিক , নৃতত্ববিদ , সাধারণ পর্যটক সবার জন্য রয়েছে কিছু না কিছু রসদ ৷ 
আন্দামানের মোট আয়তন হল ৮২৪৯ বঃ কিমি যার মধ্যে ১৯৬২ বঃ কিমি হল কোষ্টাল লাইন অর্থাৎ পাহাড় , অরন্য আর সমুদ্রে ঘেরা দ্বীপভুমি ৷ 
আন্দামানে এসে প্রথমদিন  পোর্টব্লেয়ারের আশে পাশের দ্রষ্টব্য স্থানগুলি দেখে নিলাম ৷ প্রথম গেলাম অ্যান্থ্রোপলজিকাল মিউজিয়ম ৷ এরপর পোর্টব্লেয়ারের একমাত্র সমুদ্রতট চিডিয়া টাপু বিচে কিছুক্ষণ কাটিয়ে পোর্টব্লেয়ারের আস্তানায় ফিরে আসলাম ৷ 
সন্ধ্যে বেলায় গেলাম সেলুলার জেল দর্শনের উদ্দেশ্যে ৷ ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করা বিপ্লবীদের ওপর ব্রিটিশের নির্মম অত্যাচারের সাক্ষী এই কারাাগার ৷ কারাগারের নকশাটি একটি বৃহৎ তারামাছের মতন সাতটি বাহু বিশিষ্ট ৷ এখন তিনটি অবশিষ্ট ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং ভুমিকম্পে চারটি বাহু ক্ষতিগ্রস্ত ৷ এখন সে সব অংশে সাস্থকেন্দ্র তৈরি হয়েছে ৷ কারাগারের প্রতিটি বাহু তিনতলা বিশিষ্ট ৷ প্রত্যেক তলায় ৬৯৮ টি ছোট ছোট শেল ৷ মুলত বহু বন্দিকে একসঙ্গে আটক করার জন্য এই কারাগার নির্মান করা হয়েছিলো ৷ মুল কেন্দ্রে আছে একটি নজর মিনার যা প্রতিটি বাহুর সঙ্গে যুক্ত ৷ রাজদ্রোহে অভিযুক্ত বিপ্লবীদের দীপান্তর দন্ড দিয়ে পাঠানো হত এই কারাগারে ৷ 
সেলুলার জেলে সন্ধ্যা ৬ টায় শুরু হল লাইট অ্যান্ড সাউন্ড সো ৷ এটি মুলত ভাষ্যপাঠ , শব্দ এবং আলোর ওপর নির্মিত একটি সো ৷ খোলা আকাশের নিচে কোজাগরী চাঁদের পরশ নিতে নিতে চলে গেলাম অনেকটা পিছনে অর্থাৎ ১৮৯০ ৷ সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক কে দিয়ে প্রায় বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করিয়ে ১৯০৬ সালে এই কারাগারের নির্মান কাজ শেষ হয় ৷সেই সময় খরচ হয়েছিলো  ৫,২৭,৩৫২ টাকা ৷  রাজদ্রোহে অভিযুক্ত বিপ্লবীদের দীপান্তর দন্ড দিয়ে পাঠানো হত এই কারাগারে ৷ ভাষ্যকার বলতে লাগলেন সেইসব আত্মবলিদানের মর্মগাথা ৷ এত যাবৎ ইতিহাসের পাতায় পড়েছি বা বিভিন্ন চলচিত্রে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জীবনগাথা অনুধাবন করেছি কিন্তু এই ভাবে সেই ঐতিহাসিক স্থানে বসে সত্য কে জানা এ আমার পরম পাওয়া ৷ 
ভাষ্যকার একে একে বিপ্লবীদের নামগুলি বলতে লাগলেন ৷ উপেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায় , হেমচন্দ্র দাস , বিভুতি সরকার ,বারিন ঘোষ , অনন্ত সিং , অম্বিকা চক্রবর্তী প্রমুখোদের নাম ৷ এবার কানে এলো বুটের খট্খট্ শব্দ আর ব্রিটিসদের আঁধো আঁধো বাংলায় কথোপকথন ৷ গাঁয়ে কাঁটা দিয়ে উঠল ৷  ব্রিটিসদের নির্মম অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে  কত যে বিপ্লবী শহিদ হয়েছেন , ভাষ্যকারের কাছে সে কাহিনী শুনতে শুনতে মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে গেল ৷
বিনায়ক দমোদর সাভাকারের কক্ষের আলো জলে উঠলো ৷ তার ই ঠিক নীচে তিনটি কক্ষ আলাদা রাখা ৷ এখানে রাখা হত ফাঁসির সাজা প্রাপ্ত আসামীদের ৷ এরই পাশে ফাঁসির ঘর যেখানে একসঙ্গে তিনজন কে ফাঁসি দেওয়া হত ৷ ফাঁসি দেবার সময় নজর মিনারে বেজে উঠতো বিশাল এক ঘন্টি , যা বহু দূরের মানুষকে সতর্ক করে দিত ৷ রাজদ্রোহিতা করা অপরাধ , এবং তার শাস্তি মৃত্যু ৷ 
অনুভব করার চেষ্টা করতে লাগলাম বিপ্লবীদের আত্মবলিদানের মর্মগাথা ৷ কখন যে চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ল বুঝতে পারলাম না ৷ সব শেষে " বন্দে মা তরম " ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠল কারাগার প্রাঙ্গন ৷ জ্বলে উঠল সমস্ত কক্ষের আলো ৷ তখন মনটা প্রশান্তিতে ভরে উঠল ৷ 
                                       — চলবে

ছবিঃ লেখিকা







Wednesday, July 11, 2018

যখন তখন-ছড়া -বাংলার মিষ্টিমুখ -অভীক দে সরকার


বাংলার মিষ্টিমুখ

অভীক দে সরকার


সংখ্যা -২১, (১২ই জুন,২০১৮)





কলকাতার রসগোল্লা, বর্ধমানের সীতাভোগ, 
সাথে আছে মিহিদানা, কমলা আর রাজভোগ।। 
জলভরা তালশাঁস যদি চাও খেতে, 
নরম কড়া সবই পাবে, হবে বাংলায় যেতে।। 
সন্দেশ পাবে তুমি হাজারো স্বাদে, 
মিল্ক কেক, কালাকাঁদ পাবে শেষ পাতে।। 
সরভাজা ভাল লাগে?  নাকি সরপুরিয়া?? 
রসালো বোঁদে চাই না ক্ষীরের গুজিয়া।। 
রসমালাই খুব প্রিয়? না মালাই চমচম?? 
একটায় কী হবে?  একডজন কম সে কম।। 
খেতে চাও গজা বা লবংগ লতিকা? 
লেডিকেনি পেতে হলে ঘুরে যাও ঝটিকা।। 
শেষ পাতে চাই নাকি একটু মিষ্টি দই ?
আর কোথাও পাবেনা যতই খোঁজো নেট আর বই ।।
আরও সব আছে কত বাহারি নামের, 
বেশী লোভ দিওনা রুগী যারা সুগারের।।
















যখন তখন-ছড়া -গর্বিত বাঙালী-অভীক দে সরকার


গর্বিত বাঙালী

অভীক দে সরকার


সংখ্যা,২০ (১১ ই জুলাই,২০১৮)


বাংলা বড়ই গর্বের জায়গা,  মোর মাতৃভাষা 
ফেসবুকেতে কাব্য করি লাগে খুবই খাসা।। 
কবি দলের সদস্য হয়ে বুকটা গর্বে ফোলে, 
দলের সংখ্যা যখন বাড়ে, পা পড়েনা ধরাতলে।। 
কাব্যের ভাষা যদিও কঠিন, মাথার উপর দিয়ে যায়, 
আরে সবাই যদি বুঝে ফেলে তাহলে মান রাখাই তো দায়!! 
সুর, তাল, ছন্দ খোঁজার চেষ্টা কোরো না ভাই ,
আরে আমারটা আধুনিক  ! রবি ঠাকুরের পদ্য নাকি ছাই ??
আমার ফেসবুকের ভক্ত সংখ্যা আশাকরি জানা আছে নিশ্চয় !
"ভালো, দারুণ " ওসব তো সস্তার শব্দ, ওদের তারিফ ও কাব্যময়।। 
আমার বড় গর্বের জায়গা, প্রবাসী বাঙালী মোরা, 
বাংলা ভাষাটা বাঁচাবে কে?  এই আমাকে ছাড়া  !!
বাংলা থেকে দূরে আছি মাইল হাজার দুয়েক, 
ছেলেটা মাম্মা- পাপা বলে, বাবা-মা ওসব তো ফেক্ ।।
বাড়ীতে বাংলার নেই চল, হিন্দি- ইংরেজী ই ভরসা, 
ছেলেটাকে মানুষ করতে হবে তো, অজুহাত তৈরী খাসা  ।।
ছেলেটা আমার বাংলা বলেনা, বোঝে একটু-আধটু, 
সোসাইটিতে টিকে থাকতে হলে স্যাক্রিফাইস ও করতে হবে বৈকি একটু   ।।
বাংলা ভাষা বাঁচাতে হবে?  দায়িত্ব নিয়েছি তো আমি  !!
ছেলেটাকেও বাংলা শেখাতেই হবে??  না না  ওসব তোমাদের ন্যাকামি ।।
বিয়ে বাড়ি আর যাওয়া হয়না, তবে ম্যারেজ পার্টিতে যাই, 
জামদানি-তসর ভুলে যাও, এখন লেহংগা-চোলি চাই  ।।
আইবুড়ো ভাত বড্ড সেকেলে, মেহেন্দী-মহিলা সংগীত তো আছে  !
তোমরা বড্ড স্মৃতি কাতর, নাক সিঁটকোও মিছে  ।।
মন্দিরে যে বড্ড ভীড়, শিবরাত্রি না করলে কি হয় ?
আমরা বাপু "করবা-চৌথ" করি, কারণ ওটা বাড়ীর ছাদে ও হয়  !!
কালী পুজো "ও-বাবা" ! সে তো রাত বারোটায় হয়, 
দিওয়ালি মানা‌লে ক্ষতিটা কী? ও তে ড্রাইফ্রুটস্ ও পাওয়া যায়  ।।
দোল পূর্ণিমায় সত্য-নারায়ণ পুজো ! তোমাদের নেই বুঝি কোন কাজ  ?
আরে দারু পিও, হোলি মানাও, ভোলো সব লাজ  ।।
মকর সংক্রান্তি বড়ই ন্যাকা-ন্যাকা, আবার পিঠে-পুলি বানাও  !
তার চেয়ে বরং ফ্যামিলি নিয়ে লং ড্রাইভে যাও  ।।
ভান্ডারে যদিও আছে অনেক, তবুও এবার আমি থামি, 
বাংলা আছে মনের মধ্যে, তবু হাসেন অন্তর্যামী  !!








Monday, July 9, 2018

যখন তখন-ধারাবাহিক -দন্ত্যস্থ (পঞ্চম পর্ব)-স্বরূপ চক্রবর্তী

দন্ত্যস্থ


(পঞ্চম পর্ব তথা অন্তিম পর্ব)

স্বরূপ চক্রবর্তী


সংখ্যা,১৯ (৯ ই জুলাই,২০১৮)


(১৩)


রাত প্রায় এগারোটা,  আজ হলধর বাবুর মনটা বড় চঞ্চলসেই ছেলেটি কোথায় যে গেলআহাবেশ পরিবারটিঠিক যেন শিব দুর্গার পরিবারআজ দোকানের কাজের ভিড়ে ওদের আর খোঁজ করা গেলো নাকালকে একবার লোক পাঠিয়ে দেখব 'খন।

যদি ধানাই পানাই আর একবার আসততা হলে জানা যেত।

 আজকে উনি ঘরের ভেতরেই বসে ছিলেনমাঝারি সাইজের ঘরবড়সড় একটি জানালাএকটি দরজা অন্তঃপুরের দিকে খোলেআর তার উল্টো দিকে বাইরের দরজাযেটা বাইরের দাওয়াতে খোলেএকটি একজনের শোওয়ার উপযুক্ত খাটঘরের মাঝে একটি মার্বেল টপ টেবিলে পুজোর অর্থাৎ গাঁজার সাজ সরঞ্জাম সব সাজানোকিন্তু বেশ বোঝা যায় যে ও বস্তুর ব্যবহার এখনো হয়নি।

তাওরা এলোএসে জানালা দিয়ে উঁকি মারতে লাগলওদের দেখতে পেয়েই হলধর গিয়ে সদর দরজা খুলে ওদের সাদরে আপ্যায়ন করলেন-

এসো এসো ভায়ারাকোথায় ছিলে তোমরা? তোমাদের মা ঠাকুরণ আর ছেলে দুটি ঠিক ঠাক বাড়ি পৌঁছেছেন তোছোট ছেলেটি কোথায় যে ঘুরতে চলে গেলমা ঠাকুরণও দোকান থেকে কিছুই নিয়ে গেলেন না"।

“রোসোরোসোসব বলছি"হাত তুলে হলধর কে থামাল,"এখন আমরা তোমাকে যা বলতে চলেছিতার কথা যেন কেউ ঘুণাক্ষরেও জানতে না পারেকথা দাও"।

“দিলামবললেন হলধর"।

"তুমি জান আজ যাঁরা তোমার দোকানে এসেছিলেন তাঁরা কে?"

"কেনোতোমরাই তো বললে যে ওনারা হেতাল গঞ্জের জমিদার পরিবারআহাকি সুন্দরঠিক যেন শিব ঠাকুরের সংসার"।

একদম ঠিকওঁরা তাঁরই পরিবার"গম্ভীর গলায় বলল নন্দী।

হা হা করে হেসে উঠলেন হলধর, "অর্থাৎ তোমারা ধানাই পানাই নও নন্দী ভৃঙ্গী"।

"একদম ঠিক!” বলল ওরা।

"এই; এটা কিন্তু বেশী হয়ে যাচ্ছেএই দেখ, আমি কিন্তু এখনো পুজোয় বসিনি"অবিশ্বাস জলধরের গলায়, “কি, কি  প্রমান আছেদেখি!"

"প্রমান?, হুমমআমরা তোমাকে সশরীরে দর্শন দিতে পারব নাতবে..., ," বলে এদিক ওদিকে দেখে পানাই বলল, " ওই লোহার আলমারিতে একটি লাল শালুতে মোড়া বাক্স আছে ঠিক?, যেটা  হরিপদ সরখেল আজ সন্ধ্যায় তোমার কাছে গচ্ছিত রেখে গেছে।

হলধর ভাবলেন ঠিকই তোআজ সন্ধ্যায় হরিপদ দারোগা এসেছিলমাঝে মাঝেই আসেএকটু অন্ধকার হলেআড্ডা দেয়চা খায়আর মুখ বাঁধা থলেবা বাক্স বন্দী কিছু গচ্ছিত রেখে যায়বলেথানার দস্তাবেজআপনি মান্যগণ্য মানুষতাই একটু সামলে রাখুনআবার পরে এসে নিয়েও যায়। হরিপদর সামনেই সেগুলি উনি লোহার আলমারী তে তুলে রাখেন আর দারোগা চাইলে ফেরৎ দিয়ে দেনঅন্যের ব্যাপারে উনি বেশি নাক গলান নাকিন্তু এসব তো এদের জানার কথা নয়কিন্তু তবু সন্দেহ তো যায় নাতাই বলেন ,"এতে কি প্রমান হয়না যে তোমরা চোরআড়ি পেতে আমার বৈঠক খানার ব্যাপার স্যাপার দেখেছ?"

"কি! আমরা চোর! যতবড় মুখনয় তত বড় চোপা!" ধমকে ওঠে ভৃঙ্গী।

ওকে শান্ত করে নন্দী বলে, "আচ্ছাআমরা না হয় উঁকি মেরেছিকিন্তু ওই পোঁটলায় কি আছে তা কি তুমি জান?"

"আমি পরের জিনিস বিনা অনুমতিতে ছুঁই না"

"ঠিক আছেআমরা বলছিওতে কোনো সরকারী জিনিস নেইআছে এক গোছা টাকাআর সোনার গয়না।"

হলধর দরজা বন্ধ করে ট্যাঁক থেকে চাবি নিয়ে আলমারি ও বাক্স টি খুলে দেখে চোখ কপালে তুলে ফেললেন। টাকা ও একজোড়া বড় সাইজের ঝুমকো কানের দুল আছে বটে।

"ওই টাকা আর গয়না হল ঘুষের জিনিসআর ওটা ও নিয়েছে বড় সায়েব কে দিয়ে নিজের প্রমোশন নেবার জন্য"।

হলধর বাবুর চোখে অবিশ্বাস দেখে ওর বলল "তবে দেখো,"

ওদের দেখে চোখ উল্টে হলধর মূর্ছা গেলেনকারন আর কিছুই নয়ওরা দুজন জমি থেকে প্রায় ছয় ইঞ্চি ওপরে ভেসে রয়েছে







(১৪)


চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিয়ে হলধরের  জ্ঞান ফেরানো হোল, সব কিছু বোঝানোর পর হলধর কে উড়িয়ে নিয়ে ওরা থানায় পৌঁছে গেল।

থানায় গিয়ে হলধর নাইট ডিউটির হাবিলদার কে দিয়ে দারোগা কে ডেকে পাঠালেন।

 হলধর মানী লোক, ভবিষ্যতের প্রধান, দারোগা পাশের কোয়ার্টার থেকে চোখ 
কচলাতে কচলাতে থানায় এসে হলধর কে দেখে বসতে বলল।

 নন্দীরা অদৃশ্য অবস্থায় রয়েছে।

"বলুন স্যার, আপনি এত রাতে! কি ব্যাপার?"

হরিপদ সোজাসুজি লক আপের কাছে গিয়ে বললেন,"সরখেল, ওই ছেলেটিকে এক্ষুনি ছেড়ে দাও, ও নির্দোষ, আর তুমি জান যে ও কে? উনি সাক্ষাৎ শিব পুত্র 'গণেশ'"

সরখেল চোখ গুলি গোল্লা পাকিয়ে হলধরের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে বলল, " লোকে বলে আমি ঘুষ খাই, কিন্তু অতি বড় নিন্দুকেও বলবে না, যে, আমি গাঁজা খাই, এত রাতে সময় না নষ্ট করে কাল সকালে একবার আসুন, ঠান্ডা মাথায় কথা বলা যাবে এখন"।

সরখেল তাকে গাঁজা খাওয়ার খোঁটা দিচ্ছে দেখে জ্বলে উঠলেন হলধর পাঁজা

"সরখেল!" হুঙ্কার দিলেন হলধর।

"তোমার সমস্ত কালো কারবার আমি জানি, আমার কাছে অকাট্য প্রমান আছে,

ওঁকে ভালোয় ভালোয় ছাড়ো, না হলে সদরে রিপোর্ট যাবে, তাতে ফল ভালো হবেনা।
তখন তোমার ট্রান্সফার হবে সুন্দরবনের একেবারে ভেতরে, ওখানে তুমি ঘুষ খাবেনা, বাঘেরা তোমায় চিবিয়ে খাবে।"

সরখেলও হার মানার পাত্র নয়, " ও যদি দেবতা হবে তাহলে দৈব শক্তির সাহায্যে নিজেই বেরিয়ে আসুক।"

"তোমার পাপ চোখে ওঁদের দৈব শক্তি দেখা সম্ভব নয়","তবে...প্রমান চাও

আচ্ছা..", “তোমার একটি পুরোনো কোমরের ব্যাথা আছে না?"

"আছেই তো, উঁ হুঁ হুঁ, সোজা হয়ে বসতেও পারিনা", সরখেল ডুকরে উঠল।

ওই গরাদ ধরে এদিকে পেছন ফিরে একবার দাঁড়াও তো।"

মজা দেখতে সরখেল তাই করল।

"এইবার। বাবারা, আপনারা আছেন তো? যেমন কথা হয়ে ছিল.."


দুইজোড়া অদৃশ্য পায়ের ভীষণ জোরালো লাথি এসে পড়ল সরখেলের পশ্চাদ দেশে, একটা ভীষণ মট করে শব্দ হল আর সরখেল মুখ থুবড়ে পপাত চ।

হতবাক সরখেল বলল, " কে ? কে?"

"সে কথা ছাড়ো,” হলধর আর হাবিলদার মিলে সরখেল কে টেনে তুললেন।

বল, তোমার, কোমরের ব্যাথা আছে না গেছে?"

অদৃশ্য লাথি খেয়ে আর সদরে ঘুষের রিপোর্ট হবার শাসানিতে কাজ হল, সরখেল তালা খুলে দিয়ে বলল, বাবা গণেশ, আমরা পাপী তাপী মানুষ, মর্ত্যে এসেছেন ঠিক আছে, কিন্তু পরের বার দয়া করে এদিক পানে আসবেন না, আর আসলেও অমুল্য দাঁতগুলো বাড়ীতেই খুলে রেখে আসবেন, না হলে আমাদের মত গরীবদের বাঁচা দায় হবে।
(১৫)

ভোর হয়ে আসছে, মৃদু মন্দ শীতল হাওয়া ভেসে আসছে সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে।

থানার বাইরে এসে হলধর হাতজোড় করে গণেশ কে বললেন," বাবা, এত দূর যখন এসেছেন, তখন দুটি দিন আমার বাড়িতে অতিথি হয়ে আসুন, আমি আপনার পরিচয় কাউকে দেবোনা।"

স্মিত হেসে গণেশ বলল, " কথা দিচ্ছি, আসছে পয়লা বৈশাখ হাল খাতার দিনে তোমার কাপড়ের দোকানে আমি নিজে এসে তোমার পূজো গ্রহণ করব"।

এই বলে গণেশ, নন্দী-ভৃঙ্গী ধীরে ধীরে বাতাসে মিলিয়ে গেল।

আর গণেশের ইঁদুর? সে এক অন্য গল্প , তোমাদের শোনাবো অন্য কোন সময়।।


Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান