অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Showing posts with label 21st Edition. Show all posts
Showing posts with label 21st Edition. Show all posts

Friday, February 28, 2020

অণুগল্প-আত্মবিশ্বাস-জ্যোতিকা পোদ্দার


আত্মবিশ্বাস

জ্যোতিকা পোদ্দার

Vector Courtesy: Internet


আজ বুবুনের ক্লাস টেস্টের রেজাল্ট বের হয়েছে। বুবুন অংকে পঞ্চাশে বারো পেয়েছে। অন্যান্য সাবজেক্টগুলো তে ও বেশ খারাপ ফল করেছে। বুবুনের টেস্টের রেজাল্ট দেখে মিতালী রণচণ্ডী মূর্তিতে ছেলেকে বকতে শুরু করলো। বলতে লাগলো "সপ্তম শ্রেণীতেই তোকে এতো টিউশন দিয়েছি যাতে, ভবিষ্যতে রেজাল্ট ভালো হয়। এখন থেকে তুই ও যাতে বুঝতে পারিস যে, ভবিষ্যতে খুব ভালো রেজাল্ট করতে হবে। তুই যাতে আপ-টু-ডেট থাকিস সেই জন্য সবথেকে ভালো কোচিং ক্লাস গুলোতে তোকে আমি ভর্তি করে দিয়েছি। কতবার তোকে বলেছি তোকে এক নম্বর হতেই হবে। আর তার জন্য যত টিউশন লাগে, যত টাকা লাগে, ততো দেবো। তোর বাবা আর আমি উদয়াস্ত পরিশ্রম করি কার জন্য?  শুধু তোর ভালোর জন্য। এই যে তোকে সাঁতার, ড্রয়িং, ক্যারাটে ,কম্পিউটার, ক্রিকেট কোচিং সবকিছুতেই ভর্তি করে দিয়েছি; সে তো শুধুমাত্র তোর ভবিষ্যৎ যাতে ভালো হয় তার জন্য। তোকে সবার মধ্যে বেস্ট দেখতে চাই আমরা। কিন্তু তোর তো কোনো উন্নতি ই হচ্ছে না, শুধু অবনতি হচ্ছে দেখছি"। একনাগাড়ে বলেই চলে মিতালী।
মায়ের কথা শুনে ভয়ে থরথর করে কাঁপতে থাকলো বুবুন। বলতেই পারল না যে, তার এত টিউশনি, এত ক্রিকেট কোচিং, ক্যারাটে ক্লাস ভালো লাগে না।

সে চায় বিকালে একটু বন্ধুদের সঙ্গে মাঠে ফুটবল খেলতে, ওদের সঙ্গে একটু গল্প করতে। কিন্তু বিকালে তো কোনো সময়ই নেই। স্কুল থেকে এসেই হয় কোনদিন ক্যারাটে ক্লাস, নয় কোনদিন ক্রিকেট কোচিং, অথবা কম্পিউটার ক্লাসে ছোটা। বাড়ি এসেই পড়তে বসা।

রাত্রিবেলা দাদু ঠাকুমার সাথে ঘুমাতে ভালো লাগে। ভালো লাগে ঠাকুমার মুখে রূপকথার গল্প শুনত।  দাদু ও তো কত সুন্দর সুন্দর দেশবিদেশের গল্প বলেন। কত ধরনের অজানা কথা দাদুর কাছ থেকে জানা যায়। কিন্তু মা মোটেও ঠাম্মা দাদুর সঙ্গে তাকে থাকতে দেয় না। শুধু বলে" ওইসব পুরনো বস্তা পচা রূপকথার গল্প শুনে কোন লাভ হবে না। তুই বরং অনলাইনে স্পোকেন ইংলিশ ক্লাস টা  শুরু কর।
এত নিয়মের মধ্যে থেকে হাঁপিয়ে ওঠেছে বুবুন। ভীষণ ভীষণ চাপ। মনে হয় সে একদিন চাপেই মরে যাবে।
বাড়ির পরিবেশ খুব থমথমে। বাবা অফিস থেকে ফিরলে আরেকপ্রস্থ বুবুনকে বকা শুরু হলো। রেজাল্ট দেখে বাবা বললেন" ছি! ছি !বুবুন! এত বাজে হয়ে গেছো তুমি পড়াশুনায়? আমার তো তোমার রেজাল্টে সাইন করতে ও ইচ্ছা করছে না । আমার ছেলে হয়ে তোমার এই কি অবস্থা"!
তারপর বাবা মা মিলে যুক্তি করল যে, বুবুনকে অংকে উন্নতির জন্য অ্যাবাকাস এ ভর্তি করা হবে। আর অন্যান্য বিষয় গুলি এবং তার সাথে অংকে যাতে আরো ও ভালো হয়, তার জন্য শহরের বিখ্যাত কোচিং সেন্টারে ভর্তি করে দেওয়া হবে। এতে বুবুনের উন্নতি হবেই।

এমনিতেই বুবুনের সপ্তাহে পাঁচ দিন অন্যান্য টিউশন গুলি থাকে, তার সঙ্গে আবার এই দুটো টিউশন যুক্ত হলে, তার অবস্থা খুব খারাপ হবে ,সে বুঝতে পারল। বুবুন কিছুতেই আর নতুন  টিউশনে যেতে রাজি হলো না। মিতালী রেগে ছেলেকে অবাধ্য বলে ,একটা চড় মারতে
গেল। বুবুন ভয়েআতঙ্কে কাঁদতে শুরু করল। ঠাম্মা এসে বুবুনকে  কোলে টেনে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল।

দাদু এতক্ষণ একটা কথাও বলেননি, এইবার তিনি বুবুনের বাবা অর্থাৎ নিজের ছেলে সমরেশ কে বললেন " তুমি ছোটবেলায় কটা কোচিং সেন্টারে পড়েছো? তোমার জন্য আমি কোন ক্রিকেট ,ক্যারাটে কোচিং এর ব্যবস্থা করেছিলামকিছুই তো করিনি। স্কুলে যেতে ,বাড়ি ফিরে এসে মাঠে খেলতে চলে যেতে। সন্ধ্যা বেলা হয়তো আমার কাছে একটু পড়তে। বাদবাকি তো একাই করেছো। তবে ক্লাস নাইনে ওঠার পর তোমার জন্য একজন শিক্ষক রেখে দিয়েছিলাম ।কিন্তু তাতেও তোমার খেলাধুলায় কোন ছেদ পড়েনি। কোনদিনও চাইনি তুমি নাম্বার ওয়ান হও ।শুধু চেয়েছিলাম তুমি প্রকৃত মানুষ হওযেন সব সময় আত্মবিশ্বাসে ভরপুর থাকো। আমাদের বৌমা ও তো কোন কিছুতে কম নয়। সেও পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করছে‌ ।কখনো তো শুনিনি বৌমাকে ও পড়াশুনার জন্য তার বাড়িতে অত্যাধিক চাপ দিত। বরং গান ভালবাসত বলে ,তাকে গান গাওয়ার জন্য পড়াশোনার থেকে অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছিল। তাহলে তোমরা বুবুনকে এত চাপ দিচ্ছো কেন ? ওর শৈশবের আনন্দটাকে এইভাবে নষ্ট করছো কেন"?

মিতালী তড়বড় করে বলে উঠলো  "কিন্তু বাবা তখনকার সময় আর এখনকার সময়ের মধ্যে অনেক তফাৎ এখন একটু খানি পড়াশুনায় ঢিলা দিলে একদম পিছিয়ে পড়তে হবে তাইতো বুবুনকে এত চাপ দিয়ে পড়াশোনা করতে বলি"।

বুবুনের দাদু এবার বললেন "তোমাদের এই অত্যাধিক প্রত্যাশা এবং নাম্বার ওয়ান হওয়ার চাপ দেওয়ার ফলে বুবুনের কি অবস্থা হয়েছে, দেখেছো! প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ের কবলে পড়ে বুবুনের আত্মবিশ্বাস একদম তলানিতে এসে ঠেকেছে। আর যতক্ষণ নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে না পাবে ,ততক্ষণ হাজার টিচার দিলেও উন্নতি সম্ভব হবে না। বকে বা টিচার দিয়ে নয় আমাদের ওকে ভালোবেসে ,ওকে সময় দিয়ে ওর হৃত আত্মবিশ্বাস ফেরাতে হবে।কিছু মনে করো না বৌমা, একগাদা টিচার তুমি দিয়েছো ঠিকই, কিন্তু তুমি  বলো তো তুমি নিজে কতটুকু সময়কে বুবুন কে দাও? কতটুকু সময় তুমি ওর সঙ্গে কাটাও। যেটুকু থাকো শুধু এটা পড়,ওটা আরও ভালো করতে হবে বলো।

সমরেশ তুমিও কিন্তু অফিসের কাজে এত ব্যস্ত থাকো যে , বুবুনের সঙ্গে কথা বলার পর্যন্ত সময় পাওনা। এইভাবে কি শুধু টাকা পয়সা খরচা করে টিচার দিয়ে ছেলে মানুষ করা যায়? বুবুন তার নিজের সুবিধা অসুবিধার কথা তোমাদের জানাবে না তো কাকে জানাবে

আমি বলি কি অত টিচারের দরকার নেই। যেটুকু না হলেই নয়,সে টুকু থাক আর বাদবাকিটা বাড়িতে আমরা ওকে দেখি ।ওকে সময় দিয়ে, ভালোবেসে ধীরে ধীরে আগে ওর আত্মবিশ্বাসকে ফিরিয়ে আনি। শৈশব ই তো আত্মগঠন এর প্রকৃত সময়। বকাঝকা না করে আগে ওর অসুবিধা গুলি আমরা জানি, তারপর সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।প্রথমেই হয়তো ভালো রেজাল্ট হবে না ।তবু এখন তো ওর সপ্তম শ্রেণি... হাতে কিছুটা সময় আছে। দেখি না এই বছরটা ...তারপর না হয় অষ্টম শ্রেণীতে দেখা যাবে..."!

মিতালি সমরেশ অনিচ্ছাসত্ত্বেও দাদুর কথায় রাজি হয়ে গেল কিন্তু ষাম্মাসিক পরীক্ষা পর্যন্ত । ঠিক হলো এখনই নতুন টিচার নয়। দাদু এবং বাবা মার কাছেই বুবুন অংক এবং অন্যান্য বিষয়গুলির পড়বে। কিন্তু দাদু একটাই শর্ত দিলেন যে ,বুবুনকে একদম বকা চলবে না। ওকে কোনোপ্রকার চাপ দেয়া যাবে না। না বুঝতে পারলে একবারের জায়গায় বারবার বোঝাতে হবে ।কিন্তু নিজেদের রাগলে চলবে না।

এরপর সমরেশ মিতালী এবং বুবুনের দাদু তাদের নিজেদের মতো করে বুবুনের খেয়াল রাখতে লাগলেন। শুধু পড়াশোনা নয়, রীতিমতো খেলাধুলাও করতেন ‌।বাড়ির থমথমে পরিবেশ অনেক বদলে গেল। হাসিখুশি বুবুনকে দেখে মিতালী -সমরেশের ও বেশ ভালো লাগলো। কিছুদিনের মধ্যেই মিতালী দেখল বুবুনের মধ্যে আর সেই আতঙ্ক ,ভয় ,উদ্বেগটা নেই ।ছেলেটা বেশ হাসিখুশি পড়াশোনা করছে। তাদের দেখলেও অত ভয় পাচ্ছে না। বরং না বুঝতে পারলে, এসে বুঝে যাচ্ছে। ছেলের পরিবর্তন দেখে মনে মনে খুশি হয় মিতালী।

ষান্মাসিক পরীক্ষার রেজাল্ট বেরিয়েছে। বুবুন অংকে একশোতে পঁয়ষট্টি পেয়েছে। অন্যান্য বিষয় গুলিতেও বেশ ভালো নম্বর পেয়েছে। রেজাল্ট হাতে ছুটতে ছুটতে এসে মিতালি কে জড়িয়ে ধরে বললো "মা দেখো ! এবার আমার রেজাল্ট কিন্তু বেশ ভালো হয়েছে। তবে তুমি দেখে নিও, বার্ষিক পরীক্ষা তে আমি আরো ভালো রেজাল্ট করব। অংক তে একশো তে একশো পাব...ই"।

ছেলের চোখেমুখে আত্মবিশ্বাসের ঝলক। ছেলের আত্মবিশ্বাসী মুখ দেখে মনে হয় ছেলে পারবে।
বুবুনের দাদু এগিয়ে এসে নাতির মাথায় হাত দিয়ে বললেন আমি তো আগেই বলেছিলাম"আমরা পরিবারের লোকজন বুবুনের অসুবিধাটা যতটা বুঝবো, বাইরের লোক সেটা বুঝবে না। বুবুনকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলা আমাদের দায়িত্ব। কারণ আত্মবিশ্বাস পূর্ণ শৈশব ই দেবে সফলতা পূর্ণ ভবিষ্যৎ"।।



| Aleekpatamagazine.blogspot.in |
  | Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
|ALEEK PATA-The Expressive World |Online Magazine |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |
| Winter Issue,2010 | January 2020 |
| Third Year Fourth Issue |21st Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |
 Back To Index  - সূচিপত্র















কবিতা-শীতল-দেবশ্রী চক্রবর্তী



শীতল

 দেবশ্রী চক্রবর্তী
Image Courtesy: Google Images



কত পাতা ঝরে যায়,
কত কথা রয়ে যায়,
এখনও তো কিছু পথ  বাকি।
লড়তেই এসেছি –
লড়াই টাই শেষ কথা
চলবেনা তাই কোনও ফাঁকি।

খোলা মাঠ, সারি বন
জানালার জালি ধরে...
উচাটন তাই মন,
যা,  উড়ে যা - উড়ে আয়
স্বাধীন আমার  মন।
কার ভয়? কেন ভয়?
কেন মন বন্দী?
নারী,  তাই বুঝি?
একবার খিল তোল দুয়ারে
নিজেকে বন্দী করে
মিছে শ্বাস নিয়ে বল
আঃ আজ আমি সুখের পাহাড়ে।

কত পাতা ঝরে যায়,
উড়ে যায় , পুড়ে যায়,
তবু কিছু ছাড়েনা কো আশ,
ফ্যাকাশে শরীর, তবু বলে-
শোন! একদিন ঠিক নেব শ্বাস।
পাহাড়ের চূড়া থেকে
পাখা দুটো মেলে দেব,
যেখানে যখন খুশি উড়ে যাব।
দূরে যাব, বেঁচে রব।
হেরে গেলে কি বা পাবি?
পড়ে থাকা শুধু কিছু দুখ
চোখ তুলে দেখ দেখি
মন আমার...
লড়াইতে আছে সব সুখ

লড়াইতে আছে সব সুখ...



| Aleekpatamagazine.blogspot.in |
  | Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
|ALEEK PATA-The Expressive World |Online Magazine |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |
| Winter Issue,2010 | January 2020 |
| Third Year Fourth Issue |21st Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |



 Back To Index  - সূচিপত্র

















গল্প-আশ্রয় - মৌসুমী চৌধুরী


আশ্রয়

মৌসুমী চৌধুরী

Image Courtesy: Google Image Gellary



    ব্রান্ডেড জামা, কুর্তি, লেগিংস, গরম চাদর, শীতের পোষাক ইত্যাদির সেক্টরে ডিউটি প্রিয়ার। ডিউটি আট ঘন্টার। সকাল দশটা থেকে সন্ধ্যে ছ'টা। অভিজাত শপিং মল। এখানে এক কাপ কফির দাম দেড়শ টাকা।
..."এখানে সকাল থেকে রাত টাকা ওড়ে। শুধু লুফে নিতে জানতে হয়, বুঝলি?" বেশ অভিজ্ঞ গলায় বলে টগর।
         টগরকে ধরেই এখানে চাকরিটা হয়েছে প্রিয়ার। যাদবপুর রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকা জুড়ে যে ঘিঞ্জি বস্তিটা, সেখানেই থাকে প্রিয়া আর টগর দু'জনেই। ফিবছর সেখানে ডেঙ্গুজ্বরে কেউ না কেউ প্রাণ হারায়। এ বছর পুজোর পরেই দু'দিনের জ্বরে বাবা তাদের ছেড়ে চলে যেতে এই বস্ত্র বিপণিটির সেলস্ গার্লের  কাজে নামতে হয়েছে প্রিয়াকে।

       ইন্টারভিউ নেবার দিন কোম্পানির নাদুস নুদুস চেহারার ম্যানেজারবাবু প্রিয়ার মাধ্যমিক
পাশের সার্টিফিকেটটা দেখতে দেখতে বলেছিলেন,
..." পেটে যখন একটু বিদ্যে আছে আর চেহারায় চটকদারিত্ব আছে তখন তোমার বন্ধু এ লাইনে উন্নতি করবে দেখে নিও, টগর।"
তারপর টগরের দিকে তাকিয়ে চোখ মটকে হেসে বলেছিল,
..." অমন সুন্দর চাবুক ফিগার। যে একবার দেখবে সেই আটকে যাবে। তারপর তো হু হু করে বিক্রি। তুম ভি খুশ, কোম্পানি ভি খুশ।"
কথাটা গুনে গা জ্বলে গিয়েছিল প্রিয়ার। কিন্তু কিছু বলে নি। পেট যে বড় বালাই।
     
    দু'দিন কাজ করেই প্রিয়া বুঝল মুখচোরা হলে চলবে না এ লাইনে। সেলস্ বাড়াতে হবে। কাস্টমারকে বোঝাতে প্রচুর  কথা খরচ করতে হবে। টার্গেট পূরণের ওপরই নির্ভর করছে তার চাকরির ভবিষ্যৎ।
      মলের ভেতর ফুডকোর্টও আছে। সেখানে কত্ত রকমারি সুস্বাদু খাবার। প্রিয়ারা সেগুলো
খেতে পারে না। দাম তাদের আকাশ ছো্ঁয়া। মাঝে মাঝে শুধু লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখে। ফুডকোর্টে কাজ করে সনাতনদা। খুব খেয়াল রাখে প্রিয়ার। ওদের তো খাবার ফ্রি। সনাতনদাই মাঝে মধ্যে বার্গার, পিৎজা ইত্যাদি টেস্ট করায় প্রিয়াকে।
     এক সপ্তাহ কাজ করার পরে একদিন হঠাৎ টগর তার কাউন্টারে এসে হাতে একটা প্যাকেট ধরিয়ে চোখ টিপে ইশারা করে বলে,
"এই ড্রেসটা পরে নিবি। আজ ম্যানেজার বাবুর ঘরে তোর ওভারটাইম। বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দে ফিরতে রাত হবে। উনিই গাড়ি করে বাড়িতে নামিয়ে আসবেন তোকে।"
হাতের প্যাকেটটা ছুঁড়ে ফেলে তীব্র চিৎকারে প্রতিবাদ জানিয়ে প্রিয়া বলে,
..."এ অসম্ভব!  এ কাজ করতে পারব না আমি।"
বলে দৌড়ে বেরিয়ে যায় মল থেকে।
       
    পরের দিন চুরির দায়ে বস্ত্রবিপনির চাকরিটা খোয়ায় প্রিয়া। প্রিয়ার ড্রয়ার থেকে পাওয়া গিয়েছিল আগেরদিনে ম্যানেজারের দেওয়া পোষাকের সেই প্যাকেটটা।
     
    কাঁদতে কাঁদতে শপিং মলের বাইরে বেরিয়ে আসে প্রিয়া। বাইরে তখন সূর্যদেব মধ্য গগনে। মলের এ.সি ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দম বন্ধ লাগে তার। কী করবে এখন সে? কোথায় যাবে? এখান থেকে বেরোলে কে তাকে দেবে চাকরি? বাড়িতে পাঁচটি অসহায় অভুক্ত পেট!
     হঠাৎ প্রিয়া অনুভব করে পেছন থেকে তার কাঁধে হাত রেখে সনাতনদা বলছে, "চলো এখান থেকে। আমার কোন পরিচিত ফুডকোর্টে তোমার নিশ্চয়ই  একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।"
    
    গাল বেয়ে নোনা স্রোত নামে প্রিয়ার। মনে মনে বলে,  "এ নগর শুধু ছুঁড়ে ফেলে দেয় না, কাঁধে রাখে আশ্রয় স্পর্শও।"




| Aleekpatamagazine.blogspot.in |
  | Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
|ALEEK PATA-The Expressive World |Online Magazine |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |
| Winter Issue,2010 | January, 2020 |
| Third Year Fourth Issue |21st Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |



 Back To Index  - সূচিপত্র










Wednesday, February 19, 2020

গল্প-পরিযায়ী-বনবীথি পাত্র


পরিযায়ী

বনবীথি পাত্র

Image Courtesy: Google Image Courtesy



    অন্যদিনের মতই আজও ভোরবেলাতেই ঘুম ভেঙে যায় ময়ূরীর । দরজার ফাঁক দিয়ে হালকা আলোর রেখা জানান দিচ্ছে নতুন সকালের । তবু কিছুক্ষণ আলসেমী করে পড়ে থাকে বিছানায় , উঠে তো আর এখানে সংসারের কাজকর্ম কিছু নেই । দিব্যেন্দু এমনিতেই বেলায় ওঠে , আজ তো কথাই নেই । গতরাতের পার্টির রেশটুকু কেটে ঘুম ভাঙতে আজ আরো বেলা হবে । ময়ূরী পছন্দ করে না জেনেও দিব্যেন্দু মদ খায় । ওর ভাষায় , বন্ধুবান্ধবদের সাথে পার্টি নাকি দুপেগ রঙীন তরল ছাড়া জমে না । আর রঙীন তরল পেটে পড়লেই দিব্যেন্দুর ভালোবাসাও যেন বেড়ে যায় । ময়ূরীর ঐ গন্ধে গা ঘিনঘিন করে , বমি পায় । নিজেকে প্রাণপণ দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করেও শেষপর্যন্ত ধরা দিতে হয় দিব্যেন্দুর কাছে । দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে ভালোবাসার অত্যাচার । ভালোবাসার অত্যাচার না কি অত্যাচারের ভালোবাসা !

    কাল বিকালেই ওরা পৌঁছেছে এই বনবাংলোতে । দিব্যেন্দুরা পাঁচবন্ধু আর তাদের স্ত্রীরা , মোট দশজন । বাংলোতে ঘরগুলো আগে থেকেই বুক করা ছিল । একটু ফ্রেশ হয়ে চা জলখাবার খেয়েই পাঁচবন্ধুতে বোতল খুলে বসে পড়েছিল । কেয়ারটেকার রামদীন আর ওর বৌ ওদের রান্নার দায়িত্ব নিয়েছে , কাল রাতে ডিমের ঝোল আর রুটি করেছিল । কিন্তু ওরা পাঁচ বৌই যা একটু খেয়েছে , নেশার ঘোরে ওরা ভালো করে খেতে অবধি পারেনি । বন্য পরিবেশে তরলের পরিমাণটা কাল বোধহয় একটু বেশি হয়ে গিয়েছিল দিব্যেন্দুর । আর তারসাথেই রাত বাড়ার পাল্লা দিয়ে বেড়েছিল দিব্যেন্দুর ভালোবাসা । বাংলোর ঘরের কম পাওয়ারের বাল্বের লালচে আলোয় আস্তে আস্তে ক্ষয়ে গিয়েছিল ময়ূরী । দিব্যেন্দু বুনো জানোয়ারের মতো করে ভালোবেসেছে ময়ূরীকে । চোখ বুজে সবটুকু সহ্য করেছে ময়ূরী । ওর চোখের কোণে গড়িয়ে পড়া জলের রেখাটুকু নজরেও পড়ে না দিব্যেন্দুর । ক্লান্ত দিব্যেন্দু ঘুমিয়ে পড়লেও ঘুম আসে না ময়ূরীর । কখন যে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছিল বুঝতেও পারেনি ।

    ঘুমন্ত দিব্যেন্দুর হাতটা গায়ের ওপর থেকে সরিয়ে উঠে পড়ে ময়ূরী । গায়ের কম্বলটা  ভালো করে টেনে দেয় দিব্যেন্দুর গায়ে । জানুয়ারীর প্রথমদিক , এমনিতেই জমাটি ঠান্ডা এখন । কলকাতার তুলনায় ডুয়ার্সে ঠান্ডাটা বেশ বেশি । রাতপোষাকের ওপর বাদামী কার্ডিগানটা পড়ে নেয় ময়ূরী । ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে হালকা চিরুণী বুলিয়ে নেয় । ওপর ঠোঁটটাতে এখনো গতরাতের ভালোবাসার দাগ । ব্যাগের ভেতর থেকে শালটা বের করে মাথা দিয়ে জড়িয়ে নেয় । ঘরের দরজাটা খুলে বাইরের ছোট্ট বারান্দাটায় এসে দাঁড়ায় ।

    জঙ্গলের মাঝে বড় বড় গাছের ফাঁকে বাংলোগুলো । কাঠ আর বাঁশ দিয়ে দিয়ে তৈরি ঘরগুলো , দেওয়ালে শীতলপাটির অপূর্ব কারুকাজ । ঘরগুলোতে কারেন্টের ব্যবস্থাও আছে । দশবারো ফুট উঁচু ঘরগুলোতে উঠতে হয় বাঁশের সিঁড়ি বেয়ে । গাছের গভীরতা ভেদ করে দিনের আলো এখনো এসে পৌঁছায়নি বাংলোর বারান্দায় । তবু ফাঁকফোক দিয়ে ছেঁড়া ছেঁড়া আকাশের টুকরো দেখা যাচ্ছে । যেদিকে চোখ যাচ্ছে , শুধু সবুজ আর সবুজ । অদ্ভুত একটা শান্তি আসছে মনটায় , গতরাতের ক্লান্তি যেন মুছে যাচ্ছে একটু একটু করে । অসংখ্য পাখির ডাক ভেসে আসছে জঙ্গলের গভীর থেকে । একঝাঁক টিয়া ঝটপট করে উড়ে গেল সামনে দিয়ে । মনটা অকারণেই খুশি হয়ে যাচ্ছে যেন । বাংলোর নীচে একটা পাহাড়ি বৌ আঁচের উনান ধরিয়েছে , ধোঁয়াটা উঠে আসছে উপরে । ময়ূরীর মনে পড়ে ছোটবেলায় ওদের বাড়িতেও এমন উনান জ্বালিয়েই রান্না করতো মা । বৌ টা সামনের ফাঁকা জায়গাটা ঝাঁট দিচ্ছে , আর একটা বাচ্চাছেলে খালি খালি ওর কাপড়ের আঁচলটা টেনে ধরছে । নিশ্চয়ই মায়ের কোলে চাপার ইচ্ছা । রামদীন এসে বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নেয় । তার মানে এরা রামদীনের পরিবার । ময়ূরীর বেশ সুখী সুখী লাগে পরিবার টাকে ।
গুডমর্নিং মেডাম !
গুডমর্নিং... রামদীনকে হালকা হেসে উত্তর দেয় ময়ূরী ।
চা দিব মেডাম ?
না না আর কেউ ওঠেনি , একটু পরে দিও ।
আচ্ছা রামদীন এতো পাখির ডাক শোনা যাচ্ছে , পাখিদের দেখা যাবে না ?
জরুর যাবে মেডাম । থোড়ি দূর মে এক ঝিল আছে , উহা বহুত সারে পাখি আসে এই ঠান্ডি মৌসমমে । বাঙ্গালাতে আপনারা কি যেনো বোলেন হাঁ হাঁ মনে পড়চে , পরিযায়ী পাখি ।
রাতের অস্বস্তিটুকু ধুয়ে ফেলতে স্নান করাটা খুব দরকার । কিন্তু যা ঠান্ডা , বাথরুমে কি গরম জলের ব্যবস্থা আছে কে জানে !
রামদীন বাথরুমে গরম জল পাওয়া যাবে গো ?
হাঁ মেডাম টোয়েন্টি ফোর আওয়ার গরম পানি আছে টোলেটে ।
ঘরে ঢুকে শাল সোয়েটার খুলে বাথরুমে ঢোকে ময়ূরী । ঠান্ডাগরম জলটা অ্যাডজাস্ট করে শাওয়ার খুলে দেয় । জলের ধারায় ধুয়ে যাচ্ছে গতরাতের আদর-ভালোবাসা-অত্যাচার । এক একদিন দিব্যেন্দু কেন যে এমন নিষ্ঠুর আচরণ করে বুঝতে পারেনা ময়ূরী । অথচ দিব্যেন্দু অন্যসময় যথেষ্ট ভালোমানুষ , কেয়ারিং হাসবেন্ড । কিন্তু ঐ পাশবিক ভালোবাসার পর আবার দিব্যেন্দুর সাথে সহজ হতে কষ্ট হয় ময়ূরীর , অভিমানে গলা বন্ধ হয়ে আসে ।

    স্নান সেরে হলুদ আর বেগুনি রঙের জংলাপ্রিন্ট পিওরসিল্ক শাড়িটা পড়ে ময়ূরী । রেডি হতে হতেই দেখে ঘুম ভেঙেছে বাবুর । বিছানায় বসেই কম্বলমুড়ি দিয়ে বসে দিনের প্রথম সিগারেটে টান দিচ্ছে । কতবার বারণ করেছে বদ্ধ ঘরে সিগারেট না খেতে , কে কার কথা শোনে । প্রতিবাদ করার ইচ্ছাটুকুও নেই ময়ূরীর , নিজে গিয়ে দরজাটা খুলে দেয় চুপ করে । একটু পরেই রামদীন হাজির চা আর স্যান্ডউইচ নিয়ে । দিব্যেন্দু একেবারে চুপচাপ , হয়তো কাল রাতের ব্যবহারের জন্য অনুতপ্ত । তবে এমন অনুতপ্ত আগেও বহুবার হয়েছে , কিন্তু আবার যা কার সেই । তাই আর অকারণ নাটক দেখার মুড নেই ময়ূরীর , চায়ের কাপটা নিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ায় । সবাই উঠে পড়েছে এতক্ষণে , এত সকালে ওর স্নান হয়ে গেছে দেখে সবাই অবাক । দিব্যেন্দুও চটপট ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নেয় ।

    চাপমারি ওয়াচটাওয়ারে যাওয়ার প্ল্যান ছিল ওদের আজ , কিন্তু রামদীনের কাছে জানতে পারে প্রতি বৃহস্পতিবার টাওয়ার বন্ধ থাকে । অগত্যা কোথায় যাবে ভাবার আগে রামদীনই বলে সেই ঝিলটার কথা , যেখানে গেলে নাকি অনেক পাখি দেখা যাবে এইসময় । এককথায় সবাই রাজি , কিন্তু জন্তুজানোয়ারের ভয় আছে কিনা জেনে নেয় রামদীনের কাছে । দিনের বেলায় তেমন কোন ভয় নেই জেনেই হাঁটতে শুরু করে ওরা । বড় বড় গাছের ফাঁক দিয়ে পায়ে চলা সরু পথ । হালকা রোদের আঁকিবুকি পথের উপর । জঙ্গলের কেমন একটা যেন আদিম গন্ধ আছে , মনটায় কেমন যেন একটা মাদকতা তৈরি হয় সেই গন্ধটায় । অচেনা বুনো পথ , স্বামীস্ত্রী জুটিগুলো স্বভাবতই একটু কাছাকাছি । শুধু দিব্যেন্দুকে এড়িয়ে চলতে গিয়ে ময়ূরীই একটু  পিছিয়ে পড়েছে । সায়ন্তনীটার মুখে কিচ্ছু আটকায় না , ওইই বলে , " কি হলো দিব্যেন্দুদা বৌ অত দূরে দূরে কেন ? রাতে ভালো করে আদর করেননি নিশ্চই , সেইজন্য অভিমান । আমরা একটু এগিয়ে যাই , আপনি বরঞ্চ রাতের অসমাপ্ত কাজটা সেরে ফেলুন । এই জঙ্গলে কেউ দেখতে আসবে না ।"

    সায়ন্তনীর কথায় সবাই হেসে ওঠে হা হা করে , দিব্যেন্দুও হাসিতে যোগ দেয় । লজ্জা পেয়ে যায় ময়ূরী । দিব্যেন্দুকে বিশ্বাস নেই , একটু জোরে পা চালিয়ে এগিয়ে এসে সবাইকে ধরে ফেলে । রামদীনের কথামতো আর একটু এগিয়ে বাঁদিকে বেঁকতেই ঝিলটা ।
ছোট্ট একটা ঝিল , খুব বেশি জল নেই সেখানে । চারপাশের গাছগুলোতে অসংখ্য পাখির মেলা । লাল,নীল, সাদা, কালো, ধূসর, বেগুনি কতরকমের নামনাজানা পাখি । কলকাকলিতে মুখরিত চারদিক । সেই ভোরবেলা থেকে এই পাখিগুলোর ডাকই শুনতে পাচ্ছিল ময়ূরী ।  অরিন্দম আর শাশ্বত ক্যামেরা নিয়ে পাখিদের ফটো তুলতে ব্যস্ত । বাকিরা গাছের ফাঁকফোক দিয়ে আরো পাখি খুঁজছে , শিস দিয়ে পাখিদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছে । দিব্যেন্দু ঝিলের ধারে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে আনমনে । গতরাতের কষ্টটা এখনো কুচি কুচি বরফের মতো আর্দ্র করে রেখেছে ময়ূরীকে , কিছুতেই যেন সবার সাথে স্বাভাবিক হতে পারছে না ।

    একটা গাছের তলায় বসে পড়ে ময়ূরী , ঝরে পড়া শুকনো পাতাগুলোয় হাত বুলায় অকারণে । ওদের শহরতলি ছাড়িয়ে একটা দীঘি ছিল , শীতকালে ওখানেও অনেক পাখি আসত । একবার গানের মাস্টারমশাই সবাইকে নিয়ে ঐ ঝিলের ধারে পিকনিক করতে গিয়েছিলেন । সারাদিন খুব মজা হয়েছিল । খাওয়াদাওয়া , গানবাজনা , ক্রিকেট খেলা , পাখিদেখা । সন্ধ্যেবেলা বাড়ি ফেরার আগে নির্মাল্য একটা ছোট্ট এত্তটুকু পাখির ছানা কুড়িয়ে পেয়েছিল একটা গাছতলায় । দুহাতের তালুতে পাখিরছানাটাকে নিয়ে ছুটে এসেছিল স্যারের কাছে , বলেছিল ওকে আমি পুষব স্যার , আমি বড় করবো ওকে ।
ধুর ঐটুকু বাচ্চাটাকে কতো যত্নে রাখতে হবে জানিস
জানিস উষ্ণতা দরকার একে বাঁচানোর  জন্য ?
শীতের দেশ থেকে ওরা আমাদের দেশে উড়ে আসে শুধু উষ্ণতার খোঁজে । যদি উষ্ণতাটুকু না পায় ওরা উড়ে যাবে অনেক দূরে । ভালোবাসাও তেমনি , অন্তরের উষ্ণতাটুকু দিয়ে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে হয় , নাহলে কখন যে দূরে চলে যায় বোঝাও যায় না ।
কে একজন পিছন থেকে বলে , ঐ শীতের দেশ থেকে উড়ে আসা পাখিদের কি বলে স্যার ?
পরিযায়ী পাখি ।

    ময়ূরী তখন ক্লাস সেভেন , প্রথম শুনেছিল পরিযায়ী কথাটা ।
সেই রাতে শুয়ে ছোড়দি ঠাকুমার কান এড়িয়ে চুপিচুপি বলেছিল ,স্যার তখন ঐ ভালোবাসার কথাগুলো কাকে শুনিয়ে বলছিল বল্ তো ?
কাকে আবার আমাদের সবাইকে ।
ছোড়দি মাথায় আলতো একটা চাটি মেরে বলেছিল , তুই দেখছি বাচ্চাই থেকে গেলি । আমাদের সবাইকে না , স্যার কথাগুলো বলছিল মহুয়াদিকে । স্যার মহুয়াদিকে ভালোবাসে তাও জানিস না !
আজ অনেক বছর বাদে কথাগুলো হঠাৎ মনে পড়ে ময়ূরীর । অন্তরের উষ্ণতাটুকু না দিলে ভালোবাসা দূরে চলে যায় ?
অবসন্নতা টুকু ঝেড়ে উঠে পড়ে ময়ূরী । এগিয়ে গিয়ে দিব্যেন্দুর একটা হাত জড়িয়ে ধরে আপন করে । এইটুকুর জন্যই হয়ত অপেক্ষা করছিল দিব্যেন্দু । দুহাত দিয়ে কাছে টেনে নেয় ময়ূরীকে । পরিযায়ী পাখিদের সাথে ওরাও ভালোবাসার উষ্ণতাটুকু ভাগ করে নেয় দুজনে ।

| Aleekpatamagazine.blogspot.in |
  | Editor: Swarup Chakraborty | Publisher: Debasree Chakraborty |
|ALEEK PATA-The Expressive World |Online Magazine |
|a DISHA-The Dreamer Initiative |
| Winter Issue,2010 | November-January, 2020 |
| Third Year Fourth Issue |21st Edition|
|© All Rights Reserved By The Editor and The Publisher |



 Back To Index  - সূচিপত্র











Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান