অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Monday, July 31, 2017

স্বরূপ চক্রবর্তী




কালো বাঁশ








(১)
রাত্রি প্রায় সোয়া দশটা,ঝম ঝমে বৃষ্টিতে সামনের পিচের রাস্তার মাত্র কয়েক ফুট দূর অব্দি দেখা যাচ্ছে,হেলমেটের সামনের কাঁচটা বার বার আবছা হয়ে আসছে-
কিন্ত, কিছু করার নেই, রবীন নিরুপায়, কারণ তাকে যে আজ রাত্রের মধ্যেই যে করেই হোক ত্রিশ কিলোমিটার দুরের রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছতেই হবে, মা অসুস্থ......,

নানা ভাবনার মধ্যেই রবীন খেয়াল করলো যে সামনের রাস্তাটা হঠাৎ একটা দ্বিধাবিভক্ত মোড়ে এসে শেষ হ, ডান দিকে গেলে স্টেশন আর প্রায় পঁচিশ কিলোমিটারের রাস্তা, রাস্তা ভাল,মাঝে মধ্যে জনবসতিও আছে,  বাম দিকের রাস্তাটি বেশ ছোট,স্টেশন প্রায় দশ কিলোমিটার, কিন্তু একেবারে ফাঁকা , মাঝে পড়বে কালবনির শাল জঙ্গল, এমনিতে কোনও ভয় নেই , তবে ঝড়- বৃষ্টির দাপটে এক আধটা গাছ হয়ত পড়ে থাকলেও থাকতে পারে, তবে, রবীন শুনেছে যে শাল গাছ খুব শক্ত হয়, সহজে ভাঙেনা, সেটা নিয়ে নয়, তার চিন্তা একটা অন্য কারনে......

এখানে সে এসেছিল বন্ধুর বাড়িতে, উচ্যমাধ্যমিকের পর ছুটি কাটাতে, বন্ধু শুভেন্দু ও তার পরিবার সবাই মিলে তার ভীষন যত্ন করেছে, গ্রামের বাড়ী, কিন্তু স্বচ্ছল পরিবারের সমস্ত চিহ্ন বিদ্যমান, এই গ্রামে এখনও শহুরে রাজ নীতির ঘোলা জল ঢোকেনি, ফলে গ্রামের সকলের মধ্যে সৌহার্দ্য বজায় আছে, পুকুরে প্রচুর মাছ, গাছে গাছে আম, কাঁঠাল, লিচু- এক্কেবারে স্বর্গরাজ্য। রবীনের বেশ ভালো লাগছিলো , কিন্তু , একটা ব্যাপার মানতে প্রথম প্রথম তার বেশ কষ্ট হচ্ছিল, সেটা হল যে গ্রামের সবাই, এমন কি শুভেন্দুরা, যারা কিনা উচ্চ শিক্ষিত, বাড়িতে নিয়মিত পত্র পত্রিকা আসে, টেলিভিশন, ল্যাপটপ, মায় আন্ড্রয়েড মোবাইল পর্যন্ত ব্যবহার করে , তারা সবাই এখনও অলৌকিক ব্যাপারে ভীষণ বিশ্বাস করে।
ওদের সবার মধ্যে একটাই আতঙ্কের জায়গা, সেটা হল কালবনির জঙ্গল ও তার মধ্যের নীল কুঠি, ওদের বিশ্বাস যে সেখানে নাকি এখনও অলৌকিক কাণ্ডকারখানা ঘটে। তাই, গ্রাম থেকে মাত্র পাঁচ ছয় কিলোমিটার দূরের ওই জঙ্গলে পারত পক্ষে কেউই যায়না।
বিজ্ঞানের ছাত্র রবীন ভুত-প্রেতে কিছুটা কম বিশ্বাস করে, তাই সপ্তাহ খানেকের রাজকীয় সেবাতে ,তার মাথার মধ্যে থেকে ভয় , ভাবনা সব হাওয়া হয়ে গিয়েছিল।

আজ বিকালে হঠাৎ ফোন, তার মায়ের ভীষণ অসুখ, তাকে আজই যে করে হোক বাড়ী ফিরতেই হবে। কিন্তু এখন তো তাকে শীঘ্রই একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছতেই হবে, “ডানদিক ? না বামদিক? কারন বৃষ্টি থামার কোনই লক্ষণ নেই, এদিকে রাত একটা দশের ট্রেনটা ধরা ভীষণ জরুরী, তবেই সে কাল ভোর নাগাদ বাড়ি পৌঁছতে পারবে, কে জানে মা কেমন আছেন?.................................

(২)

এই পর্যন্ত পড়ে বিমল বাবু  থামলেন,
সামনের টেবিলে রাখা ঢাকনা দেওয়া গেলাস থেকে জল নিয়ে একটু গলাটা ভিজিয়ে নিলেন, তারপর জিজ্ঞাসু দৃষ্টি ছুঁড়ে দিলেন ওপারে বসা, রাশভারি ভদ্রলোকের দিকেভদ্রলোক পাক্ষিক কালো বাঁশপত্রিকার সম্পাদক, পত্রিকার এই রকম অদ্ভুত নাম করণের কারণ জানতে চেয়েছিলেন বিমল বাবু তার একান্ত অনুগত ভক্ত শ্রীমান বটুক সরখেলের কাছ থেকে, বটুক ওই পত্রিকায় ডি.টি.পির কাজ করে, বিমল বাবুর পাড়াতেই থাকে, অকৃতদার, রিটায়ার্ড সরকারি চাকুরে বিমল বাবু একটু আধটু লেখা লিখি করতে ভালো বাসেন, তাঁর লেখা তিনি পাঠান বিভিন্ন  অন লাইন পত্র পত্রিকায় বা তার নিজের ফেস বুক ওয়ালেপোষ্ট করেন , বেশ লাইক আর কমেন্ট পান, কিন্তু তাতে তাঁর মন ভরেনা, তিনি ছাপার অক্ষরে নিজের নামটা দেখতে চান, তাই পত্রিকা অফিসে কাজ করে শুনে তিনি বটুকের সাথে বেশ ভাব জমিয়ে ফেলেন, বটুকও মাঝে মাঝে  চা এবং সাথে  টাএর লোভে বিমল বাবুর বাড়ীতে হানা দেয়।

তা, একদিন সুযোগ বুঝে বিমল বাবু বটুকের কাছে টুক করে কথাটা পেড়েই ফেললেন।

-বাবা বটুক তুমি তো পত্রিকা অফিসে কাজ করো তাই না ?”

উত্তরে বটুক একমুঠো ডালমুট মুখে চালান করে বলল

-কালো বাঁশ

উত্তর শুনে আবলুশ কালো ক্ষীণকায় বিমল বাবু থতিয়ে গেলেন, ভাবলেন

-আমাকে কালো বাঁশ বলল?”

তাঁর মুখের করুণ অবস্থা বুঝে বটুক মুখের ডালমুট গুলো ম্যানেজ করে বলল,

-কিছু মনে করবেন না মেসোমশাই , ওটা আমাদের পত্রিকার নাম

-ওহ্‌ তাই”, হাঁফ ছাড়লেন বিমল বাবু।

বটুক বলে চলল,

-আমাদের পত্রিকার সম্পাদক  নিত্যনতুন গড়গড়ি মশাই ভীষণ এলেমদার লোক, সাহিত্যের সমঝদার, তিনি বলেন যে আমাদের পত্রিকায় এমন লেখা ছাপাব যে সব ব্যাটা কে একেবারে বাঁশ দিয়ে ছাড়ব

-বাঁশ বুঝলাম কিন্তু কালো কেন?”, বিমল বাবুর জিজ্ঞাসা,

-কারণ লাল, সবুজ, গেরুয়া, সমস্ত রঙ গুলোরই কপি রাইট নেওয়া হয়ে গেছে, তাই কালো

–“ আর তা ছাড়া এই নামটির মধ্যে একটি গভীর শ্লেষ আছে, ঠিক জায়গায় লাগলে একেবারে বাঁশের বাড়ির মতোই লাগবে”, বটুকের মুখে একটি কালজাম অদৃশ্য হয়ে গেলো।

বিমল বাবু একটু দমে গেলেন, ভাবলেন -এই রকম প্রগতি শীল পত্রিকায় কি তাঁর মতো সাধারণ অনামি লেখকের লেখা ছাপাবে?”

বটুক আস্বস্ত করল, বলল,

-ভয় নেই মেসোমশাই, আমাদের সম্পাদক মশাই নিজে আধুনিক কবিতা লেখেন এবং অরিজিন্যাল লেখা খোঁজেন, ভালো হলে অবিশ্যি ছাপবেন”,

-আর তা ছাড়া ওঁনার পরিবারের সঙ্গে আমার একটু ইয়ে আছে”, বলে বটুক তার পান খাওয়া ক্ষয়াটে দাঁত দেখিয়ে হাসল।

-ইয়ে?” বিমল বাবুর অধীর জিজ্ঞাসা।

-বৌদি, মানে  নিত্যনতুন গড়গড়ি মশাইএর বউ এর সমস্ত ফাই ফরমাশ তো আমিই খাটি,
চাকরির যা বাজার, কোনোও ক্রমে স্কুল ফাইন্যাল টা পাশ দিতেই বাবা চোখ ওলটালেন, আর আমাদের গনেশও ওলটাল, ডি.টি.পি. টা শিখে চাকরি করছি”,

-বুঝলেন তো?”

বিমল বাবু সব বুঝেছেন।
(৩)

সেই মতো আজ  ১০ই চৈত্র তিনি কালো বাঁশপত্রিকার দফতরে সম্পাদক মশাই কে তাঁর গল্পটা পড়ে শোনাচ্ছিলেন, মনে হয় ওঁর ভালোই লাগছিলো, কিন্তু একটা ব্যাপারে খটকা হচ্ছিল বিমল বাবুর, সেটা হল যে তাঁর রোমহর্ষণ কারী রহস্য গল্পের মধ্যে হাসির খোরাক কথায় পেলেন জানেন না কিন্তু চোখ বুঁজে গল্প শুনতে শুনতে নিত্যনতুন গড়গড়ি মশাই তাঁর জালার মতশরীর টা দুলিয়ে দুলিয়ে মৃদুমন্দ হাসছিলেন।

বিমল বাবু নিজেকে বোঝালেন ,

-এলেমদার আধুনিক কবি, গভীর চিন্তায় মগ্ন, হয়ত বা তাঁর ব্রেনটাই দুভাগে ভাগ হয়ে এক সাথে দুই রকম কাজ করছে, একটা অফিসে বসে যশপ্রাথী নবীন লেখকের লেখা গল্প শুনছে, আর অন্য পাশটা হয়ত কাউকে বাঁশ দেওয়া টাইপ কোন আধুনিক কবিতার পঙতি ভাবছে, বাবাঃ, কি প্রতিভা

কিন্তু সন্দেহ যায়না, তাই সন্দেহ নিরসন করতে বিমল বাবু গল্প পড়া থামালেন,  ওই সেই যেখানে রবীনের সামনে দুটো রাস্তা খোলা।

-বাঃ, বেড়ে হয়েছে”, ঢাকাই জালার ভেতর থেকে গমগমে আওয়াজ বেরোল, “ থামলেন কেন? চালিয়ে যান !

বিমল বাবু খুশি হয়ে বাকিটা পড়তে যাবেন , এমন সময় গড়গড়ি বাবু হাত তুলে ওনাকে থামালেন,

-গল্পটা অরিজিন্যাল তো?”

-নিশ্চয়ই

-আর কে কে শুনেছে?”

-কেউ না, কেবল মাত্র বটুক, আর আপনি এই অর্ধেক টা।

-যাক, তাহলে ওটা রেখে যান”, বাঁজ খাঁই গলায় বললেন সম্পাদক।

-ওটা আমি নিজে পরে পড়ে নেবখন ”  পানের ডিবে থেকে মুখে একটি বিশাল পান ফেলে বললেন,

-তবে কি জানেন ময়ায় ? লেখাটা খুবই শিশু সুলভ, ওতে সামান্য ঘষা মাজা করতে হবে, সে আমি করে নেবখন, ইয়োর স্টোরি হ্যাজ বিন সিলেক্টেড, আপনি এখন আসতে পারেন

(৪)

আজ ১লা বৈশাখ, আজই তো কালো বাঁশ পত্রিকার নববর্ষ সংখ্যার প্রকাশের দিন,
উত্তেজনায় বিমল বাবুর ঘুম হয়নি গত রাত্রে, স্বল্পে সন্তুষ্ট বিমল বাবু সংসার করেন নি বলে কোনও ঝক্কি ঝামেলা বা টেনশন পোহানোর অভিজ্ঞতা তেমন নেই বললেই চলে,
তাঁর নিস্তরঙ্গ জীবনে এত ঢেউ উঠবে তিনি কি কখনও ভেবে ছিলেন? মনে হয় না।
প্রথম বার ছাপার অক্ষরে তাঁর নাম শুধু নয় , মায় একটা আস্ত লেখা ছাপতে চলেছে, তাও আবার কালো বাঁশএর মতো স্বনামধন্য পত্রিকায়,

উফফ্‌, গায়ে কাঁটা, আর চোখে লঙ্কাবাটা।

নামের বানান টা যেন আবার ঠিক ঠাক ছাপে, বটুক কে তিনি পই পই করে সাবধান করে দিয়েছেন,

-বাবা বটুক, তুমিই ভরসা, দেখো  ডি.টি.পি.তে কম্পোজ করার সময় আমার নামের বানান টা যেন ঠিক থাকে,”
(৫)

সেই মতো মোড়ের দোকানের জলভরা’, ‘রাবণের মাথার সাইজের রসগোল্লা’, ‘সিঙ্গাড়া’, আর বটুকের প্রিয় ডালমুট, সব কিছু সকাল হতেই তিনি তাঁর কাজের লোকের হাতে আনিয়ে সাজিয়ে একেবারে প্রস্তুত।

ঠিক সাড়ে নটা, “রিইইইইইইং করে ডোর বেলটা বেজে উঠল, যেন বেল নয় কোনও মহান ঘটনা ঘটার আগের শঙ্খনাদ, আঃ, ডোর বেল টা এত মধুর কোনও দিন শোনায় নি।

দরজা খুলতেই বটুক হুড়মুড়িয়ে ঘরে ঢুকল,

-এই নিন মেসোমশাই”,

বলে এক খানা পাকানো কালো বাঁশবিমল বাবুর হাতে গুঁজে দিয়েই, খাবার প্লেটে ঝাঁপিয়ে পড়ে রাবণ বধেমন দিল।

-চৌত্রিশ নম্বর পাতাটা খুলুন”, মুখের রসগোল্লা ম্যানেজ করতে করতে বলল বটুক।

কম্পমান হাতে চৌত্রিশ নম্বর পাতাটা খুলে বিমল বাবুর নয়ন সার্থক হল।
এইত, তাঁর লেখা গল্পটি দেখা যাচ্ছে, সুদৃশ্য হরফে, ঝক ঝকে কালিতে, পুলকে কেঁপে উঠল তাঁর মন, তড়ি ঘড়ি গল্পের শেষে তাঁর নামটি দেখতে গিয়ে চক্ষু ছানাবড়া, আরে! লেখকের নামের জায়গায় তাঁর নামের বদলে এটা কার নাম লেখা?
বার তিনেক চোখ ঘষার পরও নামটা সেই একই আছে, বিমল চন্দ্র বড়াল এর জায়গায় শ্রীমতি নবীনা গড়গড়ি”, বিমল বাবু রক্ত চক্ষু করে বটুক কে বললেন,
-এটা কি হল’”

-বাঁশ। কালো বাঁশ”, অম্লান বদনে বলল বটুক।



-মানে?” বিমল বাবু রাগে অগ্নিশর্মা।


এক সাথে দুটো জলভরা মুখে চালান করে দিয়ে বটুক বিস্তারিত বলে চলল...

-আসলে সম্পাদক মশাই বললেন যে আপনার লেখাটা একেবারে অপরিনত, কাঁচা,
ওতে বর্তমান আর্থসামাজিক তথা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এর বর্ণনা ও তার  বিশ্লেষণ   মিসিং , একেবারে যা তা, তাই ওটাকে অনেক শুধরাতে হয়েছে, একটা মুখবন্ধও উনি লিখে দিয়েছেন, এই দেখুন,

-উনি লিখেছেন যে”,

-এটা একটা পথভ্রষ্ট যুবকের গল্প, যে দ্বিধাতে আছে যে তার কোন আদর্শের সাথে যাওয়া উচিত, ডান নাকি বাম,.........ইত্যাদি ইত্যাদি



-আর আমি তো বলেইছি যে উনি অরিজিন্যালিটি তে বিশ্বাস করেন, তাই বললেন, যে এত কিছু যখন ওনাকে লিখতে এবং বদল করতে হলতখন লেখাটি তো এক প্রকার ওঁরই,”

-হেঁ হেঁ বটুক লেখাটি তুমি বরং তোমার বউদির নামের ছাপিয়ে দাও, সম্পাদকের গিন্নি বলে কথা, সমাজে মুখ দেখাতে হলেওনারও তো কিছু সাহিত্য কর্ম থাকা উচিৎ, কি বল বটুক, ঠিক কি না”?

-আর মেসোমশাই আপনি আর কি বুঝবেন, আমার বিশাল সংসার টা তো আমারই ঘাড়ে, চাকরির যা বাজার






(৬)

বিমল বাবু লেখা ছেড়ে দিয়ে এখন বাড়ির পিছনে একফালি জমিতে মন দিয়ে বাগান করছেন।ইন্টারনেট ঘেঁটে দেখছেন যে নিজের বাগানে বাঁশফলানো যায় কি না,


তা হলে এক খানি সরেস বাঁশ তিনি নিত্য নতুন গড়গড়ি কেপাঠিয়ে দেবেন।।




দেবশ্রী চক্রবর্তী

নামহীন আমি



আমি নিজেকে লুকিয়ে ফেলেছি
নিজের মধ্যে নিজেকে আমি
সযত্নে তুলে রেখেছি 
যাকে দেখে তুমি আপ্লুত
সে কে ? আমি না কায়া ?
যেখানে যেমন চেয়েছ আমায়
বিলিয়ে দিয়েছি ছায়া।


আমি আমার আমিকে
লুকিয়ে দিয়েছি হারিয়ে যাবার ভয়ে,
কখনো দৃঢ়কখনো বিদীর্ণ
চলেছি নিজের লয়ে 

সৃষ্টির বুকে আছড়ে পড়ব-
মুক্ত করব আমাকে ,
কাজ শেষ লে মুক্তি পাব-
বিলীন  তোমাতে 



চিত্র ঋণ ঃ Google Images






Sunday, July 30, 2017

Utpal Kumar Panda

Shweta- the untold story





Arun ,  a company executive of about 48 years  age  ,   met  Shweta , an eighteen years   girl ,in a train at Kolkata.  That was  in May 2008. They travelled  together   in a Rajdhani  AC  coach  from  Sealdah to New Delhi. Arun was  returning to his work at  Haridwar  ,  after  visiting  his relatives   at Kolkata.  And   Shweta ,  her parents  working  at Kolkata,  were  going  to her coaching  institute  at Munrica , New Delhi  , after  appearing in a medical entrance examination  at Kolkata. 


The journey was quite memorable  for both of them.  Both  were travelling alone.  Arun  incidentally  had only   a  sixteen year  son  Prateek  and was  not blessed with a daughter. Prateek  would    get  many times  upset  for not having  a sister.  Arun and   his wife Lata   realized  about the difficulty  of bringing up  a single child.  For them , it was perhaps too late,  when they realized it.  Arun, however , had a  strong yearning  for a daughter.  He even confided  to Lata  one day.  Could not  they adopt  one ?   Lata was furious. “  Arun, see  , I don’t  know  ,how you will do it.  For me,  I can’t   love   Prateek  and the new one   equally”  . Lata was so categorical. Arun  never   raised   the issue   again.



The train journey  allowed  Arun  and Shweta   to come closer. So much  so that, their time passed  by, almost sharing  each other’s  life journey so far. Arun was  happy  that he found a daughter  in Shweta.  Shweta  was  happy to share her  stressful  moments she was passing through. Those seventeen hours of journey   from  Sealdah to New Delhi  opened up a new chapter  for  their life.  Arun  was quite emotional   while   parting  away from Shweta on the platform  on that day.  Will  they  meet  ever again ?



Shweta,  on her part,  did not forget  his uncle. So dutifully  couriered   him the question sets  his uncle  asked for  Prateek.  Arun  forgot  to   take  Shweta’s  mobile no in the train.  Shweta  now  mentioned  her  mobile no  in the  short letter she  sent to  Arun alongwith the question paper and asked him to  contact her   if he needed to. Arun  felt  so happy  and immediately   contacted her.  Shweta  too was  excited  to hear her uncle’s  voice   again.



After a month or so,  Shweta  called  again  Arun  one day. “Uncle, there’s   a good news.  I’ve   been  selected for admission  to  a medical  college  at Haldia  and I’ll   do  a  4 years  undergraduate  dental course  there.”  Arun  congratulated  her and said “ Shweta  beti,  what I told  you,  has become  true  by God’s grace.  Now, you need not have  to look back.  Pursue  the course with all sincerity  and I dream  a big future for you”.  Shweta  said , “  I  seek   your blessings, uncle”.  “ That  you’re assured  for the life time  beti, Feel  very  proud  for your parents.  Please  convey my  regards to them”. “ O.K., Uncle”.  She closed the call.



Soon after,  Shweta  left   for her college hostel   at Haldia.  After joining the institute , she was  in regular touch  with Arun. Almost  every  weekend  she would  call  him , enquire about   him  ,  Lata  aunty   and Prateek  bhaiya.  She  would  show  her  keen interest   in every minute  details of Arun and  his small  family  and would   give daughterly  advise   to her uncle in every possible way.  Arun very much liked it. He also  tried to  keep himself updated  about her stay at hostel  and provide  her  tips  to adjust with  the  day to  day  hassles  of hostel life  and simultaneously focus in her studies.  Time passed by .  Both  came to know  about each other’s  birthday.  Shweta  always   made it a point to  wish  her  uncle  in all social  occasions  like  Diwali, Dushhera, New Years day  as well his birthday.  Arun  also  never  missed    to  wish  Shweta   on her birthday and regularly  called  her  to enquire about her health, her parents  and her progress in  study.  Shweta  started   doing  well in the  exams   and Arun  would  invariably  call her  to congratulate   and  encourage  to  do her best.  It worked  so well as Shweta   topped in  her class in the  first year.



During  2009  summer,  Shweta’s  parents    paid a brief visit to Haridwar  on their  returned  journey from   Kedarnath and Badrinath  shrine.  They were very much tired. But they called  Arun on their arrival  at Haridwar.  Arun rushed  , to meet them for the  first  time. At Har ki Pauri ghat,  Shweta’s parents  were witnessing  Aarti  when Arun joined them. After the Aarti was over,  they  sat  there  for few hours.  Arun insisted  to  bring  them to his house  and   requested  them to stay for a night   with  his family.  But Shweta’s  parents  could   not  concede  to Arun’s request  as they  had to leave Haridwar early  morning next day.  However,  they  had long  chats  on that  day   enabling  to know each  others  family   with much details.  Arun carried  a  box of perfume  and  chocolates  for Shweta. He handed  over to Shweta’s parents  .  They  were  initially  reluctant to accept  it  but finally agreed  to see Arun happy. Before  saying them  good bye at that auspicious place,  Arun that day, touched  their feet and  sought  their blessings and said “   Sir,  I heard  a lot about you   from Shweta,  had a strong desire  to meet you some day,  God was  so kind  to  make it happen so early ,  you two are like  a living God to me.  I seek your  blessings, bless  me with  a daughter  like  Shweta  in my  next birth.  I love her  so much”   Shweta’s  parents  smiled  and departed  but  not  before  giving   Arun a warm  hug.   That  was perhaps  one of  the happiest  moment of Arun’s life.



Time passed by .  Shweta  was about  to complete  her course   in 2012 Summer.  Arun was  expecting  a call  from  her informing   about the final result.  During this time, Arun  was  not  getting  regular call  from Shweta. He was upset  but chose not  to disturb  her much  as he thought  Shweta might be  busy  in her  course completion works.  Her birthday  was in September.   Surprisingly , Arun’s  call  to Shweta  went  unanswered  on that day too.  Arun started  thinking,  perhaps due to some reason  Shweta is avoiding  him.  During  Dusshera and  Diwali  celebration  also there was  no call   from Shweta.  Arun’s patience  broke  when he did not  receive any call  in the new year 2013 too. He had the Shweta’s father’s  no.  He immediately   sent him  a message requesting  him   to inform well  being  of Shweta. Shweta’s  father replied promptly.  Arun  was stunned  to read the message. His  eyes  could not believe it.  It said  he was sorry  to  inform  that   Shweta  had   left  for her  heavenly abode   in the middle of last September.



Arun was  motionless  for a long moment.  When he gathered   his composure,   he could  make a call to Shweta’s father.  Shweta’s father  lifted the phone  but  burst into tears.  He was inconsolable  even   after so many  months  had  passed after Shweta’s  death .  He said  he  had  no heart  to  share with him   about Shweta’s untimely loss.  Arun  too broke  down  and cried inconsolably on phone.



After some time  had passed,  Arun insisted  to  know  the story behind it.  What Shweta’s father told him , was unthinkable.



One of  Shweta’s   classmate  was  stalking her for quite some  time.  Shweta wanted to  avoid him , but the boy  was creating  all shorts of trouble for her.  Shweta did  not share  with   anyone about it.  Neither  to his parents  nor even to Arun. She perhaps  thought   that  she  could  handle it on her own.  Once the final result was out ,  she vacated  the hostel and returned to Kolkata to their  flat.  The flat was empty   as  her father  was  already   transferred  to  Coochbihar.  Shweta was to  stay  only one night  in the  flat that day and leave for Bombay  next day   to spend   few days   with  her  elder brother’ s family there.  That was not to be.  Shweta’s father says, he gave  a call to  Shweta  around midnight  to check  that everything  is fine there.  One unknown  boy lifted the phone.  Shweta’s father confronted  him on phone,  asked  to know what  he was doing there. That boy disconnected the phone then.  Shweta’s father  could  only reach the flat  next day morning  to find  Shweta’s  motionless body   hanging  from a ceiling fan.



The police had a  case of long  investigation. The boy and  his family  was later imprisoned.  But   to Shweta’s family   and to Arun, their beloved  daughter was   lost for ever.    Shweta’s family  is still struggling to accept this inevitable.  But to  Arun,  he is  still  at a loss to understand , why Shweta came  to his life  for this brief   period.  Was she  connected with him in some previous births ? Or ,  Will Arun  be meeting  her  in  any of his  next births   as  one  of his  child  ? 




Photo courtesy: Google.com


Bedatrayee Roy (Class-X)


Swami Vivekananda













Debrupa Chakraborty (Class - VI)


AMERICAN PARROT







Saturday, July 29, 2017

শিবু

       বিষন্ন নাট্যশালায় আমি একা দর্শক




বিষন্ন নাট্যশালায় আমি একাই দর্শক । আমার চারপাশে
কলাকুশলীরা নানারকম অনুভূতির তরঙ্গ নিয়ে খেলা করে ।
আমি নীরব দর্শক দেখে যাই – তরঙ্গের কোন স্পর্শ ছোঁয় না
অথচ তরঙ্গের ওপারে নাটক শেষে সেইসব কলাকুশলীরা
আমায় ধাওয়া করে । ঘরে ফিরে এলে রাতে তারা আমার
বিছানা পেতে দেয় অথচ ঘুম আমায় স্পর্শ করে না । বেঁচে
থাকার যখন কোন উৎসাহ খুঁজে পাই না তখন তারাই আমায়
নতুন করে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলে- দেখ আমরাও বেঁচে আছি ,
আমাদেরও কোন ভালোলাগা নেই,আমাদেরও কোন বাঁচার
উৎসাহ নেই – তবুও বেঁচে আছি তুমি পারবে আমাদের মতো
বেঁচে থাকতে ? আমাদের মত নাটকের দর্শক না হয়ে শুধুমাত্র
অভিনয় করে যেতে সারাজীবন ? – যদি পার তবে উঠে এস মঞ্চে !                        

   
বেলুনওয়ালা  



                                      
দুপায়ে বাঁধা সাইকেলের প্যাডেল চলছে বেলুনওয়ালা
সঙ্গে ভরা হাওয়ার ভান্ড আর
কাঁধে নিয়ে রঙবেরঙ বেলুনের ঝোলা
পিছন পিছন ছুটে চলে ভীড় শিশুদের লোভে তার ।
একটা একটা বেলুন হাওয়ায় ভরে সঁপে দেয় শিশুদের হাতে
বেলুনওয়ালার সাইকেল এগিয়ে চলে আপন খেয়ালে
চলে যায় গ্রাম-গঞ্জ পেরিয়ে মফস্বল ছাড়িয়ে শহরের অন্তরালে
যত এগোয় ভীড় তত বাড়ে শিশুরাও বড় হয় হাওয়া বেলুনের সাথে
স্থান বদলায় সময় বদলায়, বদলায় শিশুদের চোখ
পালাবদলে হাওয়াবদলে বেলুনের আকার আর রঙও  বদলায়
বদলের এই সাপেক্ষতায় একই থেকে যায়

শুধু বেলুনওয়ালার মুচকি মুচকি মুখ ।   



চিত্র ঋণঃ Google.com








আজাহারুল ইসলাম

                                              পারলে ফিরে এসো! 



             আমি ভয় পাইনা, এমন কথা নয়
      তাকে হারিয়ে কষ্ট যে উধাও, এমনটাও নয়
               কেন?-- তবে গল্পটা শোনো,
   মোহনায় খসেছে আমার প্রিয়তমার চাঁদমুখটি,
   এই অভিমানি নৌকায়, রঙিন রামধনুখানি, সাদায়কালো মোহনায়
চুমুতিরে বিদ্ধ করেছিল আমায়
                                     

              সাগরের তীরে যে ঢেউ ছুটেছিল
                    ভীষণ অস্থির গতিতে,
        কোনও ক্ষুধার্ত কোকিল গভীর রাগে যেন
              ভেঙে ফেলেছিল বীণার সব তার
          আশ্চর্য পাঁচিলে তার মুখটি ছিল আঁটকে
    তোমায় বাসস্টপে কিছুক্ষন দেখতে পেলেও
              তোমায় স্বপ্নে দেখি আমি বহুক্ষন
         বলেছিল অভিমানি ইর্ষায় ইয়াস........!!! 
                        আমার প্রিয়তমা!

 পাখির পালকখানি তোমার অভিমানি পিঠপথে যখন
                    ছুটিয়েছিলাম ক্রমাগত,
 শরীরে লোমগুলি পারস্পরিক শ্রদ্ধায় আহত হয়েছিল,
  অবশ্য ভেজা বিড়াল প্রমান করতে আমায় ছাড়োনি,
কেন জানো?-ভদ্রতাহীন গল্পের পাঠক আমি তো নিজেই
       আচ্ছা প্রিয়তমা, স্বপ্নবাসরে ভেসেছ কখনও?
     না অন্ধকারে স্বপ্নের ভয়ে বাল্বটি জালিয়ে রাখ !
        আমি তো আগুনের জলে নেমেছি বহুবার
                       তোমায় না জানিয়ে!
                 দেখতে চাও কী এমন স্বপ্ন
            যা তুমি এর আগে কখনও দেখনি
       আমার ঐ হারানো আংটির কথা মনে পড়ে?
ওহহ, ভুলেই গেছিলাম, তুমি তো অন্য গ্রহের সদ্য চন্দ্র
 আমার স্বপ্নের গুরুতর মুহুর্তে ,আজও  আমি একা।
পোশাকের ভিতরে লুকানো নগ্নশরীরের মত লজ্জাহীন  
                                 আমি!! 
   পার্থক্য শুধু একটাই, তুমি ছুটেছ সুখের পিছনে 
                       আর আমি জয়ের!
                     আমি জয়ী হতে চাই
        আমি জানি তুমি তার অপেক্ষায় রয়েছ!
 ভুলে রয়েছি তোমায়, তবুও তুমি রাতের স্বপ্নে বহুক্ষন,
                শুধু পারলে ফিরে এসো!!!!


চিত্রঋণ- pinterest.com


Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান