অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Saturday, August 25, 2018

INDEX : JUGAL BANDI: JUNE-AUGUST 2018


INDEX/সূচিপত্র

2ND YEAR -3RD ISSUE (15TH ISSUE)




সম্পাদকের কথা/EDITORIAL 


কবিতা  /POETRY



PHOTOGRAPHY BY PRATIK .K. MUKHERJEE

যুগলবন্দী ১ -কবিতা -সম্পা দত্তঃ ভাঙনের জলছবি   (Click To Read)

Jugal Bandi 6 -Poetry-Mustaque Ahmedঃ Shore of Amour   (Click To Read)


যুগলবন্দী ১৫-কবিতা -মৌসুমি চক্রবর্তীঃ  দিগন্তে  (Click To Read)


PHOTOGRAPHY BY MUSTAQUE AHMED


Jugal Bandi 3 -Poetry-Mustaque Ahmedঃ Bereaved Eve (Click To Read)


PHOTOGRAPHY BY MUSTAQUE AHMED

যুগলবন্দী ৪ -কবিতা -মুস্তাক আহমেদঃচির প্রতীক্ষারত- বুড়ি পুকুরের পাড়ে  (Click To Read)

যুগলবন্দী ১০-কবিতা -সান্ত্বনা দাসঃছায়ায় ঘেরা  (Click To Read)


PAINTING BY SOHAM SANYAL


Jugal Bandi 5 -Poetry-Mustaque Ahmedঃ  The Last Train  (Click To Read)


PHOTOGRAPHY BY MUSTAQUE AHMED


যুগলবন্দী ৭ -কবিতা -মুস্তাক আহমেদঃ হৃদমাঝারে মায়া-মেঘ  (Click To Read)




PHOTOGRAPHY BY MUSTAQUE AHMED

যুগলবন্দী ১১-কবিতা -মুস্তাক আহমেদঃঅহম ঔদ্ধত্য  (Click To Read)


যুগলবন্দী ২০ -কবিতা -সম্পা দত্তঃঅন্তহীন- আকাশলীনা  (Click To Read)

যুগলবন্দী ২৩ -কবিতা -সম্পা দত্তঃ বিরহের পরে  (Click To Read)



PHOTOGRAPHY BY MUSTAQUE AHMED


যুগলবন্দী ৯ -কবিতা -সান্ত্ব না  দাসঃ  ঝুমা (Click To Read)


PHOTOGRAPHY BY PRATIK .K. MUKHERJEE

 যুগলবন্দী ১৬-কবিতা -মৌসুমি চক্রবর্তীঃবৃষ্টি স্নাতা শহর (Click To Read)


PHOTOGRAPHY BY FIROJ AKHTAR

যুগলবন্দী ১8 -কবিতা -মৌসুমি চক্রবর্তীঃ বৃষ্টি বিন্দু  (Click To Read)

PHOTOGRAPHY BY MOUSUMI CHAKRABORTY

যুগলবন্দী ১৯-কবিতা -অভীক দে সরকারঃ আমার আকাশ  (Click To Read)


PHOTOGRAPHY BY SAMPA DUTTA


जुगल बंदी २२ : कबिता : अभीक दे सरकार:सावन  (Click To Read) 

PHOTOGRAPHY BY FIROJ AKHTAR


যুগলবন্দী ২৫ -কবিতা -সান্ত্বনা দাসঃ বৃষ্টি তুই কার? (Click To Read) 



গল্প / STORY


PAINTING BY SOHAM SANYAL

যুগলবন্দী ৮-গল্প -সিলভিয়া ঘোষঃ লেডিস স্পেশাল (Click To Read)

যুগলবন্দী ১২ -গল্প -শম্পা সান্যালঃআষাঢ়ে গল্প  (Click To Read)

PHOTOGRAPHY BY MUSTAQUE AHMED

যুগলবন্দী ১৩-গল্প -শম্পা সান্যালঃভালোবাসা কারে কয়  (Click To Read)


রম্য রচনা /SKIT


PHOTOGRAPHY BY SURAJIT MAHATO

যুগলবন্দী ১৭-রম্য রচনা -শম্পা সান্যালঃ রম্য রচনা (Click To Read

যুগল বন্দী বিশেষ  / JUGAL BANDI SPECIAL 


PHOTOGRAPHY BY SAMPA DUTTA DEY


যুগলবন্দী ২৪ -কবিতা ( বিশেষ ) -সম্পা দত্ত দেঃ যুগল বন্দী  (Click To Read)


উপ সংহার  / JUGAL BANDI SPECIAL  


PHOTOGRAPHY BY SWARUP CHAKRABORTY


যুগলবন্দী ২ -কবিতা (বিশেষ) -  অঝোর -দেবশ্রী চক্রবর্তীঃ











Friday, August 17, 2018

যুগলবন্দী ১ -কবিতা -সম্পা দত্তঃ প্রতীক কুমার মুখার্জি


    যুগলবন্দী- সংখ্যা # ১    

কলমেঃ সম্পা দত্ত
ক্যামেরায়ঃ প্রতীক কুমার মুখার্জি 

ভাঙনের জলছবি































জল টল্ টল্ 
        চোখ ছল্ ছল্
দুঃখী দুঃখী মুখ
       নেই যেন সুখ।

ন্যাড়া মাঠটা 
যেথায় হয়েছে শেষ
         খড়-খাপলার
   ঘরে মা, রয়েছে বেশ।

ত্রিপলের ছাদ, 
       দরমার বেড়ায় 
চার দেয়াল, 
জল জমেছে, 
দুঃখিনী মায়ের
      তবু নেই খেয়াল।

আগের বর্ষায়
 মা' এর ভেঙ্গেছে ঘর
দিন-দুঃখিনী মায়ের
      বুকে ভালবাসা
ভাঙ্গেনি অন্তর।

স্বামীহারা সে' যে--
"সোজন_বাদীয়ার_ঘাট"
 আজো রয় নীরবে
মা' যেথায় হয়েছে
নদী ভাঙ্গনের ন্যাড়া মাঠ



অলঙ্করণ ঃ ফিরোজ আখতার, স্বরূপ চক্রবর্তী












Jugal Bandi 3 -Poetry-Mustaque Ahmedঃ Mustaque Ahmed

    JUGAL BANDI NO.# 3    

Written By: Mustaque Ahmed
Photography: Mustaque Ahmed

Bereaved Eve


''




No single word, no promises,
My heart waits eagerly
When the sun vanishes.

The western horizon
Perhaps knows the reason
Of this anxiety,
My heart is in that prison,
Still captivated for infinity.

The gloom and the redness of the firmament,
Is the result of that bereavement.
The eve grieves - 
For the returning bird that leaves.

The gentle movement of your wings
Scatters fragrance,
I am at the ocean's edge,
To have that last glance.

You,
Gradually vanishing to the verge,
The dying sun at your behind.
My regards are floating with this surge,
And cares with the wind.



Illustration: Firoz Akhtar and Swarup Chakraborty



























যখন তখন-ভ্রমণ-কালাপানির দেশ আন্দামান (পর্ব-৪ )-তৃপ্তি মিত্র

কালাপানির দেশ আন্দামান (পর্ব-৪)

তৃপ্তি মিত্র 

সংখ্যা -২৬, (১৭ ই আগস্ট , ২০১৮)



যথা সময়ে ডিগলিপুর পৌঁছে গেলাম ৷ অতীতের পোর্ট কর্নওয়ালিস হল বর্তমানের " ডিগলিপুর " ৷ অঞ্চলটি বাঙালি অধ্যুষিত ৷ এখানকার নাম করা হীরা হোটেল বাঙালি পর্যটকদের খুব প্রিয় ৷ গাইডের কথা মতো এখানেই প্রাতরাশ সারলাম হিংএর কচুরি ছোলার ডাল সহযোগে ৷ প্রাতরাশেই বাজি মাত ওফ কি অপূর্ব তার স্বাদ ৷ যেন কোলকাতার শ্রীহরির সেই চেনা স্বাদ ৷ এ অভিজ্ঞতা আমাদের বাঙালিদের জীবনে ঘটে নি হলফ করে বোধহয় কেউ বলতে পারবে না  ৷ বিদেশ বিভুয়ে ঘুরতে গিয়ে চেনা পরিচিত স্বাদ খুঁজে পাওয়া মানে হাতে চাঁদ পাওয়ার সমান ৷ যাইহোক দিপ্রাহরিক খাবারের অর্ডারও করে দিলাম ৷ দুপুর একটা দেড়টার মধ্যে চলে আসবো কথা দিয়ে সোজা চলে গেলাম " রস ও স্মিত "  আইল্যান্ড ৷ 
প্রতিবারের মত আধার কার্ড দেখাতে হয় সঙ্গে যে কয়জন আছি সবারই ৷ আমরা মোট আটজন ছিলাম , দুটো স্পিড বোট পেলাম , এক একটি বোটে চারজন ৷ নিয়ম মাফিক লাইফ জ্যাকেটে সবাই সেজে উঠলাম  ৷ আমাদের আগে আরো বেশ কয়েকটি বোট রওনা দিল ৷ সবকটি বোটই নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলছে ৷ এ কয়দিনে সমুদ্র আর বোটকে খানিকটা আপন করে ফেলেছি ৷ বোটে যেতে যেতে লক্ষ্য করলাম দুদিকে দুটো আইল্যান্ড মনে মনে ভাবছি এখানে কি এমন দেখার আছে ৷ সে ভ্রম ভাঙ্গল খানিক পরে ৷ বোট অনেকটা আগে আমাদের নামিয়ে দিল মানে যতটা জল ছিল ৷ এরপর বালির চরা হেঁটেই এগোছি দূরে রোপোলি বালুর পাহাড় ৷ বালুপাহাড়ে এসে যা দেখলাম জানিনা কতটা ভাষায় প্রকাশ করতে পরবো ৷ এখানের জলের সোভা দেখলে মন প্রাণ সব জুড়িয়ে যাবে ৷ কি অপরূপ তার সোভা ৷ খুব কাছে সবুজ , একটু দূরে ফিরোজা ,আরো দূরে তিব্র কালচে নীল ৷ এরপর আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল মিঁলেমিশে একাকার ৷ কোনটা সমুদ্রের নীল কোনটা আকাশের নীল আলাদা করার উপায় নেই ৷ অনেকক্ষন ধরে সমুদ্র স্নান করলাম ৷ চেঞ্জরুম আছে যদিও তেমন উন্নত মানের কিছু নয় ৷ যাইহোক পাওয়া গেল এটাই সান্তনা ৷ 

কথা মতো হিরা হোটেলে ফিরে দূপুরের আহার আলুরচোখা , ডাল , পার্সে মাছের ঝাল সঙ্গে দেশি মুরগি ৷ খুব চেটে পুটে খেয়ে মন ভরে গেল ৷ সঙ্গে উপরি পাওনা যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে যাওয়া আমার এক দিদিকে পেলাম ৷ মাধ্যম একটা ফোন নাম্বার দিদিকে শেষবার দেখেছি আমি তখন ক্লাস ওয়ান হব হয়ত ৷ ফোনে কথা অনুযায়ী জামাইবাবু হিরা হোটেলের সামনে এসে দাঁড়ায় ৷ ওখান থেকে দিদির বাড়ি ৷ এরপর যা হয় দিদি বোন গলা জড়িয়ে অঝোরে কান্না ৷ কত গল্প , হাসাহাসি ৷ রাত্রে বিশেষ কিছু খাব না জাননো সত্বেও দিদি , জামাইবাবু ছাড়ল না ৷ রাত্রে  "বি . ডি " লজে ফিরতেই হল ৷ কারণ পরবর্তী গন্তব্য  " হ্যাভলক " ৷ দিদির কান্না ভেজা মুখটা বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগলো ৷ দিদির তিন মেয়ে কারোর সঙ্গে দেখা হল না ৷ বড় ,ছোট মেয়ে পোর্টব্লেয়ারে থাকে পড়াশুনার জন্য ৷ মেজো কোলকাতায় এমফিল পড়ছে ৷ আন্দামানের প্রতিটি স্কুল কেন্দ্রীয় মধ্য শিক্ষা ( C.B.S.E ) দ্বারা অনূমোদিত ৷ মহাবিদ্যালয় গুলি পন্ডিচেরি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পলিটেকনিক মহাবিদ্যালয় নিউদিল্লী দ্বারা অনুমোদিত ৷ ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়াশুনা এখানে বাধ্যতামুলক  ৷ 

আন্দামান ভ্রমনে ট্যুর এজেন্সির সাহায্য নেওয়াটাই শ্রেয় ৷ আমাদের এজেন্সির তত্বাবধানে ম্যাক্রুস জাহাজে চেপে হ্যাভলকের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম ৷ সমুদ্রের সোভা দেখতে দেখতে দু ঘন্টার মধ্যে হ্যাভলক পৌঁছে গেলাম ৷ এটি মুলত দেশ ভাগের সময় সর্বস্ব হারানো বাংলা দেশি মানুষের উপনিবেশ ৷এই দ্বীপটি সকল পর্যটকের অত্যন্ত প্রিয় ৷ এখানের " রাধানগর "   বিচ ২০০৪ সালে বিশ্বের সেরা বিচে সন্মানিত হয় ৷ দিগন্ত বিস্তৃত নীল জলরাশি , শুভ্র বালুতট এই বিচের সৌন্দর্য্য কে করে তুলেছে আরো মোহময়ী ৷ জলের রং পান্না সবুজ ৷আন্দামানের সব বিচ স্নানের উপযোগী নয় ৷ রাধানগর তেমনই বিচ যা স্নানের উপযোগী ৷ ঢেউ এর আকর্ষনে আর থাকতে পারলাম না নেমে পড়লাম ৷ দীর্ঘক্ষণ সমুদ্র সোহাগ উপভোগ করলাম ৷ স্নান শেষে সমুদ্র লাগোয়া ধাবায় আহার সারলাম ৷ হ্যাভলকের এলিফ্যানটা বিচে সমুদ্র ক্রিড়ার পসরা সাজানো  ৷ আমরাও সেই দলে ভিড়ে গেলাম ৷ এরপর নীল দ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম ৷ ধীরে ধীরে হ্যাভলকের সব কিছু মিলিয়ে গেল ৷ একসময় সব মিলিয়ে জল আর জল ৷ প্রায় দেড় ঘন্টার মধ্যে সর্বগ্রাসী নীলের মাঝখান ছেড়ে পৌঁছে গেলাম " নীল আইল্যান্ডে " ৷ 

নীল একটি ছোট্ দ্বীপ ৷ এখানে ও সর্বস্ব হারানো বাংলাদেশি মানুষের আধিপত্য ৷ দ্বীপটি সবুজ বনানীতে ঘেরা ৷ শান্ত , স্নিগ্ধ , নির্জন সাগর তট ৷ আর ফসলে ভরপুর ৷ এখানে ও সমুদ্র ক্রিরায় সাজানো পসরা ৷ ভরতপুর বিচে গ্লাস বোটে চড়ে রং বেরং এর প্রবাল , রঙ্গীন মাছ দেখলাম ৷ সিওয়াক ,স্নরকেলিং , স্কুবা ডাইভিং করার পক্ষে উপযুক্ত ৷ বিচ লাগোয়া দোকানিরা প্রচুর পসরা নিয়ে বসেছে ৷ 
এবার ফেরার পালা ৷ জাহাজ যতো তার গতি বাড়াছে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ যেন গিলে খেতে আসছে ৷ আবহাওয়া খুব খারাপ ৷ মাঝে মাঝে বৃষ্টি ৷ অসম্ভব ঢেউ এর আছাড় আর দুলুনি সহ্য করতে না পেরে অনেকেই বমি করে ফেলছে ৷বার বার ঘড়ি দেখছি আর ঠাকুর কে স্মরন করছি ৷ সময়  কিছুতেই পার হতে চাইছে না ৷ অবশেষে ঘোষনা করল আর মাত্র ৩০মি সময় লাগবে ৷ এবার ধড়ে প্রাণ ফিরে পেলাম ৷ দূর থেকে পোর্টব্লেয়ারের আলো দেখতে পেলাম ৷ জাহাজ থেকে নামতে না নামতে আবার ভিজলাম ৷ পরের দিন সকাল ১০ ফ্লাইটে কোলকাতার রওনা দিলাম  ৷ আর সঙ্গে করে নিয়ে আসলাম আন্দামান দর্শনের তৃপ্তির স্বাদ ৷ যে স্বাদ আস্বাদন করতে দেশ বিদেশ থেকে বহু পর্যটক ছুটে আসে ৷ আমিও সেই দলে সামিল হলাম  ৷ 
                      

সমাপ্ত
ছবিঃ লেখিকা


Wednesday, August 8, 2018

যখন তখন - ছড়া-ভূরিভোজের রকম সকম- স্বান্ত্বনা দাস

ভূরিভোজের রকম সকম

স্বান্ত্বনা দাস

সংখ্যা -২৫, (৮ ই আগস্ট , ২০১৮)

বঙ্গ জুড়ে ভূরিভোজের বিশাল আয়োজন ,

সেই তত্ব শোনাতে আজকরি আলাপন। 

বোশেখ মাসে পড়ল ঝড়ে কচি কাঁচা আম, 

চাটনি খেলাম আচার খেলাম পুরল মনস্কাম। 

জষ্ঠ্যি মাসে জামাইষষ্ঠী ভূরিভোজের মেলা,

 জামাই ভোজে পড়ল দেখ পঞ্চব্যঞ্জন থালা। 

জাম এল আর কাঁঠাল এল মিষ্টি হাঁড়ি হাঁড়ি,

 রসগোল্লা কাঁচাগোল্লা আসল ভূরি ভূরি। 

বর্ষা কালে ইলিশ ভাপা চিংড়ি মালাইকারি, 

ভাদ্র মাসে গাছে গাছে তাল যে সারি সারি।

 তালের বড়া তালের লুচি তালেরই উৎসব, 

ভূরিভোজের আনন্দেতে উঠল কলরব। 

শীতের দিনে চাদর গায়ে বসে মিষ্টি রোদে ,

খেজুর রসে ডুবিয়ে লুচি মন ভরে আল্হাদে। 

পিঠে পুলি পাটিসাপটা দুধের পুলি মালপো

 এসব কথা বঙ্গবাসীর নয়ত শুধু গল্প। 

এস না ভাই সব ভুলে আজ ভূরিভোজে যাই

,দুঃখ ভুলে আনন্দেতে পেটটি পুরে খাই।

Sunday, August 5, 2018

যখন তখন-ভ্রমণ-কালাপানির দেশ আন্দামান (পর্ব-৩ )-তৃপ্তি মিত্র

কালাপানির দেশ আন্দামান (পর্ব- ৩)

তৃপ্তি মিত্র 

সংখ্যা -২৪, (৬ ই আগস্ট , ২০১৮)


আমাদের গাড়ি মাঝে মাঝে গতি কমিয়ে চলার চেষ্টা করছে যদি গাছের আড়ালে বা জঙ্গলের মধ্যে আবার কিছু জারোয়া দেখতে পাই সেই উদ্দেশ্যে ৷ কিন্তু আমাদের উৎসুক চোখের ক্ষমতা নেই দুশো আড়াইশো ফুট উদ্ধত গাছ কে উপেক্ষা করে তাদের খুঁজে বার করা ৷ আর সম্ভব ও না জারোয়াদের গায়ের রং আর জঙ্গলের ঘন অন্ধকার মিলেমিশে একাকার ৷ ওদিকে আইনের কড়াকড়ি যথেষ্ট ৷ গাড়ির গতি ৪০ কিলোমিটারের নিচে রাখা যাবে না ৷
লাইমস্টোন কেভ

 চালক ভাইয়ার কাছে শুনলাম একসময় " হিউমেন সাফারি " নিয়ে দেশ বিদেশে প্রবল আপত্তির ফল স্বরুপ এই আইনের কড়াকড়ি ৷ সকাল ছটা থেকে তিন ঘন্টা পরপর অর্থাৎ ৬ , ৯ , ১২ , ৩ পুলিশি প্রহরায় গাড়ির কনভয় ছাড়া হয় ৷ এরপর আর কোন গাড়ি এখান থেকে যেতে দেওয়া হয় না ৷ এই পথটুকু যেতে যেতে চালক ভাইয়ার কাছে ওদের গল্পই শুনলাম ৷ জারোয়াদের একাংশ সভ্যতার ছোঁয়া পেয়েছে ৷ ওদের জন্য তৈরি হয়েছে স্কুল ৷ মোবাইল ব্যবহার শিখেছে ৷ হিন্দি , বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারে ৷ তবে উগ্র জারোয়ারা মনুষ্য সমাজে মেশে না বরং সভ্য মানুষদের ঘৃনা করে ৷ কিছু কিছু আবার জঙ্গল ছেড়ে হাইওয়েতে চলে আসে সভ্য মানুষদের থেকে নেশার বস্তু সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ৷ 

দিনদিন জারোয়াদের জনসংখ্যা তলানীতে ঠেকেছে ৷ এই আদিম মানুষগুলি কে টিকিয়ে রাখা এখন বড় চিন্তার ৷ তাই ওদের কল্যাণের কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সভ্য মানুষের সংস্পর্শ থেকে ওদের দূরে রাখতে হবে  ৷ না হলে এই জনজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে ৷

 নানান গল্প শুনতে শুনতে লোমহর্ষক পথ অতিক্রম করে আমরা পৌঁছে গেলাম নীলাম্বর " জেটি ঘাট ৷এখানে পারমিট করিয়ে নিয়ে গেল " নয়াডেরা " জেটি ঘাট ৷ এখানে প্রাতরাশ সারলাম তারপর রওনা দিলাম প্রকৃতির বিস্ময় " লাইম স্টোন কেভের " উদ্দেশ্যে ৷ আমাদের স্পীড বোট ক্ষিপ্র গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে মনের মধ্যে উৎসাহ ভয় দুটো মিলেমিশে একা কার ৷ একসময় স্পীড বোট  এর গতি কমে গেল প্রায় দেড় কি . মি রাস্তা ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের মধ্যে ক্রমশ ঢুকে যাচ্ছি ৷ এবার মনের মধ্যে অন্য চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে ৷ এতো কুমিরের আঁতুড় ঘর ৷ এই না ঘাড়ে ঝাপিয়ে পড়ে ৷ বা লাফিয়ে বোটে উঠে যায় ৷ 

যেতে যেতে পেয়ে গেলাম বনদপ্তরের কাঠের তৈরি আলপথ ৷ বোট ছেড়ে উঠে পড়লাম কাঠের আলপথে ৷ ওরে বাব্বা এখানেও নিস্তার নেই , দুপাশে ঘন জঙ্গল ৷ এতক্ষণ কুমিরের ভয়ে কুঁকড়ে ছিলাম এবার যদি চিতা বাঘ বাবাজী উদয় হয় পালাবার কোন রাস্তাই নেই ৷
কাঠের আলপথ
আর সবুজ সাপ , কেউটে , ময়াল কি কি আছে জানিনা ৷ অগত্যা প্রাণ হাতে নিয়ে গাইড কে অনুসরণ করলাম ৷ মাঝে মাঝে গাইড কে জিজ্ঞাসা করছি আর কতদূর যেতে হবে ভাই ৷ আলপথ শেষ করে এবার সমতল পথ হাঁটছি আর হাঁটছি ৷ বেশ মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠা ছোট্ট একটা গ্রাম ৷ সমতলে যে সব গাছগাছালি হয় সবই আছে ৷ জমিতে নতুন ধান চারা মাথা দোলাচ্ছে মহা আনন্দে ৷ চরে বেড়াছে মুরগি , ডোবায় হাঁসের ঝাঁক , মাঠে গরু , বাছুর ৷ বড় বড় সাইজের নারকেল পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে কোনটা ওখানেই গজ বেরিয়ে পড়ে আছে ৷  গাইডকে অনুসরণ করতে করতে অবশেষে পৌছে গেলাম প্রকৃতির বিস্ময় " লাইম স্টোন কেভ " ৷ এটি মুলত প্রাকৃতিক চুনাপাথরের সঙ্গে বৃষ্টির জলের বিক্রিয়ায় সৃষ্ট যা কিনা বিভিন্ন শেপ তৈরি করেছে , কোনটা দেখে মনে হচ্ছে স্বয়ং শিব ঠাকুর বসে আছে , তো কোন টা হাতি লম্বা শুঁড় তুলে দাঁড়িয়ে আছে যা দেখে এতক্ষণের কষ্ট উৎকন্ঠা সব দূর হয়ে গেল ৷ টপ টপ করে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরছে যা চুনাপাথরের সংস্পর্শে এসে জমাট বেঁধে বিভিন্ন আকৃতি ধারণ করছে যা পুরোটাই প্রকৃতি নির্ভর ৷ 
শেষে লেবু জল পান করে একই রাস্তায় বিদায় নিলাম ৷ অবশ্য স্থানীয়দের থেকে জেনে নিলাম এখানে বাঘ , কুমীর , ইত্যাদি ইত্যাদি কেউ আছে কিনা ৷ তারা আমাদের নির্ভাবনায় ফিরতে বললো এখানে নাকি ওসব কিছু নেই ৷ 

  এবারের গন্তব্য আর এক বিস্ময় " মাড ভলকান " ৷ এখানের যাতায়ত রাস্তাটা বেশ কষ্টকর ৷ ধাপে ধাপে মাটির সিঁড়ি বানানো ৷ কোনটায় কাঠের টুকরো আছে কোনটায় নেই ৷ বেশির ভাগ জায়গা পিছল ৷  রাস্তার দুদিকে ঘন জঙ্গল ৷ কোন গাইড নেই নিজেদেরই যেতে হচ্ছে ৷ তবে সঙ্গী হল একটি হাড় জিরজিরে সারমেয় ৷ ও কিন্তু পুরো সময়টা আমাদের সঙ্গ দিল ৷ জল ছাড়া সঙ্গে কোন খাবার নেই ৷ ওকে তুষ্ট করতে পারলাম না ৷ " মাড ভলকান " দেখলাম যার থেকে ক্রমাগত মাটির নিচ থেকে উঠে আসছে গরম কাদামাটি ৷ সেই কষ্টকর রাস্তাটি ওঠা যতো সহজ মনে হয়েছিলো নামা ততোধিক কষ্টকর ৷ ধীরে ধীরে আমরা সবাই নিরাপদে নামলাম ৷ গাইড সারমেয় আমাদের পিছন পিছন নেমে এল ৷ নিচে এসে গাড়িতে রাখা বিস্কিট দিলাম সারমেয় কে ৷ আমাদের গাড়ি ছেড়ে দিল , তাকিয়ে এক ঝলক দেখে নিলাম সারমেয় প্রাপ্য ঘুষ পেয়ে মহাখুশি  ৷

রঙ্গতে রাত্রিবাসের পর সূর্যোদয় দেখলাম রঙ্গতের আম্রকুঞ্জ সাগর তটে ৷ মাছধরায় ব্যস্ত জেলেকে ক্যামেরা বন্দি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম ৷ জেলে ভাইয়ের ছবি নিচ্ছি বুঝতে পেরে জিজ্ঞেস করল ছবি তোলবা ৷ বললাম হ্যাঁ ৷ সঙ্গে সঙ্গে এতো সুন্দর একটি ভঙ্গি দিল ৷ সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটা শট নিয়ে নিলাম ৷ 

কিছুক্ষণের মধ্যে সূর্যদেব তার সোনার আলোয় জ্বলজ্বল করে উঠল ৷ সেই মোহময়ী আভায় ভেসে গেলাম ৷ প্রাণ ভরে শান্ত স্নিগ্ধ সূর্যের পরশ মেখে বিদায় নিলাম ৷ পথে পড়ল পঞ্চবটী জলপ্রপাত ৷ এরপর এলাম মরিছিদ্রা সাগর তটে ৷ আন্দামানের প্রতিটি সাগর তট ভিন্ন ধরনের ৷ কোনটার সঙ্গে কোনটার মিল নেই ৷ কোনটায় প্রবল ঢেউ , কোনটায় বড় বড় পাথরের চাই , কোনটা শান্ত রূপালী বালুর চাদর বিছানো ৷ গাইডের নির্দেশ ছাড়া নামা অনুচিত ৷ অনেকক্ষণ এই সাগর তটে কাটালাম ৷ পাথরের  গায়ে আছড়ে পড়ছে ফেনিল জলতরঙ্গ ৷ যতদূর চোখ যায় সমুদ্র  আর আকাশ মিলেমিশে একাকার ৷  চোখ , মন সার্থক করে ডিগলিপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম ৷  


Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান