অলীক পাতার অন্যান্য সংখ্যা- পড়তে হলে ক্লিক করুন Library ট্যাব টি



। । "অলীক পাতা শারদ সংখ্যা ১৪৩১ আসছে এই মহালয়াতে। । লেখা পাঠানোর শেষ তারিখ ১৫ ই আগস্ট রাত ১২ টা ।.."বিশদে জানতে ক্লিক করুন " Notice Board ট্যাব টিতে"

Monday, December 24, 2018

অনু গল্প-সিলভিয়া ঘোষ


মরশুম



ছবিঃ সোহম সান্যাল




পার্কস্ট্রিটের ঝাঁ চকচকে
  রূপালীসোনালী আলোর মোড়কে শীত নেমে এসেছে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি কোন এক ছুটির দিনে রাতে। গীটারের আওয়াজ ভেসে আসছে মিউজিক ওয়ার্ল্ডের সেই পুরনো দোকান থেকে, কী যেন গানটা?   'আমার সাধের দার্জিলিংটা ..'হ্যাঁ হ্যা, মনে পড়েছে রাধিকার ! অঞ্জন দত্তের গান।  এসব গান শুনলেই ছুটে চলে যেতে চায় মন তার সেই অচেনা , অদেখা অথচ ভীষণ চেনা, রূপকথার গল্পের  সেই   পাহাড় , নদী, ঝর্ণার দেশে ! আজকাল বহুতল বাড়ির জানালা  দিয়ে দেখা পর্ণমোচী গাছটা কে নিজের সাথে  তুলনা করে সে। বয়সের সাথে সাথে  রুক্ষতা আর রূপের জৌলুস কমে গেছে ঠিক ঐ গাছটার মতন। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত তার যত্ন করেও যেন চোখের নিচের কালিটা কে আর কপালগালের বলীরেখা কে ঢাকতে সে যেন অক্ষম। আয়নার সামনে আজকাল যেতে তার ভয় হয় !  যেন মনে হয় ঐ গাছটাই দাঁড়িয়ে আছে। তবু রাত গভীর হলেই  কিসের টানে কতগুলো লোভী , রক্ত চক্ষু শকুন তার দেহ টাকে  ছিঁড়ে কুটে খেয়ে যায় তার রহস্য বোঝে না সে। প্রচণ্ড  খিদেতে প্রায়  পাগলের মতোন যখন সে ছুটে চলেছে সামনের  রঙচটা  কোন ডাল ভাতের দোকানে তখনসেখানে   সমস্ত খাবার দাবার ধুয়ে  মুছে  পরিষ্কার করে  উঠেছে  তার  পনেরো বছরের ভাই।  যার প্যান্টের পকেটে  লুকোন আজ স্যালাডের শশাটুকুও নেই ! রাধিকা ছুটে চলেছে শহরের  এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পেটে অসম্ভব খিদের যন্ত্রণা নিয়ে, আর পর্ণমোচী গাছটা  দু হাত বাড়িয়ে তাকেই যেন ডাকছে নিত্য জগতের দিকে ! যেখানে রূপ, রস, গন্ধ, বর্ণ সকল ই  অনিত্য... 




ছবিঃসোহম সান্যাল  
পত্রসজ্জাঃস্বরূপ চক্রবর্তী

















ছোট গল্প-সান্ত্বনা দাস


কল্পলোক 

 
ছবিঃ লেখিকা


      অবন্তিকা নগরীর রাস্তায় প্রভাতশীতের ঘন কুয়াশার চাদর। প্রভাতী সূর্যের হালকা রঙচ্ছটা প্রকৃতির বুকে প্রবেশাধিকার পাওয়ার জন্য কুয়াশার  আচ্ছাদনের ফাঁক দিয়ে অল্প উঁকি দিচ্ছে। পথে এক সুতনুকার নূপুরের নিক্কণ ছন্দে ছন্দে ধ্বনিত হচ্ছে। সুতনুকা আর কেউ নয়, কমলিকা, অবন্তিকা নগরীর রাজকন্যা। ফুল সংগ্রহে বেরিয়েছে কন্যা। শীত কুসুমের মালা গেঁথে পরিয়ে দেবে তার প্রিয়র  কণ্ঠে। হাত ধরে ঘুরে বেড়াবে দু'জনে বনবিথীকায়। গান শুনবে দূর দেশ থেকে উড়ে আসা পক্ষীকুলের। শিশির বিন্দুরা রাজকুমারীর আঙুলের ডগা ছুঁয়ে ঝরে পড়ছে মাটিতে। কুহেলীর হালকা আচ্ছাদনের মাঝে খুঁজে নিচ্ছে ফুটন্ত গাঁদা, ডালিয়া আর হরেকরকম ফুল। রাজকন্যার সখী লবঙ্গলতা, চপলা এবং বাকপটু। রাজকন্যার কেশদামের উপর বিন্দু বিন্দু শিশির সযত্নে হাত দিয়ে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে সহাস্যে বললে "সখী, প্রভাত সূর্যের আলো তোমার চিবুক স্পর্শ করেছে, মোহময়ী হয়ে উঠেছ তুমি। হলুদ ডালিয়ারা তোমার স্পর্শ পাওয়ার জন্য শিশিরে সিক্ত হয়ে তোমার দিকে তাকিয়ে আছে। এই মূহুর্তে কোন রাজপুত্রের ধ্যানে তুমি মগ্না? শোনা গেছে সৌন্ধব রাজপুত্র নাকি শিকারের আশায় এই বনেই নাকি প্রবেশ করেছেন। "

        কমলিকা স্মিত হেসে পুষ্প চয়ন করতে লাগলেন। কানে এল কোন রাজপুত্রের ঘোড়ার পায়ের শব্দ। সূর্যদেব আড়মোড়া ভেঙ্গে ধীরে ধীরে প্রকাশিত বলেন। দূরে পাহাড়ের চূড়ায় শুভ্র বরফ রৌদ্রের স্পর্শে রূপালী হয়ে উঠল। ঠিক সেই সময় শীতল ঝর্নার জল লাফিয়ে উঠে কমলিকার কপোল ও ভালে ছড়িয়ে পড়ল। চমকে উঠল কমলিকাসখী লবঙ্গ জলের ছিটে দিয়েছে কপালে,বলে "কিরে ফুল তুলতে এসে ঘুমিয়ে পড়লি নাকি? তাড়াতাড়ি চল, আজকে হাটবার দোপাটি গুলো শুকিয়ে যাবে।"অলস পায়ে কমলিকা উঠল। ফুলের ঝুড়ি মাখায় নিয়ে হাঁটল হাটের পথে। মনে মনে বলল" আমাদের স্বপ্নও দেখতে নেই। "




ছবিঃলেখিকা 
পত্রসজ্জাঃস্বরূপ চক্রবর্তী


















কবিতা-নিশীথ বরণ চৌধুরী


যদি বলতে পারতাম

Picture Courtesy: Google Image


              

যদি বলতে পারতাম,হারানো স্রোতের পথে,
একাকী নির্ঝর কী অভীপ্সায় ?
অক্লেশে মুখ লুকায় শৈবাল দামে।
যদি  বলতে পারতাম-
অনুচ্চারিত শব্দের মালা শুকনো ফুলের পাপড়ির  মতো,
কেন ঝরে পড়ে নির্ঝরের পথে।
যদি জানতাম প্রেমও নেবে স্বেচ্ছা নির্বাসন,
উপলব্ধ হবে জীবনের গভীর প্রত্যয়,
কী বা দোষ তার?
যদি বলতে পারতাম-
হতাশ বেকারের বুক ভরা দহন,
কেন বর্তমান  সমাজ  পারেনি করতে  নির্বাপন?
তুমি কি বুঝবে বন্ধু আমার,
যে ব্যথা হৃদয় বিথারে প্রথিত আজও 
নির্ঝরের  হারানো স্রোতেও 
কেন উঁকি মারে  বার বার?



চিত্রঋণঃগুগল ইমেজ  
পত্রসজ্জাঃস্বরূপ চক্রবর্তী




















কবিতা-কৃষ্ণা সাহা


একটু উষ্ণতা

Picture Courtesy: Google Image


একটা রাতের উষ্ণতার
     
প্রতিশ্রুতি চেয়েছিলো
               
গভীর প্রেম।
ভোরের শিশির বিন্দুর
দ্রুত বাস্পায়ন মনে করিয়ে দেয়
শিশির হয়ে ফিরে আসবে আবার
     
ভোরের রক্তিম আলোয়।
বাহারি প্রজাপতিরা মাধুকরী
হলে,মরশুমী ফুলেরা মিলনের
উৎসুকে চপলতায় আন্দোলিত,
রাতের আঁধারে রাজপথে
     
চারপেয়ে জীব কুন্ডলী
পাকিয়ে অপেক্ষায় দিনের
             
উষ্ণতার।
কুয়াশার ঘেরাটোপে কত
পথিক পথ হারায় অবলিলায়
তবুও শরীরি উষ্ণতায় জন্ম নেয়
কোন এক নূতন প্রজন্ম,
পুরোনোকে পিছে ফেলে
এগিয়ে যাবার পালা নূতনের।
হিম শীতল হলেও পথ
 
প্রেম এঁকে দেয় ওষ্ঠে উষ্ণতার রঙিন
আলপনা সজীবতার বাতাস লাগে
         
প্রানে......
আগামী বসন্তের আহ্বানে
আকাশ বাতাস মুখরিত হয়ে
বসন্ত আসে গুটি গুটি পায়ে
          সন্তর্পণে।






চিত্রঋণঃগুগল ইমেজ  
পত্রসজ্জাঃস্বরূপ চক্রবর্তী















চিঠি- ঊর্মিমালা মজুমদার

আকাশের ঠিকানায়

Picture Courtesy: Google Image


                        শ্রীচরনেষু দুর্গা মা,
                                          দশমীর পর অন্তিমে আসিলো বিজয়া। আজ দুই বৎসর হইলো পূরণ,ইহোলোকের সর্ব বাধন ছিন্ন করিয়া বিদায় লইয়াছেন আমার মা।সেই যে তুলসী চন্দন লেপন করিয়া,নিথর চরণে আলতা রাঙাইয়া,এয়ো সিঁথিতে সিন্দুর ভরাইয়া,নব বধূ বেশে তাঁহারে সাজাইয়া,সুগন্ধি ধূপ শিওরে জ্বালাইয়া,কোনো এক নাম না জানা পথের উদ্দেশ্য রওনা করিয়া দিয়াছিলাম,তিনি আর তো ফিরিলেননা।তাঁহার নতুন ভিটের নাম ঠিকানা সে যে মর্ত্যবাসীর অজানা।লোকে বলে মা স্বর্গলোকে,হরগৌরীর আলয়ে থাকে।জগৎ জননী তোমার নিকট আর্জি আমার তাই,তোমার হিয়ার মাঝে পরম যত্নে যেন হয়গো তাঁহার ঠাঁই।চির শান্তির শীতল ছায়ায় আশ্রয় দিও তুমি, যুগে যুগে এই ধরাধামে মাগো দেবী রূপে আসিও নামি।চিন্ময়ী মা তোমার চরণে পরাণ ভরিয়া নমি।
                       ইতি,এক দিশেহারা নয়নতারা



চিত্রঋণঃগুগল ইমেজ  
পত্রসজ্জাঃস্বরূপ চক্রবর্তী





















কবিতা-সম্পা দত্ত


বৃদ্ধাশ্রমে স্মৃতির সেই দিন গুলো

Picture Courtesy: Google Image




এখন আমার নির্বাসন,
পোষাকী ভাষায় যার নাম বৃদ্ধাশ্রম।

দশ বাই দশের এক ঘর,
মাঝখানে রোদ ঢোকার সরু একফালি জানালা।
যাতে শ্বাসরোধ না হয়
বাঁচার রসদ জোগাড় করতে-
একমনে তাকিয়ে উপভোগ করা বলতে,
এক চিলতে ঋতুপরিবর্তিত স্বচ্ছ্ব নীলাকাশ।

স্মৃতির সরনী বেয়ে নেমে আসা দিনের কথা
ছবি ,প্রতিশ্রুতি ,ড্রয়িং রুমের দেয়ালে টাঙানো
হাসি খুশি মুখে ছেলের সাথে ছবি
পুরীর সমুদ্র সৈকতে বালিয়াড়ি ফিসফিস
চুপি চুপি প্রেমের অভিসার।

আমারও ছিল রঙিন বসন্তে সেদিন সোনাঝুরি সকাল।
জরায়ুতে তুই বাড়ছিলি তিলতিল করে।
এক অনাস্বাদিত আহ্লাদ অনুভূতি ঘিরে রেখেছিলো আমার মণপ্রাণ জুড়ে।
একদিন আমার ই চোখ দিয়ে দেখলি পৃথিবীর আলো।
চলতে শিখলি বুঝতে শিখলি সব।
অনেক জল গড়িয়ে গেছে সময়ের সাক্ষী মুহূর্ত রা বন্দী ফ্রেমে।

পরিবার পেলি শুধু আমি ই সরে গেলাম দূরে।
ঘরে মা'কে নিয়ে বড্ড অশান্তি,
নিজের ঘরে হলোনা কিছুতেই ঠাঁই।

খোঁজ নিয়ে জানতে পেলি
সেখানে মা থাকবে ভালো,
নাম তো সবার জানা বড্ড  সেবা পরায়ন।
বাবা রে তুই আমায় দিলি নির্বাসন।
যার পোষাকী নাম “নবজীবন বৃদ্ধাশ্রম”।




চিত্রঋণঃগুগল ইমেজ  
পত্রসজ্জাঃস্বরূপ চক্রবর্তী




































কবিতা-ফিরোজ আখতার

অপরাজিতা'র হলুদ গাঁদা


Picture Courtesy: Google Image

হলুদ গাঁদা'র গুচ্ছগুচ্ছ পাপড়ি 
বইয়ের পাতা'র খাঁজেখাঁজে জমিয়ে রাখে 
অপরাজিতা নামের মেয়েটি ৷
বই খুললেই লোমের গন্ধ পায় ।
আমজানের জটিল ম্যাপ প্রতিভাস হয় 
প্রাক্তনের পেশিবহুল বুকের চওড়া খাঁচায়,
যেখানে একদিন মুখ লুকিয়ে সে কেঁদেছিল ৷

তারপর নোনাধরা দেওয়াল বেয়ে হঠাৎ-ই একদিন
উবে গেছিল তাদের প্রেম ৷ 

আজ, অপরাজিতা'র নীল পাপড়ি বিবশ কান্নায়
আশ্রয় চাইছে হলুদ গাঁদা'র পাপড়ি'তে ৷ হঠাৎ-ই ৷ 




চিত্রঋণঃগুগল ইমেজ  
পত্রসজ্জাঃস্বরূপ চক্রবর্তী



















Main Menu Bar



অলীকপাতার শারদ সংখ্যা ১৪২৯ প্রকাশিত, পড়তে ক্লিক করুন "Current Issue" ট্যাব টিতে , সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা

Signature Video



অলীকপাতার সংখ্যা পড়ার জন্য ক্লিক করুন 'Current Issue' Tab এ, পুরাতন সংখ্যা পড়ার জন্য 'লাইব্রেরী' ট্যাব ক্লিক করুন। লেখা পাঠান aleekpata@gmail.com এই ঠিকানায়, অকারণেও প্রশ্ন করতে পারেন responsealeekpata@gmail.com এই ঠিকানায় অথবা আমাদের ফেসবুক গ্রুপে।

অলীক পাতায় লেখা পাঠান